Skip to main content

Full text of "Prabeshika Garhasthya-bigyan O Swathyabidhi Ed. 3rd"

See other formats


ওশন্ছেশস্পিক্কা। 


গার্‌সথ্য-বিভ্ঞান ৪ স্বাস্থ্যবিধি 


(নূতন পাঠ্যস্থচী অনুযায়ী কলিকাত। বিশ্ববিগ্ভালয় কর্তৃক 
প্রবেশিক। পরীক্ষার্থী বালিকাদের জন্ত অনুমোদিত ) 


প্রাথমিক বিশ্ান পরিচয়, স্বাস্থ্যবিধি সিরিজ, প্রবেশিকা স্বাস্থ্য বিধি 
প্রভৃতি গ্রস্থ প্রণেতা 


ডাক্তার যোগেন্দ্রনাথ মৈত্র 
এম্-এস্সি, এমবি, ডি-টি-এম্, ডি-পি-এইচ. 
প্রণীত 


তৃতীয় সংস্করণ 


ছি সুক্ষ হোম্স্পান্বী ভিনজ্িতেত্জ 
৪।৩বি, কলেজ স্কোয়ার, কলিকাতা 
১৯৪২ 


প্রকাশক 
শ্/গরীন্দ্রনাথ মিত্র 
৪(৩ বি, কলেজ স্কোয়ার ; কলিকাত। 


| 4৪ 
লে] 8245 2৮-1৯1 


৬৪-৭৬, 


মূল্য ১॥০ মাত্র । 


প্রিপ্টারস্প্জ্ীপ্রভাতচন্ত্র রায় 
ভ্রীগৌরাঙগ প্রেস 
৫, চিস্তামণি দাস লেন; কলিকাতা 


২ ভ্ন্স 


পুণাতআ্বা মহাপুরুষ স্বর্গীয় স্তার আশুতোষের কৃতী পুত্র 
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শিক্ষা দিবার প্রবতক 
অনার্েবল শ্রীষুক্ত শ্ঠামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় 
এম. এ; বি. এল; এম এল. এ; 
বার-এট-ল 
বিশ্ববিগ্তালয়ের কর্ণধার ও বঙ্গীয় সরকারের মন্ত্রী মহাশয়ের 
করকমলে অশেষ শ্রদ্ধার নিদর্শন-ন্বরূপ 
“গাঠস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি” অপিত হইল । 


ভাক্তার যোগেজ্জরনাথ মৈত্র। 


সূচীপত্র 
প্রথম পরিচ্ছেঘ--বসতবাটী ১-৬৭ 


(ক) বসতবাটীর অবস্থান_স্থান-নির্বাচন, বসতবাটীর 
বিভিন্ন ঘর, বায়ু ও স্ুযালোক, ন্বাস্থ্যরক্ষার জন্য 
স্র্ধালোকের আবশ্যকতা । 

(খ) বাধু ও বায়ুসঞ্চালন- বায়ুর উপাদান, বাযুশ্থিত 
তগারামজাঁন ও অয্মজান গ্যাসের সহজ পরীক্ষা, বাম 
সঞ্চালনের মূলকথা, শ্বাসপ্রশ্বাসে বায়ুর পরিবত'ন, বায়ু 
মধ্যস্থ দূষিত পদার্থ, জনবহুল স্থানের বায়ুর অবস্থা, 
যন্ষ্া প্রভৃতি বাঘু-বাহেত ব্যাষ্ীর সহিত নিম'ল বায়ুর 
সম্বন্ধ, বাষু শোধনেরস্ক্রহজ উপায়, প্রত্যেকের কত 
বাষুর প্রয়োজন । 

(গ) জল-__খর ও মৃছু জল, খর জলকে মৃছ করিবান্পু 
উপায় এবং সাবানের উপর তাহার প্রতিক্রিয়া, জল 
সরবরাহ, জল দৃধিত হইবার কারণ, জল বিশোধনের 
উপায়, জল-সংগ্রহ ও জল-সঞ্চয়, ব্যাধির বাহকরূপে 
দুষিত জল। 

(ঘ) গৃহ-সঙ্জা--গৃহের আসবাবপত্র সাজসরঞ্জামাদি, 
গৃহের আসবাব পত্র, তৈজসাদি এবং সাজসরঞ্জাম 
প্রভৃতির পরিক্ষার পরিচ্ছন্নতা ও মেরামতাদি, গৃহের 
রোগজীবাণু ও কীটপতঙ্গ অপসারণ। 


17০ 


(ড) জল-নিঃসরণ পথ ও আবর্জনা প্রভৃতি- শুষ্ক 
আবর্জনা, শহরে ময়লা! অপসারণের ব্যবস্থা, পল্লীতে ও 
শহরে জল নিঃসরণ পথ কিরূপে দোষমুক্ত ও পরিষ্কৃত 
রাখা যায়, পল্লীতে মল-অপসারণের স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা । : 


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ-_গৃহে বস্ত্রাদি ধোতকরণ কার্য ৬৭-৭৫ 


ক) ধোতকার্ধে প্রয়োজনীয় তৈজসাদি ও তাহার যত্ব 
বন্দির ময়লা ও নানাবিধ দাগ অপসারণের উপায়। 

খ) ধোঁতকার্ষে প্রয়োজনীয় ক্ষার পদার্থ, শ্বেতসার, 
নীল গ্রভৃতির কার্য 
4গর্য” কার্পাসের কুতার রশ্মাদি ও পট্টবস্ত্াদি ধৌতকরণ 
প্রণালী। 


তৃতীয় পরিচ্ছেদ-_রম্ধনবিধি ৭৫-১২৬ 


(ক) খাগ্য--আমিষ-জাতীয় উপাদান, শর্করা-জাতীয় 
উপাদান, তৈল-জাতীয় উপাদান, লবণ-জাতীয় উপাদান, 
জল, খাদ্াপ্রাণ বা বা ভাইটামিন, দৈনিক খাদ্যের পরিমাণ, 
শিশু ও যুবকদের পক্ষে ষ্ধ ও দুগ্ধজাত খাগ্ঠাদির বিশেষ 
৬পকারিতা, বিভিন্ন গ্রকার খাছ্যের অর্থাৎ মিশ্রথাছের 
উপযোগিতা, খাগ্যতালিকার পরিবতন প্রয়োজন, খাগ্ঠে 
ভেজাল, খাস্ত ও ব্যাধি। 

(খ) উপযুক্ত খান্-নির্বাচন ও তাহার ব্যয়। 

(গ) ভাড়ার-ঘরের স্ব্যবস্থা । খান্ভ-সামগ্রীর সংবক্ষণ ও 
নির্বাচন। 


16/ ৩ 


(ঘ) বন্ধনপ্রণালী--রদ্ধনকার্ধে উনানের আগুনের 
সন্ধ্যবহার | 


চতুর্থ প্রিচ্ছেদ__গাহস্থ্য অর্থব্যবহারনীতি ১২৭-১৬০ 
(ক) পারিবারিক হিসাব সংরক্ষণ, চেক, ব্যাঙ্কে টাকা 
জম! দিবার ফর্ম, পাসধুক ।৬ 7. 
(খ) সাংসারিক আয় ব্যয়, সাংসারিক ব্যয়-বরাদ্দ, 
সাময়িক অপ্রত্যাশিত বায়াদি, অর্থসঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়ত]। 
(গ) জীবন বীমা-__বীমা সম্বন্ধে অবশ্ঠজ্ঞাতব্য বিষয়, 
বিভিন্ন গ্রকার বীমাপত্র । 
(ঘ) সংপারে আহ্ষঙ্গিক আয়ের ব্যবস্থা _ গৃহশিল্পাদি' 


পঞ্চম পরিচ্ছেদ_ব্যক্তিগত স্াস্থ্যতত্ব বাঁ স্বাস্থ্যবিধি 
১৬০-২১১ 

(ক) নরদেহের গঠন ও কার্ধ বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান । 
(খ) শ্বাস প্রশ্বাস ক্রিয়া; (গ) বিশ্রাম? (ঘ) ব্যায়াম । 
(ড) স্নান, ঈাত ও চুল প্রভৃতির যত্বু; সাবানের ব্যবহার 
ও তাহার কার্ধ; (চ) শরীরের পরিচ্ছন্্রতা ও তাহার 
রক্ষার জন্য কার্পাস জাত, রেশমী ও পশমী ভ্রবোর 
ব্যবহার; (ছ) জামা কাপড়ের ম্ায় শধ্যা সন্বদ্বেও 
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজন । 

ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ-_রোগ-সংক্রমণ ও পরিশোধন ২১২-২২০ 
রোগ সংক্রমণ; ব্যাধির বাহক হিসাবে কীট পতঙ্গাদি। 
পরিশোধন ও সংক্রমণ নিবারণের উপায়। 


সপ্তম পরিচ্ছেদ__গৃহ-শুশ্রীধাবিধি বা গৃহে রোগ 
পরিচর্ষ! ২২১-২৩৮ 


রোগীর ঘর ও তাহার যত; রোগীর পথ্য প্রস্তত গ্রক"+ ২ 
উধধ প্রয়োগবিধি; চিকিৎসকের অবগতির জন্য 
রোগীর রোগবিবৃতি সংরক্ষণ আকন্মিক্‌ বিপদে প্রাথমিক 


সাহায্য । 


গন্বেস্পিক্ষা 


ীর্স্থয-বিজ্ভান & স্বাঙ্্াবধি 


এঞ্ঞম্ম ন্িজ্জ্ছেক 


বসত-বাটা 
(1179 170099 ) 


বাংল! দেশে শহর ও পল্লীগ্রাম-এই উভয় স্থানেই আমরা বাস 
করিয়া থাকি। শহর অপেক্ষা পল্লীগ্রামের সংখ্যাই অধিক | যেস্থানেই 
আমবা বাস করি না কেন, বাসস্থান অস্বাস্থাকর হইলে, আমাদের 
ব্যারাম-পীড়ার অবধি থাকে না। যে বাড়ীতে একজন না একজনের 
অস্থখ প্রায়ই লাগিয়া আছে দেখা যায়, তাহা মোটেই স্বাস্থাকর নয়। 

বাসস্থান ও বাসস্থানের পারিপাশ্বিক অবস্থা এবং বাসগৃহাদির 
ভাল-মন্দের উপর স্বাস্থ্য যথেষ্ট নির্ভর করে। সংক্রীমক ব্যাগ 
প্রকোপও বসত-বাটীর স্থাননির্বাচন, অবস্থান ও বাসগৃছের নির্ষাণ- 
কৌশলাদির ভাল-মন্দের জন্যও ঘটিয়া থাকে । স্থতরাং, বসত-বাটার 
অবস্থান”ও বাসগৃছের নির্মাণাদি সংক্রান্ত যাবতীয় ব্যাবস্থা সম্বন্ধে প্রথমেই 
বিবেচনা কর! একাস্ত কতব্য। 

বসত-বাটীর অবস্থানাদি বিষয়ে জাতব্য বিষয়গুলি ক্রমশ বলিতেছি। 


২ প্রবেশিকা গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


5৮1 (ক) বসত্ত-বাটীরু অবস্থান 

বাসগৃ নিমণকালে জমির ভাল-মন্দের উপর বিশেষ দৃষ্টি রাখিতে 
হয়। বাড়ীর মধ্যবর্তী জমি আর্ত বা স্তাতসেঁতে থাকিলে অথবা বাড়ীর 
মধ্যে নানা আবর্জনা জমিতে দিলে, সংক্রামক ব্যাধির শীবাণু বৃদ্ধি 
পাইবার বিশেষ স্থবিধা পায় । সেইজন্য বাড়ীর ভিতর ও বহির্ভাগ সর্বদ] 
পরিষ্কৃত রাখিতে হয়; বাড়ীতে যাহাতে সর্বদা রৌদ্র লাগে এবং হাওয়া 
বাতাস খেলে, তাহারও ব্যবস্থা করিবার আবশ্টক হয়। বসত-বাটার 
প্র্যানটি বেশ ভাল হওয়া উচিত । বসত-বাটা স্বাস্থ্যকর ও সুখকর 
করিবার কয়েকটি উপায়, 


্ছান-নির্বাচন, 

(১) চতু্পার্বস্থ জমি হইতে অপেক্ষাকৃত উচ্চ ও শু ভূমিতে 
বাসগৃহ নির্মাণ করা কতব্য। 

(২) কঙ্করবহুল, বালুকাবন্থল কিংবা প্রস্তরবহুল ভূমি দেখিয়া ঘর 
করা.উচিত; কারণ, এ প্রকার জমিতে বৃষ্টির জল পড়িলে সহজে সে 
জল বাহির হইয়া যাইতে পারে এবং জমিও শুষ্ক থাকে । 

(৩) এটেল মাটি গৃহ নিমণাণের পক্ষে উত্তম নহে; কারণ, এ শ্রেণীর 
মাটির মধ্য দিয়া সহজে জল বাহির হয় না; সেই জন্ত জমি আর্্র থাকে । 
এস্থুমিতে বাসগৃহ নির্মাণ করিলে নানাপ্রকার পীড়া জন্মিবার সম্ভাবনা । 

(৪) জলা-ভূমি বা! যে ভূমিতে গ্রামের ব! শহরের আবর্জন! ইত্যাদি 
ফেল! হয়, তাহার নিকট, বসতৃ-বাটা করা.বিখেয় নছে। 

(৫) কলকারখানা, ভাগাড়, কসাইখানা», শ্রশান, গোরস্থান, 
আত্তাবল প্রভৃতি হইতে বাসভূমি দুরে থাকা উচিত। এ সকল স্থানের 
'নিকটে গৃহ নিমণণ করিলে সে গৃহ অস্বাস্থ্যকর হয়। 


বসত-বাটীর অবস্থান ৩ 


(৬) আমাদের দেশে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে জমির উত্তর দিক্‌ 
ঘেষিয়া গৃহ নিম্ণণ করার, দক্ষিণ দিকে খোলা জায়গা রাখার, পূর্ব দিকে 
পুক্করিণী কাটার এবং পশ্চিম দিকে বাশ কিংবা অন্য কোন উচ্চ বৃক্ষাদ 
রোপণ করিবার বিধান আছে। এই নিয়ম স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ 
অঙ্গৃকুল। দক্ষিণ হইতে প্রবাহিত বাযুই স্বাস্থ্যকর। সেইজন্য দক্ষিণ 
খোলা রাখা প্রয়োজন । উত্তর দিক্‌ হইতে প্রবাহিত বায়ু অপকারী 
বলিয়া উত্তর দিক্‌ ঘেষিয়া বাড়ী নির্মাণ করা উচিত। পূর্বে পুফরিণী 
বাখিলে গৃহ সর্বদা শীতল থাকে । পশ্চিমে উচ্চ বৃক্ষ থাকিলে দিবসে 
প্রখর সর্ষের তাপে গৃহ সেরূপ গরম হইতে পাবে না এবং প্রবল ঝটিকার 
বেগ হইতেও তেমনি রক্ষা পাওয়। যায় । 

(৭) নদীর চর. ভরাট হইয়া যে নৃতন জমি প্রস্তুত হয়, তাহা 
সচরাচর বালুকা-প্রধান হইলেও তাহার উপর বাসগৃহ নিম্ণ্ করা. উচিত 
নহে; কারণ, এ জমি হইতে দীর্ঘকাল ধরিয়া দুষিত বায়ু উঠিতে থাকে। 
পুকুর বা ডোবা! ভরাট স্থানেও গৃহ নির্মীণ করিতে নাই। সেখানেও 
ভরাট স্থান দিয়! দূষিত গ্যাস উঠে। 

(৮) ধান্ত-ক্ষেত্রের সন্নিকটে গৃহ নিমণণ করিতে নাই । গৃহের অতি 
সন্নিকটে ইক্ষু, পাট প্রভৃতির চাষ ম্যালেরিয়ার কারণ হইয়া থাকে। 
জলাপূর্ণ জঙ্গলের মধ্যেও গৃহ নির্মাণ করিতে নাই । 

(৯) বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করিয়| তবে গৃহ নিমণণ '্্া- 
কতব্য ও 

(১০) গৃহ এমনভাবে নিষণণ করিতে হইবে যে, গৃহের মধ্যে প্রচুর 
আলো! ও বাতাস্‌ প্রবেশ করিতে পারে। 

(১১) বাড়ীর জল নিকাশের জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত করা কতব্য। 
সমস্ত বাড়ী ঘুরাইয়! দেওয়ালের ভিৎ হইতে যতদুর সম্ভব মাটি এমনভাবে 


8 প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ঢালু করিয়া দিতে হয়, যাহাতে বৃষ্টি বা অন্ত প্রকারে পতিত জল আপনা- 
আপনিই প্রবাহিত হইয়! দূরে চলিয়া যাইতে পাবে । প্রাঙ্গণের অন্তর্গত 
সমস্ত স্থান পাক! করিয়া দিলে, জল বসার মোটেই ভয় থাকে না। 
অর্থ-সঙ্গতি থাকিলে বাড়ীর চারি কোণ বেষ্টন করিয়া একটি পাক! 
নর্দমা নিমণণ কর] উচিত. এবং এ নর্দমা সর্বদা পরিষ্কত রাখার ব্যবস্থা 
করা কতব্য। 

(১২) গো-শারা, অশ্বশাল! প্রভৃতি বাসগৃহ হইতে দুরে পৃথকৃভাবে' 
নিম করা বিধেয়; নচেৎ, এ সকল স্থানের দূর্গন্ধ বাসগৃহে প্রবেশ 
করিয়! গৃহথানিকে অস্বাস্থ্যকর করিতে পারে। 

(১৩) পায়খানা বাসগৃহ হইতে যতদূর সম্ভব দুরে হওয়া ভাল, 
তবে কলিকাতার মত শহরে, যেখানে পায়খানা গৃহ-সংলগ্ন না করিয় 
পারা যায় না, সেখানে পায়খানা যাহাতে সর্বদ! ধুইয়া দেওয়া হয়, তাহার 
বন্দোবস্ত রাখা উচিত । 

(১৪) বাড়ীর পরস্পর-সন্গিহিত ঘরগুলির (90200180988 7090108) 
ভিতর যাহাতে যথেষ্ট স্থান (৪৮০০) থাকে, সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি 
রাখা কতব্য। নতুবা, ঘরগুলি যথেষ্ট হুর্যালোক পায় না ও ঘরের 
ভিতরে তেমন হাজ্জ থেলে না। ফলে, এরূপ স্থানে বাস কর! 
অস্বাস্থাকর হয়। বাড়ীর আবর্জনা ও ময়লা স্বাস্থ্যাবিহিত ব্যবস্থামত 
-্ীরিত করা (9180038] ০৫ 28896 ৪10. 2161) ) গৃহম্বামীর 
পর্বপ্রধান কতব্য। এই আবর্জনা ও ময়লাকে আমরা ছুই শ্রেণীতে 
বিভক্ত করিতে পারি :_-ঘর ঝাড় দেওয়া জঞ্জাল, রান্না-ঘরের 
তরিতরকারির খোসা, মৎন্তের গ্জাইশ, চুললীর ছাই, তৃক্তাবশিষ্ট 
সামগ্রী, বাগানের বৃক্ষ-পত্রাদি, আস্তাবল বা গো-শালার জঞ্জাল 
প্রভৃতি প্রথম শ্রেণীর অন্তর্গত শু পদার্থ) আর, রাম্া-ঘরের অপরিষ্কৃত, 


বসত-বাটার অবস্থান 


1০. ৮৩৮৪১১)৯ 











(15541) 





৩ 8511850১158) 


[++ ভারারজ্ছ ৪১ আভা! রে 


+৪০৯74$7 
রি উজ 


রর ৯৬৬৫৬ ৯ 
নং 


৬ প্রবেশিকা গাহ্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


জল, নানের জল, মানুষের মলমুত্র প্রভৃতি দ্বিতীয় শ্রেণীর অন্তর্গত 
তরল পদার্থ )) 

আবর্জনাদি দুর করা ।_-শুষ আবর্জনাদি যাহা গৃহাদি ঝাড়, দিয়া 
বাহির হয় এবং রান্না-ঘরের জপ্লাল ও তরিতরকারির খোসা প্রভৃতি ও 
বাগানের বৃক্ষাদির পত্র--সমস্ত দুরে একস্থানে স্তপীরুত করিয়া দগ্ধ 
করিয়া ফেলিতে হয়। আন্তাবল বা গো-শাল! হইতে বহিষ্কৃত তৃণাদি ও 
আবর্জনা প্রভৃতি এইভাবে দগ্ধ করিয়া! ফেলা উচিত। এ সকল 
দগ্ধ করিয়া যে ছাই হইবে, তাহা ক্ষেত্রে সাররূপে ব্যবহার করা যাইতে 
পারে। চুলীর ছাই গোঁশালায় বা ক্ষেত্রে ছড়াইয়া৷ দিলে ভাল হয়। 
গরু ও অশ্ব প্রভৃতির পুরীষ বাটীর সন্নিহিত ক্ষেত্রে, একহস্ত পরিমিত 
গভীর নাল! কাটিয়া, এ নালায় ফেলিয়া তাহার উপর মাটি-চাপা 
দিতে হয়। 

পল্লীর পর্ণকুটীর ।__আমাদের দেশে পল্লী অঞ্চলে কাচা বাড়ীর 
সংখ্যাই অধিক; মধ্যে মধ্যে পাকাবাড়ীও দেখিতে পাওয়া যায়। 
পল্লীতে বা শহর অঞ্চলে বস্তিতে মাটির ভিৎ প্রস্তত করিয়া তাহার 
উপর, নির্দিষ্ট স্থান অন্তর বাঁশের বা কাঠের খুঁটি পুঁতিয়া দেওয়া হয়। 
এঁ সকল খুঁটির চাবিধারে বেড়া এবং উপরে চাল বা চাল! দেওয়া হইয়া 

এক । চালার উপরিভাগে কেহ খড়, কেহ বিচালি, কেহ গোলপাতা, 

কেহ মাটির খোলা, কেহ টিন, কেহ বা আ্যাস্বেস্টাস বিছাইয়া দেন। 
স্থল-বিশেষে মাটির দ্েওয়ালেও বেড়া হয়। কেহ ইট দিয়া, কেহ কেহ 
কাঠ দিয়াঁ_যাহার যেরূপ অবস্থা, তিনি সেই ভাবেই অবস্থার উপযোগী 
বেড়া দিয়া লন ও বাসের ব্যবস্থা করেন । 

এই প্রকারের গৃহ নিমীণকালে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা 
প্রয়োজন । নিয়ভূমিতে বাড়ী করিতে নাই । ঘরের দাওয়া ও মেঝে 


বসত-বাটীর অবস্থান ৭ 


মাটি হইতে যথেষ্ট উচু হওয়া প্রয়োজন। প্রত্যেক গৃহে বায়ু-চলাচলের 
জন্য অন্তত ছুইটি করিয়া রুজুভাবে জানালা থাকা উচিত। ফলত, 
স্বাস্থ্ারুর পার্কীগৃহ নিমর্ণণ করিতে যে সকল ব্যবস্থা অবলম্বন করা হয়, 
পল্লীর কাঁচা বাড়ীর নিমণণকালেও এ একই নিয়ম অবলম্বন করা উচিত ; 
নচেৎ গৃহ অস্বাস্থ্যকর হয়। রর 

পল্লীগৃহের অন্ঠান্য ব্যবস্থা ।_ ক্ষুদ্র নগরীর ও পলী গ্রামের 
গৃহস্থমাত্রেরই বাটাতে গৃহ-সংলগ্ন এক একটি ত্রান্তাকুড় থাকে । হাতমুখ 
ধোয়া, রাত্রে বা দ্িবাভাগে মল-মৃত্রত্যাগ, কখন বা! শিঞ্টদিগের মলত্যাগ 
প্রভৃতি এ সকল স্থানে করা হয়। এই প্রকার ত্রস্তাকুড় তুলিয়া দেওযা 
উচিত। ত্বাস্তাকুড় রাখা নিতাস্ত আবশ্যক হইলে গৃহের পশ্চিম প্রান্তে 
যেস্থানে অপরাহে হূর্ষের প্রখর কিরণ পতিত হয়, সেই প্রাস্তভাগে 
এবং সংলগ্ন বারান্দার নিয়ের জমির কিছুদূর পর্যস্ত ইষ্টক ও সিমেন্ট, 
(9078970) দ্বারা পাকা করিয়া লইতে হ্য়। নিমের পাকা করা 
জমির চতুর্দিকে কিছু দূর পর্যন্ত বেষ্টন করিয়া, মৃত্তিকা কতকট! 
উঠাইয় দরিয়া, কতকটা বালি ও কয়লা প্রোথিত করিয়া দিতে হয়। 
এইব্ধপে আস্তাকুড় নিমণ করিলে, তাহার উপর পরিত্যক্ত মৃত্র হইতে 
অধিক দুর্গন্ধ বাহির হয় না। কয়লার মধ্য দিয়া চোয়াইবাঁর দরুণ উহার 
গন্ধ অনেকটা নষ্ট হইয়া যায়। রাত্রি ভিন্ন দিবাভাগে আত্তাকুড় 
ব্যবহার করা উচিত নয়। 

ক্ষুদ্র পল্লীগ্রামে মেথরের দ্বারা ময়ল| পরিফার করিবার বা৷ ময়লাপূর্ণ 
আবর্জনার্দি দূর করিবার কোন ব্যবস্থা নাই। সেখানে পায়খানা 
বাসস্থান হইতে বহু দূরে থাক] বিধেয়। রান্নাঘরের অপরিষ্কৃত জল, 
কানের ময়ল! জল গ্রতৃতি আবর্জনা দূরীকরণের জন্য প্রত্যেক বাড়ীতে 
প্রকাণ্ড নর্দম! থাকা উচিত। এই সকল ময়লা জল চলিবার নর্দমা 


৮ প্রবেশিক! গাহস্থা-বিচ্ছান ও স্বাস্থ্যবিধি 


সিমেন্ট দ্বারা উত্তমরূপে পাকা করিয়] প্রস্তত করিয়! প্রত্যহ অস্তত 
একবার তাহা! পরিষ্কার করিতে হয়। নর্দমায় ময়লা জমিতে দিলে 
সেই ময়লা! হইতে নানা রোগের জীবাণুর স্থষ্টি হইতে পারে ; .ফলে, 
রোগ-সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে । 
চতুষ্পার্খস্ছ স্থান 

চারিদিকের স্থান স্বাস্থ্যকর না হইলে, সেখানে বসত-বাটী নিমণণ 
করিতে নাই । নানাপ্রকার কল-কারথান।, ভাগাড়, কসাইখানা, শ্মশান, 
গোরস্থান, আন্তাবল, মল-মুত্র প্রোথিত করিবার স্থান প্রভৃতির নিকটে 
বয়ত-বাটী নিমাঁণ করিবে না। এ সমস্ত স্থানের দূষিত বায়ু নিয়তই 
আমাদের স্বাস্থ্যের অনিষ্ট করে । 

জলাভূমি, বিল, এদে! ডোবা, পচা পুকুর প্রভৃতির ধারে বাড়ী 
করিলে উহ খুবই অস্বাস্থ্যকর হয় । পাট, শণ, ধান প্রভৃতি শশ্যক্ষেত্রের 
নিকটেও বাড়ী করিতে নাই? কারণ, এ সকল স্থান হইতে দূষিত বাষ্প 
উঠিয়া বায়ুকে দূষিত করে। 

বাড়ীতে যাহাতে হুর্ধালোক ও বায়ু প্রবেশ করিতে পারে, সেজন্য 
বাড়ীর পূর্ব ও দক্ষিণ দিক্‌ ফাকা রাখার নিতান্ত প্রয়োজন। এই ছুই 

বড় বড় বাগান কিংবা অন্যবিধ প্রতিবন্ধক থাকিলে বাড়ীতে 

বৌন্র ও বাতাস প্রবেশ করিতে পারে না। 

বসত-বাঁটার দক্ষিণে প্রশত্ত উন্মুক্ত স্থান থাকিলে প্রচুর নিমলি বায়ু 
পাওয়া যায়। অনেকেই বাড়ীর দক্ষিণে ছেলেমেয়েদের খেলার জায়গা ও 
ফুলবাগান রাখেন। বাগানের ফুলের সুমিষ্ট গন্ধে প্রাতে ও সন্ধ্যায় 
সমস্ত বাড়ীখানি আমোদিত হয় । উহা স্বান্থোর পক্ষেও পরম হিতকর। 
পূর্ব দিকে বিশুদ্ধ পানীয় জলের বড় পুকুর রাখার ব্যবস্থা করাই সঙ্গত; 


বসত-বাটীর অবস্থান ৯ 


তাহা হইলে বাড়ীতে হূর্যালোক ও বায়ু-প্রবেশের বিশেষ সুবিধাই হয়| 
বাসগূহ হইতে কিছু দূরে উত্তরে ছুই চারিটা ভাল ফলের গাছ থাকিলে 
ক্ষতি নাই। বাড়ীতে ইউক্যালিপটাস্‌ ও নিমগাছ থাকিলে বায়ুর 
অনেক দোষ নষ্ট হয়। 


বসত-বাটার বিভিন্ন ঘর 


আমাদের বাসের স্থবিধার জন্য প্রত্যেক বাড়ীতে কতকগুলি ঘর 
থাকে; উহার গ্রত্যেকথানি ঘর পৃথক্‌ পৃথক্‌ কার্ধের জন্য নির্দিষ্ট রাখা 
ইয়। সেই ঘরগুলিকে আমরা শয়ন-ঘর, রান্না-ঘর প্রভাতি বিভিন্ন নামে 
অভিহিত করি। 

বসত-বাটার ভিতরে আঙ্গিনা বা উঠান আছে। উঠানের পূর্ব দিকের 
ঘর কয়েকখানিকে রান্না-ঘর, ভাড়ার-ঘর ও ভোজন-ঘররূপে ব্যবহার করা 
যাইতে পারে । বাড়ীর দক্ষিণের ঘরগুলিকে সাধারণত শয়ন-ঘররূপেও 
ব্যবহার করাই ভাল। দক্ষিণ দিকে লোকজনের বসিবার ঘর€ থাকিলে 
ভাল হয়। একখানি ভাল শয়নঘর খ্নাতুড়-ঘররূপে পৃথক্‌ রাখা মন্দ নয়। 
পশ্চিম দিকে ঘর থাকিলে সেই ঘরগুলি পূর্বদ্ধারী হয়। প্রয়োজন হইলে 
সেইগুলিও শয়ন-ঘররূপে ব্যবহার করা যাইতে পারে। ", প্‌ 

শয়ন-ঘর বাড়ীর দক্ষিণ দিকে নিমিত হওয়ার বিশেষ প্রয়োজন ? 
কারণ, এদেশে অধিকাংশ সময়ই দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক্‌ হইতে 
বায়ু প্রবাহিত হয় । এজন্য দক্ষিণ দিকের ঘরই বাসের পক্ষে সর্বোতকুষ্ট | 
পূর্ব দিকের ঘরও মন্দ নয়; কিন্তু পশ্চিম ও উত্তর দিকের ঘরগুঙি 
তত স্বাস্থ্যকর নয়। সাধারণত যে ঘরগুলির পূর্ব দিকে ও দক্ষিণ 
দিকে ছুই তিনটি করিয়া বড় বড় জানালা থাকে, নেই ঘরগুলি 


১০ প্রবেশিক! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


অনেকটা স্বাস্থ্যকর হয়; কারণ, শয়ন্ঘরে বামু ও হৃর্যালোকের 
বিশেষ প্রয়োজন । 

রান্না-ঘর বাড়ীর পূর্ব দিকে শয়ন-ঘর হইতে দৃরে নির্মাণ করিতে হয়। 
উহার নিকটেই ভাড়ার-ঘর ও খাইবার ঘর থাকার দরকার । শয়ন-ঘরের 
ম্যায় রান্না-ঘরেও প্রচুর আলো ও বাতাসের প্রয়োজন। উহার 
পূর্ব গায়ে দুই তিনটি করিয়৷ বড় বড় জানালা রাখিলে আলোক ও 
বাতাস-প্রবেশের ব্যাঘাত হয় না। রান্না-ঘর হইতে ধৃম-নি্গমের এবপ 
ব্যবস্থা রাখিবে যে, উহা যেন কখন বাড়ীর অন্ত কোন ঘরে প্রবেশ 
করিতে না পারে। রান্না-ঘরের নিকটে মলমৃত্র-ত্যাগ করিবে না কিংবা 
আবর্জনাদি জমিতে দিবে না। 

গোয়াল-ঘর-_বাড়ীর পশ্চিমে শয়ন-ঘর ও রান্না-ঘর হইতে 
অনেকটা দূরে গো-মহিযাদি পশুর বাসের জন্য গো-শালা বা গোয়াল-ঘর 
নিমণ করিতে হয়। গোয়াল-ঘরের ষেখানে সেখানে গোবর, গোমুক্র, 
ঘাস, বিচালি প্রভৃতি পড়িয়া থাকে / ইহাতে বায়ু দূষিত হয়। এজন্য 
গোয়াল-ঘর ও বাসগৃহের মধ্যে প্রাচীর কিংবা অন্য কোন ব্যবধান থাকিলে 
ভাল হয়। গোয়াল-ঘর উচ্চ ও প্রশস্ত হওয়া দরকার । গোয়াল-ঘরে 
যাহাতে রৌদ্র ও বাতাস লাগে সেরূপ ব্যবস্থা করা উচিত। 


বায়ু ও সূর্যালোক 


” বাসস্থানে যাহাতে সর্বদা প্রচুর নির্মল বায়ু ও সুর্ালোক প্রবেশ 
করিতে পারে, সেদিকে বিশেষরূপে লক্ষ্য রাখিয়া গৃহ নিমণণ করিবে । 
বাড়ীর বিভিন্ন ঘরগুলি একূপভাবে নিমিত হওয়া দরকার যে, সমব্্‌ 
ঘরেই অধাধে বাষু গমনাগমন করিতে পারে। আমাদের দেশে 


বসত-বাটীর অবস্থান ১১ 


সাধারণত দক্ষিণ দিক্‌ হইতে বাযু প্রবাহিত হয়। সেইজন্য বসত-বাটার 
দক্ষিণ দিক্‌ সম্পূর্ণরূপে উন্মুক্ত রাখার প্রয়োজন। বামুসঞ্চালনের 
স্থব্াাবন্থা না থাকিলে, বাসস্থান কখনই স্বাস্থ্াকর ও সুখকর হইতে 
পারে না। 

স্বাচ্থ্যরক্ষার জন্য সূর্যালোকের আবশ্যকতা ।- জীবজস্ত ও 
উদ্ভিদের জন্য সুর্যালোকের বিশেষ প্রয়োজন। স্থ্য হইতে আমবা 
আলে! ও উত্তাপ প্রার্চ হই । জীবনধারণের জন্য এতছুভয়ের যে কত 
প্রয়োজন, তাহা নির্ণয় করা কঠিন । বায়ুমগ্ডলে বিবিধ জাতীয় 'অসংখ্য 
অগণিত রোগ-জীবাধু ভাসমান থাকে; প্রথর বৌত্রে সেই সকল 
জীবাণুর ধ্বংস হয়; তাহাতে বায়ু বিশোধিত*হইয়া থাকে । জীবজজ্তর 
গলিত দেহ, মল-মুক্র, পচনশীল উত্ভিদ্‌ প্রভৃতি হইতে সর্বদা এক প্রকার 
বিষাক্ত গ্যাস উঠিয়া বাযুকে দূষিত, করিতেছে । সূর্ধ-কিরণে সেই 
দুষিত পদার্থ নষ্ট হইয়া যাইতেছে । 

যাহারা অন্ধকার স্থানে বাস করে এবং স্র্ধের মুখ অল্পই দেখিতে 
পায়, তাহাদের দেহ কখনও ন্থুস্থ থাকে না। উপযুক্ত পরিমাণ আলোক 
ও তাপের অভাবে তাহার! নানারূপ পীড়ায় কষ্ট পায়; এমন কি, শেষে 
ষক্ম/ প্রভৃতি রোগে মার] যায়। স্বতরাং, যেখানে স্থর্ধযের আলোক 
প্রবেশ করে না, সেখানে কখনও বাস করিতে নাই। যে ঘরে প্রতিদিন 
প্রচুর স্বর্যালোক ( বৌব্র) প্রবেশ করে, সে ঘরে রোগের বীজ সতেজ 
থাকিতে পারে না। বৌদ্রালোক প্রবেশ ন! করিলে ঘর অস্বাস্থ্যকর 
হয়। আলোকহীন গৃহে বাস করিলে শরীর স্বভাবত ব্যাধিগ্রস্ত হইয়া 
পড়ে; পরিবারের কাহাকেও সে প্রকার ঘরে থাকিতে দেওয়| উচিত 
নহে। ষে গৃহে সর্বদা আলোক ও বাতাস চলাচল করে, বাসের পক্ষে 
সেই গৃহই শ্রেষ্ঠ ও হিতকর। 


১২ প্রবেশিক গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


£সান্বাথ, অর্থাৎ 'বৌব্র-নাঁন” সকলের পক্ষেই উপকাবী। পাশ্চাত্য- 
'দেশে এ প্রথা প্রচলিত ; শীতকালে আমরা কতক সময় বৌদ্রে বসিয়! 
থাকি। কেবল শরীরের পক্ষে নহে, শয্যা ও পরিচ্ছদ সম্পর্কেও 
রৌদ্র-নান উপকারী |' আমাদের জামা, কাপড়, বিছানা, বালিশ প্রভৃতি 
ময়লায় ও গায়ের ঘামে দৃধিত 'হয়। রৌদ্রে ভালরপে শুকাইয়া লইলে 
উহার দোষ নষ্ট হয়। তখন পুনরায় ব্যবহার করিলে কোনও 
অপকার হয় না; মশা ও ছারপোকার উপদ্রবও কম থাকে। 
লক্ষ্য করিলে বেশ বুঝা যায়, রৌন্রদগ্ধ বিছানায় শুইলে অথবা রৌদ্রদর্থ 
জামা, কাপড় পরিলে, শরীরে আপনা-আপনিই কেমন একটা 
স্বস্তি আসে । 

যে সকল স্থানে সারাদিন রৌন্র থাকে, সেইরপ জায়গায় স্তাস্তাকুড় ও 
পায়খানা করিতে হয়। পায়খানা, শ্ান্তাকুড়, এদে। ডোবা ও পচা 
পুকুর হইতে সর্বদা এক প্রকার দূষিত গ্যাস উঠে। প্রচুর রোৰ্্র 
লাগিলে সেই বিষাক্ত গ্যাস কতক পরিমাণে নষ্ট হয়। 

আবাল-বুদ্ধ-বনিতা সকলেরই সৃর্যরশ্মির প্রয়োজন । তাই, সকালে 
ও বৈকালে কিছুক্ষণ রৌব্রে থাকা ভাল। উহা স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ 
হিতকর। অধিকক্ষণ রৌদ্রে থাকিলে অন্থথ হইতে পারে; সেইজন্য 
যাহার যতটা সহ হয়, ততটা বৌদ্্র লাগানই উচিত । আমাদের দেশে 
নবজাত শিশুর গায়ে প্রচুর সরিষার তৈল মাখাইয়া কিছুক্ষণ বৌনে 
রাখিবার ব্যবস্থা আছে। স্বাস্থ্যের পক্ষে উহা বিশেষ উপকারী সন্দেহ 
নাই; কিন্ত শিশুর গায়ে যাহাতে অতিরিক্ত রৌন্্র না লাঁগে এবং মাথা 
'রৌব্দে না থাকে, তাহা বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন । 

আজকাল হৃর্ধ-রশ্মির দ্বারা কোনও কোনও ব্যাধির চিকিৎসা 
হইতেছে । বাত, যক্ষা গ্রভৃতি ছুরারোগা রোগের চিকিৎসায় হুর্ধ-রশ্মির 


বায়ু ও বায়ু-সঞ্চালন ১৩. 


সাহাষ্য গ্রহণ করা হইয়৷ থাকে। অনেক ব্যাধি ইহাতে আরোগ্যও. 
হইতেছে । ুর্য-বশ্মিতে সাতটি মৌলিক বর্ণ আছে; বেগুনে, নীল, 
ধূসর, সবুজ, পীত, কমলালেবুর রং ও লোহিত বর্ণ। সাধারণত সহজ 
দৃষ্টিতে ' আমরা তাহা দেখিতে পাই না বটে; কিন্তু “স্পেক্ট্রস্কোপ: 
(২০6০/:০৪০০1১৪) নামক যন্ত্রের সাহায্যে বিশ্লিষ্ট সুর্যরশ্মির এই সাতটি রং 
এক সঙ্গে মিশাইলে স্থ্য-রশ্মির শ্বেতবর্ণ পাইতে পারি। সেই সাতটি 
বর্ণের মধ্যে, বেগুনে রংটিই স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ উপযোগী । উহারই 
ইংরেজী নাম--“আল্ট্রাঁভায়গলেট বেজ? (01075751918. 2855) । 
সথধ-রশ্মির এই অদৃশ্য বর্ণের দ্বারা চিকিৎসকগণ অনেক দুরারোগ্য ব্যাধি 
আরোগ্য ফরিতেছেন। 

স্র্য প্রতিনিয়ত তাহার রশ্মির কতকাংশ পরিত্যাগ করিতেছে । 
মেই পরিত্যক্ত রশ্মির কতকাংশ মনুষ্য ও পশ্তপক্ষী, কতকাংশ তরু- 
গুল্সলতাদি এবং কতকাংশ জল ও" মাটি গ্রহণ করে। স্থর্য-বশ্মি 
মানবদেহে প্রবেশ করিয়া মানুষের অশেষ উপকার করে। স্থ্যের কিরণ 
গায়ের চামড়ায় পড়িয়া! শরীরে প্রবিষ্ট হয় ও পুষিসাধনে সহায়তা করে। 


(থ) বায়ু ও বায়ু-সঞ্চালন 


প্রতি মুহুর্তে আমাদের বাতাসের প্রয়োজন | বাতাস ভিন্ন 
আমরা বাচিতে পারি না। আমরা নিয়ত বাযুমণ্ডলে ডুবিয়া 
রহিয়াছি। উপরে, নীচে, চতুষ্পার্থে--বাতাস সর্ব বত'মান। আমরা 
বাতা দেখিতে পাই না, অন্ভব করিতে পারি মাত্র। ত্বকের 
সহিত স্পর্শ হইলে আমর বাতাসের অন্তিত্ব বুঝিতে পারি । আবার, 
ঝড়-ঝঞ্চার সময় এবং জলের তরঙ্গে বাতানের অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ করি। 


১৪ প্রবেশিক! গারহস্থা-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


বাতাস কয়েকটি গ্যাসের মিশ্রণ মাত্র । ইহা সতত চঞ্চল, ইতস্তত 
সঞ্চরণশীল, স্থিতিস্থাপক গুণবিশিষ্ট এবং সম্প্রসারণশীল। বামুর চাপ 
চারিদিকে সমভাবে পড়ে। তাপের দ্বারা বায়ুকে সম্প্রসারিত করা! 
যায়। আবার, ঠাণ্ডায় উহা! সংকুচিত হয়। বিভিন্ন পরিমাণ তাপে 
বাতাসের পরিমাণের হ্বাসবৃদ্ধি ঘটে । বাতাস হাল্কা । বাযুমান অর্থাৎ 
ব্যারোমিটার (13920706662 ) নামক যন্ত্রের সাহায্যে বাতাসের চাপ 
পরিমাপ করা যাইতে পারে । উত্তাপে চাপের পরিবত'ন ঘটে । 

বায়ুর উপাদ্দান।-_জীবনধারণ ও স্বাস্থ্যরক্ষার জন্ত বায়ু সর্বাপেক্ষা 
প্রয়োজনীয় । আমরা বিনা আহারে তিন সপ্তাহ বা বিনা জলে কয়েক 
দিন বাচিয়া থাকিতে পারি, কিন্ত বিনা বায়ূতে এক মৃহৃতও প্রাণরক্ষা 
করিতে পারি না। বায়ু পৃথিবীর উপরিভাগে ৪৫ হইতে ৫০ 
মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত রহিয়াছে । আমরা আকাশে যে মেঘ দেখিতে 
পাই, উহা! উধ্বে” আড়াই হাজার ফুট হইতে সাতাইশ হাজার ফুটের 
মধ্যে বায়ুমগডুলে ভাসমান থাকে এবং বাযুবেগে ইতস্তত সঞ্চালিত হয়। 

বাষু একটি মিশ্র পদার্থ। বাতাসের মধ্যে নিয়লিখিত উপাদান- 
সমূহ বতমান আছে, যথা_ 

(১) অক্সিজেন গ্যাস ( অশ্জান__-0%5€90. হত ৯৬ ভাগ 

( অর্থাৎ মোটামুটি এক-পঞ্চমাংশ )। 
(২) নাইট্রোজেন গ্যাস ( যবক্ষারজান_-ব1008৪০ )--৭৯ ভাগ। 
(৩) কার্বন ডায়ক্সাইড. ( অঙ্গারাক্জান-_-08:1১07 110৫9) 
গ্যাম--*০৪ ভাগ। 

. এতছ্যাতীত্‌, জলীয়. বাষ্প, এমোনিয়া, আন হিলিয়ম, নিও, 
ক্রীপটন্‌, জিনন, মাস গ্যান্‌প্রততিও ' 'অল্লাধিক পরিমাণে বাষুতে 
বতণমান আছে। সকল প্রকার গ্যাসের মধ্যে অশ্লজান (05851 ) 


বায়ু ও বায়ু-সঞ্চালন ১৫ 


আমাদের জীবনধারণের জন্ত বিশেষ প্রয়োজন । অল্লজান দ্বারা দহন- 
ক্রিয়া সম্পর হয়। আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস অন্জান ছ্ারাই হইয়া থাকে 
যবক্ষারজান কোন কার্ষে লাগে না;. উহা! কেবল মিশ্রণকারী পদার্থ' ও 
অশ্জানের * শক্তিশবিনাশক । 


অল্পজানের ক্রিয্প। ।--অল্জান (05০) কতকগুলি 
উপাদানের সহিত মিশ্রিত হইয়া নানাপ্রকার মিশ্রপদার্থ উৎপন্ন করে। 
উদজানের ( 8507০890 ) সহিত রাসায়নিক সংযোগে জল, লৌহের 
সহিত সংযোগে লৌহের মরিচা, কার্ধন সংযোগে বিষাক্ত অঙ্গারান্জান, 
€ 081001010 4610. 9%৪) গ্যাস উৎপন্ন হয়। অক্লজান-সাহায্যে 
আমাদিগের তুক্ত পদার্থ শরীরের পেশীতে ও জৈব পদার্থে পরিণত হয় 
এবং শরীরের জৈব পদার্থের কার্বন, অগ্জান-সাহায্যে দগ্ধ হইয়া, (ক) 
তাপ, (খ) শক্তি, (গ) জলীয় বাষ্প এবং. (ঘ) অঙ্গারান্নজান গ্যাস 
উৎপন্ন করিয়। প্রশ্বামের সহিত শরীর হইতে নির্গত হইয়া যায়। 
জীবিতের শরীরে সর্বদা অগ্লজান-সাহায্যে জৈব-পদার্থের দহনহেতু 
শক্তি ও তাপ উৎপন্ন হইতেছে। সেইজন্য জীবিত প্রাণীর শরীর 
গরম থাকে, আর মৃতদেহে অক্জান সাহায্যে দহন-ক্রিয়া হয় না বলিয়। 
যুতদেহ শীতল হুইয়া যায় ৷... 


বায়ুস্থিত অঙ্লারায়জান ও অম্নজান গ্যাসের সহজ 
পরীক্ষা ।-বরাসায়নিক পরীক্ষায় সহজে বায়ুস্থিত অঙ্গারাম্জান গ্যাস ও 
অম্জজান গ্যাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। 

পরিষ্কৃত চুনের জল বায়ুর সহিত ঝাকিয়া রাখিয়া দিলে ঘোলাটে 
হুইয়া যায়; কারণ, বাঘুস্িত অল্গারাম্নজান গ্যাসই চুনের সহিত মিশিয়া 
চক রব! খড়িতে পরিণত হয়। 


১৬ প্রবেশিকা গার্হস্থ্া-বিজ্ঞান ও স্বাস্থাবিধি 


ক্ষারগুণবিশিষ্ট পাইরোগ্যালল নামক রাসায়নিক দ্রব্য হাওয়াতে 
কিছুক্ষণ উন্মুক্ত অবস্থায় রাখিলে, বায়ুস্থিত অল্জান গ্যাস তাহার সহিত 
মিশিয়া বাদামী বর্ণ ধারণ করে। উন্লিখিত পরীক্ষা ছারা, বায়ুতে, 
অঙ্গারাম্রজান ও অগ্লজান গ্যাসের অবস্থিতি অতি সহজেই প্রমাণ, 
করিতে'পারা যায়। 


বাযু-সঞ্চালনের মৃলকথা ।-_বাযুসঞ্চালন ( ৮০০06118607 ), 
দূষিত বাযুকে বিশুদ্ধ করিবার এক প্রধান উপায়। কোন স্থানের দুষিত 
বায়ু বহিষ্কৃত করিয়া বিশ্তুদ্ধ বায়ুর দ্বারা তাহার স্থান পুরণ করাকে 
বায়ু-সঞ্চালন ( ০7011180100 ) কহে। দূষিত বায়ুর সহিত বাহিরের 
বিশুদ্ধ বায়ু ক্রমাগত মিশ্রিত হইয়। বায়ু-সঞ্চালন ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। 

আমর! নিশ্বাস দ্বার! যে বায়ু পরিত্যাগ করি, তাহার ১০৭ ভাগে' 
৪ ভাগ কার্বনিক আযাসিভ গ্র্যাস (009১) মিশ্রিত থাকে । প্রশ্বাস 
গ্রহণের পক্ষে এরূপ বায়ু অত্যন্ত বিপজ্জনক। বিশ্তদ্ধ বায়ুর মধ্যে 
শতকরা! "*৪ ভাগ কার্বনিক আসিভ গ্যাস থাকে । প্রশ্বাস-গ্রহণের 
পক্ষে এই বাষু সর্বাপেক্ষা উপযোগী । তবে শতকরা "০৬ ভাগ 
পর্যস্ত কার্বনিক আসিড প্রশ্বাসের সহিত গ্রহণ করিলে বিশেষ ক্ষতির 
সম্ভাবনা থাকে না। স্থতরাং, আমরা যদি কোন উপায়ে গৃহমধ্যস্থ 
দুষিত বায়ুর সহিত বাহিরের বিশুদ্ধ বায়ু এরূপ পরিমাণে মিশাইতে সমর্থ 
হই যে, উহাতে কার্ধনিক আযাসিভ গ্যাসের পরিমাণ শতকরা "৬ ভাগের 
অধিক না হয়, তাহা হইলে এ বায়ুতে আমরা নিষিষ্ে প্রশ্বাস গ্রহণ। 
করিতে পারি। বামু-সংমিশ্রণে (101208101) ০0 &1. 68898 ) 
আমাদের এই উদ্দেশ সিদ্ধ হয়। 
বাহিরের বিশুদ্ধ বায়ুতে ১ হাজার ভাগে মাত্র ৪ ভাগ 
কার্ধনিক আযাসিভ গ্যাস থাকে। কিস্ত নিশ্বাস-পরিত্যক্ত, এঁ 


বায়ু ও বায়ু-সঞ্চালন ১৭ 


পরিমাণ বায়ুতে কার্বনিক আমিড গ্যাসের পরিমাণ অস্তত ৪০০ গুথ। 
্ৃতরাং, বেশ বুঝা যাইতেছে, প্রতি নিশ্বাসে আমরা বাহিরের বিশুদ্ধ 
বাযুতে অস্তত ১০০ গুণ অধিক কার্বনিক আসিভ গ্যাস যোগ করিয়া 
দিতেছি। প্রত্যেক মান্য প্রতি মিনিটে, গড়ে ১৮ বার, স্থতরাং প্রতি 
ঘণ্টায় ১ হাজার ৮* বার এবং প্রতি দিনে প্রায় ২৬ হাজার শ্বাস গ্রহণ 
ও ত্যাগ করে। প্রত্যেক ব্যক্তি প্রতি নিশ্বাসে স্বাভাবিক পরিমাণ 
অপেক্ষা ১০০ ভাগ অধিক কার্বনিক আসিভ গ্যাস পরিত্যাগ 
করিলে অসংখ্য মানুষ ও জীবজন্তর নিশ্বাস-প্রশ্বাস দ্বারা বাযুমণ্ডল 
প্রতিনিয়ত কি পরিমাণে দূষিত হইতেছে, তাহা সহজেই বোধগম্য 
হয়। বাণ্ু যি চঞ্চল না হইত এবং বাযু-সঞ্চালন না থাকিত, 
তাহা হইলে পৃথিবী কার্বনিক জ্যাসিড গ্যাসে পূর্ণ হইয়া 
জনমানবশুন্ত হইত । 

লঘু ও গুরু ভারযুক্ত দুইটি বাম্প একত্র থাকিলে পরম্পর মিলিত 
হয়। বায়বীয় পদার্থের ইহাই সাধারণ ধর্ম। বায়বীয় পদার্থের এই 
সাধারণ ধর্মকে বাম্প সংমিশ্রণ বলে। গৃহমধ্যস্থ বাষু নানাপ্রকার 
দুষিত পদার্থের সংমিশ্রণে মুক্ত স্থানের বাষু অপেক্ষা কিঞ্চিৎ ভারী 
হয়। বাহিরের বামু তাহার সহিত মিশ্রিত হইয়া, বিকৃত অংশ 
বাহির করিয়া লয়। 

বাড়ীর বা গৃহের অভ্যন্তরস্থ দুষিত বাষু বাহির করিয়া! দিয়া, 
বাহিরের বিশুদ্ধ বাফু ভিতরে আনাকে আত্যত্তরীণ বাযু-সঞ্চালন 
(:170692781 91001080101) ) বলে । আর, বাড়ীর চতুর্দিকের, অর্থাৎ 
বাহিরের বাতাস পরিশুদ্ধ করার জন্য বাসু-সঞ্চালনকে বহিঃপ্রদেশস্থ বায়ু- 
অঞ্চালন (9309881 ড 50081805010 ) বলে । যখন নৈনগিক উপায়ে 
বান্ধু-সধালন হয়, তখন তাহা প্রাকৃতিক নিয়মে বাসু-সধালন (50521 

২ 


১৮ প্রবেশিক! "গার্‌স্থা-বিজ্ঞান ও স্াস্থ্যবিধি 


ড62118107 ), আর যখন কৃত্রিম উপায়ে কল-যস্ত্রাদির সাহায্যে তাহা 
লম্পন্ন হয়, তখন তাহা কৃত্রিম বাযু-সঞ্চালন , ( 1816018870108] 
ড901186)0,) নামে অভিহিত হয়। ঘরের মধ্যে বাছুচলাচলের 
জন্য গৃহের দরজা-জানালাই (প্রধান অবলম্বন । কাজেই তাহা সর্বদা 
উম্মুক্ত রাখিতে হয়। এই প্রকার বাদু-সঞ্চালনকে “ভা?7.00 
1)0118110” অর্থাৎ দরজা-জানালাদির মধ্য দিয়া বাযু-চলাচল বলে। 

বাহিরের বায়ু বিশুদ্ধ ও নির্দোষ হইলে উপযুক্ত জানাল বা 
উপযুক্ত বায়ুপথ থাকিলে গৃহমধ্যস্থ বাযুও ব্বভাবত বিশুদ্ধ হয়। স্তরাং 
বাহিরের বাষুর দোষগুণের উপর বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা আবশ্যক । 
নগর ও শহর অঞ্চলে পলীর মত উন্মুক্ত স্থানের অভাব । সেইজন্য 
বায়ুচলাচলের উদ্দেশ্তে বাস্তাগুলি প্রশস্ত, ঘর-বাড়ীর উচ্চতা হাস এবং 
পার্শ্ববর্তী বাড়ীসমূহের মধ্যে প্রচুর ব্যবধান বাখার আবশ্যক হয়। 
তাহা ছাড়া, যাহাতে দূষিত পদার্থ বাতাসে প্রবেশ করিতে না পারে, 
সেইজন্য জল দিয়া বাস্তার ধূলি নিবারণ, রাস্তার আবর্জনা! যত সত্বর 
সম্ভব দূর করিবার ব্যবস্থা, ড্রেন "ও পায়খানা প্রভৃতি পরিষ্কৃত রাখা, 
প্রচুর খোলা জায়গার ব্যবস্থা রাখা এবং শহরের বাহিরে দুষিত সামগ্রীর 
ব্যবসায়ের স্থান নির্দেশ করা প্রয়োজন । 

নৈসগ্গিক বায়ু-সঞ্চালন (200781 ড 50171261077) "-নৈসগিক 
যে সকল উপায়ে বাযু-সধশালন হইতে পারে তাহা এই--১। কৃর্ধের 
ফিরণ দ্বারা, ২। গাছ-পালা হারা, ৩। বৃষ্টির ছারা, ৪ । ঝড়ের দ্বারা, 
৫ । বায়ু আগম-নির্গমের পথের ভ্বারা এবং ৬। বাম্প-সংমিশ্রণের হবার! । 

(১) হুর্-কিরণে রোগ-জীবাণু নষ্ট হয়; উত্তাপে বাতাস শু 
ও ' ছুর্ন্ধহীন 'হয়। নুর্ধের তাপে পৃথিবী-সংলগ্ন বাতাস গরম 
ও হান্কা হইয়া পড়ে।" 'বাতীস হাল্কা হইলেই উপরে উঠিয়া 


বায়ু ও রায়ু-সধ্গলন ১৯ 


যাক? সঙ্গে সঙ্গে চতুদিকের বিশুদ্ধ বাতাস আনিয়া তাহার স্থান 
অধিকার করে'। * 

(২) স্ুর্ধের কিরণে গাছ-পালা দিবাভাগে ার্বনিক আষিড 
গ্যাস গ্রহণ করে। বৃক্ষদেহে এ 'গাস ছুই ভাগে বিভক্ত হয়। 
তাহার একটি অগ্জান, (0৯৫9) ) অপরটি কার্বন (07002 )। 
কার্বন 'গাছ-পালার দেহের পুষ্টি সাধন করে। অক্সিজেন হ্বারা 
বাতাস বিশোধিত হয়। তাহা ছাড়া, যেখানে গাছপাল! বেশী, 
সেখানে বৃষ্টিও বেশী হয়।' বৃষ্টির দ্বারা বামুমধ্যস্থ দূষিত পদার্থ নষ্ট, 
হইয়া যায়। তাহাতে বায়ু বিশুদ্ধ হয়। 

(৩): বায়ুমধ্যে নানা প্রকারের দুষিত পদার্থ ভাসমান থাকে। 
মৃষলধারে বৃষ্টি হইলে সেই সকল দৃষিত সামগ্রী, উদ্ভিজ্জ ও জৈব রেণু, 
ধূম প্রভৃতি বৃষ্টি-বিধৌত হইয়৷ মাটিতে পড়ে। তাহাতে বায়ু বিশুদ্ধ 
হয়। বৃষ্টির সহিত বজ্রপাত হইলে বায়ুতে ওজোনের ( 02০06--08) 
পরিমাণ বৃদ্ধি হয়। ওজোন-বহুল বাতাস শ্বাস্থ্যের পক্ষে হিতকর। 

(৪) বাযুপ্রবাছের দ্বারা বায়ুর দূষিত অংশ বিভাড়িত হয়। 
গৃহমধ্যে দূষিত বায়ু থাকিলে তাহা অধিক পরিমাণ বায়ুর সহিত 
মিশিত হয়; ফলে, তাহার পরিমাণ হাস পায় এবং বাত্যাপ্রবাহে 
তাড়িত হইয়া গৃহমধাস্থ দুষিত বায়ু গৃহ হইতে নিষ্রাস্ত হয়। 

বাষু-সংমিশ্রণ ছাড়া ঝড়ের সময় গৃহমধ্যে সজোরে বাতাস 
প্রবেশ কধিয়া, গৃহমধ্যস্থ খারাপ বাতা'সকে ঠেলিয়! বাহির করিয়া লয়। 
গৃহে ও বাহিরে 'বামু-সঞ্চালনের পক্ষে ঝ়্বাত্যা বিশেষ কার্ধকরী । 
ঝড়ের সময় সকল স্থানে অপেক্ষাকত নির্দোষ বায়ু প্রবেশ 
করে, এবং আবদ্ধ দুষিত বাধু বাহির করিয়া দেয়। বাযুগ্রবাহ্‌ 
শক দিক্‌ দিশ্না গৃহমধ্যে প্ররেশ 'কবিয়া অন্য দিক্‌ দিয়া বাহির হইয়া 


২০ প্রবেশিক। গার্হস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


যাওয়ার নাম পপারক্লেশন (7১978856100 )। তবে এই পারফেশন 
সকল সময় বাযু-সঞ্চালনের সহায়তা করে না; কারণ, বায়ু-প্রবাহ 
সময় সময় একেবারে বন্ধ হইতে পাবে। 'পারক্লেশন” ছাড়া আর এক 
প্রকারে বায়ুপ্রবাহ বায়ুচলাচলের সাহায্য করিতে পাবে। ফাপা 
নলের উপর দিয়া বায়ু প্রবাহিত হইবার সময নলমধ্যস্থ বায়ুর 
কতক অংশ বায়ুপ্রবাহ শোষণ করিয়া লয়; ইহাকে 'আ্যাম্পিরেশন” 
(985778500) বলে । গৃহমধ্যে বাষু বা ধূম-নির্গমের চিম্নি 
, (00100065 ) থাকিলে, 'আযাম্পিরেশনের দ্বারা বায়ু শোষণ বা 
আকর্ষণের ফলে গৃহের দূষিত বায়ু ক্রমাগত বাহির হইয়া যায়। 

(৫) বায়ুর আগম-নির্গমের পথের উপরও বায়ু-সঞ্চালন নির্ভর 
ররে। আগম পথে বায়ু প্রবেশ করে, আর নির্গম পথে বাম 
বাহির হইয়া যায়। গ্রী্মপ্রধান দেশে দবজা-জানালা প্রভৃতির 
স্বারাই প্রধানত বাযু-সঞ্চালন হয়। বিশুদ্ধ বাতাস আগমের জন্ত 
দরজা-জানালা সর্বদা উন্মুক্ত রাখা আবশ্ক। কিন্তু, শীতগ্রধান 
দেশে দরজা-জানাল! বন্ধ করিয়া চিনির দ্বারা বাসুচলাচলের 
বন্দোবস্ত করিতে হয়। যেখানে দরজা-জানালা বামুচলাচলের 
প্রধান অবলম্বন, সেখানে দরজা-জানালা রুজু রুজু বসাইতে হয়। ঘরের 
দেওয়ালে বাতাস যাতায়াতের অন্য ক্ষুত্র ক্ষুত্র ছিদ্র রাখাও প্রয়োজন । 

(৬) বায়বীয় পদার্থের সাধারণ ধর্ম এই যে, বিভিন্ন প্রকারের 
বায়বীয় পদার্থ একত্রিত হইলে, সকল পদার্থের সমঘ্ত উপাদান 
সমভাবে মিশ্রিত না হওয়া পর্যস্ত বাযুবাশি ইতন্তত সঞ্চালিত 
হইতে থাকে | ইহাফেই বলে-্-সংমিশ্রণ ধর্য (9 01 101008107)। 
বাছবীয় পদার্থের এই ধর্ম আছে বলিয়াই, ঘরের বাতাস গৰম 
হুইলেই বাহিরে যায়, আর বাহিবের, ঠা বাতান ঘরে প্রবেশ 


বায়ু ও বায়ু-সধ্াাদন ২১ 


করে। যতক্ষণ না ঘরের ও বাহিরের বাতাসের উপাদানসমূহ সমান 
হয়, ততক্ষণ এই সংমিশ্রণ প্রক্রিয়া চলিতে থাকে । 

কৃত্রিম উপায়ে বায়ু-সঞ্চালন।-_পূর্বোন্িখিত ন্বাভাবিক উপায় 
ব্যতীত কত্রিম (4.7015919] বা 11501871081 ) উপায়েও বামু-সঞ্চালন 
করা যায়। কৃত্রিম পদ্ধতিকে তিন ভাগে বিভক্ত করা যায়; যথা-- 
১। ঘরের দুষিত বাদ টানিয়া বাহির করিয়া, বিশুদ্ধ বায়ুদ্বারা 
তাহার স্থান, পূরণ করিবার জন্য বামুশূন্য করণ বা৷ “ভ্যাকুয়াম্* পদ্ধতি 
€ ৪০৪); 38620, ) ও ২। দুষিত বামুকে তাড়িত করিবার জন্ক 
€প্লেনম' পদ্ধতি (6167)0। 95816]) ), এবং ৩। এক সঙ্গে এতছুভয় 
পদ্ধতির সমাবেশ। 

(১) ভ্যাকুয়াম পদ্ধতি (55০০৪) 95৪09], )।--দুইটি 
উপায়ে গৃহ দূষিত-বামুশূন্ত হইতে পারে । (ক) বৈছ্যতিক পাখা 
চালাইলে ঘরের দূষিত বাষু বিদুরিত হয় এবং বিশুয়ু বাষু তাহার 
স্কান পূরণ করে; (খ) চিমনির সাহায্যে বাযু-সঞ্চালন হয়; গৃহের 
উনানে অগ্নি প্রজ্লিত রাখিয়া তদুপরি একটি চিমনি বসাইলে অথবা 
ছাদের অব্যবহিত নীচে দেওয়ালের গায়ে ঘুল্ঘুলি থাকিলে, গৃহের বাস 
সেই চিমনি ও ঘুল্ঘুলি দিয় বাহির হইয়া! যায়। উত্তাপে বাযু-পরিমাণের 
আয়তন বৃদ্ধি হয় এবং ঘনত্ব কমিক যায়। তখন সেই পাতলা 
বাতাস উপরে উঠে এবং বাহিবের বাতাস তাহার স্থান অধিকার করে। 

(২) বায়ু-বিতাড়ন পদ্ধতি (7১1609]0 95866200 )।--এই 
পদ্ধতি অনুসারে পাখার দ্বার! অথব! বাম্পীয় জেট (3698) 366) স্বারা 
কিংবা অন্ত কোন যন্ত্রের সাহায্যে গৃহের বায়ু বাহির করিয়া দেওয়া যায়! 

(ক) এই পদ্ধতিতে গৃহের দূষিত বাযু. বিতাড়িত করিতে হইলে 
আট বা ততোধিক ব্লেডযুক্ত পাখার প্রয়োজন । বাদ নির্গমের পথও খুব 


২২ প্রবেশিকা 'গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


প্রশত্য হওয়া আবশ্তক। (খ) পইটম জেট' হ্থারা কৃত্রিম উপায়ে দূষিত 
বায়ু বাহির করা যায়। (গ) পাম্পের সাহায্যে বায়ু টানিয়া লওয়! 
যাইতে পাবে। 

স্থবৃহৎ ও স্বগ্রশস্ত হল-গৃহের বায়ু-সঞ্চালন জন্য “ভ্যাকুয়াম? ও প্লেনম্ঃ 
উভয় পদ্ধতিই প্রযুক্ত: হয়। লগুনের পালিয়ামেন্ট মহাসভা গৃহে ও 
কলিকাতার ট্রপিকেল স্থুলের “কুল রুম” (0০0০1 78007 ) বা ঠাণ্ডা ঘরে 
বায়ু-চলাচলের জন্য উভয় পদ্ধতি একযোগে কার্ধ করিতেছে । অবিরাম 
বিশুদ্ধ বায়ু সরবরাহের জন্যই বাযু-সঞ্চালনের কৃত্রিম উপায় অবলম্থিত 
হয়। বাযু-সঞ্চালনের নৈসগিক উপায়সমূহ মান্ধষের আয়ত্তাধীন নহে। 
মানুষ ইচ্ছা করিলেই সেগুলিকে নিয়ন্ত্রিত করিতে পারে না; কেন-না, 
বায়ুমণ্ডলের অবস্থার উপর তাহাদের কার্ধ নির্ভর করে। কিন্তু, কত্রিম 
উপায়সমূহ ব্যয়সাধ্য হইলেও“মাহ্ুষের আয়তাধীন। মানুষ তাহাদিগকে 
ইচ্ছামত নিয়ন্ত্রিত করিতে পারে। 

শ্বাস-প্রশ্বাদে বায়ুর পরিবত্ন 1 আমরা নিশ্বাস গ্রহণের 
সময় যে বায়ু টানিয়! লই তাহার অক্জান (05০) অংশের কতকটা 
রক্তের সহিত মিলিত হইয়া রক্তকে বিশুদ্ধ করে। এ বিশুদ্ধ রক্ত 
শরীরের মধ্যে সঞ্চালিত হইলে আমাদের জীবনরক্ষা হয়। আমাদের 
রৃক্তের সহিত অনেক দূষিত সামগ্রী নির্গত হয়। পরিত্যক্ত বায়ুর 
মধ্যে অঙ্গারায় ও জলীয় বাষ্প অনেক বেশী থাকে । অঙ্গারাস্সজান 
গ্যাস প্রতি হণ্টায় প্রায় & ঘনফুট পরিমাণ আমাদের নিশ্বাসের সহিত 
নির্গত হয়। নিশ্বাসের দ্বারা পরিত্যক্ত বাছুর নিয়লিখিত অবস্থাত্তর 
রন থাকে । যথা-- 

(১) উহার উষ্ণতা! বৃদ্ধি পায়) নাসিকার নিকট হাত দিলে তাহা 


বায়ু ও বায়ুসঞ্চালন ২৬ 


(২) উহাতে অনেক জলীয় বাম্প থাকে । ২৪ ঘণ্টায় গ্রায় পাচ 
ছটাক জল শরীঢ্ের ভিতর হইতে বাম্পাকারে বহির্গত হয়। শারীরিক 
পরিশ্রম হেতু ইহা আরও বৃদ্ধি পাইয়া থাকে ॥ 

(৩) উহাতে অঙ্কারাক্জান গ্যাসের পরিমাণ খুব বৃদ্ধি হয়। 

বাযু-মধ্যস্থ দুষিত পদ্দার্থ।--(১) প্রাণিগণের চর্ম ও লোম 
প্রভৃতি হইতে উদ্ভূত রেণু, ব্যাখিগ্রস্ত জীবদেহ হইতে পরিত্যক্ত স্তর 
দ্র রেণুরূপে বায়ুতে ভাসমান নানাপ্রকার . .ব্যাধিরীসত,.. বৃক্ষা্ির 
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গাদি সমুস্তূত রেখুও ব্যবহৃত বস্ত্রাদির রেণু$ কয়ল! নানাপ্রকার 
ধাতুপদার্থ এবং অন্ঠান্ত বহু পদার্থের হুল কণিকাসকল ধৃলিরূপে 
গণ্য হইয়া বাযুকে দূষিত করে। ধুম বামুমগুলের ভাসমান অতি 
সল্প গুঁড়া মাত্র) উহা! বামুকে বিশেষভাবে দুধিত. করে। .. সুকল 
প্রকার ধুলিকণাই অনেক সময় নানাবিধ রোগের. বীজে- "পরিপূর্ণ 
থাকে। 

(২) জীবের শ্বাস ক্রিয়ায় ও দহন ক্রিয়ায় বা জীবদেহের পচন 
ক্রিয়ায় সৃষ্ট কার্বনিক আযানিভ গ্যাস বায়ুকে-দূষিত-করে । 

(৩) আবদ্ধ স্থানে ময়লা সম্পূর্ণভাবে... দগ্ধ হইলে কার্বন মন্ঝ্মাইভ 

(08701 110100%109 ) নামক একপ্রকার ভয়ঙ্কর বিষাদ বাষ্প, তথায় 
্্ট হ্য়ু। . 
(৪) ঘে. জলাভূমিতে উদ্ভিদ বা জীবাদি পচে, তথায় এবং কয়লার 
খনিতে “মার্স গ্যাস, 81928 983 নামক এক প্রকার থারাপ বাষ্প 
উখিত হয়। উহা অত্যন্ত দহনশীল পদার্থ; সামান্ত কারণেই এ 
গ্যাস ধূপ করিয়া! জলিয়া উঠে। ইহাকে আমরা আলেয়া বলি 

(৫) জীবের মল-যৃত্র পচিয়। এমোনিয়! ( 4১707000189 ) নামক এক 
প্রকার উগ্রগন্ধযুক্ত বাম্পি বাধূতে মিশ্রিত হয়। 


- ২৪ প্রবেশিক! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


(৬) পাথুরে কয়লা পোড়াইলে এবং মানুষ ও অন্তান্ত জীবের দেহ 
বা যল পচিলে “হাইড্রোজেন সাল্ফাইড' (75070858. 9917)1)16 ) 
নামক গ্যাস উতৎপক্ন হয়। ইহার গন্ধ ঠিক পচা ডিমের গন্ধের মৃত। 

(৭). এতত্যাতীত, অপরিষ্কার পচা ড্রেন বা! নালা, পাট পচাইবার ও 
ধুইবার স্থান, মতন্যের বাজার, পশুপক্ষী বিক্রয়ের বাজার, চামড়ার 
বাজার, শামৃক পোড়াইয় চুণ প্রস্তুত করিবার স্থান, কসাইখানা, শহরের 
ময়লার গাড়ীতে আবর্জনা! বোঝাই করিবার জায়গা প্রভৃতি বিভিন্ন স্থান 
হইতে নানাবিধ উগ্রগন্ধযুক্ত গ্যাস বামুকে দূষিত করে। 

জনবল স্থানের বাঝুর অবস্থা কোন বহুজনাকীর্ণ বাযুপ্রবাহ- 
রহিত ঘরে অনেকক্ষণ বসিয়। থাকিলে, সাধারণ বক্তৃতাস্থলে, সভাগৃহে 
ও থিয়েটারে বহুলোক-সমাগম হইলে, নিশ্বাস-প্রশ্বাসাদির দ্বারা বায়ু 
দূষিত হয়; তৈলের আলো বা বাতি জালাইলে কিছুক্ষণের মধ্যে 
তথাকার বাষুতে অগ্জান গ্যাস ত্রাস পায় এবং অঙ্গারা়জান গ্যাস 
ঘনীভূত হইয়! বিষক্রিয়া করিয়া থাকে । এরূপ স্থানে কিছুক্ষণ 
থাকিলে সুস্থ ব্যক্তির মাথাধর1, মাথাভাব-বোধ, নিদ্রালুতা, আলম 
ও মনের অশান্তি, ক্ষধামান্দ্য ও ক্ষেত্রবিশেষে গাঁবমি-বমি এবং 
স্বাস-প্রশ্থাসে কষ্ট হইয়া থাকে । এরপ ক্ষেত্রে বায়ুর উত্তাপ-বৃদ্ধির জন্যও 
ক্লেশের আধিক্য হয়। মকল রকম গীড়াই এরূপ দুষিত স্থানে বৃদ্ধি 
পাইয়া থাকে । 

বক্ষ প্রভৃতি বায়ু-বাহিত ব্যাধির সহিত নির্মল বাসর 
জন্ন্ধ-_ভারতবর্ষে উত্তরোত্তর যন্্ারোগ-বৃদ্ধিব একটি কারণ দূষিত 
বাস্থ। আঘধিক, নৈতিক ও সামাজিক কারণে ভারতবর্ষের অধি- 
বাসিগণের মধ্যে ফক্স রোগের আধিপত্য বিস্তার কৰিবার স্থযোগ 
ঘটিয়াছে। তাহা ছাড়া নৃত্তন নৃতন পাটকল, চটকল, চাউলের কল 


বায়ু ও বায়ু-সথগলন ২৫ 


প্রভৃতি নানাপ্রকার কলকারখানা হইতে উদশীর্ণ ধৃম স্থাস-প্রশ্থাসের 
বায়কে নিয়ত দুষিত করিতেছে । শহরের বায়ু শত শত রোগীর 
ফুস্ফুস 'হইতে যক্ধার জীবাণু লইয়া ধূলিকণার সহিত মিশাইয়া 
দিতেছে । দরিদ্রদিগের শহরতলী ও নিকটবর্তী পল্লীকুটীরশ্রেণী 
এমনভাবে দুষিত-বাযুপূর্ণ ষে, ক্রমশ যক্ষা রোগ তাহাদের মধ্যে প্রসার 
লাভ করিতেছে । 

এতঘ্যতীত, কলিকাতার মত বৃহৎ নগরীতে যে সকল হম্মাশ্রেণী 
ৃষ্ট হয়, তাহার মধ্যেও এমন কক্ষ আছে, যাহার বাঘু অত্যান্ত দুষিত) 
কারণ, সে স্থানের বায়ু, সঞ্চালনের অভাবে রুদ্ধ থাকিয়া, রোগের আকন 
হইয়া আছে। বায়ু বিশুদ্ধ থাকিলে কোন পীড়া জন্মে না। দুষিত 
বায়ু রোগ-উৎপাদনের একটি প্রধান কারণ। সহজেই অঙ্গুমান করা 
যায় যে, একজন স্থস্থ ব্যক্তি যদি ৬১৬৮,০০* বর্গফুট দুষিত বায়ু 
শ্বাস-প্রশ্বাসের সহিত শরীরের জন্য গ্রহণ করেন, তবে কোন না কোন 
রোগের বীজাণু শরীরে প্রবেশ করিবেই। দুষিত বায়ুর সহিত যে 
পীড়া শরীবে সংক্রামিত হয়, তাহাকে বাযুবাহিত পীড়া (417 00209 
1)1568508 ) বলে। 

বায়ু নিয়লিখিত তিন প্রকারে শরীরে ব্যাধি সংক্রামিত করিতে 
পাবে। প্রথমত, পীড়ার জীবাণু বাযুর সহিত সাক্ষাৎভাবে এক ব্যক্তি 
হইতে অপর ব্যক্তিতে সংক্রামিত হইতে পাবে। যেমন, যক্ষা, 
ইন্ফুয়েগ্া, বসন্ত, হাম প্রভৃতি । দ্বিতীয়ত, আধুনিক বৈজ্ঞানিক কলযন্্র ও 
অন্তান্ত ব্যবসায়ের জন্য বায়ুবাহিত দুষিত পদার্থ শ্বাসনালীর দ্বার! শরীরে 
প্রবেশ করিয়া ব্যাধি সংক্রামিত করে। কলের ধূয, তামা, সীসা, 
আর্সেনিক প্রভৃতির গুঁড়া, তামাক, কয়লা, পশুর লোম গ্রভৃতি হইতে 
নিক্গি ময়ল! দেহমধ্যে গ্রবেশ করিলে ব্যাখি সংক্রামিত হয়। তৃতীয়ত, 


২৬ প্রবেশিক! গাহৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


অস্বাস্থাকর ক্ষার ও আযসিডের কারখানায় গ্যাস, আসে'নিক ও এমোনিয়া! 
প্রভৃতি শীরে প্রবেশ করিয়া ব্যাধি জন্মায়! 

বাস্ঝু ধনৈহুজ উপায় ।_যে সকল উপায়ে বায়ু পরিশু 
হইতে পারে, নিয়ে তাহা বিবৃত হইতেছে ; যথা-_- 

১। উদ্ভিদ হূর্যকিরণ সাহায্যে “কার্বনিক আযসিডও হইতে কার্বন 
গ্রহণ করিয়া অক্সিজেন পরিত্যাগ করে । এতদ্যতীত “এমোনিয়! গ্যাস 
বৃষ্টির জলে দ্রব হইয়! ভূমিতে পতিত হইলে, বায়ু শোধিত হইয়! থাকে। 
২1 বায়ুর ভাসমান দুষিত পদার্থ বৃষ্টির সহিত ভূমিতে পতিত 
হইলে বায়ু পরিশুদ্ধ হয়। 

৩। ভোর্টিলেশন অর্থাৎ বাযু-চলাচল ।-_-বিশুদ্ধ বায়ু দৃঘিত বায়ুর 
সহিত মিশ্রিত হইলেই বাযু-চলাচল ক্রিয়া সাধিত হয়। অর্থাৎ, অন্ত 
স্থানের বিশুদ্ধ বায়ু দূষিত বায়ুর সহিত মিশ্রিত হইয়া উহাকে কতকটা 
শোধন করে। 

(ক) ডিফিউশন ( সংমিশ্রণ )।--ছুইটি গ্যাস একত্রে রাখিলে 
তাহার! পরস্পরের সহিত মিশ্রিত হুইয়! যায় । গ্যাসের এই ক্রিয়াকে 
সংমিশ্রণ ক্রিয়া কহে । কোন কোন গৃহের দরজা-জানাল। বন্ধ করিয়া 
রাখিলেও উক্ত গৃহমধ্যস্থ বায়ু প্রাচীর ভেদ করিয়া বাহিরের বায়ুর সহিত 
কিছু পরিমাণে মিশ্রিত হয় এবং বাহিরের বাযু-সংমিশ্রণ ক্রিয়ার দ্বারা 
গৃহযধ্যে প্রবেশ করে। এই ক্রিয়ার দ্বারাই গৃহাত্যস্তরস্থ বায়ু 
কিয়্ৎ্পরিমাণে শোধিত হয়। চুণকাঘ করা গৃহ হইলেও উক্ত ক্রিয়া! 
সম্পাদিত হইয়া থাকে । কিন্তু মাচুষের ফুস্ফুস ও ত্বক হইতে যে জান্তব 
পদ্বার্থ নির্গত হয় তাহা উক্ত ক্রিয়ার দ্বারা শোধিত হইতে পারে না। 

(খ) উত্তাপের তারতম্যান্ছসাবে বাু শোধিত হয়। গৃহের বাস্ধু 
বাহিরের বায়ু অপেক্ষা উত্তপ্ত হইলে. উধ্বে” ধাবিত হয় এবং বাহিয়েন্স 


বায়ু ও বায়ু-সঞ্চালন ২৭ 


শীতল বায়ু সেই স্থান পূর্ণ করে। এইজন্য ছাদের নিকট বাযু-নিরগমনের 
জন্ত ছোট ছোট গোলাকার পথ রাখা হুয়। 

(গ) ঝড়ের দ্বারা বায়ু পরিশোধিত হয় । 

(ঘ) অক্সিজেন ক্রিয়ার বারা বায়ু পরিশুদ্ধ হয়। অগ্নি লাগিলেও, 
বায়ু শোধিত হইয়া থাকে । 

(5) রাসায়নিক ক্রিয়ার দ্বার বায়ু পরিশুদ্ধ হয়। ঘে লকল 
পদার্থের দু্গন্ধনাশক ও দুর্গন্ধহারক গুণ আছে, সেই সকল রাসায়নিক 
ত্রব্য বাবহার করা যাইতে পারে । এই প্রকার রাসায়নিক ত্রব্য তিন 
ভাগে বিভক্ত-_-কঠিন, জলীয় ও বাম্পীয় | 

প্রথম--কঠিন; যথা-চার্কোল্‌, শুফ মাটি, চুণ, সাজিমাটি, 
আলকাত রা ও হীরাকষ প্রভৃতি । 

দ্বিভীয়- জলীয়; যথা-_ফুইড, ক্লোরাইড. অভ. জিঙ্ক, তাপিন 
তৈল, ফমর্ণলিন্‌, আইজল্‌, লাইসল্‌ ও পারক্লোরাইড. লোশন্‌। 

ভৃতীয়-_বাম্পীয়; যথাঁ_ওজোন্, ক্লোরিন এবং সাল্ফিউরিয়স্‌ 
আসিড ইত্যাদি। 

অঙ্গার-চুর্ণ, শুফ মাটি ও ছাই প্রভৃতি বারা দূষিত পদার্থ উত্তমরূপে 
ঢাকিয়া রাখিলে, বিষজনিত রোগ হইবার সম্ভাবনা অল্প । 

গন্ধক পোড়াইলে সাল্ফিউরিয়স্‌ আিভ উৎপন্ন হয়। যে গৃছে ছোয়াচে 
ব্যাধি্রস্ত রোগী থাকে, সেই গৃহ পরিশোধিত করিবার জঙ্ ইহা বন্থ 
প্রাচীন কাল হইতে ব্যবহৃত হইতেছে । গৃহ পরিশোধিত করিতে হইলে 
দরজা-জানালা বন্ধ করিয়া গৃহের মধ্যে গন্ধক পোড়াইতে হয়। পরে চারি 
পাচ ঘণ্টা অতীত হইলে দরজা ও জানালাসমূহ খুলিয়! দেওয়া উচিত। 

প্রত্যেকের কত বায়ুর গ্রয়োজন ।- পরীক্ষার ছারা স্থিনীরুত 
হইয়াছে, প্রত্যেক হুস্থ ব্যক্তির জন্য ঘণ্টায় তিন হাজার 


২৮ প্রবেশিকা! গাহৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


বিশুদ্ধ বায়ুর .আরশ্বক। গ্যাসের আলো জ্বালিলে ঘণ্টায় ছয় 
"ন-ফুট অঙ্গারাক্ ( কার্বনিক আযানিড.) গ্যাস উৎপন্ন হয়। ইহাকে 
পরিশুদ্ধ করিবার জন্য দশ হাজার ঘন-ফুট বিশুদ্ধ বাষুর প্রয়োজন । 
দীপালোকে ঘণ্টায় অর্ধ ঘন-ফুট অঙ্গারাম্জান গ্যাস উৎপন্ন হয়। 
এই জন্ত গৃহে প্রদীপ জলিলে কেবল দাহ্জনিত দুষিত পদার্থকে 
শোধন করিবার জন্য নয় শত ঘনফুট বিশুদ্ধ বায়ুর প্রয়োজন । 
পীড়িত ব্যক্তির দেহ হইতে জান্তব পদার্থ অধিক পরিমাণে নির্গত 
হয়। এই নিমিত্ত হাসপাতালে আরও অধিক বিশুদ্ধ বায়ুর আবশ্বক 
হইয়া পড়ে। সুস্থ ব্যক্তির পক্ষে ঘণ্টায় তিন হাজার ফুট এবং 
পীড়িত ব্যক্তির পক্ষে চারি অথবা সাড়ে চারি হাজার ঘন-ফুট 
বিশুদ্ধ বাছু প্রয়োজন হয়। 

প্রত্যেকের কত স্থান প্রয়োজন ।--কোন স্থানের বাযু-চলা- 
চগের বিষয় স্থির করিতে হইলে কেবল ঘনস্থানের ঘন পরিমাণ না ধরিয়া 
বাসস্থান এবং মেঝের জায়গ! অথবা! মধ্যবর্তী স্থানের হিসাব ধরিয়া স্থান 
নিধারণ করা উচিত। কোন গৃহ যদি অল্প-পরিসর হয় অর্থাৎ মেঝেতে 
জায়গা কম থাকে এবং গৃহের উচ্চতা বেশী হয়, তাহা হইলে সেই 
গৃহের ঘনস্থান অপর একটি অধিক প্রশস্ত ও কম উচ্চ গৃহের 
ঘনস্থান অপেক্ষা বেশী হইতে পারে। কিন্তু প্রথমোক্ত গৃহ-কক্ষ 
হইতে যে উত্তমব্ধপে বাযু-পরিচালন হইবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ 
নাই। এই নিমিত্ত অত্যধিক উচ্চ গৃহে বাযু-পরিচালনার জন্ত 
ঘনস্থান হিসাব করিতে হইলে, তাহার উচ্চতা! ১২ ফুটের অধিক 
গ্রথনা করা উচিত নহে; কারণ, ১২ ফুটের অধিক উচ্চ গৃহে 
ভালরূপে বাযু-সঞ্চালন হম না। প্রত্যেক ব্যক্তির জন্ত বিলাতের 
ছাত্রাবাসে ৩০ বর্গফুট এবং ২৪* ঘন-ছুট স্থান এবং জেলে ৮** 


বায়ু ও বায়ু-সঞ্চালন ২৯ 


ঘন-ফুট স্থান দেওয়া হয়। প্রত্যেক দেশীয় সৈম্তকে ৬২ বর্গফুট এবং 
দেশীয় কয়েদীকে” ৩৬ বর্গফুট স্থান দেওয়া হইয়া থাকে । আমাদের 
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-পরিচালিত ছাত্রাবাসে একজন ছাজ্ধের জন্য 
৬০ বর্গফুট পরিমিত স্থান নির্দিষ্ট আছে । অনেক সময় লোকের 
ওজন অনুসারে স্থান পরিমিত হইয়া থাকে । এক পাউগ্ড ওজনের 
মানুষের জন্য ছুই বর্গফুট জায়গা দেওয়া হয়। 


(গ) জল 


জল' আমাদের জীবনম্বরূপ | মানুষের শরীরে স্বীয় ওজনের ৬$ ভাগ 
জল আছে। রক্তের শতকর! ৮* ভাগ জল, মন্তিফের শতকর! ৮* ভাগ 
জল, কঠিন হাড়েও শতকরা ১* ভাগ জল আছে। আমরা যাহা আহার 
করি, তাহাতেও অনেকখানি জলীয় অংশ থাকে । সুতরাং, বেশ বুঝা 
যাইতেছে, জীবনধারণের জন্য জল কত প্রয়োজনীয় । 

জলের আবশ্টকত1।--জীবনধারণের পক্ষে জলের অশেষ' 
প্রয়োজনীয়তা আছে। আমরা তৃষ্ণা-নিবারণের জন্য জল পান করি । 
জল দেহের রক্ত তরল রাখে । পাচক রস ও দ্বেহের যাবতীয় জলীয় 
অংশ জল হইতে সংগৃহীত হয়। তাহা ছাড়া, জল শরীরের বিভিন্ন 
অংশের গঠনে সহায়তা করে। শরীর বিধৌত করিবার জন্য জলের 
প্রয়োজন হয়। শরীরের দুঘিত পদার্থসমূহ জলের সাহায্যে প্রজ্রাব 
ও ঘর্মরূপে বাহির হইয়া যায়। জলে অবগাহন করিয়া আমরা 
দেছের ময়লা ধৌত করি। কাপড়, জামা, তৈজসপত্র ও গৃহাদি 
ধৌত করিবার জন্য জলের প্রয়োজন হয়। এতন্তিক্, রাস্তা, ঘাট, 
নামা প্রভৃতি ধৌত করিবার অন্ত, গোমহিঘাদি জীবজন্তর ও বৃক্ষলতাদির 


৩০ প্রবেশিক। গারহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


জীবনধারণের জ্য, বন্ধনের উদ্দেশ্যে, শৌচক্রিয়া, অগ্রি-নির্বাণ, বাষসায়- 
বাণিজ্যাদির সুবিধা, গাড়ী ও আন্তাবলাদি ধৌত করিবার জি 
জলের একাস্ত গ্রয়োজন হয়। 

গঠন ও প্রকতি। ছুই ভাগ না বররন এবং 
এক ভাগ অশ্লজান (086) গ্যাস-__-এই ছুইটির রাসায়নিক সংযোগে 
জল (1720) উৎপন্ন হয়। জলের তিনটি রূপ--(১) বাম্পীয়, (২) 
তরল ও (৩) কঠিন। বাম্প, কুয়াসা, শিশির, মেঘ, বরফ, শিলা বৃষ্টি 
ও তুষার প্রভৃতি জলের বিবিধ রূপান্তর মাত্র । 

জল শীতল, স্বচ্ছ, তরল ও অনমনীয়। জল স্বাদহীন, গন্ধহীন 
ও বর্ণহীন। ১০০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড তাপে (100, 0000£7896 ) 
অথবা ২১২০ ডিগ্রী ফাবেনহিট তাপে (219 ৮") জল ফুটিতে থাকে । 
কিন্তু ০০ ডিগ্রী সেট্টিগ্রেড বা ৩২০ ডিগ্রী ফারেনহিট তাপে জল 
জমিয়া বরফ হয়। উত্তপ্ত হইলেও জলের আয়তন-বুদ্ধি হয়, আবার 
ঠাণ্ডা হইলেও জলের আয়তন বাড়ে । ৪* ডিগ্রী সেট্টিগ্রেড তাপে জল 

বেশী ঘন হয়। 

রি খরা ও গত জল (880 & 3০1 906), এ্খর? 
জলকে ম্মৃদু' করিবার উপায় এবং সাবানের উপর ভাহার 
প্রতিক্রিয়া ।-__জলের মধ্যে রাসায়নিক দ্রব্যের সংমিশ্রণ হেতু অনেক 
মময় দেখা যায়, সাবান গুলিলে কতকগুলি জলে ফেনা হয় না। 
সেই জলকে “খর জল ( ন৪: ডাছ০:) বলে। আর যে 
জলে সাবান গুলিলে সহজে ফেনা উঠে, তাহাকে মহ" (9০ 
ঘা৪:৪:.) জল বলে। প্রথমো জলে ক্যাল্সিন্রম (08101050.) 
ও  ম্যাগনেলিয়ম (1150981020 ) ধাতুর 080990869" ন 
133-087056--এই ছুইটি "যৌগিক সংমিশ্রণ না থাকিলে, উক্ত জল 


জল ৩১ 


ফুটাইলেও তাহাতে. ফেনা হয় না। ইহাকে স্থায়ী খরতা 
€ 79177006706 চ5290985 ) ঘলে। পরুন, 05290708৮5 ও 
[37-9811509%9 মিশ্রণে যে কাঠিন্য (787071685 ) জন্মের জল 
ফুটাইলে তাহা দূরীভূত হয় এবং তাহা হইতে কার্বনিক আসিড গ্যাস 
নির্গত হইয়া যায়। ফুটাইবার পর সেই জলে সাবান গুলিলে 
বেশ ফেনা হয়। ইহাকেই অস্থায়ী খরতা (7007700187 
178701798 ) বলে। 

স্বাভাবিক জলে যদি স্থায়ী খরতা৷ ( 76710810101 11870116989 ) 
থাকে, তাহা হইলে তাহা নিরারুরণের জন্ত তাহার সহিত চুণের জল বা 
সোডা মিশান প্রয়োজন । 

খর জলের প্রকৃতি ।_ (ক) খর জল (10219 ৪৮০: ) দিয়া 
রান্না করিলে খান্-ব্রব্য ভাল সিদ্ধ হয় না; কারণ, রদ্ধনকালে উহার 
ভিতর জল যাইতে পাবে না। 

(খ) সাবান গুলিলে বিস্তর সাবান নষ্ট হয়। সাবানে ফেনাও 
হয় না, কাপড়ও ভাল পরিষ্কার হয় না। 

মৃতু জলের প্রকৃতি ।-_-(ক) বায়ু হইতে কার্বনিক আ্যাসিড গ্যাস 
টানিয়া লইয়া মৃদু জল (9০1 ভা 869: ) খর জলে (1787৫ 267) 
পরিণত হইতে পারে । 
 (খ)ট সেই হেতু মৃছু জল (১০1৮ ৪1৩: ) ধদি সীসার নল, 
তামার নল কিংবা দস্তার নলের: মধা দিয়া যায়, অথবা উক্ত তিন 
ধাতুর নিমিত ট্যাঙ্কে সংগৃহীত থাকে, তাহা হইলে উক্ত তিন 
ধাতুর সংমিশ্রণে জল দূষিত হইতে পারে । . 

জনপ্রতি দৈনিক কি.পরিমাণ জলের প্রয়োজন ।--গ্রত্যেক 
ব্যক্তির দৈনিক কত জলের প্রয়োজন হয়, তাহা নির্ণয় কর! ছুরূহ। 


৩২ প্রবেশিক। গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


দেশের জল-বাযু ও ব্যক্তিগত অভ্যাসের উপর বাবহাধ জলের 
পরিমাণ নির্ভর করে। পানীয় হইতে আরম্ভ করিয়া সকল প্রকার 
ব্যবহারের জন্য প্রতি লোকের সাধারণত গড়ে ৪ মণ (৩০ গ্যালন ; 
প্রতি গ্যালন প্রায় ৫ সের.) জলের প্রয়োজন হয়। গ্রীক্ষকালে ' 
উক্ত পরিমাথ বাড়িয়া ৫ মণে (৪০ গ্যালনে ) দাড়ায় । সথস্থ দেহের 
পক্ষে এই পরিমাণ জল হইলেই চলে; কিন্তু রুপ্রদেহে আরও একটু 
বেশী জলের আবশ্তক হয়। এক এক রোগীর জন্য গড়ে দৈনিক 
প্রায় ৬ মণ (৫* গ্যালন) জলের আবশ্ক হয়। গৃহপালিত পশুর 
মধ্যে ঘোড়ার জন্য প্রত্যহ ১৫ গ্যালন এবং গরুর জন্য ১২ 
গ্যালন জল লাগে । তবে, খতু হিসাবে আবার পরিমাণের ইতরবিশেষ 
ঘটে । 

নিশ্বাস, ঘর্ম, মুত্র ও বিষ্ঠার সহিত শরীর হইতে প্রত্যহ প্রায় তিন 
সের জল বাহির হইয়া যায়। এই ক্ষতিপূরণের জন্য আমাদের তৃষ্ণা বা 
পিপাসা হয়। গ্রীষ্মকালে ঘর্ম অধিক হয়; তাই তৃষ্কাও বেশী লাগে। 
বহমূত্র রোগীর দেহ হইতে প্রম্রাবের সহিত অধিক জল নির্গত হয়। 
সেইজন্য তাহাদের পিপাসাও অধিক। 

স্বান্ছ্যের সহিত সন্ধজ্ধ।__পিপাসা-নিবারণের জন্ত প্রত্যেক 
ব্যক্তির গড়ে /২॥ সের হইতে /৩ সের জলের আবশ্বক হয়। 
পরিশ্রম, বয়স ও খ্তু বিশেষে তৃষ্জার তারতম্য ঘটে। জলের 
অভাবে পরিপাক ক্রিদ্থার ও পুষ্টির ব্যাঘাত ঘটে। মাংসপেশী ও 
আযুমগ্ডলী নিত্েজ হইয়া পড়ে এবং শরীর শুষ্ক ও শক্ত হইয়া যায়। 
জলের অভাবে রক্ত গাঢ় হওয়ায়, শরীরের দৃধিত অংশ বাহির 
হইতে পারে না। ঘম? গ্রত্াব ও যলের পরিমাণ কমিয়া যায় 
এবং শীজ্জই শরীর রুগ্ন হইয়া পড়ে। পক্ষাস্তরে, দূষিত জল পান 


জল ৩৩ 


করিলেও নানা বিপত্তি ঘটে। দূধিত জলের সহিত নান৷ 
ব্রোগ-জীবাণু বর্তম্যন থাকে । জলের সহিত তাহা শরীরে প্রবেশ 
করিয়া নানা উতৎ্কট ব্যাধির স্থটটি করে। ম্থতরাং, বেশ বুঝা 
যাইতেছে, স্বাস্থ্যের পক্ষে জল কত প্রয়োজনীয় এবং বিশুদ্ধ জল 
কত উপকারী । 

জল সরবরাহ ।-_মূলে সমুত্রই সংসারের যাবতীয় জল সরবরাহের 
প্রধান, আদি ও অফুরন্ত উৎস। গ্রীষ্মমগ্ডলে অহনিশ কুর্ধের উত্তাপে 
জল সমুদ্র হইতে অদৃশ্য বাম্পাকারে শূন্যে উঠিয়া! যাইতেছে । হিসাব 
করিয়া দেখা গিয়াছে, সমুদ্রের উপরিভাগস্থ প্রতি বর্গ মাইল স্থান হইতে 
প্রায় ৭০* গ্যালন বা ৩৫০* সের জল প্রতি মিনিটে বাম্পাকারে শুন্ধে 
উখিত হইতেছে । সমুক্রোপরি প্রবহমান বায়ুর সহিত সেই বাষ্প 
মিশ্রিত হওয়ায় বাতাস আর্দ্র হইতেছে, 'আর ঠাণ্ডা বাতাসে জমাট 
বাধিয়া মেঘের সৃষ্টি করিতেছে । পরে সেই মেঘই বিগলিত হইয়! 
বৃষ্টি, বরফ, শিশির, কুয়াসা ও তৃষাররূপে পৃথিবীতে পৌছিতেছে। 
স্থতরাং, বেশ বুঝা যাইতেছে, বামুমধ্যস্থ ঘনীভূত জলই আমাদের 
স্বাভাবিক জল সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র । 

প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় এবং কতিম উপায়ে ।--ছুই ভাবে আমবা 
জল প্রাণ্ধ হই। বৃষ্টির জল, ভূ-গর্ভস্থ জল, হদের জল ও ঝরণাঁর 
জল-_প্রাকৃতিক জলের পর্যায়ভূক্ত হয়। পর্বতগাত্র-স্ংলগ্ন বরফ-গল! 
জল, বৃষ্টির জল বা উৎসের জল নদীন্ধপে প্রবাহিত হয়। নদী 
ভিন্ন আমরা আরও নানা স্থান হইতে জল প্রাপ্ত হই? যথা. 
উৎস বা ঝরণা, গভীর কৃপ, অগভীর কৃপ, পু্রিণী, পর্বতগা, হৃদ, 
নলকৃপ প্রভৃতি। এইক্প নান স্থান হইতে আমাদের জল সরবরাহ 
হইয়া থাকে। 


ধ্ও 


৩৪ প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


বৃষ্টির জল (£.17 505: )।-_বুট্টির জল সর্বাপেক্ষা বিশ্ুদ্ধ। 
কিন্ধ, প্রথম পশলা বৃষ্টি বায়ুমণ্ডলস্থ ধূলিকণা ও, দূষিত বাম্পাদি, 
জৈব পদার্থ ও জীবাণু প্রভৃতি দ্বারা দৃষিত হয়। তার পর যে বৃষ্টি 
পতিত হয়, তাহা পরিষ্কার পাত্রে ধরিয়া রাখিলে বিশুদ্ধ ও সুপেয় 
পানীয় জল পাওয়া যায়। 

বৃষ্টির জলের কতকাংশ বাম্পাকারে উঠিয়া যায়; কতকাঁংশ নদী, 
খাল, বিল, হ্বদ ও পুক্করিণীর জল সরবরাহ করে; কতক সমুত্রে চলিয়া 
যায়, আর কতকাংশ মাটির মধো প্রবেশ করে । বৃষ্টির জলের যে অংশ 
' মাটিতে প্রবেশ করে, তাহার পরিমাণ একেবারে অল্প নহে । এই জল 
হইতেই প্রশ্রবণ, দীধিকা, কৃপ প্রভৃতির সৃষ্টি হইয়া থাকে । 

পূর্বে বল! হইয়াছে, ভূ-গর্তে বিভিন্ন শ্রেণীর মৃত্তিকার ত্র রহিয়াছে । 
সেই সকল সুরের কোনটির মধ্য দিয়া জল সহজে চৌয়াইয়া যাইতে 
পারে, আবার কোন স্তর এত কঠিন যে, তাহার মধ্যে মোটেই 
জল প্রবেশ করিতে পারে না। শেষোক্ত অশোষক স্তরে যে জল 
সঞ্চিত থাকে, কৃপ প্রভৃতি হইতে আমরা সেই জল প্রাপ্ত হই। 
মুত্তিকার উপরিভাগস্থ দুষিত পদার্থ বৃষ্টির জলে দ্রবীভূত হইয়া 
গ্রথম শোষক স্তরের উপরিস্থ জলের সহিত মিলিত হয়। এইরূপে 
প্রথম শোষক বা রসবাহী ত্তরের অনেক দূর পর্ধস্ত জল দূষিত 
অবস্থায় থাকে । 

সমতল ভূমির জল (3071805 ঘা &০7. )।--উচ্চ ভূমির 
(01879) বা পর্বতগাত্র-বিধোত জল লোকালয়ের মধ্য দিয়া না 
আনাম» কতকটা বিশুদ্ধ থাকে । উহাতে ধাতব পদার্থ, লবণ ও উদ্ভিজ্জ 
উপাদান থাকে বলিয়া পর্বতগাত্র-ব্রিধোত জল অপেক্ষাকৃত স্ুন্বাছু। 
পুকুর, খাল, বিল, ডোবা! প্রভৃতির জল নিয় সমতলভূমির ( 1,01870 


জল ৩৫ 


89০9 ৪৮০: ) জল । জৈব ও উত্ভিজ্জ মল দ্বারা এই সকল জল 
হৃষ্ট হইতে পারে ।* 

ভূ-গর্ভস্থ জল (07091) ৪9: )।--বারণা ও কূপ হইতে 
আমরা এই জল প্রাপ্ত হই। জমির প্রকৃতি অনুসারে কূপ গভীর ও 
অগভীর হইয়া থাকে। বীাকুড়া ও বীরভূম জেলায় গভীর কৃপ দেখা 
যায়। গভীর কৃপগুলির জল স্বভাবত বিশুদ্ধ; কেন-না, তাহারা প্রথম 
রসবাহী স্তর ছাড়াইয়া যায়। গভীব ঝরণার (1)66]) 97071789 ) জল 
স্ুস্বাছু ও খর। ঝবণার নানা প্রকারভেদ আছে; যথা,_-উষ্জজলের , 
ঝরণা, মেন স্প্রীং (8181) 90008 ), ল্যাণ্ড ম্প্রী, ইণ্টারমিটেন্ট 
দ্প্রীং প্রভৃতি । 

পুক্ষরিণী |-_পুফ্ষরিণীর জল দুই প্রকারে সরবরাহ হয়। প্রথমত, 
মাটির মধ্য দিয়া চোয়ান জল আসিয়৷ পুফ্রিণীতে পড়ে? দ্বিতীয়ত, 
পু্ধরিণীতে বৃষ্টির জল পতিত হয় এবং পার্ববর্তী স্থানসমূহ হইতে বৃষ্টির 
জল গড়াইয়! পুফ্করিণীতে পড়ে। 

নদীর জল।-_প্রশ্রবণ হইতে উৎপন্ন নদীর জল অতি স্বচ্ছ ও 
বিশ্তদ্ধ থাকে । বনু প্রত্রবণ মিলিত হইলে নদীর স্থট্টি হয়। পর্বতগাত্র 
বাহিয়া জলপ্রবাহ নদীতে মিশিলেই নদীর জল কর্দমাক্ত ও ঘোলা হইয়া 
উঠে। যতই জনপদের মধ্য দিয়া নদী প্রবাহিত হইয়া সমুদ্রাভিমুখে 
অগ্রসর হয়, ততই নদীর জলের সহিত নানা প্রকারের "আবর্জনা আসিয়া 
মিশিতে থাকে । 

বাংল। দেশে জল সরবরাহ ।_-বঙগদেশ নদীব্ল। প্রধানত 
নদী হইতেই বাংলার অধিকাংশ স্থানে জল সরবরাহ হুইয়া থাকে। 
নদী ভিন্ন বাংলার বহু স্থানে দীঘি বা পুক্তরিণী, ইদারা, কৃপ প্রভৃতি 
খনন করিয়াও জল সরবরাহ কবা হয় । পূর্ব বঙ্গ নদীবহুল। 'সেখানকার 


৩৬ প্রবেশিক! গাহস্থা-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


অধিবাসিগণ সাধারণত নদীর জল ব্যবহার করিয়! থাকেন। বাসস্থান 
হইতে নদী একটু দূরে হইলে সেখানকার অনেকে 'পু্ধরিণী, খাল ও 
কূপ প্রভৃতির জল দ্বারা জলের অভাব মোচন করেন। বর্ধাকালে 
বজদেশ, প্রধানত পূর্ব বঙ্গ, জলে ভাসিয়া যায়। সেই বর্ধার জলে 
খাল, বিল ও পুষ্করিণী পূর্ণ হইয়া উঠে এবং তাহাতে জলকষ্ট 
দুর হয়। | 
কিন্তু পশ্চিম বঙ্গ পূর্ব বলের ন্যায় নদীবহুল নহে । খাল, বিল, 
পু্রিণীর সংখ্যাও কম। সেইজন্য পশ্চিম বঙ্গে প্রায়ই জলকষ্ট লাগিয়া 
আছে। বিশুদ্ধ পানীয় জল পাওয়া-তো দুরের কথা, অনেক গ্রামে 
জল একেবারেই ছুণ্রাপ্য । যে সকল গ্রামের সন্নিকটে নদী নাই, সেই 
চটী সকল স্থানে জলের জন্য অনেক 
সময় বহু দূর পর্যস্ত যাইতে হয়। 
অনেক পল্লীতে কূপের জল 
পানীয়রপে ব্যবহৃত হইয়া 
থাকে । এই সকল কুপ প্রায়ই 
অগভীর ও কাচা; ইহাদের 
জলও প্রায়ই অস্বাস্থ্াকর। 
বীরভূম, বর্ধমান ও বাকুড়া প্রভৃতি জেলায় অনেক গভীর কৃপ দেখিতে 
পাওয়া যায়। ইহাদের জল বেশ ভাল। নদীতীরস্থ গ্রামসমূহে জলের 
অনেক স্থবিধা থাকিলেও গ্রীষ্মকালে নদী শুকাইয়৷ গেলে, জলকষ্ট 
উপস্থিত হয়। অধুনা নলকৃপের হ্বারা অনেক স্থানে জল সরবরাহের 
ব্যবস্থা হইতেছে । 


জল. দুষিত হুইবার কারণ।-_অনেকে নদী, খান, পুকুর বা 


আট ও ৮১ 9 ৭ ৯0১5 বাহ 


সীদির জলের কিঞিৎ উপব্িভাগেই মলত্যাগ করিয়! থাকেন। এই মল 





জল ৩৭ 


বৃষ্টির জলের সহিত মিশিয়া জলাশয়ে পতিত হইয়া! জলকে দূষিত করে। 
জোয়ারের" বা বাষ্ট্র জল 'বাড়িলেও এ সকল মল জলে ভাদিয়! যায় 
কোন কৌন স্থানে পুফরিণীর পাড়েই পায়খান! দেখা যায়। 

কখন কখন শিশুদিগের গাত্র-সংলগ্ন মূল পুফরিধীতে ধৌত করা হয়। 
সেই মল জলে মিশিয়া জল দুষিত.ক্রে! ছোট ছোট শিশু বিছানায় 
মলত্যাগ করিয়া থাকে । সেই বিছানা পুফ্করিণীতে ধৌত করা৷ হয়। 


এই প্রকারেও জল দূষিত হইয়া থাকে । 





কাপড় কাচিয়া ও গো-মহিয স্ান করাইয়| পুকুরেয় জল দূধিত করিতেছে 


'্নানাদি কালে অনেকে পুক্করিণীর কিঞ্চিৎ উপরে, জলের এক পারে 
রজব করি থাকেন। উই পড়াই জলে [সহিত মিনির যা 
কেহ কেছ জলের মধোষ্ট প্রত্াব করিয়া জল দূষিত করেন। জে 


৩৮ প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


নামিয়া স্নান করিলে, শরীরের ঘর্ম ও ময়লা এবং কাপড়ের ময়লা জলের 
সহিত মিশিয়। জলকে দুষিত করে। পুষযুক্ত কাপড়, পিকদানি, 
কফুক্ত কাপড়, গোবরছড়ার হাড়ি ও ন্যাতা এবং ময়লা হাত-পা 
ধোয়ার জন্য জল যথেষ্ট পরিমাণে দুষিত হয়। 





পুকুরের জল দুষিত হইতেছে 


নদীতে মৃত জীবজ্ত,. ও মন্ুত্বদেহ ফেলিলে জল দুষিত হয়। 
পার্ট ও শণ পচাইবার ফলে আজকাল বঙ্গদেশের প্রায় সর্বত্র জল 
খারাপ হইতেছে । পাট-পচার জন্ক জল ছুরগন্ধযুক্ত হয়. ও সেই জলে 


জল ৩৯ 


ম্যালেরিয়াবাহী “এনোফেলিস' নামক..মশক-শাব্‌ক .অন্মে। এইভাবে 
সেই জল ম্যালেরিয়র বিষ পরিব্যাপ্থির সহায়তা করিয়া থাকে । 

যে সকল কারণে পুফরিণীর জল দুষিত হইতে পারে, সেই সকল 
কারণে কৃপ-জলও দূষিত হইয়া থাকে" আধিষস্ত জল সহজৈই 'অক্পিশুয় 
দূষিত হয়। ব্যবহারের দোষে কৃয়ার জল দুষিত হইয়া থাকে। 
অগভীর কৃপের মধ্যে চতুষ্পার্থস্থ ময়লা ইত্যাদি আসিয়া মিশ্রিত হয় ও 
জলকে দুষিত করে । 

জলমধ্যস্থ দুষিত পদার্থ ।__পর্বতে তুষারপাতে বরফ সঞ্চিত 
হয়। সেই বরফ গ্রীষ্মকালে অত্যন্ত অধিক পরিমাণে গলিত হয় 
এবং ঝর্ণার আকারে নদী ও নালা দিয়া প্রবাহিত হইতে থাকে। 
জলম্বরোত যে যে স্থান দিয়! প্রবাহিত হয়, সেই সেই স্থানে কোন কিছু 





ন্ট চিট রথ “টির টি 
এক ফোটা দুষিত জলে জীবাণুর সংখ্যা 


দূষিত পদার্থ থাকিলে, তাহাও জলের সহিত মিশিয়া জল দূষিত করে। 
যে স্বত্তিকাতে পুফরিণী বা কৃপ খনন করা হয়, তাহাতে যদি অপকারী 
ধাতুত্রব্য মিশ্রিত থাকে বা গলিত জীবদেহ বা উত্তিদাদি নিহিত 
থাকে, তাহা হইলে উহাদের সংমিশ্রণে পুকধরিণী ও কূপের জল 





৪০ প্রবেশিকা! গারহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


দুষিত হয়। অত্র, গম্ধক ও লবপময় স্থান হইতে যে সকল নদী উৎপন্ন 
হয়, তাহাদের জল ব্যবহার করিলে নানাপ্রকার গ্বীড়া হইয়৷ থাকে। 
গলগণ্ড রোগ এই প্রকার দুষিত জল পানের ফলেই হইয়া থাকে" 

জলের মধ্যে যে সকল গাছ জন্মে, তাহা পচিয়া! যে জল দৃধিত হয়, 
সেই জল পান করিলে পেটের অন্থ্খ (10887717098 ) ও আমাশয় 
(1)589101275 ) হইতে পারে। 

খনিজ পদার্থের মধ্যে অত্যধিক পরিমাণে ম্যাগ নেসিয়ম্‌ সাল্‌ফেট্‌ 
বা ক্লোরিন থাকিলে বেদনা ( 7771686102 ) হুইয়! পেটের অন্ত হইতে 
পারে। জলে দস্তা (109 ) থাকিলে সেই জল পান করায় কোষ্ঠবদ্ধতা 
(0028617)81107, ) হইতে পারে। জলে লৌহ ( [307 ) থাকিলে 
অজীর্ণরোগ (1)78060518 ) হইয়া থাকে । 

কৃপের ধারে যদি বাসনাদি মাজা হয় ও তৎসংক্রাস্ত আবর্জন! প্রভৃতি 
প্রায়ই জম! হয়, কিংবা ব্যবহৃত ময়লা জল. বাহির ইইবার জন্য নরদমা না 
থাকে কিংবা ন্মা প্রায়ই ময়লায় আবদ্ধ থাকে, অথবা অতি নিকটে 
পায়খানা ও তৎসংলগ্ন ময়লা জলের্‌ গর্ত বা গো-শালা থাকে, তাহা 
হইলে নানাপ্রকার চৌোয়ানি জল মাটিতে বসিয়া তাহা নিয়ত ক্‌পে পতিত 
হয় এবং জল দুষিত করে 4 

স্থতরাঁৎ, কুয়ার চতুর্দিকে অনেক দূর পর্ধস্ত, জমিতে কোন আবর্জনা 
জমিতে দিবে নাঁ। এ সম্বন্ধে জনৈক স্বাস্থ্যতত্ববিৎ পণ্ডিত বলেন,_ 
"্যে কৃয়াটি যত গভীর, কৃয়ার সেই গভীরতার পরিমাপের অধে্ ব্যান 
ধরিয়া, একটি বৃত্ত অন্কিত করিলে এ বৃত্তের পরিমাণ জমি যতদূর পর্যস্ত 
পড়ে। ততদূর হইতে জল আনিয়া কৃয়ার মধ্যে পতিত হয়।” কিন্ত 
জলের চৌয়ানি যে কত দূর হইতে আনিতে পারে, তাহার স্থিরতা 
নাই। তবে, পরীক্ষার দ্বারা স্থির হইয়াছে যে, লাধারণত ২** ক 


জাল | ৪.১ 


২২৫ হাত দূরে ময়লা, নম! প্রভৃতি থাকিলে তাহার চোয়ানি আর 
কুয়ায় আসিতে পরে না। 

সংরক্ষিত পুক্ষরিণী।-_গ্রামের ভিতর কোন কোন পুক্করিণীকে 
সংরক্ষিত করিয়া ( 7999:৮60 78100) বাখিলে ভাল হয়? নতুবা, 
অশিক্ষিত মেয়ে ও পুরুষেরা নানাভাবে পুকুরের জল পানের অযোগ্য 
করিয়া তুলিতে পারে। 

পুক্করিণীর মধ্যে ফিতার ম্ভায় পত্রবিশিষ্ট “চিনে শেওলা” নামক এক 
প্রকার শেওলা জন্মাইতে পারিলে জল খুব বিশুদ্ধ ও স্বচ্ছ থাকে। এ 
শেওলাগুলি অত্যধিক বাড়িয়া গেলে মধ্যে মধ্যে কাটিয়া দেওয়া উচিত। 
পু্করিণীর জলে সর্বদা রৌন্র লাগিলে জল ভাল থাকে। 

নদীর মধ্যে মৃতদেহ বা কোন আবর্জনা ফেল উচিত নহে। জল 
যাহাতে ময়লা না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি 'রাখা উচিত। 


গৃহে জলবিশোধনের উপায় 

(১) জল সিদ্ধ করিয়া লওয়া (০1118 )।-_অন্তুত পুনের 
মিনিট কাল জল 'ভালরপ"ছুটাইয়া সিতবপকরিতে হয়। ইহাতে জলে 
দ্রবীভূত খড়িমাটির অংশ পাত্রের তলায় পড়ে এবং জলবাহিত ব্যাথির 
জীবাগু ও কমি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। জল গরম করার দোষ এই যে, উহা 
অতি বিশ্বাদ হইয়া যায়। সেইজন্য সিদ্ধ করা জল ঠাণ্ডা করিয়া! কোন 
পাত্রে ঢালিয়া যদি কিঞ্চিৎ উচ্চ স্থানে রাখা যায় এবং তলায় ছিত্রযুক্ত 
কলসী হইতে পরিফ্ার বায়ুর মধ্য দিয়া ফোটা ফোটা করিয়া সেই পাত্রে 
পড়িতে দেওয়া! হয়, তাহা! হইলে এ জল স্বাদযুক্ত হইতে পারে। 

উদ্যানে গাছে জল দিবার জন্য যে ঝাঝরি ব্যঘন্ৃত হয়, তদ্রপ 
বাঝরির মধ্য দিয়া একটি পাত্রাস্তরে ফেলিলেও জলের বিশ্বাদভাব 


৪২ প্রবেশিকা! গাহৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


দূর হইতে পারে এবং ছুই তিন বার এ প্রকার করিলে জল বেশ স্বাদযুক্ত 
হয়। সহজ ও সম্তা অথচ নিশ্চিতরূপে জল বিশুন্দ করিবার পদ্ধতি 
ইহার অপেক্ষা অন্য কিছু নাই। 

(২) ফট্‌কিরির (&]দ7) দ্বারা জল বিশোধন করা ।__ 
করদমাক্ত ঘোলা জল পরিষ্কার করিতে হইলে জলের মলিনতার অন্ভুপাঁতে 
ধণকরা ছুই আনা হইতে সিকি ভরি পরিমাণ ফটুকিরি লইয়া, 
উহা স্বতন্ত্র পাত্রে ঢালিয়া জলে মিশাইয়া দেওয়া যাইতে পারে। 


21 08 য়া পা রী নন আহ, 


|| 014 ৮ ২80 াঁ । টর ॥ রর 


1111 
10841 





জল ফুটাইর়া বিশুদ্ধ কর হইতেছে 


অথবা চতুর্দিকে বড় বড় ছিত্রযুক্ত একটি বাশের চোঙ্গ! লইয়া উহাতে 
একটি হাতল সংলগ্ন করত কল্পসীর জলে ফট্‌কিরি ঘুরাইয়া দেওয়! 
শ্বাইতে পারে। 


জল ৪৩ 


6৩) জল ছাকিয়] পরিষ্কার কর! ( ঢা1109600, )1-সচ্ছিন্র 
অথচ জমাট বস্তর*উপর কিঞ্চিৎ জল দিলে উহাতে সেই জলের সমস্ত 
ভাসমান" রেণুবৎ পদার্থ আটকাইম্! যায়, কেবলমাত্র জলটুকু পরি্কার 
হইয়া! আসে। এইরূপে জল পরিফার করিয়া লওয়ার নাম--ফিণ্টার 
করা। ভ্রবীভূত পদার্থ ফিণ্টারের দ্বারা দূরীভূত হয় না। জলে চিনি 
বা লবণ গুলিয় ফিপ্টার করিলে, জলে তাহ! থাকিয়া! যায়। 

জল পরিফারের জন্য গৃহস্থের বাড়ীতে নিয়লিখিত উপায়ে ছাকন 
( ফিল্টার- 11667 ) প্রস্তত করা! হইয়া থাকে ; যথা,২- 


ঘড়ার..ফিপ্টার1একটি বাশের বা. কাঠের ফ্রেম... ম':9136 ) 
প্রস্তুত করিয়া, উহাতে উপযু'্পরি তিনুট.. কলস, সজ্জিত. করা 
৮৯০৪১১১৭ 
হয়। প্রত্যেক কলসীর তলদেশে এক একটি ্ম্ ছিত্র, থাকে । 
ছিদ্রগুলি খড়, ৃতা৷ বা স্তাকৃড়ার টুকরা দিয়া এমনভাবে বন্ধ করিতে 
হয় যে, ছিদ্রের মধ্য দিয়া জল ফোটা ফোটা করিয়া পড়ে। সর্ধনিষ়ে 
একটি ভাল. কলমী থাকে.। বন্ত্রখণ্ডের দ্বারা তাহার মুখ ঢাকিয়া দিতে 
হয়। মধ্যের ছুইটি কলসীর উপরের _কলসীতে ভুল. কুঃঠ-কয়লা। ও 
তাহার নিয়ের কলসীতে ভাল 'চোখো | বালি দেওয়া হয়। কয়লা 
বেশ করিয়া জলে ভিজাইয়া, ধুইয়া ও রৌদ্রে শ্তকাইয়া দেওয়া 
উচিত। বালিগুলি লাল রঙের (যেমন কলিকাতার বাজারের 
মগরার বালি) হইলে ভাল হয়। উপরের কলসীতে জল আস্তে আস্তে 
ঢালিয়া দিতে হয়। জল কর্দমাক্ত হইলে উহা কতক সময় পাশে 
কবিয়৷ বাখিয় দেওয়া উচিত। কর্দমগ্ডলি জলের তলায় পড়িয়া! গেলে, 
উপরকার পরিষ্কার জল ধীরে ধীরে ফিণ্টারের উপরের কলসীতে দিতে 
হয়। ফট্‌্কিরি বা নির্মলি ফলের্‌ ছবারাও. কার্মাক্ত জব ...পেরিষ্কার 
করিয়া লওয়া যাইতে পারে। উপরের কলসীর জঙ্গ তলদেশস্থ ছিত্ত্র 


৪৪ প্রবেশিক। গারৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিধি 


দিয়া তঙিযস্থ কম্মলার এবং. তৎপরবর্তী বালির কলমী দিয়! চোয়াইয়া 
পরিকৃত হইয়া সর্বনিযন্থ কললীতে _জ্মা হ্য়। এইভাবে চোয়্াইবার 
সময় জল [বায়ুর মধ্য দিয়া অক্সিজেন-সংস্পর্শে অধিকতর বিশুদ্ধ ও 
ন্থপেয় হয়। মধ্যে মধ্যে বালি ও কমল! বদলাইতে হয়। 

প্রথম. প্রথম ফিপ্টারে চারি পাঁচ দিন, জল, দিয়া প্রুবিক্কারু-ুক্িতে 
হয় এবং সে জল ফেলিয়! দিতে হয় হয়। তাহাতে পরিশেষে এ ফিল্টারের 
জল ভাল হইতে থাকে। প্রথম চারি পাচ দিন জল ঠিক ভাল হয় না। 
ফিণ্টার, করিতে ক্রিতে যখন বালির উপ একটা আঠার মত শ্বচ্ছ 
ও পাতল! স্তর (পর্দা), পড়িয়া যায়, তখন জল অতিহন্দর বিশুদ্ধ হয়। 
ফিণ্টার ব্যবহারকালে এই ত্তর কখনও হাত দিয়া ভাঙ্গিয়া দিতে 
নাই। প্ররুতপক্ষে এই স্তরটি জলের মধ্যস্থিত জীবাধুরোধক শত্তিসুম্পন্প। 
সুতরাং, ফিপ্টারের এই অংশাটই সর্বাপেক্ষা প্রয়োজনীয় । 

উল্লিখিত জীবাণুরোধক স্তরটির স্থায়িত্ব জলের প্রকৃতির উপর 
নির্ভর করে। জল যত বেশী অবিশুদ্ধ হয়, জীবাণু-রোধক স্তরের 
স্থায়িত্ব তত কম হইয়া থাকে। জল অস্বাভাবিকরূপে অবিশুদ্ধ হইলে 
জীবাণু-রোধক স্তর আট সপ্তাহের অধিক কাল কাধক্ষম থাকে না। 
স্থতরাং, তখন এই স্তর টাচিয়া তুলিয়া ফেলিতে হয়। তারপর নিয়স্থিত 
বালি প্রথর রৌদ্রে বেশ করিয়া উল্টাইয়া পাণ্টাইয়া শুকাইয়া ও 
দোষ-বঞ্জিত করিয়া! আবার কলসীর মধ্যে পাতিয়া দিতে হয়। ৃ 

অনেকে তিনটি কলসীর পরিবর্তে একটি বড় মাটির বা কাঠের টব, 
বালি ও কয়ল! দ্বার! পূর্ণ করিয়া, তাহার তলদেশে ছিত্র করিয়া লন। 
ইহা দ্বারাও গার্বস্থ্য ফিণ্টারের কার্ধ হয়। তবে, সংক্রামক ব্যাধির 
প্রাছুর্ভাবকালে এই ধরণের ফিপ্টাবের উপর নির্ভর করা চলে না; 
কারণ, রোগ-জীবাধু জলের সহিত মিশ্রিত হইলে ছাঁকনির মধ্য দিয়া 





জলা ৪8৫ 


সেই জীবাণুর কিয়ঙ্ংশ জলের মধ্যে আসিম্মা পড়িতে পারে। যে 
জল ছাঁকা যায়, ভ্াহার মধ্যে রোগ-জীবাণু থাকিলে, ব্যাধি সংক্রামিত 
হয়। বাঁর্ফেন্ড (06915]9 ) এবং পাস্তর চেম্বারল্যাণ্ড (788,881, 
(01787079980 ) নামক ছুই প্রকার ফিণ্টার-বোতল এক্ষণে ব্যবহৃত 
হইতেছে । এই ফিল্টারের মধ্য দিয়া যে জল পড়ে, সে জল বিশুদ্ধ ও 
নিরাপদ । কিন্তু এ সকল ফিণ্টার কিছু ব্যয়সাধ্য। 

ছাকন মাত্রকেই মাসে মাসে পরিফার করিতে হয়। ছাকনের 
মধ্যে অধিক ময়লা জমিলে সে ছাকনের দ্বারা জল মোটেই, 
পরিষ্কৃত হয় না । বালি ও কাকরের ফিণ্টার পরিষ্কার করা কঠিন নহে। 
বালি ও কীকর পোড়াইলে পুনরায় ব্যবহারের যোগ্য হয়। 


জল উত্তমরূপে ছাকিয়া লইলে, জলের মধ্যে ভাসমান কঠিন 
পদার্থ এবং ভ্রবীভূত দূষিত সামগ্রী কিয়ৎপরিমাণে দূরীভূত হইয়া যায়। 
কয়লা বালি, স্পঞ্জের ন্যায় সচ্ছিত্র লৌহ ( 00085 170) ), কয়লা 
ও জমাট বালি (311168190 17071), চুন্বক-ধর্মাক্রাস্ত লৌহ (018£06016 
7701) প্রভৃতি নানা সামগ্রী ছাকনরূপে ব্যবহৃত হইয়া থাকে। সাধারণ 
গৃহস্থের গৃহে, রেলওয়ে স্টেসনে এবং মফঃস্বলের হাসপাতালে বালি ও 
কয়লাপূর্ণ মৃৎ্কলসীর ছাকনে জল ছাকা হইয়া থাকে । এই প্রকারের 
ছাকুনিতে জল হইতে রোগ-জীবাণু একেবারে দূর হয় না। সুতরাং, 
কলেরা, টাইফয়েড প্রভৃতি সংক্রামক ব্যাধির প্রাছুর্তাকালে এই 
প্রকারের ফিপ্টারের উপর একেবারেই নির্ভর করা চলে না। 


রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জল বিশোধন।-_ 


(১). পার্ধাং অন্ভ পটাশ (7১677278551 ০ 
সা ট পিত & ও কলি ও সত কিস এবি ২০০ ভবে নাগ ৭ পা সত খপ” স্টিক ক হিন্দ | 
৮০৪৩) স্বার। জল বিশুদ্ধ কর1।- গার্মাংগানেট- অভি. পটাশ্ক 


লন অজ) পন বানান ট্রিট লং 





৪৬ প্রবেশিক! গারস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


প্রকার্‌ গুঁ'ড়াবৎ ডাক্তারি পদ্ধার্থ। এক প্রকার খনিজ পদার্থ হইতে ইহা 
প্স্থত হয়। কূপের জল দুষিত, হইলে পার্মাংগানেই অভ, পটাশ দ্বারা. 
তাহা! বিশুদ্ধ. কর! যায়। সাধারণত প্রত্যেক কৃপে আধ ছটাক বা 
কিছু বে বেশী পরিমাণ লাগিতে পারে। একটি পাত্রে ইহা গুলিয়া কূপের কূপের 
জলে তাহা টাঁলিয়া দিতে হয়। কৃপে ঢালিবার সময় বেশ সতর্ক 
হওয়া উচিত-_এই মিকৃশ্চার যেন কৃপের গা বাহিয়া না পড়ে; 
কারণ, তাহাতে গুঁধধের শক্তি কমিয়া যায়। পাত্রের তলায় যদি 
কিছু অদ্্রবীভূত রহিয়! যায়, তাহাও পুনরায় গুলিয়া জলে ঢালিয়া 
দিতে হয়। এইরূপে সমস্ত পার্মাংগানেট অভ. পটাশ নিঃশেষ হইলে 
জল একটু ওলট-পালট করিয়! দিতে হইবে । এমনভাবে ওলট-পালট 
করিতে হইবে, যেন নীচের কাদ| উপরে না উঠে। 

পাকা পু'ই শাকের বীজগুলি যেমন বেগুনে রঙের হয়, জলে 
গুলিলে পার্মীংগানেট অভ. পটাশের রংও ঠিক সেইরূপ হয়। 
জল বিশোধনার্থ এই দ্রব্য যথেষ্ট পরিমাণে দেওয়া হইলে, জলে বেশ 
একটু বেগুনে রং হয়; খুব গাঢ় রং হইবার প্রয়োজন নাই। 
পার্মাংগানেট গুলিয়া দেওয়ার পর জল যদি হরিদ্রাীভ হয়, তাহা হইলে 
উহা আরও দিতে হইবে । 

(২) পারক্রোরা ই... ভূ. আ]কসরন (29701107109 ০: 
[10 ) জলে দিলে জল পরিজ হয়॥ পাচ সের জলে ২২ গ্রেন 
পরিমাণ পারক্লোরাইভ দেওয়া উচ্চিত | 
79 ক্লোরিন (071০57০) প্রয়োগে জল পরিষ্কার কর! 
স্বায়।--শহরের মিউনিসিপ্যালিটি এই প্রথায় পানীয় জল বিশুদ্ধ 
কৰিয়া 'থাকেন। এক লময্ে ইংলগ্ডের লিংকন পল্লীর জলের কলে 
'াইফয়েডের জীবাণু অধিক মাত্রায় দেখা দেয়। হাউন্টন ([70986070 ) 


জল ৪৭ 


নামক এক ব্যক্তি সর্বপ্রথম এই উপলক্ষে ক্লোরিন ছারা রোগ-জীবাণু 
নাশের ব্যবস্থা করেন। তার পর ক্লোরাইড অভ. লাইম (01710235 
0৫ [1016 ) জলে দিয়া এবং ফিণ্টারের মধ্যে ক্লোরাইড অভ্‌ লাইম 
ব্যবহার করিয়া, আমেরিকায় জল বিশুদ্ধ করিবার ব্যবস্থা হয়। জল 
পরিফাবের জন্য ক্লোরিনযুক্ত যে কয়টি সামগ্রী ব্যবহীত হইয়া 
থাকে, তাহা এই,(১) হাইপোক্লোরাইট বা ব্লিচিং পাউডার 
আকারে। স্বাভাবিক তাপে চুণের সহিত ক্লোরিন মিশাইলে শ্লিচিং 
পাউডার প্রস্তত হুয়+ (২) বাম্পাকারে এবং (৩) ক্লোরামিন 
(07101970109 ) রূপে । ক্লোরামিনের যথেষ্ট রোগ-জীবাণু নাশের 
ক্ষমতা আছে। (আ্যামোনিয়া ও ক্লোবিনযুক্ত চুণের রাসায়নিক 
সংযোগে ক্লোরামিন (টি 501) প্রস্তত হয়) কতটুকু জলে কি 
পরিমাণ. ক্লোরিনের প্রয়োজন, জলের “তাপ, জল-ম্ধাস্থ . দুষিত 
পদার্থের পরিমাণ, মিশ্রণপ্রণালী এবং জলের দুষিত অবস্থা দেখিয়] তাহা 
স্থির করিতে হয়) 

ক্লোরিন ছারা জল বিশুদ্ধ করিতে ব্যয় খুব কম পড়ে। 
তাহা ছাড়া, ক্লোরিন দ্বারা পরিষ্কৃত জল সহস] দূষিত হয় না। 
তবে, কোন অবস্থাতেই ক্লোরিনের দ্বারা জল পরিফার বিধিকে 
১ কারণ, জলের রং 

বং ঘোলাটে ভাব ক্লোরিনের দ্বারা দুর হয় না? ফিল্টার ( চা162) 

বা ছাকন দ্বারা জল পরিষ্কার করিয়া লইবার পর তাহাতে ক্লোরিন 
সংযোগ করা উচিত। সম্ভরপর হইলে ছাকনের সঙ্গেও ক্লোরিন 
ব্যবহার করা যাইতে পারে। ক্লোরিনে জলের স্বাদ নষ্ট করে 
এবং বেশী পরিমাণ, ক্তোরিন.._কারহাঁর- কিনে... অলে....ক্লোরিনের 
গন্ধ হয়। 


৪৮ প্রবেশিক! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


.কলিকাতার কলের জল ।_-কলিকাতা শহরে আমরা কলের 
যে জল পান করি, তাহা শহর হইতে ১৬ মাইল ভ্ুরবর্তী ভাগীরথী- 
তীরস্থ পলতা৷ নামক স্থানে বিশুদ্ধ হইবার পর কলিকাতায় আনিয়া 
টালার উচ্চ ট্যাঙ্কে পূর্ণ করা হয়। ভাগীরথীর জল ছুই তিন 
দিন পলতায় ধরিয়া 'রাখা হয়। তার পর সেই জল বালি ও 
কাকরপূর্ণ ছাঁকনের ( 81697) দ্বারা ছাকা হইয়া থাকে । ছাকনের 
মধ্যে জলপ্রবাহ প্রবেশ করিলে ভাসমান পদার্থসমূহ বালি ও 
কাকরে আটকাইয়া যায় এবং দূষিত জৈব পদার্থসমূহও কিয়ৎপরিমাণে 
নষ্ই হয়। সময় সময় “ফিপ্টার বা ছাকনের সঙ্গে ক্লোরিনযুক্ত 
সামগ্রী ব্যবহৃত হইয়া থাকে । পলতার ছাকনে জল পরিষ্কৃত 
করিবার জন্য ফটুকিরি নিগার ও শেওল৷ প্রভৃতিও ব্যবন্বত 
হইয়া থাকে। 

(৪) চোলাইকরণ (71907118007 )।--জল চোলাই করিলে 
ছুই একটি বায়বীয় পদার্থ ব্যতীত জলের আর সমস্ত দুষিত সামগ্রী 
দূরীভূত হয়। জল পরিষ্কার করিবার ইহাই সর্বশেষ্ট, উপায়। জল 
ফুরাইয়া গেলে জাহাজের নাবিকগণ এই উপায়ে সমুদ্রল বিশ্ব 
করিয়া লন+ এডেন বন্দর হইতে জাহাজে যে জল সরবরাহ করা হয়, 
তাহা এই চোলাই করা জল। জল চোলাই করিলে জৈব, জান্তব, ক্ষার, 
লবণ ও রোগোৎপাদক জীবাধু-জলে যাহা কিছু বত'মান থাকে, সে 
সমন্তই নষ্ট হইয়া যায়। তবে, চোলাই জলে বামুর অবিদ্যমানতা হেতু 
উহ কিঞ্চিৎ বিশ্বাদ হয়। কিন্তু কয়েক বার জল “ঢালা-উপুড়' করিলে 
সে বিস্বাদ দুর হইয়া থাকে । 

জল-সংগ্রহ ও জল-সঞ্চয়।-_শহরে জল সরবরাহ করা একটি 
গুরুতর সমস্যা। যে সকল শহরে ব্যাপকভাবে জল ছাকিবার 


জাল ৪8 


ব্যবস্থা আছে, সেখানে নদী বা শ্রোতন্বতী হইতে ধবল সংগ্রহ করিয়। 
স্থবৃহৎ জলাধাবে ( 7899৪৮০1: ) অথব! ট্যাঙ্কে রাখিয়! দেওয়া হয়। 
মিউনিসিপ্যালিটির এলাকার মধ্যের কোনও জলাশয় হইতে যাহাতে 
জল না লওয়া হয়, ততপ্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখা উচিত। হ্বল্প-গভীর 
কূপ ব৷ পুক্ধরিণী হইতেও শহরের জল-সরবরাহের জন্য জল লইতে 
নাই; কারণ, সে জলে দূষিত পদার্থ থাকে । অগভীর কূপের জলও 
নিরাপদ নহে। 

ঝরণা, গভীর কৃপ, পর্বতগাত্রস্থ জল, হুদ ও নদীর জল শহরে 
জল-সরবরাহের জন্য লওয়া যাইতে পারে। স্থানীয় অবস্থার বিষয়ও 
এই সম্পর্কে বিবেচনা করিতে হয়। শহরের জন্য যে জল সংগৃহীত 
হইবে, তাহাতে কোন দুষিত পদার্থ না থাকে, তাহা দেখা কত'র্য। 
পরস্ব, সে জল কোমল (8০) হওয়া আবশ্তক। শহর হইতে দুরে, 
দূষিত পদার্থহীন স্থানে সারি সারি গভীর কূপ খনন করিয়া, তাহা 
হইতে পাম্প দ্বারা জল-সরবরাহ করা যাইতে পারে। শহরে জল- 
সরবরাহের জন্য এইরূপ নান! ভাবে জল-সংগ্রহ হয়। 

জল-সংগ্রহু (307289 )।--জল ছাকিয়া কুজা, কলদী যা অন্ত 
কোন পাত্রে রাখিতে হয়। জলাধারের মুখ কখনও খুলিয়া রাখিতে 
নাই ; মুখ খুলিয়। রাখিলে জলের মধ্যে ধূলা, ময়লা, মাছি বা অন্ত কোন 
দৃষিত পদার্থ পড়িতে পাবে। জল পান করিবার সময় জল ঢালিয়া লওয়া 
ভিন্ন জলের মধ্যে কখনও পান-পাত্র ডুবাইতে নাই । জলাধার পরিষার- 
পরিচ্ছন্ন রাখা আবশ্তক । 

উচ্চ ভূমিতে চারিদিকে বাধ বীধিয়া জল বক্ষ কর! হয়। বড় বড় 
শহরকে বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত করিয়া, এক এক অঞ্চলে জল-সরবরাহের 
জন্য “রিজার্ভার” ( 86৪৪7০17 ) নির্মাণ করিদ্বা তাহা হইতে কাজ 


৫০ প্রবেশিক। গারৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


সরবরাহের 'ব্যবস্থা হইয়া থাকে । “এই সকল রিজার্তারে যে জল 
ধরা হয়, লোহার নলের (৮16) সাহায্যে সেই, জল শহরের সর্বত্র 
সরবরাহ হইয়। থাকে । কলিকাতা শহরে এরূপ নলের ' সাহায্যে 
জল-সরবরাহ হইয়া থাকে। 

ব্যাধির বাহকরূপে দুষিত জল ।-_সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ জল দুর্লভ । 
তবে, রাসায়নিক পরীক্ষায় ষে জল বিশুদ্ধ বলিয়া প্রতিপন্ন হয়ঃ সেই 
জলই পান কর! বিধেয়। দুষিত জল নানা ব্যাধির বাহক। কলেরা, 
টাইফয়েড, আমাশয়, উদরাময়, বক্তাতিসার প্রভৃতি পরিপাকয্ত্-সংক্রাস্ত 
ব্যাধি সচরাচর জলের দোষেই উৎপন্ন হয়। সময় সময় জলের দোষে 
কমি ও অমিবা প্রভৃতি পবাঙ্গপুষ্ট প্রাণী (781851695 ) দেহের মধ্যে 
জন্মিয়া থাকে । মানবদেহে যতপ্রকার রোগের উৎপত্তি হয়, তাহার 
অধিকাংশের জীবাণু জলের সহিত শরীরে প্রবেশ করে। স্তরাং, জল 
যাহাতে দূষিত ন! হয়, তৎসম্বন্ধে যথাসাধ্য চেষ্টা করা কতব্য। 

জলের অভাবেও নান! বিপদ্‌ ঘটে । পল্লী অঞ্চলে প্রায়ই জলকষ্টের 
কথা শুনা যায়। জলকষ্ট্রের সময় জলের ভালমন্দ বিচার থাঁকে না, 
জল হুইলেই হইল। সেইজন্ত পল্লীতে জলকষ্ট উপস্থিত হুইবার 
সঙ্গে সঙ্গে.মহামারীও অনেক ক্ষেত্রে দেখা দেয়। কলেরা টাইফয়েড, 
উদরাময়, আমাশয় গ্রভৃতি তখন সংক্রামক হইয়া উঠে। জলের 
অভাবে দুষিতজল-পানের জন্যই এ সকল ঘটিয়া থাকে । জলকষ্ট হইলে 
ফসল শুকাইয়! নষ্ট হয়, খাগ্যন্রব্য মহার্থ হয়; এমন কি, অনেক ক্ষেত্রে 
খাচ্যব্রব্য মোটেই মিলে না। তখন অন্য স্থান হইতে খাস্ত্রব্য 
সরবরাহ হইলেও স্থানীয় ময়লা, ঘোলা ও অপরিষ্কৃত জলই পান করিতে 
হয়। ফলে, নানা সংক্রামক ব্যাধিতে প্রতি বৎসর বাংলায় লক্ষ লক্ষ 
লোক মৃতুমুখে পতিত হয় | 


গৃহ-সজ্জং ৫১, 


গহে জল-বিশোধনের সহজ উপায় সম্বন্ধে সকল কথাই বলা হইয়ছে। 
তবে, আমাদেবু এই বাংল! দেশে দরিদ্র সাধারণের টি 
বিশোধনের সহজ উপায় এই যে, সংগৃহীত জল ৩1৪ ঘণ্টা কোন পানে 
স্থিরভাবে রাখিয়া থিতাইয়া লইয়া অন্য একটি পাত্রে সাবধানতার 
সহিত উপরের জল ঢালিয়া লইবে এবং উহা অন্তত পনের মিনিটকাল 
ভালরূপে ফুটাইয়া লইবে। পরে এ ফুটান জলে একটু ফট্কিৰি 
দিলে, সেই জলের নীচে তলানি জমিবে। এই অবস্থায় উপরের 
জল একটি পরিষ্কৃত পাত্রে ঢালিয়া উহার মুখে পরিষ্ষার সাদা স্তাকড়া 
দিয় কিছুকাল মুক্ত বাতাসে রাখিয়া দিবে। জল সিদ্ধ করিলে 
উহার ম্বাদ অন্রূপ হয়। সুতরাং, স্বাদ ঠিক করিবার জন্য সেই 
জল অন্ত একটি পরিষ্কৃত মাটির কলসীতে কয়েকবার ঢালা-উপুড় 
করিয়া, উহাতে সামান্য কপূর দিয়া ঢাঁকিয়া রাখিয়া দিবে । তাহা 
হইলেই সেই জল উত্তম পানীয়-রূপে পরিণত হইবে। এই প্রক্রিয়াটিই 
জল-বিশোধনের পক্ষে সহজ ও প্রকৃষ্ট উপায়!) 


(ঘ) গৃহ-সজ্জ। ইত্যাদি 


গুহে আসবাবপত্র“সাজসরঞ্জামাদি।-_আমরা বাঁড়ীর বিভিন্ন 
ঘরে বিবিধ আসবাব ও সরঞ্জাম ব্যবহার করি। ইহার,মধ্যে কতকগুলি 
আমাদের ব্যবহারের পক্ষে অবশ্য প্রয়োজনীয়; আর কতকগুলি 
গৃহসজ্জা হিসাবে সংরক্ষিত হয়। অনেকের বাড়ীতে সাধারণত 
বাহিরের বসিবার ঘর, ছেলেদের পড়িবার ঘর, শয়ন-ঘর, রান্না-ঘর, 
ভাড়ার ঘর, আতুড়-ঘর বা রোগীর ঘর থাকে । ইহাদের প্রত্যেক ঘয়েই 
প্রয়োজনীয় আসবাব ও ৮০০০০৩০০০০০ 
করা উচিত নহে। 


৫২ প্রবেশিকা গার্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


আমর বাহিরের ঘরে সাধারণত চেয়ায, টেরিল; দেরাজ, কাচের 
আলমারি প্রভৃতি এবং দেওয়ালে বিবিধ ছবি ব্যবহার করিয়া! থাকি। 
(যাহাতে সর্বদা সোজাভাবে বসিতে পারা যায় তাহার প্রতি দৃষ্টি 
রাখিয়া) চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ প্রভৃতি যথাযোগ্য স্থানে হুসঙ্জিত 
অবস্থায় রাখা উচিত ।, বাহিরের ঘরেই ধুলা, বালি গ্রভৃতি বেশী 
প্রবেশ করে। ছবি, কার্পেট, পর্দা বা অযথা আসবাবপত্রের বাছল্য 
থাকিলে ঘরে ধুলা ময়লা বেশী জমে । এতঘ্যতীত, ঘরের কোণে এবং 
ছবি, আলমারি প্রভৃতির পশ্চাতে কালি, ঝুল, মাকড়সার জাল 
প্রভৃতিতে আটকান ধূলা ইত্যাদি জমিয়া ঘরটি অস্বাস্থ্যকর হইয়া উঠে। 
এজন্য নিয়মিতভাবে ঝাড়িয়া মুছিয়া আসবাবাদি সর্বদা পরিদ্কৃত 
বাখিতে হয়| 

পড়িবার ঘর ।-_ছেলে-মেয়েদের পড়িবার ঘরে তাহারা যাহাতে 
সর্বদা সোজাভাবে বসিয়া পড়াশ্তনা করিতে পারে এইহেতু বসিবার জন্ত 
চেয়ার বা টুল ও তাহার সম্মুথে উপযুক্ত পরিমাণ উঁচু টেবিল বা 
কোলের দ্বিকে ঢালু ডেস্ক রাখা প্রয়োজন। পুস্তকাদি রাখিবার জন্য 
কাচের আলমারি রাখিতে হয়। শিক্ষারগ্রদ চার্ট, ছবি, ম্যাপ ইত্যাদি 
দেওয়ালে রাখিতে পারা যায়) তবে, "্ক্ষ্য বাখিতে হইবে যেন 
অযথা অতিরিক্ত আসবাব না বাখা হয় এবং গৃহমধ্যস্থ যাবতীয় 
আসবাবপত্র সর্ধদা পরিচ্ছ থাকে । | 

শয়ন-ঘর ।--শয়ন-ঘরে অতিরিক্ত আসবাবপত্র রাখিলে ভালরূপ 
বাস্কু-সঞ্চালনের ব্যাঘাত ঘটে । অবশ্য-ব্যবহার্ধ খাট, চৌকি, তক্তাপোহ 
এবং নিতাস্ত প্রয়োব্ষন-বোধে ছোট টেবিল, টুল ব্যতীত অযথা অতিরিক্ত 
আসবাষ কদাচ রাখিতে নাই ।. দেওয়ালে ২।৪ খানা ছবি রাখা 
চলে। প্রতিদিন প্রাতঃকালে ও ন্ধ্যাবেলায় ঘরের মেঝে মুছিয়৷ 


গৃহ-সজ্জা ৫৩ 


পরিফার কধিবে। আসবাবপত্র ঝাড়িয়া পরিফার বাখিযে'। দেওয়ালের 
ছবি, ঘড়ি ইর্তযটাদির আশ-পাশ ও পশ্চাতে কালি-ঝুল ধুলাবালি 
আটকাইলে তাহার সহিত ব্যাধির জীবাণু সংস্থষ্ট থাকিতে পারে) 
এজন্য ঝাড়ন দিয়া উহা সাবধানতার সহিত ঝাড়িয়া পবিষধার 
করিয়া দিবে। 

রাক্সা"ঘর ।--রদ্ধনকার্ধে ব্যবহার তৈজসাদি ব্যতীত অন্ত কোন 
আসবাব রাখিতে নাই । তবে, প্রয়োজন-বোধে ছোট টুল বসিবার জঙ্ 
রাখা চলে। বন্ধনের পর তৈজসাদ্দি উচ্চে বাশের মাচা বা তাকে 
রাখিয়া দিবে। জালযুক্ত আলমারি রাখিবে। কোন ভ্রব্য মাটিতে 
কদাচ বাখিবে না। 

রান্নাঘরে ধোঁয়ার উপদ্রব নিবারণ, করা বড়ই কঠিন ব্যাপার। 
এই ধেয়ার জন্যই রান্লা-ঘবের ভিতরের ছাদ, দেওয়াল এবং আসবাব- 
পত্র ও তৈজসাদি কালি-ঝুলে মলিন হয়, খাছ্ন্ব্যেও এ কালি-ঝুল 
পড়িতে পারে। এমন কি বাটীর অপরাপর গৃহার্দিও অল্লবিস্তর এ 
ধোয়ার জন্য ক্ষতিগ্রত্ত হয়। গৃহমধাস্থ আসবাবপত্র, কাপড়-জামা 
প্রভৃতিও ধোঁয়ায় কালিময় হইয়া থাকে। বাড়ীর মেয়েদিগকে বান্না 
ঘরেই সাধারণত অধিক সময় কাটাইতে হয়। স্থতরাং, সেখানে 
অতিরিক্ত ধোয়া হইলে, তাহাদের স্বাস্থ্যহানি ঘটিতে পারে। বতর্মানে 
'শহযে সাধারণত কয়লার দ্বারাই রন্ধান-কার্ধ চলিতেছে । যে বাড়ীতে 
মাত্র একটি পরিবার বাস করে, সেখানে বান্না-ঘরের অবস্থান ও প্রস্তত- 
প্রণালীর প্রতি বিশেষরূপ ঘযত্বু লইলে এই ধোয়া নিবারণ করা 
অনেকটা সম্ভবপর হইতে পারে। বাড়ীর অপর ঘরগুলি হইতে দূরে 
রারা-ঘরের ব্যবস্থ' করিতে হয়। রান্নাঘরের ছাদের সঙ্গে চারিদিকে 
ঘুরাইয়া একহাত প্রশ্থ জাল বা ঝাঁঝ.রি দিয়া দিলে কিংবা ছাদের উপরে 


৫৪ প্রবেশিক! গা্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ঘুলঘুলি বা! চিমনি তৈয়ার করিয়া দিলে, ধোয়া সহজে বাহির হইয়া 
যাইতে পারে। কলিকাতা মহানগরীতে এই ধোঁয়ার সময বড়ই 


(107 
|||. 
14111 


ঠা 
ঞঞঞঞতাা 


। 





গৃহ-সজ্জা ৫৫ 


কলিকাতা, করপোরেশন ও বঙ্গীয় সরকারী স্বাস্থ্া-বিভাগ কর্তৃক 
অনুমোদিত ও থৃহীত হইয়াছে এবং সর্বত্র ধূম-নিবারণকল্পে ইহার গ্রচার 
কাধ টলিতেছে। 

এই প্রথাতে কোক-কয়লাই জ্বালানিরূপে উনানে ব্যবহার করা চলে। 
তবে, কেরোসিন তেল, ঘুঁটে, গ্যাকড়া, কাচা কাঠ প্রভৃতির সাহায্যে 
উনান জালাইবার প্রচলিত প্রথার পরিবর্তে কাঠ-কয়লার হ্বারা উনান 
জালান হইয়া থাকে এবং ইহাতে ধেশায়ার উপত্রব কিছুমাত্র হয় না। 

কোক-কয়লায় রান্না করিতে হইলে ধূম-নিবারণের জন্য কাঠ-কয়লা 
দিয়! উনান জালানই সর্বোৎকষ্ট ব্যবস্থা। এক ছটাক পরিমাণ কাঠ” 
কয়লা উনানের মধ্যে সাজাইয়! রাখিয়া, একখানিতে আগুন ধরাইয়া 
ভিন চারি মিনিট পাখা দিয়া হাওয়া দিলে কয়লা! জলিয়। উঠিবে। তখন 
তাহার উপর আস্তে আন্তে কয়লা! বা কোক দিলে দশ মিনিটের মধ্যেই 
উনান জলিবে, অথচ ধোয়া হইবে না। 

এই প্রক্রিয়া আবিষ্কৃত হওয়ায় যে সমস্ত গৃহে এই প্রণালী 
অবলস্বিত হইয়াছে তথায় ধোয়ার উপদ্রব নিবারিত হইয়াছে। 
ইহাতে ঘরে কালি জমে না) জামা-কাপড়, ঘর-দরজা আসবাবাদি 
কালিময় হয় না। ও 

সপ্তাহে অস্তত একদিন বান্না-ঘরের ঝুল ঝাড়িয়া ফেলা উচিত । 
রান্না-ঘরে থালা, বাসন-পত্র প্রভৃতি রাখিবার জন্য আলমারি বা! তাকের 
ব্যবস্থা করা ভাল। ব্যবহারাস্তে থালা, বাটি, গ্লাস প্রভৃতি পরিষ্কৃত জলে 
ধৌত করিয়া, ভালভাবে মুছিয়! আলমারিতে বা তাকের উপর সাজাইয়! 
রাখিতে হয়। রান্লা-ঘরের মেঝে ধুইয়া মুছিয়! দিতে হয়। 

ভাণ্ারশ্গৃহ বা ভ'াড়ার-ঘর ।-_ আমাদের প্রয়োজনীয় চাউল, 
ডাল, দ্বত, মসলা, আটা, ময়দা প্রভৃতি খাাপ্রব্য আমর! ভাড়ার- 


৫৬ প্রবেশিক! গারস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ঘরে রাখিয়া থাকি। ভাড়ার-ঘরে যাহাতে ভালরূপ আলে! বাতাস 
খেলিতে পারে এজন্য গ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, তৈজসাক্দি সুসজ্জিতভভাবে 
রাখিতে হয়। বিভিন্ন দ্রব্য বিভিন্ন পাত্রে রাখিবে। পাত্রের মুখ ঢাকিয়া 
রাখিবে। কোন দ্রব্য কদাপি মাটিতে রাখিবে না। 

রোগীর ঘর ।--রোগীর ঘরে অবশ্ঠ-প্রয়োজনীয় ভ্রবয ও আসবাব 
বাতীত কখনও অতিরিক্ত কোন দ্রব্য বা আসবাবাদি পাখিতে নাই। 
রোগীর কাপড়-চোপড়, খাগ্ন্রব্য এবং ওুঁধধাদি রাখিবার জন্য পৃথক্‌ পৃথক্‌ 
তিনটি আলমারি রাখিবে। রোগীর ঘরে পর্দা, কার্পেট, ছবি প্রভৃতি 
রাখিতে নাই । শ্ুশ্রুযাকারীদের বসিবার জন্য টুল বা চেয়ার রাখা 
চলিতে পাবে। 

গৃহের আসবাবপত্র, তৈজসাদি এবং সাজসরঞ্জাম 
প্রভৃতির পরিক্ষার-পরিচ্ছন্ত1 ও মেরামত)দি ।-_গৃহে ব্যবহার্ 
আসবাবপঞ্জের প্রতি সর্বদা লক্ষ্য রাখিবে। কোন আসবাব ভাজিলে বা 
নষ্ট হইলে অবিলম্ছে উহার মেরামতের ব্যবস্থা করিবে। প্রত্যেক ঘরে 
আসবাবপত্র প্রত্যহই ঝাড়িয়া মুছিয়! পরিফার রাখিবে। নিত্য- 
প্রয়োজনীয় এবং নিত্য-বাবহার্ধ আসবার, সরঞ্জামাদি র্যতীত অতিরিক্ত 
আসবাবাদি কোন একটি নিদিষ্ট গুদাম ঘরে রাখিয়া দিবে। চেয়ার, 
টেবিল, বেঞ্চ, আলমারি প্রভৃতিতে মাঝে মাঝে বাণিশ দিয়া লইবে। 
তাহাতে এগুলি অধিক টেকসই হইবে, অধিক দিন স্থায়ী হইবে। 
আলমারি বা দের়াজ প্রভৃতির মধাস্থ পুস্তকাদি মধ্যে মধ্যে ঝাড়িয়া 
বৌন্ত্র ও বাতাসে দিবে এবং পুনরায় বথাস্থানে সাজাইয়া রাখিবে। 
ইহাতে উই, ইন্দুর ও অন্তবিধ পোকার উপত্রব হইতে বক্ষ পাওয়া 
যাইবে। আসবাবপত্র সময়ে মেরামত করিলে অল্প ব্যয়েই মেরামত 
কর চলিবে। 7 


গৃছ-সজ্জা ৫৭ 


গঁছের রোগ্ন-বীজাথু ও কীট-পতজ অপসারণ ।-_গ্রত্াহ 
ঘরের আসবাব, ষরগ্রাম ও দরজা-জানালা প্রভৃতির ধূল। মুছিয়া পরিফায 
করিবে। ঘর, দালান প্রভৃতির মেঝে নিকাইয়া মুছিয়া পরিষার 
রাখিবে। ঘরের মেঝেতে ধুলা! বেশী* থাকিলে প্রথমে জল ছিটাইয়া 
মুছিয়। দিবে এবং পাকা-ঘরে ফিনাইল-জলে মেঝে মুছিয়! ধুইয়া দিবে । 
শয়ন-ঘর, রান্না-ঘর, ভাড়ার-ঘর প্রভৃতির জন্য পৃথক্‌ পৃথক্‌ ঝাঁটা, ঝাড়ন, 
স্তাতা প্রভৃতি রাখা একান্ত কর্তব্য । বাঁটা, ঝাড়ন, স্তাতা প্রভৃতি 
প্রত্যহ ভাল জলে ধুইবে । ঝাড়ন, স্তাতা প্রভৃতি মাঝে মাঝে সৌভাজলে, 
পৃথক ভাবে ফুটাইয়৷ লইবে। 

ঘরে'ব্যবন্ৃত পাপোষ, সতরঞ্চি ঘরের বাহিরে লইয়া প্রত্যহ রৌব্রে 
রাখিয়া ঝাড়িয়া লইবে। সপ্তাহে অন্তত, একদিন ঘরের ঝুল, কালি, 
মাকড়সার জাল বাড়িয়া পরিক্ষার করিবে । সকল ঘষের সমন্ত 
জিনিস সরাইয়া বাড়িয়া মুছিয়া দিবে। ইহাতে মশা, মাকড়সা 
প্রভৃতির উপন্রব কমিবে। মধ্যে মধ্যে ঘরে চুণকাম করাইয়া লইবে। 
ঘবের মেঝেতে, দেওয়ালে বা সিঁড়িতে কখনও থুথু, গয়েরাদি 
ফেলিবে না। | 

পরিধেয় পোষাক-পরিচ্ছদ প্রত্যহ উন্মুক্ত বাতাসে ও প্রথর বৌস্রে 
রাখিয়া ঝাড়িয়া লইবে। প্রথর রৌদ্র এবং উন্মুক্ত বায়ু রোগ-জীবাণু 
ধ্বংস করে। নিত্য-ব্যবহার্য জামা-কাপড় খোলা বাতাসে ও বৌছ্ছে 
শ্ুকাইয়া লইবে। শীতকালে শাল, আলোয়ান, পশমী-রেশমী-বন্ত্রাদি 
সমস্তই মধ্যে মধ্যে, সম্ভব হইলে প্রত্যহ, কিছুক্ষণ রৌদ্রে দিয়া ব্রাশ 
(97090 ) দ্বারা বাড়িয়া রাখিবে। লেপ, তোষক, বালিশ প্রভৃতি 
শয্যাভরণ ঝীতিমত রৌন্রে দেওয়া প্রয়োজন । মাদুর, লতরঞ্চি, খাট, 
চৌকি, তক্তাপোষ প্রভৃতি, শধ্যাত্রব্য মধ্যে মধো পরিষ্কার করিয়া 


৫৮ প্রবেশিক। গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


বৌজে দিবে) ইহাতে ধৃলা, ময়লা, রোগ-জীবাণু, ছারপোকা প্রভৃতি 
বিন হইবে। 


(ও) জল-নিঃসরণ-পথ ও আবর্জনা প্রভৃতি 

গুদ্ধ আবর্জন1।--বসত-বাটার ঘরগুলি, উঠান ও অন্যান্য স্থান 
পরিষ্কার করিলে ধৃলা, বালি, কাগজের টুকরা, ছেঁড়া ম্াকড়া, ঘরের 
ঝুল, তরকারির খোসা, মাছের স্বাশ, ডিমের খোলা, খড়-কুটা, পাতা 
প্রভৃতি দূষিত পদার্থ প্রতিদিনই বাহির হয়। আবার, ঘরধোয়া জল, 
কাপড়কাচা জল, বাসনমাজ। জল, মানের জল, ভাতের ফেন, ব্যগনের 
ঝোল, মৃত্রাদি দূষিত পদার্থও অপরিষ্কার জলরূপে নিয়ত নির্গত হইয়া 
থাকে । পায়খানার মল-মৃত্র, গো-শালার গোবর, গো-মুত্র খইল-মাখান 
বিচালি, পাখীর বিষ্ঠা প্রভৃতি আরও কতকগুলি দৃষিত পদার্থ বসত-বাটার 
নানাস্থানে দেখিতে পাওয়া যায়। এই সকল দুষিত পদার্থকেই 
আবর্জনা বল! হয়। 

্বাস্থারক্ষার নিষিত্ত আবর্জনা! দূর কর! নিতান্ত প্রয়োজন। 
এই উদ্দেশ্টে অনেকে শুষ্ক আবর্জনা বাড়ীর পার্খে জমা করিয়া 
রাখে এবং জলের সহিত মিশ্রিত তরল আবর্জনাও নিকটবর্তী _ 
কোন স্থানে সঞ্চিত হইতে দেয়। ইহাতে স্বাস্থারক্ষা দূরের কথা, 
বরং ভয়ানক হ্থাস্থ্যহানিই ঘটিয়া থাকে। আবর্জনা পচিয়া বিষম 
ছু্গন্ধ উঠিয়া বাস্ু দূষিত করে এবং উহাতে মাছি বসিয়া উহার বিষ 
তাহার পা ও মুখ দিয়া চারিদিকে ছড়ায়। এমন কি, আমাদের 
খান্ছের সহিত এ বিষ মিশ্রিত হয়। এই কারণে আমরা অবিলম্বে 
ওলাউঠা, বসম্ত, আন্ত্রিক-জর, উদরাময় গ্রভৃতি সাংঘাতিক বোগে 
আক্রান্ত হইন্া গ্রাথ হারাই। অতএব, আবর্জন! সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস 


জল-নিংসয়ণ-্পত্ ও আবর্জনা ৫৯ 


করিতে না পারিলে আমাদের নিস্তার নাই। আবর্জনাগুলি বাসস্থান 
হইতে বহুদূরে "রৌদ্রে শুকাইয়া প্রতিদিনই পোড়াইয়া ফেলিলে উহার 
দোষ নষ্ট হয়। বর্ধাকালে আগুনে পোড়ান অস্থবিধা হইলে, দূরবর্তী 
কোন শুফ স্থানে গত করিয়া আবর্জনা পুঁতিয়া মাটি চাপা দিয়া 
রাখিবে। যে স্থান নীচু এবং যেখানে সহজেই জল জমে, তথায় উহা 
পুতিবে না। গোবরাদি ক্ষেত্রের সারদ্ধপে ব্যবহার করা যাইতে 
পারে; সেজন্য উহা! দূরে কৃষিক্ষেত্রে পূর্বোক্তরূপে পুঁতিয়া রাখিলেও 
ক্ষতি নাই। 

দূষিত জলের সহিত যে সকল আবর্জনা নির্গত হয়, তাহা নর্দমা বা 
নাল! দিয়া খাল কিংবা নদীতে বাহির করিয়া দিতে পারিলেই ভাল । 
সেরপ ব্যবস্থা করা অসম্ভব হইলে, লোকালয় হইতে দূরে গতমধ্যে উহ! 
সঞ্চিত করিয়া মধ্যে মধ্যে মাটি দিয়া ভরাট করিয়! দিতে হয়। 

শহরে ময়ল! অপসারণের ব্যবস্থা ।-_-বাড়ীর ময়লা যখন 
নর্দমার শেষ সীমায় যাইয়া জমা হয়, তখন সে ময়লা নিকাশের ব্যবস্থা 
কিরূপ হওয়া আবশ্যক, তাহা! নিধশারণ করা এক গুরুতর সমস্যা । 
নিয়ে কয়েকটি পন্থার নির্দেশ দেওয়া যাইতেছে £-_ 

(১) ময়লাগুলি শ্রোতন্বতী নদীতে নিক্ষেপ কর! যাইতে পারে। 
তবে, যে নর্দীর তীরে নগর-নগরী বা পঙ্লী অবস্থিত এবং যে স্থানের 
' সাধারণ পানীয় জল উক্ত নদী হইতে সংগৃহীত হয়, সে ক্ষেত্রে এই পন্থা 
কখনই অবলম্বন করিবে না । 

(২) ময়লাগুলি সমূদ্রে নিক্ষেপ করা চলিতে পারে। কলিকাতার 
সায় সথবৃহৎ নগরীর ময়লা ও আবর্জনা যদি বঙ্গোপসাগরে নিক্ষিপ্ত হয়, 
তাহা হইলে জোয়ারের সময় সেই ময়লা হুগলী নদীতে আসিয়া, 
এমন কি হুগলী শহর পর্যন্ত, গঙ্গার জল কলুষিত করিতে পারে। 


৬৩ প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


বোম্বাই শহরে জোয়ারের সময় সমুত্রের জল শহরের নিকটবর্তী হয় না। 
এ প্রকার পশ্থা এ শহরের সম্পর্কেই সম্ভব হইতে পারে ।' 

(৩) শুষ্ক ও তরল পদার্থে পরিণত করিয়া; যথা_(ক) একস্থানে 
স্থিতি হ্বারা, এবং (খ) নিয়াভিমুখে প্রবাহিত করিয়। দিয়া । 

(৪) নান! প্রকারের ছিত্র-সমদ্থিত অথবা বালিমাটিযুক্ত স্থানের 
ভিতর দিয়! প্রবাহিত করাই জৈব পদার্থ এবং অপকারী কাটাণু 
ছাকিয়া ফেলিয়া ময়লাদি অপহ্যত করা যায়। 

*. (৫) যে জমিতে ব্যাপকভাবে কৃষি হইতে পারে না, সেই জমিতে 
অমলা নিক্ষেপ করা এবং তদুপরি কৃষিকার্য সম্পাদন করা (13080 
171881100 3586910, )। ভারতবর্ষের যে অঞ্চলে স্থান অপ্রতুল নহে, 
সেখানে এই পন্থা! অবলম্থিত হইয়া থাকে । 

(৬) বায়বীয় (৪:01 ) ও অবায়বীয় ( 808670010 ) কীটাণু 
কার্ধকরী করিয়া (01091098181 11981096106 ) নিরাপদ জলীয় 
পদার্থে পরিণত করিয়া জলের সহিত সাররূপে জমিতে ব্যবহার 
করা বা বিশোধক দ্রব্য মিশাইয়া নদী বা সাগরের জলে 
প্রক্ষেপ করা। 

পল্লীতে ও শহরে জল-নিঃসরণ-পথ কিনূপে দো মুক্ত ও 
পরিষ্কত রাখ যায়। বৃষ্টির পরে কোন কোন বাড়ীর চতুম্পার্খে ও 
উঠানে জল জমিয়া থাকে ; হাত-পা ধোয়া, কাপড় কাচা, বাসন মাজা : 
্লান করা প্রভৃতি কাধের পরেও কতকটা জল বাড়ীর নানাস্থানে 
আটকাইয়া থাকে। ইহার কারণ কি? প্রথমত, বাড়ীর চতুষ্পার্্ব ও 
উঠান ঢালু ও উচু না হইলে জল জঙমিয়া থাকে; ছিতীয়ত, বাড়ী 
হইতে 'জল-নির্গষের কোন পথ ন। থাকিলে, সঞ্চিত জল সহজে বাহির 
হইয়া যাইতে পারে না। সেই অন্থবিধা দূর করিবার উদ্দেশ্থে মাটি 


ছল-নিঃসরণ-পথ-ও আবর্জম। ৬১ 


খু'ড়িযা নালা কাটিতে হয়। নানি কালি দর রা রগ 
ইংবাজীতে “ড্রেন? বলা হয় । 

আমাদের দেশে কাচা ও পাকা ছই রকম নর্দমাই দেখিতে পাওয়া 
যায়। সাধারণত পল্লীগ্রামে কাচা এবং শহরে পাকা নর্দমা। কাচা 
নর্দমার ভিতর দিয়া জল চোয়াইয় মাটিতে বসিয়া যায়। সেই দূষিত 
জল নিকটের কোন জলাশয়ে পড়িয়া উহার জলও দূষিত করিতে পারে; 
অনেক সময় ছুই পাড় ভাঙ্গিয়! নর্দমার ভিতরে মাটি পড়িয়া জল-চলাচল 
বন্ধ করিয়া দেয়; তখন আবার উহা পরিষ্কার করাও কষ্টসাধ্য । ইট, 
চুণ, শুরকি প্রভৃতি সাহায্যে পাক গাথুনি করিয় যে নর্দমা প্রস্তুত করা 
হয়, তাহাই পাকা নর্মা। এই কারণে উহার ভিতর দিয়া মাটিতে 
জল বসে না, সহজে উহ্বার পাড়ও ভাঙ্গে না এবং উহ পরিষ্কার করিতেও 
অন্থ্বিধা হয় না। পাকা নর্দমাই ভাল। কলকাতার মত খুব বড় বড় 
শহরে মাটির ভিতর দিয়া বড় বড় পাক] নর্দম! প্রস্তুত হইয়া! থাকে। 
তাহার সহিত প্রত্যেক বাড়ীর শাখ।-ন্দমাগুলির সংযোগ আছে 
( ঘা1091) 85৪16] )1 সেইজন্য বাড়ীর ময়লা জলাদি শীঘ্বই রাস্তার 
বড় নর্দমায় যাইয়া পড়ে এবং ক্রমে শহরের বাহিরে চলিয়া ঘাঁয় । এইরূপ 
ব্যবস্থ। শহরবাসিগণের স্বাস্থ্যরক্ষার পক্ষে পরম হিতকর। 'অনাবৃত বা 
খোলা নর্দম। অপেক্ষা এইরূপ আবৃত বা ঢাক। নর্দমমাই ভাল। 

নর্দমা প্রস্তত করিবার সময়ে উহা! মুখের দিকে ক্রমে এরূপ গড়ানে 
বা ঢালু করিতে হুইবে যে, উহাতে জল পড়িবামান্্ই বাহির হইয়া 
যাইতে পারে। নর্দমমার মুখ খাল কিংবা নদীতে যাইয়া মিশিলেই 
ভাল হয়) তবে, এরূপ সম্ভব না হইলে, উহা লোকালয় হইতে দূরে 
কোন বিল পর্যস্ত ক্রমশ ঢালু করিয়। লইয়া যাইতে হয়। পুকুর, 
কিংবা কূপের নিকট দিয়া ন্র্মা তৈম্বার করিতে নাই; কারণ, 


৬২ প্রবেশিক গার্ৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


নামার জল মাটির ভিতর দিয়া চোয়াইয়া, সেই পুকুর কিংবা কূপের 
জলের সহিত মিশিতে পারে। এই নিমিত্ত এ সকল জলাশয়ের জল 
পানের অযোগ্য হয়| রান্না-ঘর, গোয়াল-ঘর, পায়খানা ও শ্তাস্তাঁকুড়ের 
সহিত নর্মার যোগ রাখা! উচিত, 

কাচা নামায় ঘাস, আুঁ়াছা প্রভৃতি জন্মিতে দিবে না, কিংবা 
কোনরূপ জঞ্জাল ফেলিবে না । মধ্যে মধ্যে নর্দমার তলানি বা পচা 
মাটি তুলিয়া ফেলিলে, জল-চলাচলের পথ বেশ পরিষ্কার থাকে এবং 
নূর্দমার ছুর্গন্ধও কতকটা কম হয়। নর্দমার জল আবদ্ধ হইয়া থাকিলে 
কিংবা পচিলে ভয়ানক ছূর্গন্ধ বাহির হয়; তাহাতে মশা জন্মে এবং 
ম্যালেরিয়া প্রভৃতি ব্যারাম দেখা দেয়। মধ্যে মধ্যে নর্দমায় চুণ, 
ফিনাইল প্রভৃতি দিলে দুর্গন্ধ নষ্ট হয় এবং প্রতি সপ্তাহে কেরোসিন তৈল 
ঢালিয়া দিলে মশার উপদ্রব কমে । 

পল্লীগ্রামে অনেক বাড়ীতে নর্দমা না থাকায় ময়লা জলাদি গড়াইয়া 
গিয়া পানীয় জলের পুকুরেই পড়ে। ইহা বড়ই কদর্য ও অস্বাস্থ্াকর 
ব্যবস্থ৷। স্বাস্থ্যরক্ষার নিমিত প্রত্যেক বাড়ীতে নাম! রাখা উচিত। 

পল্লীতে মল-অপসারণের স্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা ।-_-জীবজস্ত 
ভূক্তত্রব্যের কিয়দংশ মল-মৃত্ররূপে ত্যাগ করিয়া থাকে । সেই মল-মৃত্রের 
সংস্পর্শে বাসস্থান যতটা দূষিত ও অস্বাস্থ্যকর হয়, ততটা আর 
কিছুতেই হয় না। মল-যুত্র অতীব ছুর্গন্ধময় ও অনিষ্টকর পদার্থ। 
এজগ্য পরিত্যক্ত মল-মুত্র স্পশ করিলে লোকে সান করিয়! শুচি হয়। 
ইহা স্বাস্থারক্ষার পক্ষে প্রশংসনীয় রীতি । মল-মূত্রত্যাগ ও দূরীকরণের 
উদ্দেশে কি প্রকার ব্যবস্থা কর! সঙ্গত, তাহাই প্রথমে বলিতেছি। 

আমরা সাধারণত পায়খানায় মলত্যাগ করি এবং আমাদের 
মৃত্তত্যাগেরও একটা নির্দিষ্ট স্থান আছে। পর্ীগ্রামে কেহ কেহ 


 জল-নিঃসরণ-পথ ও আবর্জন] . ৬৩ 


পায়খানার পরিবর্তে বাগান অথবা মাঠে মলত্যাগ করে। তাহারা 
জানে না যে, পরিত্যক্ত মল-মৃত্র হইতৈ কলেরা, টাইফয়েড, হুক্‌ওয়ার্ম্‌ 
প্রভৃতি রোগের স্থষ্টি হয়। অতএব, এরূপভাবে মলত্যাগ করা যে 
অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ব্যবস্থা, সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই। 
পায়খানায় মলত্যাগ করাই সঙ্গত। 

পায়খান।।-_সাধারণত বসত-বাটার উত্তর-পশ্চিম কোণে শয়ন-ঘর, 
রান্লা-ঘর ও পানীয় জলের কৃপ কিংবা পুকুর হইতে ৪০1৫০ হাত 
দূরে পায়খানা নির্মাণ করিতে হয়। তথায় শিশু ও বিশেষ অস্থুস্থ 
লোক ব্যতীত বাড়ীর অপর সকলেরই মলত্যাগ করা উচিত। পায়খান' 
যত দুরে হয়, ততই ভাল। 

শহরে পাকা পায়খানার ব্যবস্থা আছে । পাকা পায়খানাতে একটি 
পাত্র থাকে, তাহার মধ্যে মলত্যাগ করিতে হয়। পায়খানায় 
বসিবার স্থানের সম্মুখ দিয়া মৃত্রত্যাগ ও শৌচের জন্য একটি ছোট 
নালা! থাকে । স্থতরাং, মৃত্র কিংবা শৌচের জল সেই পাত্রের মধ্যে 
ন! পড়িয়া উক্ত নালা দিয়া বাড়ীর প্রধান নর্দমায় গিয়া পড়ে। প্রতিদিন 
পায়খানার মল পরিষ্কার করিবার ব্যবস্থা থাকে । ছুর্গন্ধ-নিবারণের জন্য 
মধ্যে মধ্যে পায়খানার ভিতরে ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হয় এবং 
ফিনাইল দিয়া প্রতিদিন ধোয়া হয়; এ ব্যবস্থা ভালই । 
, পঙ্লীগ্রামে পাকা পায়খানা! কমই দেখিতে পাওয়া যায়। অধিকাংশ 
বাড়ীতেই কাচা পায়খানা । মাটিতে দেড় কিংব! ছুই হাত পরিযাঁণ 
গভীর ও অল্পপরিসর একটি গত” খু'ড়িতে হয়; তাহার একটু উপরে 
কাঠ অথব! বাশ দিয়া বসিবার স্থান তৈয়ারী করা হয়। পায়খানার 
চারিদিক বেড়া দিয়া ঘিরিয়া দেওয়া উচিত। যাহাতে পায়খানার 
মধ্যে বৃষ্টির জল না পড়ে, সেইজন্য উহার উপরে ছোট চালা বাঁধিয়া 


৬৪ 


প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিষ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


দেওয়া হয়। লেই চালার মধ্যে বসিয়া গতেকর ভিতরে মলত্যাগ 
করিবে । মলের ছুর্গন্ধ-নিবারণের নিমিত্ত প্রত্যেক বার মলত্যাগের 
পরই উচ্থার উপরে ছাই অথবা শুকনা মাটি ছড়াইয়া' দিবে। 


















লালা 
2717777 





না 
॥ 
















[1 





ম্সত্যাগ ও শৌচকার্ধের জন্য পায়খানার 


_ গতের পাশ দিয়াই ছোট নালা রাখিবে, 


তাহা হইলে মূত্র ও জল সেই মলের 
সহিত মিশিয়া ক্রমশ পচিবে না এবং ছূর্ন্ধ 
বাড়াইতে পারিবে না । পায়খানার মল-মৃত্রাদি 
বৃষ্টির জলে ধুইয়া যাহাতে কখন কোনবপে 
কৃপ বা পুকুরের জলের সহিত মিশিতে না 
পারে, সেইরূপ ব্যবস্থা করিবে । একটি 
পায়খানা মলে ভবাট হইয়া গেলে, তাহ! 
মাটি দিয়া ভালরূপে চাপা দিবে এবং 
অন্ধ স্থানে তদন্ুদূপ আর একটি পায়খান৷ 
তৈয়ার করিবে। | 


মল-বিশোধক পায়খানা আজকাল নলকৃপের মতই জনপ্রিয় 
হইতেছে। প্রতি গ্রামে মল-শোধক পায়খানায় প্রচলন আইনত 
হওয়া দরকার। প্রতি ইউনিয়ন বোর্ডের কর্মকতরদের এ বিষয়ে 
মনোযোগ দেওয়া অবস্ত কতব্য। ইহার প্রস্তত-প্রণালী খুব সোজা 
এবং বৈজ্ঞানিক রীতির উপর ইহার কার্যকারিতা নির্ভর কৰে। মল 
ও জল একটি বাযুহীন অদ্ধকারময় প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করে। সেখানে 
পর্যাপ্ত জল থাকার বন্দোবস্ত আছে। জলের উপরিভাগের একফুট 
নি্দেশে সাইফোন নল (950০7. (5১০) পাশাপাশি ছুইটি 
ববায়ুহীন জলপূর্ণ গ্রকোষ্ঠের সহিত সংযুক্ত আছে। ইহাতে প্রথম 


জল-নিঃসরণ-পথ ও আবর্জন। ৬৫ 


প্রকোষ্ঠের ভামমান মল দ্বিতীয় প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করিতে পারিতেছে 
না, অথচ ভ্রবণীয় অংশ জলের সহিত মিশিয়া যাওয়ায় উহাকে 
গন্ধ-ব্জিত এবং অনেকটা নির্দোষ অবস্থায় দ্বিতীয় প্রকোষ্ঠ হইতে 
বাহির করিয়া লইয়া! জমিতে সাররূপে ব্যবহার করা যাইতে পারে বা 
ড্রেনের জলের সহিত মিশাইয়া খাল বা নদীতেও উহা! বহাইয়া দেওয়া 
যাইতে পারে। অনেকে চুণ বা ক্লিচিং পাউডার মিশাইয়াও থাকেন। 





ধু | সি নিস ক সি ৩ শিলা 
২১২১৫৯৭৩384 94-1,৮9০ ২3১8৮২519২8, 


মল-বিশোধক পায়খান। 


ইহাতে বিশোধন কার্ধ সম্পূর্ণ হয় ও জলীয় পদার্থ নিরাপদ্ভাবে জলাশয়েও 
মিশিতে পারে। . 
'. অনেকে ছুইটির স্থানে তিন বা চারিটি প্যস্ত প্রকোষ্ঠও প্রস্তত করিয়া 
মলশোধক পায়খানাকে আরও কার্ধকরী করিয়া থাকেন। 

এইপ্রকার প্রথার মুলকথা এই যে, ময়লাতে যে জীবাণু থাকে 
তাহার মধ্যে অনেকগুলি অ-বায়বীয় (47188707010 ); ইহার! বায়ুর 
অভাবে অন্ধকারে মলকে দ্রবণীয় করিয়া! একেবারে যবক্ষারজানযুক্ত 


৬৬ প্রবেশিক!। গার্বস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


জৈব ( 07:£81)10 ) সামগ্রীকে অ-জৈব (13)0728116 ) নাইট্রেট ও 
নাইট্রাইটে পরিণত করিয়া! জমির সাররূপে পর্যবসিত করিয়! দেয়। 

মুত্রত্যাগের ব্যবস্থা ।-_মৃত্রও মলের ন্যায় অত্যন্ত দূষিত পদার্থ । 
মৃত্রত্যাগের জন্য শয়ন-ঘর, রান্না-ঘর, কৃপ বা! পুকুর হইতে অনেকটা দূরে 
নর্দমার পার্থে একটা স্থান নির্দিষ্ট করিবে। বাড়ীর সকলেই যাহাতে 
তথায় মুত্রত্যাগ করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখিবে। মূত্র হইতে একপ্রকার 
বিষম ছূর্গন্ধ বাহির হয়। তোমরা জান, রৌদ্র ও বাতাসে দুর্গন্ধ নষ্ট 
করে। অতএব, যে স্থানে প্রথর রৌব্র লাগে ও সর্বদা বাতাস খেলে, 
সেখানে মৃত্রত্যাগের ব্যবস্থা করিবে। তথায় মধ্যে মধ্যে ফিনাইল, 
শুক্না মাটি ও ছাই ছড়াইয়া দিলে দুর্গন্ধ কমিবে। বাড়ীর যেখানে- 
সেখানে মুত্রত্যাগ কর] বড়ই দুষণীয়। 

আঙিনা বা উঠান সব সময়ের জন্য পরিষ্কৃত রাখা প্রয়োজন। 
তথায় কখনও আবর্জনাদি জম! করিয়া রাখিবে না। উহা! এরূপভাবে 
ঢালু রাখিবে যে, জল পড়িলেই তাহা অনায়াসে নর্্মায় চলিয়া 
যাইতে পারে। সকালে ও বিকালে ঝাট! দিয়া উঠান পরিফার 
করিবে । পাকা উঠান হইলে ভাল জল দিয়া ধুইয়া দিবে এবং 
কাচা উঠান হইলে নিকাইয়া দিবে । উহার আশে-পাশে আ-গাছা। 
লতা, গুল্ম কিংবা বড় বড় ঘাস জন্মিতে দিবে না; লাউ, কুমড়া, শশা 
প্রভৃতির গাছ জন্মাইয়া স্র্যালোক ও বাযু-প্রবেশের ব্যাঘাত ঘটাইবে 
না। এরূপ জঙ্গলা উঠানে সাপ, বৃশ্চিক প্রতৃতির উপদ্রব হওয়া 
অসম্ভব নয়। 

বাড়ীর ভিতরের ও পার্থের চলাচলের পথ সন্বন্ধেও এ প্রকার 
সাবধানতা অবলম্বন করিবে। তাহা হইলে পথ পরিচ্ছন্ন থাকিবে 
এবং বাড়ী অস্বাস্থ্যকর হইবে না। 


গৃহে বন্ত্রাদি ধৌতকরণ-কার্য ৬৭ 


চতুর্দিকস্থ স্থান অস্বাস্থ্যকর হইলে বসত-বাটাও যে অস্বাস্থ্যকর এবং 
বাসের অযোগ্য *হয়, তাহা পূর্বেই বলিয়াছি। এ-বিষয়ে যথোচিত 
মনোধোৌগী হইবে । বাড়ীতে নর্দমা রাখিলে দুষিত জলাদি তথায় সঞ্চিত 
না হইয়া বড় নার্মা, খাল বা নদীতে যাইয়া পড়িবে। 





ভ্িত্জীম্স পন্টিজ্জ্ছেক 
. গুঁহে বন্ত্রাদি ধৌতকরণ-কার্য 


স্বাস্থ্যরক্ষার নিমিত্ত শারীরিক পরিচ্ছন্নতার ন্যায় পোষাক-পরিচ্ছদের 
পরিচ্ছন্নতারও একান্ত প্রয়োজন। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিষ্কার ও পরিচ্ছ্ 
থাকিলে দেহে রোগের জীবাণু প্রবেশ করিতে পারে না। বস্তি 
সম্বন্ধেও ঠিক সেই কথা। পরিষ্ৃত বস্ত্রাদি ব্যবহার করিলে শরীরে 
ময়লা লাগিতে পারে না; পরন্ত, মলিন বস্ত্রাদির ময়লা গায়ে লাগিলে 
বহু রোগ জন্মে। আমাদের দেশে শীতের চেয়ে গ্রীক্মই বেশী। 
এজন্য, সামান্য পরিশ্রম করিলেই শরীর হইতে ঘাম বাহির হয়। 
গ্রীষ্মকালে পরিশ্রম না করিলেও অবিরত ঘাম নির্গত হয়। ঘামের 
সহিত যে দূষিত পদার্থ বাহির হয়, তাহা তোমরা জান। উহা! 
আমাদের ব্যবহৃত বস্ত্রাদিতে লাগিয়া খুব দুর্গন্ধ জন্মায়। ইহা 
ছাড়া, বাহিরের ধুলা-বালি প্রভৃতি ময়লাও আমাদের জামা-কাপড় 
প্রভৃতিতে সর্বদাই কিছু-না-কিছু লাগে। দুর্গন্ধযুক্ত মলিন বস্তা 
বহু রোগের জন্মস্থান | যাহারা এইরূপ বস্ত্রাদি ব্যবহার করে, লোকে 


৬৮ প্রবেশিক!। গারহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


তাহাদের নিকট হইতে ম্বণাভরে দূরে সরিয়া যায়। আবার, 
বস্্রাদি ময়লা হইলে যে কেবলমাত্র দুর্গন্ধযুক্ত এবং দেখিতে বিশ্রী 
হয় তাহাই নহে; মলিন বস্ত্রার্দি অতিসহজে বস্ত্রের তস্ত-ধ্বংসকারী 
নানাবিধ বস্ত্রকীট আকর্ষণ করে এবং শীদ্রই জীর্ণ হইয়া ছাড়িয়া 
যায়। এখন বুঝিতে পারিতেছ---কি স্থাস্থ্যরক্ষার পক্ষে, কি বেশ- 
ভূষাদির পারিপাট্য রক্ষার জন্য কিংবা গৃহস্থালীর অর্থসমন্যার দিক্‌ 
হইতে--আমাদের ব্যবহার্য বস্ত্রাদির পরিফার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা 
সর্বদাই একান্ত প্রয়োজন । 
_ স্ত্রাদি নিয়মিতভাবে অল্প মলিন থাকিতেই পরিষ্কার কর! উচিত। 
বস্ত্র যত বেশী ময়লা হয় তাহা পরিষ্কার করিতে তত বেশী পরিশ্রম 
এবং সোডা-সাবান বা অন্যবিধ মৃল্যবান্‌ রাসায়নিক ত্রব্য বেশী মাত্রায় 
প্রয়োজন হয় এবং বস্ত্রের ক্ষতির কারণও বেশী ঘটে । 

মলিন বস্ত্রাদি সাধারণত ধোঁপাবাড়ী দিয়াই কাচাইয়া লওয়1 হয়; 
কিন্তু, সর্বদা একমাত্র ধোপাদের উপর নির্ভর করিলে অনেক সময় অনেক 
অস্থৃবিধা ভোগ করিতে হয়। বস্ত্রা্দি ধৌতকরণ-কার্ধ খুব কঠিন নয়। 
এই বিষয়ে জ্ঞান থাকিলে পরমুখাপেক্ষী হইতে হয় না; গৃহস্থের অর্থ- 
সমস্তারও ক্তকটা সমাধান হয় । 

(ক) ধোতকার্ষে প্রয়োজনীয় তৈজসাদি ও তাহার যত । 

গৃহে বস্ত্রাদি ধৌতকরণ-কার্ষে ব্যবহৃত সরগ্রামা্দি মনোনয়ন ও 
তাহাদের যত্ব সম্বন্ধে বিশেষ মনোযোগের প্রয়োজন । 

ধৌতকরণ-কার্ধে মাটির গামলা, মাটির হাড়ি এবং ভিজাইবার জন্য 
মাটির টবই প্রশস্ত। এইগুলি প্রত্যেকবার ব্যবহারের পর উত্তমরূপে 
ধুইয়া মুছিয়া পরিষ্কার করিয়া উপুড় করিয়া রাখিতে হয়। ইহা ছাড়া, 
কাপড় কাচিবার জন্য খুব মস্থণ চওড়া পুরু কাঠ বা! পিঁড়ি, মহ্ছণ পরিষ্কৃত 


গৃহে বন্ত্রাদি ধৌতকরণ-কার্য ৬৯ 


শান-বাধান স্থান কিংবা প্রশত্ত পাথর ব্যবহার করা যাইতে পাবে। 
কাপড়, পাট ও পালিশ করিবার .জন্য লোহা, বা .পিতলের, ইত্বিরিও. 
রাখিতে হয়। 

বস্ত্রাদি শুকাইবার জন্য পরিষার *দড়ি বা বাশের কিংবা কাঠের 
দণ্ডেরও প্রয়োজন হয়। অনেকে বস্ত্রাদি শুকাইবার জন্য উম্মুক্ত 
তৃণাচ্ছাদিত মাঠ ব্যবহার করিয়া থাকেন । এটি হ্থন্দর ব্যবস্থা; কারণ, 
ইহাতে বস্ত্রাদিতে মাড় মিশান নীলের জল ছিটাইয়! দিবার স্থবিধা হয়। 
ধৌতকরণ-কার্ষে ব্যবহৃত তৈজসাদি ব্যবহারের পর পরিষ্কার-পরিচ্ছনু 
করিয়া গৃহে যথাস্থানে রক্ষা করা! প্রয়োজন; নতুবা, ব্যবহার-সময়ে 
অনেক অন্থবিধা ভোগ করিতে হয়। 

বস্তির ময়ল। ও নানাবিধ দাগ অপসারণের উপায়।__ 
বস্ত্রাদিতে কোন দাগ লাগিলে, অবিলম্বে তাহা উঠাইয়া ফেলিবার ব্যবস্থা 
করা উচিত; বিলম্ব হইলে এ দাগ উঠান কঠিন হইয়া পড়ে। 
 বস্ত্রে ফলের রস বা কষ লাগিলে তৎক্ষণাৎ সেই স্থানটি ধরিয়া তথায় 
খানিকটা লবণ ঘষিয়! জলে ধুইয়া ফেলিবে। যদি এ রস বা কষ শ্ুকাইয়া 
যায়, তবে লেবুর রস, তেঁতুল জল, সাইটি.ক বা টার্টারিক আযাসিড ভ্বারা 
বার বার ঘষিয়া জলে এ অন্ন ধুইয়া ফেলিয়া শুকাইয়৷ লইবে। জতা- 
পাতার সবুজ রং (ক্লার্ফিলের )-এর দাগ লাগিলে মেখিলেটেড 
'স্পিরিটে ভিজাইয়া তখনই সাবান জলে ধুইয়া ফেলিবে। 

চা, কফি, কোকোর বং লাগিলে সন্ত সদ্য বস্ত্রের সেই অংশ প্রচুর 
জলে ধুইয়া ফেলিতে হয়, অথবা গ্লিসারিন মিশান জলে ধুইয়া পরে সাবান 
জলে ধুইতে হয়। 

কাপুড়ে ছাপার. কালি লাগিলে--একটু তাপিন তেলে রগড়াইয়া 
গরম জল ও লাবান ঘষিলেই উঠিয়া যায়। লেখার কালির দাগ উঠাইতে, 


৭৬ প্রবেশিক। গারহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 
হইলে হাইড্রোজেন পেরকৃসাইভ দিলেই যাইবে ।. নতুবা, অকৃম্তালিক 


আযালিড দিবে। 

লোহার মরিচার দাগ-_অকৃস্যালিক আযসিড দ্বারা যাইবে । 

রক্তের দাগ-_গ্লিসারিন-জলে বার বার ধুইয়া পরে সাবান জলে 
ধুইতে হয়। 

(খে) ধোৌতকার্ধে প্রয়োজনীয় ক্ষার-পদার্থ, শ্েতসার, 
নীল প্রভৃতির কার্য। 


ধোঁভকার্ষে ময়লা-নাশক মশলাদি।__সোডা, সাবান, 
সাজি-মাটি, কলার বাসনা বা ক্ষার, ত্েঁতুলবীজের ক্ষার বা অন্যবিধ 
গাছ পোড়ান ছাই, রিটা ফল এবং বিবিধ রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহৃত 
হইয়া থাকে । 

ধৌতবস্ত্রাদি ভাজ, পাট ও পালিশ করিবার জন্ত বিবিধ মাড় বা 
কলপের প্রয়োজন হয়। এই মাড় বা কলপের জন্য চাউল-সিদ্ধ জল 
বা ভাতের মাড়, চিড়া, খই বা যব-সিদ্ধ জলে শ্বেতসার-পদার্থ বিদ্যমান 
থাকায় উহা! আমরা ব্যবহার করিয়া থাকি; কারণ, যথোপযুক্ত পরিমাণে 
মাড় ব্যবহার করিলে শু বস্ত্রাদির ভাজ ঠিক থাকে এবং অল্প ভিজা 
অবস্থায় ইস্তিরি করিলে ইচ্ছামত ভাজ কর! যায় ও জাম-কাপড় 
ভালভাবে পাট ও পালিশ হইয়া থাকে । 

ধৌত বস্ত্রাদির শুত্রতা সম্পাদনের জন্য অনেক সময় নীলের ব্যবহার 
প্রচলিত আছে। যে কাপড় কাচিলে বেশ ধবধবে সাদা হয়, তাহাতে 
সাধারণত নীলের প্রয়োজন হয় না। সাবানের দোষে ও জলের দোষে 
অনেক সময কাচ! কাপড়ে লাল্চে রং হয়। আবার, কোরা কাপড়েরও 
লালচে বং থাকে । এরপ স্থলেই নীলের ব্যবহার আবশ্ঠক । 


গৃহে বন্ত্রাদি ধৌতকরণ-কার্ধ ৭১ 


কাপড়-কাচা সোডা ( ভা৪81,108 3০৫৪) একটি রাসায়নিক 
পদার্থ। ইহাতে প্রধানত সোভিয়াম কার্বনেট (8০1870 ০৪7১০- 
78৪ ) আছে এবং কিয়দ্ংশ জলীয় পদার্থ আছে- ৪5005, 30750 
উপাদান আছে। রর 

আমাদের দেশে রঙিন্‌ “সাজিমাটি' নামক একপ্রকার ঝাসায়নিক 
মাটি পাওয়া যায়। ইহাও একটি ক্ষার-পদার্থ__ব5005, টি ৪700১, 
19250, 0185 ৪6০. ইহার উপাদান । 

রিটা (৯০৮-7০৮) একপ্রকার গাছের ক্ষার পদার্থযুক্ত ফল।। 
এই ফলের বীজটি ফেলিয়া দিয়া উহার খোন। ছাড়াইয়৷ রাত্রে গরম 
জলে ফেলিয়া রাখিলে পর দিবস প্রাতে মোভা বা! ক্ষার জলের মত 
ব্যবহৃত হইতে পারে । রেশমী ও পশমী-বস্ত্রাদি ধৌতকরণ-কার্ধে ইহার 
প্রচলন আছে। ক্ষার (8০৫% ) মিশান ঈষদুঞ্চ জলে বা এ জলের 
ভাপরায় এবং শীতল জলের সাহায্যে মলিন বস্ত্ার্দির ময়লা দুরীভূত 
হয়। কোন কোন অবস্থায় অন্যবিধ রাসায়নিক দ্রব্যেরও প্রয়োজন হয়। 
ক্ষারদ্রব্যের পরিমাণ বেশী হইলে বন্মাদির সুতা নষ্ট হইতে পারে। 

সাজিমাটি ও চুণ একত্র জলে গুলিয়া ফুটাইলে যে উঞ ক্ষার জল 
হয় তাহাকে কন্টিক্‌ সোডা বা কস্টিক্‌ পটাশ বলে। ইহাতে বস্তি 
নষ্ট করে। সম্ভা সাবানে রজন মিশান থাকে বলিয়া দেখিতে বাদামী 
রং হয়, ফেনাও বেশী হয়; কিন্তু কাপড় বেশী স্থায়ী বা'টেকসই হয় না। 

সন্তায় ডেল! সাবানে ছাই, মাটি কিংবা অতাধিক ক্ষার থাকিতে 
পারে। এইজন্য সন্তা বাজে সাবানে বস্মাদি ধৌত কর! উচিত নয়। 

খানিকটা সাবান জলে গুলিয়া তাহাতে পাতিলেবুর রস মিশাইলে 
যদি জলে খুব বেশী বুদ্ধ উঠে তবে বুঝিবে, এঁ সাবানে ক্ষারের 
মানা বেশী। বেশী ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করিতে নাই। খর 


৭২ প্রবেশিকা গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


( নধ৭) জলে সহজে সাবানের ফেনা হয় না, কাজেই উহাতে 
বস্থাদিও ভালরূপ পরি্ুত হয় না; পরস্ত, এ জলের ক্যালপিয়াম্‌ বা 
ম্যাগনেপিয়াম-লবণ সাবানের সঙ্গে মিশিয়! খণ্ড খণ্ড চটচটে পদার্থের 
আকারে বস্ত্রাদিতে লাগিয়া যান । এ কাপড় ইস্তিরি করিবার সময় 
এগুলি পুড়িয়া কাপড়ে দাগ ধরে। 

থর, জল ভালরূপ ফুটাইলে “কোমল” হয়; অন্যথা, উহাতে 
সামান্য কাপড়-কাচা সোডা মিশাইয়া লইতে হয়। থর জলে কাপড় 
কাচিবার পর পুনরায় ভাল কোমল” জলে বস্ত্রাদি ধৌত করিয়া 
সোডা ছাড়াইয়া লওয়া প্রয়োজন । 

€গ) কার্পাসের সৃতার বন্ত্রাদি ও প্টবন্ত্রাদি ধোৌঁতকরণ- 
প্রণালী-__ 

কার্পাস-বস্ত্রাদির ধৌভকরণ-প্রণালী ।__ পরিষ্কার “কোমল, 
(3০: ) এবং শীতল বা ইষছুষ জলে বস্বাদি ভিজাইয়া রাখিয়া 
প্রথমত তাহাদের ময়লা কতকটা দূর করিয়া নিংড়াইয়া লইবে; 
তারপর এগুলিকে সাবান-জলে ফেলিবে। বড় মাটির বা এনামেলের 
পরিফ্ার পাত্রে প্রয়োজনমত খুব গরম জল ঢালিয়া তাহাতে 
কাপড়-কাচা' সাবান কুচি কুচি করিয়া কাটিয়া ফেলিবে এবং একটি 
পরিষ্কার কাষ্ঠখণ্ড দিয় এ সাবানগুলি গুলিয়া জলের সহিত মিশাইয়া 
লইবে। পরে এ জল হাতসহা মত গরম থাকিতে থাকিতে পূর্বের এ 
কাপড়গুলি উহাতে ডুবাইবে এবং কয়েক মিনিট ধরিয়া উপ্টাইয়া 
পাণ্টাইয়! একপাশে ঠাসিয়! রাখিয়া দিবে । কিছু সময় পরে পরিষার 
শান্প্বাধান স্থানে কিংবা পুরু চণ্ড়া তক্তার উপরে বারবার অল্প অল্প 
ঠাণ্ডা পরিক্ষার জল দিঘ্না থুপিয়া এ সাবান-জলে মাখানো কাপড়গুলি 
কাচিবে। কাপড়গুলি সম্পূর্ণ পরিষ্কার না হওয়! পর্যন্ত কাচিবে। বেশ 


গৃহে বস্ত্রাদি ধৌতকরণ-কার্য ৭৩ 


পরিষ্কত হইলে কাপড়ের কোন অংশে সামান্য সাবান-কুচিও ( সোডা 
যদি পূর্বে ব্যবহার করা না হইয়া থাকে ) যেন লাগিয়া না থাকে। 
কাপড়ে সাবান-কুচি লাগিয়া থাকিলে ইন্তিরি করিবার সময় কাপড়ে 
দাগ হইতে পারে। 

এখন কাপড়গুলি নিংড়াইয়৷ লইয়া অপর একটি পরিফ্ষার পাত্রে 
সামান্তপরিমাণ সাবান-গোলা জলে আবার কিছু সময় ফুটাইয়া লও । 
জল গালিয়া! ফেল। কিছু শীতল হইলে কাপড়গুলি প্রথমে ঈষদুষ্ণ 
জলে এবং পরে প্রচুর শীতল জলে শেষবারের মত ধুইবে। এইবার 
প্রত্যেক কাপড় হইতে ভালরূপে জল নিংড়াইয়া উহা খোলা বাতাসে 
ও বৌদ্রে শুকাইতে দিবে । ময়দানে পবিফার ঘাসের উপর মেলিয়া 
দেওয়াই ভাল। কতকটা শুকাইয়া আসিলে কাপড়ের উপর মাঁড়-মিশান 
ফিকা নীল জলের ছিটা মাঝে মাঝে দিবে । 

কাপড় রোদে শুকাইয়া গেলে উঠাইয়া পাট, ও. ভাজু করিবার, জন্য 
উহাতে মাড়-জল ছিটাইয়া ইন্তিরি করিয়া লইবে। 

রেশম-বন্ত্র ও পশম-বল্র ধোৌঁভকরণ-প্রণালী।-_রেশম-বন্ 
পরিষ্কার করিতে হইলে ঈমদ্ফ্ণ গরম জলে ভাল কাপড়কাচা সাবান 
বেশ ভাল করিয়া গুলিয়া লইবে; তাহার মধ্যে বন্মগুলি ডুবাইয়া 
দিবে। ১৫।২০ মিনিটকাল এই ভাবে রাখিবার পর প্রচুর ঠাণ্ডা ও 
গরম জলে এক একখানি বস্ত্র সাবধানতার সঙ্গে থুপিয়! থুপিয়া 
কাচিয়া লইবে। ইহাতে বস্ত্রের ময়লা সম্পূর্ণনূপে না গেলে আবার 
নৃতন ঈষছুষ্জ সাবান-গোলা! জলে এ বস্ত্র ভিজাইয়া রাখিয়া কিছুক্ষণ 
থুপিয়া কাচিয়া লইবে। 

রূডিন রেশম-বস্ত্ পরিষ্কার করিতে হইলে শীতল জলের সৃহিত কিছু 
ভিনিগার মিশান ভাল । রেশম-বন্ত্র পরিষ্কৃত হওয়ার পর উহা না 


৭8 প্রবেশিকা গার্হস্থ্-বিজ্ঞান ও স্বাস্থাবিধি 


নিংড়াইয়া কোন পরিষ্কৃত ছায়াধুক্ত স্থানে রাখিয়া যথোপযুক্ত ভাবে 
টান করিয়! শুকাইতে দিবে। সম্পূর্ণ শুকাইবার পূর্বেই উহার উপুর 
সুতি কাপড় রাখিয়া ইস্তিরি করিবে . 

পশম-বন্্ও রেশম-বস্ত্ের স্ঠায় একই প্রণালীতে পরিষ্কার করিবে। 

রেশম ও পশম-বন্ত্র ধৌতকরণ সম্বন্ধে সাবধানতা ।_ 
অতিরিক্ত গরম জল বা খর? (1780 ) জল কাচ ব্যবহার করিতে 
নাই। এ জলের ব্যবহারে সাবানের ফেনা হয় শা; উপযুক্ত 
' ক্বার্ধ হয় না-_-অথচ, সাবানের অপচয়ও অধিক হইয়া থাকে । জলে 
যেন কোনরূপে ক্ষারের মাত্রাধিক্য নাঁ ঘটে । কাপড়ের উপর হাতে 
করিয়া সাবান ঘধষিতে নাই । তাহাতে উহার ন্থৃতা নষ্ট হইয়া যায়। 

সত্ভাদরের অপরষ্ট সাবান ব্যবহার করিবে না। রেশম ও পশম- 
বন্্র কাচ আছড়াইবে না বাঁ নিংড়াইবে না। ছায়াযুক্ত স্থানেই 
শুকাইবে। 

বস্ত্র ধৌতকরণ সম্বন্ধে কয়েকটি বিশেষ কথা ।_্তি 
ও পট্ট-বস্ত্রে অত্যন্ত তেল-ময়লা আটকাইলে বেশী পরিমাণে কন্টিক্‌ 
বা কার্বনেট সোডা না দিয়া সাবান-গোলা জর্গে সামান্য পরিমাণ 
সোহাগা বা কেরোসিন তৈল দিলে সুতা! নষ্ট হইবে না, অথচ এ 
তেল-ময়ল! সহজেই ছাড়িবে। 

পশম ও রেশম-বস্ত্রে বেশী তেল-ময়লা আটকাইলে শুফ অবস্থাতেই 
প্গুলিতে পেট্রল, বেগ্রিন প্রভৃতি রাসায়নিক ত্রব্য ঘষিবে কিংবা 
সাবান-জলে খুব সামান্ত পরিমাণে সোহাগা বা এমোনিয়া লোশন 
কমশাইয়। তাহাতে কাপড় কাচিবে। 

সাধারণ সম্ভাদরের সাবান, সোডা :ও জলে পশমী ও রেশমী-বন্তাদি 
নষ্ট হয় বলিয়া আজকাল পেট্রল, বেপ্রিন, ঈথার, স্পিরিট, এসিটোন্‌, 


রন্ধন-বিধি ৭৫, 


ক্লোরোফম” বা কার্বন টেট্রাক্লোরাইভের মধ্যে উক্ত বস্তি ভুবাইয়া : 
অতি সুহজে পরিষ্কৃত কর! হুইয়া থাকে । এই রাসায়নিক ভ্রব্যগুলির 
ব্যবহারে স্থবিধা এই যে, উহার! অতি শীদ্্র ময়লা দূর করে। উহাদের 
রং বা গন্ধ কাপড়ে লাগে না; স্থৃতরাং, বস্ত্রাদির কোন ক্ষতি হয় 
না। তবে, এগুলি খুব মুল্যবান্। ইহাদের মধ্যে কতকগুলি দাহ 
পদার্থ বলিয়া! উহাদের ব্যবহারকালে খুব সাবধানতা অবলম্বন করিতে 
হয়। 


স্ডত্ীীন্স ন্িজ্্ছেক 


রন্ধন-বিধি 
€ক) থাচ্য (7500৫) 


ইঞ্জিন চালাইতে হইলে যেমন জল, কয়লা! ও আগুনের প্রয়োজন, 
মানবদেহকে চালাইতেও তেমনি খাদ্যের ও জলের আবশ্যক | ইঞ্জিনের 
কর্মশক্তির মূল যেমন কয়লা ও জল প্রভৃতি, মানুষের কর্মশক্তির মূলও 
তেমনি খাদ্য ও জল। খাদ্যের ও জলের অভাবে মানুষের দেহ-যন্ত্ 
একেবারে অচল হইয়া পড়ে। 

আমর! যাহা কিছু খাই, সে সকলই খাদ্য নহে । সকলগুলিকে খাদ্য 
বলিলে তুল হয়। যে সকল সামগ্রী আহার করিলে--(১) শরীরের 


৭৬ প্রবেশিকা গার্ৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ক্ষয় পূরণ হয়, (২) শরীরের পুষ্টি ও বৃদ্ধি সাধিত হয়, (৩) শরীরে 
রোগ-প্রতিষেধক শক্তি জন্মে, (৪) সকল অবস্থায় শরীরের স্বাভাবিক 
উত্তাপ রক্ষিত হয় এবং (৫) আবশ্যকমত কার্য করিবার শক্তি 
জন্মেবতাহাই “খাদা নামেণ্মভিহিত হইতে পারে। খাদ্যের সহিত 
স্বাস্থ্যেরংঅতি নিকট সম্বন্ধ । 

ক্ষয়পূরণাদি বিভিন্ন কার্ধের জন্য বিভিন্ন খাদ্যের প্রয়োজন হয়। 
আমরা যে সকল দ্রব্য খাদ্যরূপে গ্রহণ করি, তাহার মধ্যে নিয়লিখিত 
' ছয় জাতীয় পুিকর খাদা-উপাদান ( টিউ01615৩  (20010)19স ) 
থাক! নিতান্ত প্রয়োজন £- 

(১) আমিষ-জাতীয় উপাদান (7১:০6610)3 )) (২) শর্করা-জাতীয় 
উপাদান (0817১018669); (৩) তৈল-জাতীয় উপাদান 
( দা )$ (৪) লবণ-জাতীয় উপাদান (৯113 )) (৫) জল-জাতীয় 
উপাদান ( আ ৪০: )) (৬) ভাইটামিন ( ড100105 )। 

১। আমিষ-জাতীয় উপাদ্দান।-_মাছ, মাংস, ডিমের শ্বেতাংশ, 
পনির, ছানা এবং নানাবিধ ভাল প্রভৃতি আমিষ-জাতীয় খাদ্যের 
অন্তর্গত। আমিষ-জাতীয় খাদ্যে নাইট্রোজেন অধিক পরিমাণে 
বর্তমান থাকে । মাংসপেশী ও দেহের অন্যান্য যন্ত্রাদির ক্ষয়পূরণ 
এবং পুষ্টিসাধনই এই জাতীয় খাদ্যের প্রধান কার্ধ। আমাদের শরীর 
্ষু্র ত্র শুশ্ম কোষ দ্বারা নিমিত। সেই সকল কোষ প্রোটোপ্ল্যাজম্‌ 
(12000118৪1০ ) নামক এক প্রকার নাইট্রোজেন-প্রধান পদার্থের 
দ্বারা গঠিত। আমিষ-জাতীয় এবং লবগ-জাতীয় উপাদানের দ্বারা 
এই সকল প্রোটোপ্র্যাজমের ( চ:০10191৪নাঃ ) পুনর্গঠন সাধিত হয়। 
.এভছ্াতীত, দেহাভ্যন্তরস্থিত নানাবিধ “রস' এই উপাদানের সাহায্যে 
প্রস্তত হয়। মেদ-গঠন-সম্বদ্ধেও আমিষ-জাতীয় খাদ্য কিয়ৎপরিমাণে 


খান ৭৭ 


সহায়তা করে। এই জাতীয় উপাদান দ্বারা শারীরিক দহনক্রিয়া 
নাধিত হইয়া কিয়ৎপ্ররিমীণ ভাপ ও শক্তি উৎপন্ন হুয়। 

২।" শর্করা-জতীয় উপাদদান।--চাউল, আলু, ময়দখ, চিনি, 
গুড়, এরোরুট, যব প্রভৃতি পদার্থ এই শ্রেণীর খাছ্যের অস্তভূক্তি। 
এই জাতীয় উপাদান হইতে যে তাপ ও শক্তি উৎপন্ন হয়, তাহার 
পরিমাণ তৈল-জাতীয় উপাদান হইতে উৎপন্ন তাপ ও শক্তির পরিমাণ 
অপেক্ষা অনেক কম। কিন্ত, শর্করা-জাতীয় উপাদান হইতেই 
শরীরের মেদ জন্মে। সেইজন্য অধিক পরিমাণ ভাত, মিষ্টান্ন ও রুটি 
ধাইলে লোকে মোটা হইয়1 পড়ে । 

৩। তৈল-জাতীয় উপাদান ।-__এই জাতীয় উপাদানের ঈধো ঞ& 
কেবল কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন থাকে ।' শারীরিক তাপ 
উৎপাদন করাই এই জাতীয় খাদ্যের প্রধান কার্য এবং এই তাপ. 
হইতেই আমর! কাজ করিবার শক্তি (70)67৪5 ) প্রাপ্ত হই। 
মাছ, মাংস প্রভৃতি আমিষ-জাতীয় খাছ্যের তাপ ও শক্তি উৎপাদন 
করিবার ক্ষমতা সামান্য মাত্র। ঘ্বৃত, তৈল, মাখন, চবি, চাউল, 
ময়দা, আলু, গুড়, চিনি প্রভৃতি যাবতীয় তৈল ও শর্করা-জাতীয় 
থাগ্চ হইতে আমর! শরীর-রক্ষণোপযষোগী তাপ ও পরিশ্রম. করিবার 
শক্তি প্রাপ্ত হইয়া থাকি। মাংস, অর্থাৎ আমিষ-জাতীয় খাগ্য আমাদের 
শরীরের মাংসপেশীর ও যন্ত্রাদির ক্ষয় পূরণ করে। কোন কার্য 
করিবার নিমিত্ত আমাদের যে শক্তির প্রয়োজন হয়, তাহা আমবা 
প্রধানত ভাত, রুটি, মাখন, স্বৃত, তৈল, গুড় ও চিনি প্রভৃতি খাছ্য 
£ইইতে সংগ্রহ করিয়া থাকি । এতদ্যতীত, তৈল-জাতীয় খাছের 
হারা দেহস্থিত. মেদ ( ৪) বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এবং ইহা অন্তান্ খাছোর 
পরিপাকে সহায়তা করে। 


৭৮ প্রবেশিক! গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


৪ লবণ-জাতীয় উপাদান ।-_লবণ-জাতীয় উপাদানের মধ্যে 
যে লবণ আমরা প্রতিদিন খাছ্ের সহিত ভক্ষণ করিয়া থাকি, 
তাহাই জর্ধপ্রধান। সকল প্রকার খাচ্ঠের মধ্যে লবণ 'অল্লাধিক 
বিদ্যমান থাকে । খাদ্যের সৃহিত লবণ খাইলে মুখের লাল! অধিক 
পরিমাণে নিঃকত হয়। লবণ যরৎকে পিত্ত প্রস্তুত করিতে সহায়তা 
করে/এবং পাকাশয় হইতে যে পাচক-রস ( 0185610 3109) নির্গত 
হয়, তাহার অল্লাংশ (13100110710 4610 ) লবণ হইতে উৎপন্ন 
হয়। ফল, মূল, তরি-তরকারি প্রভৃতি পদার্থের মধ্যে লবণ-জাতীয় 
উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণে বত'মান থাকে । ইহাদের দ্বারা আমাদের 
'রূক্ত 'পরিষ্কৃত হয়। টাট্কা ফলমূল ও তরি-তরকারি না খাইলে 
রক্ত বিরুত হুইয়! 'স্কাভি' (9০০: ) নামক এক প্রকার উৎকট 
পীড়া জন্মিয়া থাকে। লেবুর রস, টাটকা ফল-মূল ও তরি-তরকারি 
খাওয়াই স্কাভি রোগের মহৌষধ । 

৫। জল ।--আমাদের শরীরের প্রায় $ ভাগ জঙল। মল, মূত্র 
ঘর্ম প্রভৃতি নানা আকারে আমাদের শরীর হইতে জল প্রতিনিয়ত 
নির্গত হইতেছে । আমাদের রক্তের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণ জল আছে। 
এই জল রস্তকে তরল অবস্থায় রাখিয়া শরীরের সর্বত্র উহার চলাচলে 
সহায়তা করে। জীর্ণ খাদ্য রক্তের সহিত মিশ্রিত হইয়া শরীরের 
সর্বত্র সঞ্চালিত হয় এবং ততন্বারা শারীরিক ক্ষয়পূরণ ও পুষ্টিসাধন 
হইয়া থাকে । জল থাগ্যকে কোমল ও তরল করিয়া পরিপাকের 
এবং রক্তের সহিত মিিত হইবার উপযোগী করে। এতদ্যতীত, 
অজীর্ণ খাদ্য ও দেহোৎপন্ন নানা দুষিত পদার্থ জলের সহিত 
মিশ্রিত হইয়া মল, মূত্র ও ঘর্মের আকারে নিয়ত শরীর হইতে 
বহির্গত হয় । 


থান্ঠ ৭৯ 


৬। থাস্প্রাণ বা. ভাইটামিল। উপযুক্ত পঞ্চ প্রকার 
উপাদান "ভিন (ভাটটামিন” নামক এক প্রকার সার পদার্থ আমাদের 
শরীরের পুষ্টির পক্ষে নিতাস্ত আবশ্তাক এবং এই জাতীয় সার পদার্থ 
আমাদের থাগ্যের মধ্যে বিদ্যমান থাকা একান্ত প্রয়োজন । ভাইটামিন 
প্রায় সকল খাছ্যের মধ্যেই অল্পবিষ্তর বিদ্যমান থাকে । চাউলের 
উপরের স্তর ভাইটামিন-যুক্ত। সেইজন্য মাজা চাউল অপেক্ষা আমাজা 
চাউল বেশী পুষ্টিকর । কাচা খাগ্য-ত্রব্যের মধ্যে ভাইটামিন বেশী থাকে । 
রন্ধনের সময় আগুনের জালে অনেক ভাইটামিন নষ্ট হইয়া যাঁয়। 
কালে ভাঙা শাদা আটা অপেক্ষা ধাতায় ভাঙা অপরিষ্কার আটা 
অধিক পরিমাণে “ভাইটামিন” থাকে । আমাজা চাউল “বেবিবেরি' 
(967-139 ) রোগের মহৌষধ । 
| এ পর্যস্ত সাত প্রকার ভাইটামিনের পরিচয় পাওয়া গিয়াছে। 
(সেই সাত প্রকারের ভাইটামিন £__-৬1021210 ০ ভাতা 8, 
1৪৮ 5, ভাঁড্োনত। তে ডগা ) ও ভাঙা 
'  বিভিন্ন-জাতীয় খাছ্য-উপাদানের মধ্যে আমিষ-জাতীয় থান্য ও 
খাছ্যপ্রাণ সামগ্রী যথোপযুক্ত পরিমাণে বিদ্যমান না থাকিলে শিশু ও 
যুবকদিগের পরিপুষ্টি ও বৃদ্ধির বিশেষ ব্যাঘাত ঘটে । আমাদের খাচ্ে 
এই উভয় উপাদান কি প্রকারে বর্দন করা যায়, সেই বিষয়ে প্রভূত 
গবেষণা চলিতেছে । ভাতের সহিত আটা, ময়দা গ্রভৃতি, প্রাণিজ 
খাছ্যের মধ্যে দুগ্ধ, ডিম, মাংস ও বিভিন্ন প্রকার ডাইলের প্রস্ত দ্রব্য-_ 
ধোকা, বড়ি, পাপড় প্রভৃতি প্রত্যহ পরিমিতরূপে গ্রহণ করা উচিত। 
এইরূপ, বিভিন্ন জাতীয় ভাইটামিন উপযুক্ত পরিমাণে আহার্ষের মধ্যে 
না থাকিলে জীবের পুষি হয় না, জীবনীশক্তির হাস হয়। পরীক্ষায় 
দেখ! গিয়াছে যে, পূর্বোক্ত পাচ প্রকার উপাদানে গঠিত খাস 


৮০ প্রবেশিক৷ গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


থাওয়াইয়াও পণ্তশাবককে বীচাইয়া রাখা যায় না; কিন্তু উহার 
সহিত দুধ মিশাইয়া দিলে সে অতি তভ্রতগতিতে বাড়িয়া :উঠে। 
ইহাতেই প্রমাণ হয় যে, ছুগ্ধে এমন জিনিস আছে যাহা খাছ্যের 
সহযোগে জীবনীশক্তি বাড়াইয়া দেয়। এই পদার্থের নামই ভাইটামিন 
এবং জীবনরক্ষার জন্য ইহার একান্ত প্রয়োজন বলিয়াই ইহাকে 
গ্বাচপ্রাণ বল। হয়। 

খাগ্যমধ্যস্থ ভাইটামিন আমাদের জীবনীশক্তি . বজায় রাখে । 
সকলপ্রকার খাছ্যেই কম বেশী পরিমাণে ভাইটামিন আছে। 
ভাইটামিনের অভাব হইলে স্বাস্থ্য নষ্ট হইয়া যায়; বেরি-বেরি, স্কাভি 
প্রভৃতি সাংঘাতিক রোগ ভাইটামিনের অভাবেই জন্মে। সুতরাং, 
খাগ্ভে যথেষ্ট ভাইটামিন থাক আবশ্যক । টাটকা! ফল, তরকারি, ছুধ, 
মাখন, চাউল, ভাল, মাছ, মাংস প্রভৃতি সকল খাছ্যের মধ্যেই 
ভাইটামিন আছে। 

চাউলে যথেষ্ট ভাইটামিন থাকে; কিন্তু, খুব বেশী ছাটাই করিলে 
চাউলের ভাইটামিন নষ্ট হইয়া যায়। কলের চাউল খুব পরিষ্কার; 
চাউল যত ছাটা যায়, ততই পরিষ্কার হয়। এজন্য কলের চাউলে 
ভাইটামিন অতি সামান্যই থাকে। তাই, যাহারা কলের চাউল খায়, 
বেরি-বেরি প্রভৃতি নানা রোগ তাহাদেরই বেশী হয়। কাচা ফল, 
শাঁকসক্জি, অঙ্কুরিত ছোলা, কীাচামুগ ও মাখন ০ খুব যি 
পরিমাণে ভাইটামিন থাকে। 

আগুনের উত্তাপে খান্যের ভাইটামিন কতকটা ন্ট হইয়! যায়। 
সেজন্ত প্রত্যহ অল্লপপরিমাণে অস্কুরিত ছোলা, মুগ এবং কিছু ফলমূল, 
কাচা খাওয়া উচিত। তরি-তরকারিও শুফ হইলে তাহার ভাইটামিন; 
নষ্ট হইয়া! যায়। সর্বদা টাটকা তরি-তরকারি আহার করা উচিত। 


খাস ৮১ 


দেহ সতেজ, স্থস্থ ও সবল রাখিতে হইলে সর্বদ! টাট্কা 
তরি-তরকারি, টেকিছাটা! চাউল, যাতায় ভাঙ্গা আটা ও ফলমূল 
আহার করা কতব্য। ভাতের ফেন (মাড় ) কখনও ফেলা উচিত 
নয়) উহার সঙ্গে চাউলের সারাংশেব বেশীর ভাগই চলিয়া যায়। 
শাকসবজি সিদ্ধ করা জলও একারণেই ফেল। উচিত নয়। মংস্য, মাংস, 
ভিম প্রভৃতিও মাঝে মাঝে খাওয়া দরকার । ছুধ প্রত্যহ খাওয়। 
উচিত। 

আমাদের খাস্ছে যে পাঁচ প্রকার ভাইটামিন আছে তাহা পূর্বেই, 
বলা হইয়াছে; এখন ইহাদের প্রত্যেকটি আমাদের কি কি প্রয়োজনে 
আসে তাঁহা বলা ষাক। 

ভাইটামিন “এ” (ক) | এই জাতীয় ভাইটামিন আমাদের 
শরীররক্ষার জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়ু। ইহার অভাব হইলে শরীর 

স্বগঠিত ও পুষ্ট হয় না। সংক্রামক পীড়া প্রতিরোধের ক্ষমতাও ইহার 

খুব বেশী। দুগ্ধ, মাখন, ভিম, টাটুক! তরি-তরকারি, রুদছ মছের তৈল 
(০99 11৮97" 011), বাধাকপি, পালং শাক প্রভৃতিতে এই ভাইটামিন 
প্রচুরপরিমাণে পাওয়া যায়। মস্থর, মুগ প্রভৃতি ভাল এবং মাংসেও 
ইহা পাওয়া যায়। 

রন্ধন করিবার সময়ে উত্তাপ ও বামুর সংস্পর্শে ভাইটামিন ঞ, 
অনেকটা নষ্ট হইন্া যায়, কিন্তু ঢাকিয়া রাখিলে ইহা'লহজে নষ্ট হইতে 
পারে না। “এ ভাইটামিনের অভাব হইলে চক্করোগ, এবং শিশু ও 
বালক-বালিকাদের চুণ-জাতীয় পদার্থের অভাব হইয়া থাকে; ফলে 
দস্ত ও অস্থির পূর্ণ সংগঠন হইতে পারে ম|। 

ভাইটামিন “বি” (3--খ)1--এই জাতীয় ভাইটামিলও আমাদের 
শরীররক্ষার জন্ত বিশেষ প্রয়োজনীয় |. যথোচিত পরিমাণে এই 


৮২ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ভাইটামিনে শরীরাভ্যস্তরস্থ গ্রস্থিসমূহ হইতে এক প্রকার বস নিঃস্থত 
হইয়া শরীরের যন্ত্রাদির ক্রিয়া বৃদ্ধি করে এবং ইহাতে শরীর সুস্থ ও. 
সবল হয়। ইহার অভাবে বেরি-বেরি প্রভৃতি কঠিন রোগ জন্মিতে 
পারে। «বিঃ ভাইটামিনযুক্ত খাস্ঠ গ্রহণ করিলে বেরি-বেবিতে আক্রান্ত 
হইবার আশঙ্কা থাকে না। 

ভাইটামিন “বি” জলে গলিয়া যায়, কিন্তু রন্ধন করিবার সময়ে 
আগুনের উত্তাপে ইহা সহজে নষ্ট হয় না। ইহা জলে গলিয়া যায় বলিয়া 
ভাতের ফেনের ( মাড়ের ) সহিত ইহার অধিকাংশ বাহির হইয়া যায়। 
স্থতরাং, ভাতের মাড় ফেলিয়া দিলে এই ভাইটামিনও সঙ্গে সঙ্গে বাহির 
হইয়া যায়। এই কারণেই ভাতের মাড় এবং তরি-তরকারি সিদ্ধ জলও 
ফেলিয়! দেওয়া উচিত নহে। 

অঙ্কুরিত ছোলা, মুগ, মটর ও চাউল প্রভৃতিতে ভাইটামিন “বি 
প্রচুরপরিমাণে থাকে । সবুজ বর্ণের পাতায়, ফল ও বীজে এই ভাইটামিন 
থাকে। যে সকল পশু ঘাস পাতা খাইয়া জীবনধারণ করে, তাহাদের 
মস্তি, যরুৎ প্রভৃতি শারীরিক যন্ত্রে এবং ছুগ্ধে এই ভাইটামিন 
পাওয়া যায় । শরীর-গঠন ও ক্ষয়পুরণের জন্য ভাইটামিন, “বি” বিশেষ 
আবশ্তক | ' শরীরে বলসঞ্চারের জন্য এই ভাইটামিন চাই। ইহার 
অভাবে পরিপাকশক্তি কমিয়া যায়। ইহা স্নাযুমণ্ডল, পেশীসমূহ, পাকস্থলী, 
হদ্যন্ত্র প্রভৃতির শক্তি বৃদ্ধি করে। ঠৈল-জাতীয় পদার্থ ও শাদা চিনিতে 
এই ভাইটামিন থাকে না। এই ভাইটামিনের অত্যন্ত অভাব হইলে 
হাত, পা এবং হৃদ্যন্তর দুর্বল হইয়া যায়। 

এই ভাইটামিন বি১, বিৎ, (3, 75 ) প্রভৃতি শ্রেণীতে বিভক্ত। 

ভাইটামিন “জি” (0--গ)।--টাট্কা! স্বুজ বর্ণের শাক্স্জিতে, 
টমেটো, কমলালেধু ও পাতিলেবুর রসে এবং অধিকাংশ টাট্কা 


খান ৮৩ 


ফলে ভাইটামিন 'সি+ গ্রচুরপরিমাণে প1১৪মা-যায়। ছোলা, মুগ প্রভৃতি 
শাস্তে এই ভাইটাম্মিন থাকে না; কিন্তু অঙ্কুরিত হইলে এই ভাইটামিন 
উৎপন্ন হয়। রক্তের বিশুদ্বতা-রক্ষায় এবং শরীর-গঠনে এই. ভাইটামিন 
বিশেষ সাহায্য. করে. অস্ত্র সুস্থ রাখিয়া রোগের আক্রমণ প্রতিরোধ 
করা এই ভাইটামিনের প্রধান কাজ। ইহার অভাবে শরীরে 'স্কা্ি' 
(8০: ) নামক কঠিন রোগের সৃষ্টি হইয়া থাকে। 'স্কাভি” হইলে 
বক্তাল্লতা, অগ্রিমান্দ্য, দাতের যন্ত্রণা ও মুখে দুর্গন্ধ হয় এবং ধ্লাতের 
গোড়া দিয়া রক্ত পড়ে; শারীরিক যন্ত্রাদিতে রক্ত জমিয়া রোগীর, 
মৃত্যু পর্যন্ত ঘটে । কাঁচা তবকারি, পাতিলেবু, কাঁগজিলেবু এবং 
কমলালেবুর রসে ভাইটামিন “লিঃ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। এই 
সকল ফলের রস যথেষ্ট পরিমাণে খাইলে 'স্কাভি রোগের আক্রমণ 
সহজে হইতে পারে না। 

ভাইটামিন “সি, আগুনের তাপে ও বামুর সংস্পর্শে অন্য সকল 
ভাইটামিনের চেয়ে সহজে নষ্ট হয়। এইজন্য ছুধ ও শাকস্জি সিদ্ধ 
করিবার সময় রন্ধনপান্ররের মুখ ঢাকিয়! দেওয়া উচিত। 

ভাইটামিন “ভি” (1১--ঘ) দুগ্ধ, মাংস, ভিম্রে কুহুমূ ও 
সকলপ্রকার মাছের তৈলে ভাইটামিন... ডি, এ্রচুরপুরিমাণে পাওয়া 
যায়।. নারিকেলেও এই. ভাইটামিন. থাকে.। সর্ষের কিরণ শরীরে 
লাগাইলে এই ভাইটামিনের স্য্টি হয়।  ভাইটামিন, ডি” শিশুদের 
পক্ষে বিশেষ প্রয়োজনীয়। ইহার অভাব হইলে শিশুদের অস্থি এবং 
পেশীসমূহ অত্যন্ত দুর্বল হয়, শরীরে রক্তাল্লপতা ঘটে, গায়ের বং ফ্যাকাসে 
হয়, ফুস্ফুসে নানা রোগ জন্মে, সহজে সদি লাগে; এই জন্য তাহাদের 
মেজাজ খিটুখিটে হয় এবং স্ুনিত্রা হয় না। এই রোগের নাম 
“রিকেট । এই রোগ হইলে শিশুর শরীরের অস্থিসমূহ এত কোমল 


হইয়া! যায় যে, সে দেহের ভার সহ করিতে পারে ন! ও তাহার পা 
বাকিয়া যায়। শরীর ক্ষুত্্র হয়, অন্গগ্রত্যক্গ পুষিলাভ “করে না। এই 
রোগ হুইলে শিশুদিগকে কভলিভাব অয়েল খাওয়াইতে হয় এবং শবীরে 
রৌন্র লাগাইবার ব্যবস্থা করিতে হয়। শিশুদিগকে তৈল মাথাইয় 
রৌঝ্রে শোয়াইয়া রাখা আমাদের দেশে প্রচলিত আছে। ইহাতে 
শিশ্তর শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে ভাইটামিন “ভি উৎপন্ন হওয়ার ফলে 
“রিকেট? বড় একটা দেখা যায় লা। প্রাতঃকালে কিছুক্ষণ বৌজ্ডে 
দৌড়াদৌড়ি করিলে শিশুরা এই উৎকট রোগের হাত হইতে 
বক্ষা পাইতে পারে। 


ভাইটামিন “ই” (]--উ)।--শরীরের শক্তিবৃদ্ধির জন্য এই 
ভাইটামিন, বিশেষ আবশ্তক। নানাপ্রকার শস্য, বিশেষত চাউল, 
গম: যব প্রস্ৃতি এবং "ডিমের কুস্থমে ইহা যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া 
যায়। 


মোট কথা ভাইটামিনগুলি-_ 


১। আমাদের শরীর গঠন ও পোঁষণ করে; 

২। বিভিন্ন রোগের আক্রমণ প্রতিরোধ করে ; 

৩। দেহের অস্থিসকল সুগঠিত ০০ 
সবল রাখে; ৫. 

৪1 শরীরের রক্তবৃদ্ধি করিয়া! স্লাযুমণগ্ডলীর সবলতা! বৃদ্ধি 
করে; এবং ৃ | 

৫1 শ্ররীর নীরোগ রাখে । 


খাছ ৮৫ 
আমাদের কোন্‌ খাদ্যে কোন্‌ জাতীয় ভাইটামিন কি পরিমাণে 


আছে তাহা পরকর্তী তালিকায় দেখান হইল । 
ভাহঢামন 
এ বি সি ডি 
কাচা দুধ ৩ ২ ১ ২ 
জাল দেওয়া দুধ ১ ১ ৮ ১ 
মাধন ৩ ৮ ৫ টা 
দধি ও ঘোল ১ ৩ ১ ১ 
চাউল-_ 
ঢে'কি ছাটা ১ ২ ১ ১ 
কলে ছাটা ৮ ৮৫ ৮ ৯ 
ডাল ১ ১ ১ ১ 
মুগ, মটর ১ ২ ২ ১ 
আলু ১ ২ ২. ১ 
রাঙা আলু ২ ১ ১৫ ১ 
কলাই শুটি ২ ২ ১ ২ 
ফুলকপি ১ ২ ১ ১ 
বাধাকপি ১ ২ ৪ ১ 
পটোল ৮৫ ১ ১ ৮ 
পালং শাক ৩ ৩ ৩ ৮২ 
পিয়াজ ৮ ২ ২ ৮৫ 


প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


্ি 


বি 


এ 


রসুন 


বেগুন 


টমেটো 


কমলা লেবু 


ঝুনা নারিকেল 


পেপে 


কলের ময়দ। 


সরিষার তৈল 


চিনাবাদামের তৈল 


কড. মাছের তৈল 


গুড় 


মাছের যকৃৎ 


মাছের ডিম 


খাস্ঠ ৮৭ 


দৈনিক থাদ্যের পরিমাণ. 


বিবিধ যেটার পিন স্করসাজাৎ 





কিছপ অবস্থায় একজন যুবকের সাধারণত কি প্রকার খাস্ 
কতটুকু প্রয়োজন হয়, বিশেষজঞগণ তাহার যে হিসাব করিয়াছেন, 
নিম্নে তাহা প্রদান করা হইল; যথা. 


পরিমাণ ডিন হিসাবে দেওয়া হইল 


পালপাশিশাশীদপ সপ পপি পপ পট শাল অপি অপি 

















কেবল বাচিয়া নল তে 
| ৮ ৯ ১২ ৬ 
মারা ৰ হ ]. ইঁ 
খুব সামান্য পরিশ্রমীর, : 
অর্থাৎ, অলস ব্যক্তির ূ ্ঙ ৬ ১২ $ ঙঁ 
জন্য | 


৮৮ প্রবেশিকা গার্থস্থ্-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


একজন বাঙ্গালী ভদ্রলোকের কোন্‌ জিনিস কি পরিমাণ খাইলে 
চলিতে পারে, নিয়ে তাহার মোটামুটি হিসাব দেওয়া হইল +- 

(১ চাউল-_দেড় পোয়! হইতে সাত ছটাক। (২) ভাল-- 
দেড় ছটাক হইতে ছুই ছটাক। (৩) মণ্স্য বা মাংস-_ অধ পোয়া 
হইতে আড়াই ছটাক। :(৪) স্বৃত ও তৈল- দেড় কীচ্চা হইতে তিন 
কাচ্চা। (৫) লবণ _এক কীচ্চা। (৬) তরকারি--ছুই ছটাক। 
(৭) মসলা" অর্ধ কাচ্চা। (৮) দুপ্ধ- অর্ধ সের হইতে তিন পোয়া। 

ডাল বা মংশ্য এবং তাহার সহিত দ্বত বা তৈল কম খাওয়া 

হইলে, বেশ দুগ্ধ খাওয়া প্রয়োজন । মিষ্ট দ্রব্য খাওয়া হইলে, 

চাউল ও তাহার সহিত ডাল কিঞ্চিৎ কমাইয়া দিতে হইবে। কিন্তু; 
মাছ-মাংস যদি না খাওয়া হয়, তাহা হইলে মিষ্ট ভোজন হেতু ডালের 
পরিমাণ কম না হইয়া চাউলের পরিমাণ কিছু কমান আবশ্তক। 

সাধারণ খাছ্যের উপাদানসমূহের আমগুপাতিক হিসাব নিলে 


দেওয়া হইল £₹- 





রে সায়ে্স এসো- 
রর & ৬৬৮৭ 
ূ সিয়েখন 







বণ 





৮৯ 





রা ২২২ 


৬ 


ঢ ৪৫5 চা 
চি 218 231৯2 
01118158107 
| ০.১ ভি 1002 
হিঘ-দুগ্ধ ৪৪ ।  ৪"৮ ৯৬ শ্চ ৮১৩ 77771 কন 
ভ-দুগধ ১৭৯ | ৫1৫ ১০২ ৪২ (৯১:১৭ | ব্লাইদ্‌ 
মৃষ-ছুপ্ঈী ণ*১৬ ৪২৩ ৫৩, ১.৩ ৮২*২৭ | 5৪ 
।ধি (নাটোরের) ৫'৬৩ ২৬৫ ৪:৮৫ উপ (৮৪৯৩ গ্রন্থকার 
মাখন ১, কি ৯০৫ ১৩ ৭৫ | বেল্‌ 
চানা ২১ ৬৮ ২৮ ১৬৮ ১৬৮ 1৫৮৭২ গ্রন্থকার 
হাগমাংস ২৪৯৬ টু ২৫ ১২ »* | মেডিঃ কলেজ 
মুরগীর মাংস ২৩৩ ৪ ৩১ ১৪ ৭৪*৪ | হাচিন্পন্‌ 
₹ই (পুকুরের). | ১৭৫ & ৭*৪ ও ,» | মেডিত কলেজ 
মাগুর ১৯:৪৯ *৫ ৯৩ ৭৮৮৫ | সায়েক্স এস 
টের! ১৭২৮ * ৩ ১:১৫ 1৭৭৭ এ 88 
গম ১৪৬ ৬৭'৯ ১২ ১৬ ১৪৪ +) 8 
উ ১১০ ৭১২ ২৪ ৮ ১৪ পার্কম্‌ এসঃ 
১১৫, ৬৭৫ ২৯ ৩:৮৫ 1১৪৬৪] মেডিঃ কলেন্জ 
রা (গড়ে) ৫5 ৮৩-২ ৮ & 1১০৬ ই এস; 
রর ধু&, ৭৫ ৭৮-৪৯ ০৪২ “৭৪ 1১২৭৫ 
৬:৩৯ গ্ঞ*২ *শ “৭৬ হা চির কলেজ 
পে 
এ ৬৮৩ ্‌ ৮০১ | "৯ *৬৮ 1২২৪ | দায়ে এসঃ 
ই হাকছুলসী র ৰ 
। ৪ "১ “৮২ 1১১০৬ ই 
১৭ ৫৪ ৮৬:৩৫ ১১৬ ৬ ১১৪ চা 
১৩ ২৩৫ | ৫৪৪.৮ ২5 ৯৪ ১১'৩ | ওয়াল্ডেন্‌ 
১০২1১১৪ রা 
৫৮৪ ১ ৩৪ ২৬০৮ রে 
১৩৩ 1১১৭৮ 


দোনামুগ ২৩৮ মা ২৭ 





কি 


৯০ প্রবেশিকা গার্ৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি , 














অড়হুর ডাল ১৭১১ [8১৩৮১ ২৩৮ ২৮ | ১৩৩ | পার্কদ এনঃ 
থেসারি ২৪:৯৮ ৫৫৮ 1 ২২ ৯২ ১২*৭৪ : ওয়ার্ডের, 
ছোলা ২৩৬৬ ৬০২ ৷ ৪৩৯ ২:৪৪ ৯৫৮ সায়েন্স এসঃ 
মটর ২২০৪ 1] ৫৩০ ২০ ২৪ ১৫৪ ওয়ার্ডেন 
মাথন ১৩ স 1 ৯০৫ ১০ ৭*৫ বেল 

রর [ইহ 

চিনি ৯৬৫ ূ . :১ এ ১ পার্কস্‌ এস: 
আলু ২২ ২৯০ ০৪৬ ১, ূ ৭8+5 টা 
বাধাকপি ১৮ ূ ণচ র *৪& *৩৭ ৯১৪ রঃ 
ফুলকপি ৫ ২৪ ূ ৪ 1 এ ৯২০ | পটিয়ার 
কলাইগু টি ৬*৩৫ ১২৪ ৫৩ | '৮১ ৭৮৪৪ | হাচিঙ্কান 
অস্তান্য তয়কারি | | 

(গড়ে) ২.৫]. ৫৩৩1 81 - _ | মেডিঃ কলে 

পিয়াজ ১৫৭ ২৯৯ | 8৫ ূ ৮৮৯৪ ২৫ | একে টান 
লাউ *৫৫ ২০৩৬ | *২৬ ূ ৯৫৮৮ ক রা 
বেগুশ ১৮৯ ১:৪৮ 1 ১৩৮ 1 ৯৩৯৮ ৩:৪৮ রঃ 
কাটচকলা ১:৩১ ২৭ ূ “১৭ ৭৮৪ ১৬৮ | এন এন বসু 
টমেটো ১৮৩ “৪৯ | টি ৯৪৭৩ ৩৬ এ কে টার্ন 
রাঙা! আলু ৭ ৩৩১ *ই ৭৪*১৯ | ২১৭ টি 
ওলকপি *৮৪ 8৪. 1. ১:৪৬ ৮৭৬ ১১৪ $) 
খত ২৩৩ ২৮৯ ূ ১৪ ৮৬৬০ ১২৮ রি 
চেড়শ ১০৯১ ৯১১ ূ না ৯৯:৪৩ ৰ ৬৭২ ্ 
মূলা ২ ০৬৬ ৬৪ ৯৫৭৫ ৩০৩৮ রর 
বিষ পালং ১:৯৩ ২:০১ ১৩ ৮৩৩৯ | ১১৪১ না 
[বিলাত্তি ঝুমা নও ১৪০৩ ূ * ৯৩৪৬ ৩:২৬ হ 
বরবটি ৩:৫০ ১২৫ |. ১৬ ৯১৯৭ ১৭৫ $) 





খা ৯১ 


শিশু ও যুবকদের পক্ষে দুগ্ধ ও ভুপ্ধজাত খান্ডাদির 
বিশেষ উপকারিত। 


দুগ্ধ ।--আমরা যতপ্রকার খাছ্ছন্রব্য গ্রহণ করিয়া থাকি তন্মধ্যে 
ছুধধই সর্বোৎকৃষ্ট । আমাদের শরীর রক্ষা এবং তাহার, পুি ও বুদ্ধির 
জন্য যে সকল উপাদানের প্রয়োজন .তাহার সবগুলিই দুগ্ধে পর্যাপ্ত 
পরিমাণে বত'মান আছে,” সেইজন্য শিশুরা কেবলমাত্র দুধ খাইয়াই 
বাচিয়া থাকে এবং দিনে দিনে বৃদ্িপ্রা্থ হয়। দুগ্ধের সহিত অন্ভান্য 
পুষ্টিকর ও ভাইটামিনযুক্ত খাছ্য গ্রহণ করিলে শরীর অতি সত্তর সুস্থ ও, 
সবল হইয়া উঠে। "আমরা সাধারণত গরু, মহিষ ও ছাগল প্রভৃতি 
হইতে দুধ পাইয়া থাকি। 

দুগ্ধ পান করিলে মানবদেহ স্ুপুষ্ট ও সুগঠিত হইতে পারে; 
কারণ, দুগ্ধে মানবদেহ-পোষণকারী সর্বপ্রকার উপাদান বিছ্যমান । 
কাচাছুধ জাল-দেওয়া দুধ অপেক্ষা অধিক পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য 
হইলেও উহা পান করা নিরাপদ নহে। দুগ্ধে অতি সহজেই 
নানাপ্রকার রোগের জীবাণু প্রবেশ করিতে পারে। এজছ্ দুগ্ধ ১০ 
মিনিট জাল দিয়া পান করা উচিত; কারণ, ১ মিনিট জাল দিলে 
জীবাণু নষ্ট হইয়া যায়। অধিক উত্তাপ দিলে দুগ্ধের ভাইটামিন 
নষ্ট হইয়। যায় ও কিছুপরিমাণে গুরুপাক হয়। এইজন্য উহা সহজে 
পরিপাক হয় না। স্থতরাং, অল্লক্ষণ জাল-দেওয়৷ (এক বলক ) ছুষ্ধই 
শরীরের পক্ষে উপকারী । 

রোগগ্রস্ত গাভীর ছুধ সাধারণত রোগের জীবাণুপুর্ণ থাকে; 
উহা পান করা৷ নিরাপদ্‌ নহে। দোহুকারীর, হাত, এবং. দোহনপাত্র 


০ 


যাহাতে পরিষ্কৃত, থাকে, সে দিকে বিশেষ লক্ষ্য না রাখিলে দুষিত 


৯২ 77. গপপ্রবোশকু! গাহস্থাাৰজ্ঞান ও স্থান্থ্যাবাধ 


৮ পু, উস, 


পদার্থের সংস্পর্শে দুর্ধও দূষিত হইয়া পড়ে। ছুখের গন্ধাকর্ধণ-শক্তি 
আছে। কোন ছূগন্ধ বা ধূমপরিপূর্ণ স্থানে রাখিলে উহা দুর্গন্ধযুক্ত 
হয় গ্যুক্ত দুগ্ধ পান করা শরীরের পক্ষে বিশেষ অনিষ্টকর | 

ভাল দুগ্ধের লক্ষণ।-একসের গোছুগ্ধে মোটামুটি ১২ কাচ্চা 
ছানা, ৩ কাচ্চা চিনি, ২২, কীচ্চা মাখন ও ২ কাচ্চা লবগ-জাতীয় 
উপাদান থাকে। খাস্স হিসাবে ছুগ্ধের মূল্য ধুবই বেশী। অনেকে 
বলেন, ছুধ ও রক্ত একই পদার্থ; কেবলমাত্র বর্ণ ব্যতীত অন্ত কোন 
প্রভেদ নাই ।, দেহগঠনের সকল প্রকার উপাদান দুগ্ধে বতর্মান। 

ল্যাক্টোমিটার (18010776168) নামক যন্ত্র্ধারা পরীক্ষা করিলে 
দুগ্ধে অতিরিক্ত পরিমাণে জল মিশান আছে কিনা বুঝা যায়। 
দুগ্ধ দেখিয়া, আঘ্রাণ লইয়া এবং পাত্রের তলায় “তলানি আছে 
কিনা দেখিয়া! দুগ্ধের কৃত্রিমতা কতকটা ধরিতে পারা যায়। 


দুগ্ধের উপাদান ( শতকর] ভাগ ) 


আযিষ-জাতীয় তৈল-জাতীয় লবণ-জাতীয় শকরা-জাতীয় জলীয় 


গো-ছুগ্ধ-_ ৩'৬ ৩৭ ০-৭৩ ৪.৯ ৮৭ 

ছাগ দুপ্ধ-- ৪০০ ৪.৮ ০*৭৫ ৪-৫ ৮৬ 

মহিষ-দপ্ধ- ৬১১ ৭৫ ০'৮৭ ৪৩ ৮১ 
দুজাত খাস 


ফ্টীর।-_দুধ জাল দিয়া ঘন হইলে, তাহার সহিত চিনি মিশাইয্া 
পীর প্রস্তত হয়। ক্ষীর হুস্বাছু ও পুিকর, কিন্তু গুরুপাক। এজন্য 
অধিক পরিমাণে ক্ষীর খাইলে পেটের নানাপ্রকার পীড়া হওয়ার 
লস্ভাবনা ৷ 


খাছ ৯৩ 


দ্ধি।--ঈষদুফ দুগ্ধে সামান্য অঞ্জরসযুক্ত সাঁজ। বা দস্বল গিশাইয়া 
দধি প্রস্তত হয়। ছু দধিতে পরিণত হইবার সময় উহার শর্করা-জাতীয় 
উপাদান অগ্নরসে পরিণত হয় বলিয়া দধি অয্ন্বাদযুক্ত হয়। উৎকুষ্ট 
দধি শীতল ও মুখরোচক খাদ্য । ইহ]ুতে প্রচুরপরিমাণে ভাইটামিন 
বিষ্যমান। প্রসিদ্ধ জামান বৈজ্ঞানিক ভাঃ মেসিনিকফ, বলেন--'দধি 
ভোজন করিলে জীবনীশক্তি বাড়ে ।” 

ঘোল ।-দধি হইতে মাখন তুলিয়া লইলে ঘোল হয়। দুগ্ধের 
তৈল-জাতীয় উপাদান ভিন্ন অন্য সমঘ্ত উপাদানই ইহাতে পূর্ণমাত্রায়, 
থাকে | তৈল-জাতীয় উপাদান না থাকায় ইহা লঘুপাক। ঘোল 
ন্সিপ্ধকর ও পিপাসা-নিবারক ; এইজনি ঘোল রোগীরও পথ্য । 


মাখন।-ছুপ্ধ এবং দধি মস্থন করিলে ইহাদের তৈল-জাতীয় 
উপাদান আলাদা! হইয়া ষায়। মন্থনশেষে উহা! উপরে ভাসিতে থাকে । 
ইহাকেই মাথন বলে। ইহাতে প্রচুরপরিমাণে ভাইটামিন থাকে । 
টাটকা মাখন হ্ন্বাদ, বলকারক, পুষ্টিকর ও সহজপাচ্য । 


ঘ্বত।- মাখন জাল দিলে ঘ্বৃত হয়। ছুপ্ধের তৈল-জাতীয় পদার্থ 
ভিন্ন ঘ্বতে আর কিছুই থাকে না। আমরা গবাত্ৃত এবং মহ্ষাত্মত 
খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করিয়া থাকি। সাল খাছ্যের মধ্যে 
স্বতই প্রধান । 


ছাজ।।-_ফুটস্ত ছুগ্ধে অঙ্রস মিশাইলে ইহার আমিষ ও তৈল-জাতীয় 
উপাদান জল হইতে পৃথক্‌ হইয়া ছানাতে পরিণত হয়। ইহাতে 
ছগ্ধের তৈল-জাতীয় উপাদান ও আমিষ-উপাদান অধিক পরিমাণে 
থাকে। ছানা সুন্বাদ এবং অতি পুষ্টিকর খাস্। ছানার জল 
রোগীর পথ্য । 


৯৪ প্রবেশিকা গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিধি 


ছানা হইতে সন্দেশ প্রভৃতি পুষ্টিকর মিষ্টান্ন প্রস্তত হয়। উপযুক্ত 
পরিমাণে ছানা খাইলে মাছ-মাংস খাওয়ার প্রয়োজন হয় না। 
নিরামিষাশীদের পক্ষে ছানা একাস্ত প্রয়োজনীয় খাদ্য । 

অর ।-_-জাল-দেওয়া ছুগ্ধের উপরে একটি তৈলাক্ত আবরণ পড়ে, 
ইহাই ছুধের সর। ইহাতে দুগ্ধের তৈল এবং শর্করা-জাতীয় উপাদান 
অধিক পরিমাণে থাকে । ইহা অতি সুস্বাদ এবং পুষ্টিকর । 


বিভিন্ন প্রকার খানের অর্থাৎ মিশ্রখাভের.উপযোগিভ! 

মিশ্রথান্ভের উপকারিত1 1-_-শরীর-গঠন এবং শারীরিক পুষ্টির 
জন্য আহারের প্রয়োজন । কেবলমাত্র একজাতীয় উপাদানের দ্বার! 
থা্চের সর্বপ্রকার প্রয়োজনীয়তা দিদ্ধ হয় না। দুগ্ধ হইতে আমরা 
সর্বপ্রকার উপাদান পাই বটে, কিন্তু তাহাতে জলের ভাগ অধিক বলিয়া 
উহা পূর্ণবয়স্কের খানের সকল অভাব পুরণ করিতে পারে না। সে 
অভাব পূরণ করিতে হইলে, উদর পূর্ণ করিয়া প্রচুর দুগ্ধ পানের 
আবশ্যক হয়। স্থতরাং, মিশ্রিত খাদ্য আমাদের জীবনধারণের জন্ত 
একাস্ত আবশ্তক; শরীরের পুষ্টিকর সকল সামগ্রী পাইবার জন্তই 
আমরা মিশ্রধাদ্য (70160 ৭191) গ্রহণ করি।' খিচুড়িতে তাই 
চাউল, ভাল, স্বৃত, লবণ ও জল দেওয়া! হয়। মাংসে শ্বেতসাব- 
জাতীয় সামগ্রীর অভাব বলিয়া. তাহাতে আলু দেওয়া হয়; ডাল 
দ্বারা ভাত্তের প্রোটিনের অভাব পূরণ হয়। যিশরখাষ্যে শরীরের 


টপ বরকত রর পট পক 


পক্ষে আবস্তক কোন..সুমগ্রীর একাস্ত অভাব হয় .না। অধথিকস্ধ, 


চু ০ 


তাহাতে খাদ্য-স্ামগ্রী রুচিকর হইয়া থাকে... খাদ্য রুচিকর্‌ হইলে 


রস গকাতজর্র তত | ০১ 


উপকাৰ আছে। রূচির.. সহিত যে. খাদ্য, আহার করা যায়, তাহ! 
সহজে পরিপাক হয়, শরীরেও কোন ম্নানি থাকে না। 


খাছ্য ৯৫ 


খাস্ত-তালিকার পরিবত'ন প্রয়োজন ।-__ প্রত্যহ একই 
রকমের খাদ্যে অরুচি আসিবার সম্ভাবন1। তাহা ছাড়া, শরীরধারণের 
পক্ষে প্রোটিন যেমন আবশ্বক, তেমনি তৈল-জাতীয়, শর্করা" 
জাতীয়, জলীয়, শ্বেতসার-জাতীয় প্রত্যেক প্রকারের খাদ্যেরই 
প্রয়োজন। শরীরের পুষ্টি ও বৃদ্ধির পক্ষে এ সকলই আবশ্বক। 
সেইজন্য একই জাতীয় আহার্ধ ত্যাগ কবিয়া মিজ্রখাদ্য অর্থাৎ খাদ্যের 
যে উপকরণসমুহে সব্ববিধ পুষ্টিকর সামগ্রী পাওয়া যায়, তাহাই 
আহার করা প্রয়োজন। সকলেই সেইজন্ত 'এক-ঘেয়ে আহার 
বর্জনের পক্ষপাতী । আমিষ ও নিরামিষ উভয় শ্রেণীর খাদ্য এক- 
সঙ্গে খাওয়া ভাল। দেহকে কমক্ষম রাখিবার পক্ষে মিশ্রভোজন 
হিতকর । | 
' বাঙ্গালীর খাদ্য আজকাল 138181690. অর্থাৎ টাটুকা, পুষ্টিকর, 
উপকারী এবং সর্বরকমে লোভনীয় নহে। এ সকল গুণ না থাকিলে 
সে খাদ্য খাওয়া আদৌ উচিত নয়। বাঙ্গালীর খাদ্যে আজকাল 
প্রোটিনের দৈত্য স্থম্পষ্ট।/ হিসাব করিয়া দেখ! গিয়াছে, প্রত্যহ 
প্রত্যেকের অন্তত ১০০ গ্র্যাম প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। সেই 
১৭০ ভাগের মধ্যে ৪০ ভাগ জান্তব প্রোটিন হওয়া আবশ্যক । 
আজকাল বাঙ্গালীরা, খুব বেশী হয় তো, মাত্র ৭* গ্র্যাম প্রোটিন 
খাইতে পান; তাহার মধ্যে জান্তব প্রোটিন মাত্র যোল গ্রাম । 
এই প্রোটিনের স্থান অধিকার করিয়াছে-_মসলায় এবং অম্প্রধান 
খাদ্যের বাহুল্যে। তাহার সঙ্গে আছে-- শর্করার .প্রাধান্তঃ,. আর 
ভেজালের বাহুল্য । অন্যদিকে ভাইটামিন-প্রধান খাদ্যেরও অভাব, 
কাজেই বাঙ্গালী যে স্বভাবত দুর্বল ও কর্মবিমুখ হইবে, তাহা আশ্চ 
নহে। 


৯৬ প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


খাছে ভেজাল (75০৫ ১301$202 ) 

আমাদের দেশে আজকাল প্রায় সকল খাস্ত-সায়গ্রীতেই অল্প-বিস্তর 
ভেজাল দেখিতে পাওয়া যায়। ভুধ, ঘ্বৃত, মাথন, তৈল প্রভৃতি কতকগুলি 
নিত্য-ব্যবহার্ধ জিনিসের সহিত এত অধিক পরিমাণে ভেজাল থাকে যে, 
উহার মধ্যে আসল জিনিসের অস্তিত্ব পাওয়া কঠিন । 
যে সকল দুধ ছধ আমদানি হয়, তাহাতে পুফরিণীর অপরিষ্কৃত ও দূষিত জল 
মিশান থাকে। এ জলে কোন সংক্রামক ব্যাধির বীজ থাকিলে 
দুপ্ধপানকারীর এ সকল রোগ হইতে পারে। গো-জাতির মধ্যেও 
যঙ্াঝোগ দেখিতে পাওয়া যায়। প্রনিদ্ধ ফরাসী চিকিৎসক কাঁলমিট্‌ 
সাহেব বলেন,--'গো-যক্মার বীজ-সংক্রামিত দুগ্ধ বীতিমত ফুটাইয়া 
লইলেও উহার ব্যবহারে ঘোর অনিষ্ট হইতে দেখা গিয়াছে 1, 

আজকাল কল (10910770167 ) দিয়া দুগ্ধ পরীক্ষা করিতে দেখিয়া 
চতুর গোয়ালাগণ কিয়ৎপরিমাণ চিনি কিংবা কয়েকখানা বাতাসা 
জলমিশ্রিত দুগ্ধে যোগ করিয়া কলের পরীক্ষার ফল ব্যর্থ করিতে আস্ত 
রবিয়াছে। ছুগ্ধের সহিত কখন কখন ময়দা, এরোরুট বা দেশী পালো 
প্রভৃতি হিশাইয়া উহাকে ঘন করা হইয়া থাকে । এরপ দুগ্ধ জাল দিয়া 
ঠাপ্ত। কবিয়া, উহাতে আইওডিন্‌ জল ( [99106 ৪৫) ) যোগ করিলে 
তখনই নীলবর্ণ ধার্ণ করিবে । 

মাখনের প্রধান, ভেজ্ালও জুল। জল মিশাইলে মাখন ভারী হয় 

বং উহার পরিমাণ বাড়ে। দৃখিও. মাখনের একটি ভেজাল। মাখনের 
ওজন ২্২ ০ 

অনেক সময় মাখনের সহিত চবি (৮8১) ভেজাল মিশাইয়া দেওয়। 
হয়। এপ শুনা যায় যে, কলা চকাইয়া এবং কচু সিদ্ধ করিয়া 


পাপা শি পরা এ ৩ জপ $ পর এ ৬৮৮ ১ লাছত 
৬৬ ২০০১৪ হক 


খান ৯৭ 


মাখনের সহিত ভেজাল দেওয়া হইয়া থাকে। ঘ্বত আমাদের 
নিত্যব্যবহার্ধ থা কলিকাতা শহরে প্রতিবৎসরে প্রায় ২ লক্ষ ৭০ 
হাজার মণ ঘ্ৃত আমদানি হইয়া থাকে (৮19০ 8০০৭ 40016980107 
11) 082109৮৮702 73176000%, 8) 017105912 )। এই ঘাতের 
অধিকাংশ মহিষের দুগ্ধ হইতে উৎপন্ন” এবং অপরিষ্কার । পাহাড় 
অঞ্চলে যে ব্ড় বড় সর্প দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাদের..চেুবিও 
সময় সময় ঘ্বতে ভেজাল দেওয়। হয় বলিয়া শুনা যায়। পশ্চিম, 
হইতে কলিকাতায় যে স্বতের আমদানি হয়, তাহার সহিত 
সাধারণৃত, চীনা বাদামের তৈল, মহুয়ার তৈল বা পোস্ববীজের তৈল্গ, 
ভ্জোল থাকে । 

শুনা যায় যে, গন্ধ ও বর্ণহীন কেরোসিন-জাতীয় এক. প্রকার 
বিদেশী তৈল (:7১9:01670 6115 ) ঘ্বৃতের সহিত কখন কখন 
মিশ্িত করা হইয়া থাকে। কলুরা সরিষার সহিত সোরগু'জা মিশ্রিত 
করিয়া তৈলের পরিমাণ বৃদ্ধি করে । আজকাল সবিষার তৈলের সহিত 
কেরোসিনের স্ভায় একপ্রকার মেটে তৈল (07170678) 01] ) মিশাল 
দেওয়! হয়। এই মেটে তৈলমিশ্িত সবিষার তৈল ব্যবহার করিলে 
পাফোলা (100010677810 17018 ) অথবা বেরি-বেরি ( 1871 13671 
ব্যাধি হইয়া থাকে। 

ভেজাল. সরিষার তৈল ঝাঝাল করিবার জন্য পেশাই করিবার সময় 
সরিষার সহিত সজিনার ছাল ও লঙ্কা মিপ্রিত করা হয়। ময়দার সহিত” 
চাউলের গুঁড়া ভেজাল দেওয়া হইয়া থাকে। কথন কখন বা নিদিষ্ট 
পরিমাণ যব ও বিভিন্ন প্রকারের পালো ময়দার, সহিত মিশান হয়! 
রামখড়ির গুঁড়া ( ৩0৫, 0৮৭1) গমের সহিত মিশ্রিত করিয়া 
ভেজাল ময়দা তৈয়ার করা হইয়া থাকে । 

৭ 


৯৮ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


চাঁউলের দাম বাড়িলে উৎ্কষ্ট চাউলের, সহিত. নিরুষ্ট চাউল বা! কুড়! 
মিশ্রিত করা হইয়া থাকে। বৃতন চালের, সহি, পুরাতন. ঢাউ 
মিশাইয়] পুরাতন? বলিয়! বিক্রিত হয়।, 

বাজারের মিঠাই প্রস্ত করিবার সময় অতি জঘন্ ঘ্বত ব্যবহৃত, 
হইয়া থাকে । অনেক সময়' তৈল ও চবি একত্র মিশাইয়া এই সকল 
মিঠাই প্রস্তত করে। 

খান্ভ ও ব্যাধি ।-_-সাধারণত অপরিমিত ভোজন বা যে কোন 
জাতীয় খাদ্য অধিক পরিমাণে খাওয়া, স্বাস্থ্যহানিকর বলিয়া নির্দিষ্ট হয়। 
কিন্তু খাছযের অল্পতা হইতে যে রোগ জন্মিতে পারে, তাহা আমবা 
ভুলিয়া যাই । আমরা যে সকল খাদ্য গ্রহণ করি, তাহা পাকস্থলী ও 
অন্ত্রের মধ্যে গেলে যে রাসায়নিক বিষ্লেষণ ঘটে, তাহা হইতে তাপের 
উৎপত্তি হয়। এই তাপ হইতেই আমাদের কার্ধ করিবার ক্ষমতা 
আসে। সুতরাং, যদি এরূপ খাগ্ গ্রহণ করা যায়, যাহার কার্ধকরী শক্তি 
(71675 ) বা যাহার তাপজনন ক্ষমতা (0810710 001)61765 ) কম, 
তাহা হইলে সর্বপ্রথমে দেহের ওজন হাস প্রাপ্ত হইতে থাকিবে । শিশ্ত, 
বালক ও যুবক, যাহাদের পূর্ণ বৃদ্ধি হয় নাই, তাহাদের পুি যদি স্বল্প হয়, 
তাহা হইলে আর তাহাদের বৃদ্ধি হইতে পারে না। এইরপ বৃদ্ধি স্থগিত 
হওয়াকে “ইন্ফ্যার্টিলিজম্‌, ( [1)181)11]157) ) বলে। 

অল্প থাগ্য গ্রহণ করিতে করিতে শরীরের রোগপ্রতিষেধক ক্ষমতা 
হ্বাস পাইয়া থাকে । এই কারণেই যাহাদের অল্প পুষ্টি হয়, তাহারা 
সাধারণত সংক্রামক ব্যাধি কতৃক সহজেই আক্রান্ত হইয়া থাকে । 
এইজন্য একট] প্রচলিত কথা আছে যে, ”918806 9989 109 
200880970৪০. 1810178৮  অর্থাৎ মহামারী দুতিক্ষের পথ 
অনুসরণ করে। 


খাছ ৯৯ 


নিকৃষ্ট খানের বিপদ ।-_খাদ্য নিকষ্ট, ভেজালযুক্ত বা ব্যাধির 
জীবাণুছুষ্ট হইলে আহাষের উদ্দেশ্য ত সিদ্ধ হয়ই না, বরং শরীরের 
প্রভূত অপকার হয়। শরীর-গঠন, ক্ষয়-পৃরণ, তাঁপ-সংরক্ষণ, কার্ধকরী 
ক্ষমতার সমতা-রক্ষণ এবং ব্যাধি-প্রতিরোধের ক্ষমতা অব্যাহত রাখা, 
ইহার কোনটিই নিকষ্ট খাছ দ্বার! সাধিত হয় না। 

নিরুষ্ট দুগ্ধে জলের ভাগ বেশী থাকায় এবং উহার প্রধান উপাদান 
ছানা, মাখন ও দুরধ-শর্করার স্বল্পতা হেতু উহা হ্বারা উপযুক্ত পুিসাধন-তো 
হয়ই না, বরং ডোবা ও পুঞ্করিণীর অপরিষ্কৃত ও দূষিত জল-মিশ্িত 
দুগ্ধ নানা সংক্রামক ব্যাধির বীজ বহন করে। সংক্রামক ব্যাধির * 
বীজ ছুগ্ধে থাকিলে, ছুগ্ধ-পানকারীর এ সকল রোগ হইতে পাবে। 
যক্মাগ্রস্ত গরুর ছুগ্ধপানে যে এ রোগ সংক্রামিত হইতে পারে তাহা 
পূর্বেই বলা হইয়াছে। 

ভেজাল ঘ্বত ও মাখনে নানাপ্রকার বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন হইয়া 
অস্বল, অগ্রিমান্দ্য প্রভৃতি রোগের স্থ্টি করে । 

ভেজাল সরিষার তৈল ব্যবহারে নানাপ্রকার ব্যাধির স্থটটি হয়। 
সরিষার তৈলে পাকড়া, সোরগু'জা প্রভৃতি বিষাক্ত দ্রব্যের তৈপ্ল ভেজাল 
থাকিলে বন লোকের জীবন-সংশয় হইতে দেখা গিয়াছে । সরিষার 
তৈলের সহিত মেটে তৈল প্রভৃতির সংমিশ্রণ থাকিলে, পা-ফোলা, 
অর্থাৎ বেরি-বেরি-জাতীয় নানাপ্রকার রোগ সংক্রমিত হয় বলিয়া 
ডাক্তারের অনুমান করেন। বেরি-বেরি-রোগগ্রস্ত বাক্তিগণের তৈল- 
ব্যবহার বন্ধ করায় রোগের উপশম হইতে দেখা যাইতেছে। 

গুদ্বাম-পচা কিংবা কলে ছাটা ও কাটদষ্ট চাউল ভেজাল তৈলের 
মতই অনিষ্টকর । ডাক্তারেরা নিকৃষ্ট চাউলকে ভেঙ্জাল তেলের মতই 
অথাদ্য বলিয়া মনে কবেন। 


১০০  প্রবেশিক! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


মৎন্য, মাংস ও ডিম টাটকা না হইলে বা! পচা থাকিলে খাওয়! 
উচিত নহে। অনেক সময় ইহার ফলে কলেরার িসার্ির্রিগাদি 
( চ0070010) 1১0150010£ ) হইতে দেখা যায়। 

বাজারের মিঠাই বা চায়ের দোকানে প্রস্তত সন্ত! খাছ্যে ভেজালের 
আধিক্য দেখা যায়। তাহার ফলে নানাপ্রকার ব্যাধি আজকাল 
বাড়িয়। যাইতেছে । 

খাছ্য স্থসিদ্ধ না হইলে ও অত্যধিক পরিমাণে মসলা-ঘ্বৃতাদি সংযুক্ত 
হইলে, সহজে হজম হয় না। 

খাদ্যদ্রব্য ভাল করিয়া ঢাকিয়া না রাখিলে, ধূলা, মাছি প্রভৃতি 
পড়িয়া উহাতে নানাপ্রকার রোগ-বীজাণু ছড়াইয়া দেয়। খোলা অবস্থায় 
থাকিলে অনেক সময় বিড়াল, ইছুর প্রভৃতি জীবজন্ত খাদ্যে মুখ দিয়া 
উহা বিষাক্ত করে। ফলে, কলেরা, টাইফয়েড, রক্তামাশয়, যম্ষা 
প্রভৃতি মারাত্মক ব্যাধি সংক্রমিত হয়। 


(খ) উপযুক্ত খাস্ভ-নির্বাচন ও তাহার ব্যয় '% 

স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য প্রত্যেকেরই প্রয়োজনমত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ 
করা উচিত। আজকাল সাধারণ বাঙালীর স্বাস্থ্য খুবই খারাপ 
হইয়াছে। ফলে, আমরা খুবই দুর্বল হইয়া পড়িয়্াছি। আমাদের 
এই দুর্বলতার কারণ পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব। অনেকে বলেন,_ 
পুষ্টিকর খাস সংগ্রহ করিতে হইলে, যথেষ্ট পয়সার প্রয়োজন; আমাদের 
মত দরিদ্র এত পয়সা পাইবে কোথায়? কিন্ত, আমরা যদি একটু 
বিবেচনা ও বিচার করিয়া আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যের ব্যবস্থা করি, 
তবে আমাদের দারিজ্র্য সত্বেও, প্রয়োজনমত পুষ্টিকর খাদ্য সংগ্রহ করা 
কঠিন হয়| 


খান ১০১ 


আজকাল অনেকেই প্রাত:কালে জলযোগের সময় ছুই পয়সার এক 
কাপ ঢা ও ছুই পয়সার বিস্কুট বা এ রকম কিছু খাইয়া থাকেন এবং 
বলেন যে, অর্থাভাবের জন্যই বাধ্য হইয়া এইরূপ কোনপ্রকারে জলযোগ 
করেন। ছুঃখের বিষয়, চায়ের মধ্যে খাঁদ্যের উপযোগী কোন উপাদানই 
নাই; কিন্ত, আধ পয়সার অঙ্কুরিত ছোলা খাইলে খরচ ত” কমই হয়, 
,অধিকম্ত আহারের উদ্দেশ্য ও সফল হয়। ছোলা ছুশ্পাপ্য নহে, দৃমূল্যও 
নহে। স্ৃতরাং, কোন্‌ খাদ্যে কি কি উপাদান আছে তাহা জানিয়া 
প্রয়োজনমত ব্যবস্থা করা উচিত। ৮ 


সকাল বেলা অঙ্কুরিত ছোলা ও গুড়, মুড়ি, চিড়ার সঙ্গে নারিকেল 
বা ফেনা-ভাত-_অবস্থায় কুলাইলে তাহার সহিত কিঞ্চিৎ মাখন--ইহাই 
সাধারণ বাঙালীর পক্ষে উৎকষ্ট প্রাতরাশ বা! প্রাতঃকালীন ভোজ্য দ্রব্য । 
ধাহাদের অবস্থা ভাল, তাহারা লুচি, হালুয়া, পরোটা, দুধ, পেস্তা, বাদাম 
প্রভৃতি খাইতে পারেন । 


ভাত, ডাল, টাট্কা মাছ, শাক, তরকারি, লেবু; দুধ, কল প্রভৃতি 
মধ্যাহু-ভোজনের পক্ষে প্রশস্ত । অবস্থায় কুলাইলে মাংস, ছানা, 
দি প্রভৃতিও খাওয়। যাইতে পারে। 


আম, কলা, শশা, ফুটি, নারিকেল, কমলালেবু, বাতাবিলেবু, 
'চিনাবাদাম প্রভৃতি ফল ধতুভেদে বৈকালিক জলযোগের পক্ষে প্রশস্ত। 
এগুলি সহজপ্রাপ্য এবং দামেও সম্তা। অবস্থায় কুলাইলে, পেস্তা, 
বাদাম, কিসমিস, আখ রোট, আঙ্গুর, বেদানা, আপেল ন্যাসপাতি 
প্রভৃতি খাওয়া ভাল। ফল রক্ত-পরিষ্কারক এবং বলবর্ধক। 

রাত্রির আহার ও দিনের আহার প্রায় একই রকম চলিতে পারে । 
বাজতে আহারের পরিমাণ কিছু কম হওয়াই উচিত। 


১০২ প্রবেশিক! গাহ্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


আমরা প্রতিদিন সাধারণত চারি বার খাদ্য গ্রহণ করি। , সকালে. 
ও বৈকালে জলযোগ করি; মধ্যাহ্ন ও রা পূ্ণ-আহার গ্রহণ করি । 
শহরে ও পল্লীতে কোন্‌ সময়ে কোন্‌ খাদ্যের ব্যবস্থা করা যাইতে পারে 
তাহাই বলিতেছি। 


» জকালে-অঙ্কুরিত ছোলা, মুগ, মুড়ি, চিড়া (কাচা ও ভাজা ), 
আদা, লবণ, পিঁয়াজ, রস্থন, সালাদ-শাক, শশা, গুড় বা চিনি 
ইত্যাদি। 


» 'মধ্যান্ে-ফেন-সহিত ভাত, ডাল, মাছ, ডিম, শাক, তরকারি, 
খিচুড়ি, লেবু, দই ইত্যাদি । 


»”বৈকালে-_নানাবিধ ফল, শীক-আলু, রাঙ্গাআলু; শশা, কলা 
ইত্যাদি এবং সকাল বেলার ন্ায় অন্যান্য দ্রব্যাদি । 

'” প্লাত্রে_ ফেন-সহিত ভাত বা খি"চুড়ি, ডাল, মাছ, তরকারি, রুটি, 
লুচি, ছুধ, মাংস ইত্যাদি। 


শরীরের ক্ষয় নিবারণ এবং যথোচিত পুষ্টির জন্য আমিষ, শর্করা, 
তৈল, লবণ প্রভৃতি বিভিন্ন জাতীয় খাদ্যের প্রয়োজনের কথা পূর্বেই 
বলা হইয়াছে। একজন. বাঙালীর স্বাস্থ্য অটুট রাখিবার জন্য প্রতিদিন 
তাহার খাদ্যে নিয়লিখিত পরিমাণে টির উপাদান থাকা 
গীয়োজন ২২ 


১। আমিষ-জাতীয় ( উপার্দান )-_-দেড় হইতে ছুই ছটাক। 
২। উতৈল-জাতীয় ( উপাদান )--দেড় ছটাক। 

৩। শর্করা-জাতীয় (উপাদান )-_সাড়ে সাত ছটাক। 
০। জবণ-জ্ঞাজীয ( উপাদান )--অধ্ণ ছটাক। ৃ 


খাছ্য ১৩৩ 


পূর্বপৃষ্ঠায় লিখিত উপাদানসমূহ নিয়োক্ত সাধারণ খাদ্যে পাওয়া যায় £-_ 


খাস্ঠন্রবা : পরিমাণ 

১। দুর্ধ__ অধ” সের হইতে এক সের 
২। চাউল-- *এক পোয়া হইতে দেড় পোয়া 
৩। ডাঁল-_ দেড় ছটাক 

৪। আটা এক পোয়া 

৫ | মাখন বা ঘুত--- এক তোল 

৬। তৈল-_ এক তোলা 

৭| তরকারি-__ দেড় পোয়া 

৮। মাছ__ আড়াই ছটাক 

৯। লবণ-_. অর্ধ ছটাক 
১০। চিনি বা গুড়__ অর্ধ ছটাক 


এই সকল খাদ্যব্রব্যের সহিত উপযুক্ত পরিমাণে লেবু, তেতুল বা 
অন্য কোন প্রকার টক এবং সাধ্যমত শশা, কলা প্রভৃতি ফল কিছু 
খাওয়া ভাল। 

উল্লিখিত তালিক1 অনুযায়ী খাদ্য সংগ্রহ করিতে হইলে খাদ্যদ্রব্য 
যত মহার্ধই হউক না কেন, জনপ্রতি বয়স্ক লোকের পক্ষে দৈনিক 
তিন আনা হইতে চারি আনা মাত্র ব্যয় পড়িতে পারে। তবে, সুদূর 
'পল্লীগ্রামে যেখানে সাধারণত গৃহে দুগ্ধবতী গাভী সংরক্ষণ করা যায়, 
গোলাভরা ধান, পুকুরে মাছ প্রভৃতির স্থব্যবস্থা আছে এবং নিত্য- 
প্রয়োজনীয় তরি-তরকারির বাগান আছে--নসেখানে একজন বয়স্ক 
ব্যক্তির পক্ষে দৈনিক মাত্র ছয় পয়সা ব্যয়ে তাহার স্বাস্থারক্ষাকলে 
উপযুক্ত খাদ্যসামগ্রী সংগ্রহ করা সত্যই সম্ভব এবং তাহা৷ স্বপ্রের ন্যায় 
অলীক কল্পনা মাত্র নহে । 


১০৪ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


শহরে একজন মধ্যবিত পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক খাছ্য-তালিকা ও 
তাহার ব্যয়-_ 


জল-খাবার দৈনিক দু বার (সকালে ও বৈকালে ) ৫ 
খাদ্য সামগ্রী মূল্য 
অঙ্কুরিত ছোলা, যুগ, ডাল, ভাজা-চিড়া, ্‌ 
মুড়ি, মুড়কি, খই, কলা; গুড়, 
নারিকেল, বিবিধ ফল ( যখন যেমন ) ৫ 


পুর্ণ আহার দৈনিক ছুই বার €মধ্যান্ছে ও রাত্রিতে ) £- 





খাদ্ সামগ্রী পরিমাণ মূল্য 

চাউল ( ঢেকি ছাট) ৩ ছটাঁক 
লাল আটা ( ধাতা-ভাঙা ) ৫ এ রি 
ডাল ১$ ছটাক নর ৫ 
মাছ, মাংস, ছানা **" ২ ছটাক ১ 
তরি-তরকারি *** ৪ ছটাক ৪৪৪ ₹১০ 
ঘ্বৃত টা ই ছটাক *** ১৫ 
সয়াবিন * ১ ছটাক রি ত৭| 
গুড়, লবণ, মসলা *** --- ৮১, ₹৭| 
জনপ্রতি দৈনিক ব্যয় সাড়ে পাচ আনা! মাত্রা 1/১৬ 
একসঙ্গে বেশী লোক খাইলে ব্যয় ।* আনা হইতে 1/* আনা 

পড়িবে। 


পল্লীগ্রামে এই ব্যয় অনেক কম পড়িবে । 


খাস ১৩৫ 


€গ) ভাড়ার-ঘরের (81০:5-7০০755 ) স্বব্যবস্থা, খাস" 
সামগ্রীর সংরক্ষণ ও নির্বাচন। 

আমাদের ভীড়ার-ঘরের স্বব্যবস্থার প্রতি দৃষ্টি রাখা কতব্য। 
তীড়ার-ঘরে ইদুর, আরশুলা ও কীট্পতঙ্গাদির উপত্রব নিবারণের 
জন্ নানাবিধ উপায় উদ্ভাবন করা হইয়া থাকে । পাকা মেঝে, দৃঢ় 
গাথুনির দেওয়াল থাকিলে, ঘর স্াংসেতে হয় না এবং খাগ্য-সামগ্রীও 
ভাল থাকে । 

আমাদের ভাড়ার-ঘরে আমরা চাউল, ডাল, আটা, ময়দা, তেল, , 
ঘি, মসলা প্রভৃতি খাগ্য-সামগ্রী রাখিয়া! থাকি । বিভিন্ন প্রকার খাছ্- 
সামগ্রী পৃথক পৃথক পরিষ্কৃত পাত্রে রাখা উচিত। পাত্রের মুখ সর্বদা 
ঢাকিয়া রাখিতে হয়। দ্রব্যাদি রাখিবার জন্য জালযুক্ত আলমারি, 
তাক, মাচা প্রভৃতির ব্যবস্থা করিবে। খাচ্য-সামগ্রী উপযুক্ত স্থানে 
সর্বদ! হ্থসজ্জিতভাবে রাখিবে। মসলা রাখিবার পাত্রের গায়ে 
উহাদের নামের “লেবেল' দিয়া রাখিলে, রন্ধন করিবার সময় কোন 
অস্থবিধা ভোগ করিতে হয় না। দনন্দিন বদ্ধনকার্ষে প্রয়োজনীয় 
খাগ্-সামগ্রী ভাড়ার-ঘর হুইতে পরিমাণমত বাহির করিয়া লইবে। 
কোনও দ্রব্য ফুরাইয়া গেলে পুনরায় যথাসময়ে কিনিয়া আনিয়া 
তাহার স্থান পূরণ করিবে। প্রত্যেক ভ্রব্য সর্বদা তাহার নিদিষ্ট 
স্থানেই রাখিয়!..দ্রিরে | ভ্রব্যাদি যথাস্থানে না! থাকিলে, বড়ই অস্থবিধা 
ভোগ ক্ষরিতে হয়। খাছ্য-সামগ্রী যাহাতে দীর্ঘদিন ভাল ও অবিরুত 
থাকে ততপ্রতি বিশেষ যত্ব লইবে। 

. ভুড়ার-ঘর পরিষার-পরিচ্ছন্ন থাকা একান্ত প্রয়োজন । যাহাতে 

ভালরূপে আলো-বাতাস খেলিতে পারে ততপ্রতি দৃষ্টি রাখিয়া দরজা- 
জানালার উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখিতে হয়। 


১০৬ প্রবেশিকা গারস্থা-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


প্রতিদিন ভাড়ার-ঘর. ঝাড়িয়!..মুছিয়!. পরিষ্কার, ব্রাথিবে | .. তৈল ও 
ঘুতাদি ফুরাইলে উহার পাত্রগুলি ভাল করিয়া মুছিয়া পুনরায় দ্বতাদি 
রাখিবার ব্যবস্থা করিবে । 

যাহাতে কোনও দ্রব্যের অপচয় না হয় তৎপ্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখ! 
উচিত। সামান্য অবহ্লোর জন্য যথেষ্ট ক্ষতি ও অসুবিধা ভোগ 
করিতে হয়| 

ভাড়ার-ঘরের গব্যবস্থা থাকিলে, বন্ধনকার্ষে সুবিধ! ঘটে । ইহাই 
গৃহস্থালীর একটি প্রধান কার্য। 

গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় খাছ্য-সামগ্রীর নির্বাচন ও সংরক্ষণ বিষয়ে 
বলিতেছি রে 

চাউল ।- চাউল প্রস্তত হইলে যাহাতে সে চাউলে আর্দ্রতা স্পর্শ 
করিতে না পারে, সেজন্য ভূমি হইতে উচ্চে চাউলগুলি কোন -শুপাত্রে 
রাখিবার বন্দোবস্ত করা উচিত। চাউল রাখিবার জন্য মৃৎ্পাত্র, মাটির 
জালা ইত্যাদি বা বন্তা ভাল। ১৬৮৪৮, 

আতপ চাউল অনেক পরিমাণে একসঙ্গে প্রস্তত করিয়া রাখিলে 
প্রায়ই দীর্ঘ সময় ভাল থাকে না; কারণ, উহা সত্বর আর্দ্রতা আকর্ষণ 
করিয়া বিকৃত হুইয়া পড়ে ও ব্যাধির কারণ হইতে পারে। স্ৃতরাং 
আতপ চাউল অল্প অল্প পরিমাণে গ্রস্তত করাই ভাল। তবে, অধিক 
পরিমাণে সংগৃহীত হইলে ইহাব সহিত কিছু গুঁড়া চুণ মিশাইয়া রাখিলে 
কিছুদিন ভাল থাকে । 

সিদ্ধ চাউলের গ্রতিমণে পাঁচপোয়৷ গুঁড়া চুণ মিশাইয়া বস্তাবন্দি 
করিয়া! অথবা বড় মাটির জালায় বাখিলে ভাল থাকে । গুড়া চুণ দিলে 
চাউলে আর্দ্রতা স্পর্শ করে না, পোকাও ধরে না। বেশী চুণ দিলে 
চাউল লালবর্ণ হয়, কিন্তু চাউলের তাহাতে কোন ক্ষতি হয় না। 


* খাদ ১০৭ 


চাউল যত পুরাতন হয়, পোকার উপতভ্রবও তত বাড়ে । এমতাবস্থায় 
বড় বড় কাচের পাত্রে চাউল রাখিয়া শু অথচ অন্ধকারময় স্থানে 
ছিপিবন্ধ করিয়া রাখিতে পারিলে ভাল হয়। এইরূপে রোগীর জন্য 
পুরাতন চাউল সঞ্চয় করিয় রাখা যাইতে,পারে। 

ডাল, ময়দা, আটা, চিনি প্রভৃতি দ্রব্যও এই প্রকারে কাচের পাত্রে 
বা ঢাকনাযুক্ত টিনে রাখিলেও বেশ ভাল থাকে। 

রাধা-জিনিসপত্র অবস্থাবিশেষে উঁচু কাঠ বা বাশের মাচা বা 
জালযুক্ত আলমারি প্রস্তুত করিয়া তাহাতে রক্ষা করা উচিত। সমস্ত 
খাছ্যব্রব্যই, যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, মেঝের সংস্পর্শে যত কম 
আসে ততই ভাল; কারণ, মেঝের ধূলা, পায়ের ময়লা, আবর্জনা, 
বা স্তাৎসেতে স্থান হইতে খাগ্যব্রব্য দুরে রাখাই প্রয়োজন । 

যাহাতে রাধা-জিনিস মাত্রেই মাছি বসিতে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য 
রাখা কতা । 

লবণ।-_কাসা, পিতল, এলুমিনিয়াম গ্রভৃতি কোন ধাতুপাত্রে লবণ 
রাখা উচিত নহে । মাটির পাত্র, চীনামাটির জার বা কাঠের পাত্রই 
লবণ রাখিবার পক্ষে ভাল। বর্ষাকালে লবণ গলিয়া জল হইয়! যায়, 
কারণ, ইহা! বাহিরের আর্জতা আকর্ষণ করে। স্থতরাং, তখন লবণের 
পাত্রের মুখ ভালভাবে বন্ধ করিয়া রাখিবে। চিনি বা গুড় টিনের 
থাত্রে মুখবন্ধ করিয়া রাখিবে, নতুবা উহার মধ্যে পিপড়া, তেলাপোকা 
ইত্যাদি যাইতে পারে । 

মসল! টিনের কোটায় বা কাচের শিশিতে রাখিলে ভাল থাকে। 

মাছ ।- কৈ, মাগুর, শিঙি গ্রভৃতি মাছ জীবিত অবস্থায় কিনিয়! 
আনিয়া! জলে রাখিবে এবং রোজ জল বদলাইয়া দিবে; তাহা হইলে 
কয়েকদিন ভাল থাকিবে । 


১০৮ প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


তরকারি ।--তরকারি ও শাক ইত্যাদি টাটকা খাওয়াই ভাল। 
শাক ঘরে রাখিয়া খাওয়। চলে না। বেগুন, পটোঁল, কাচকলা, কপি 
প্রভৃতি তরকারি ২1৪ দিন ঘরে বাখিয়াও খাওয়া চলিতে পারে; তবে, 
শুফ হইলে বা কোনরূপে পচিল্লা গেলে কিংবা ইছুর ইত্যাদিতে খাইলে 
থাওয়া উচিত নহে। এগুলি খোলা বাতাসে রাখিলে ভাল থাকে । 
আলু, কচু, ওল প্রভৃতি তরকারি অনেকর্দিন ভাল রাখা যায়। ঘরের 
শু মেঝেতে বালি ছড়াইয়া তাহার উপর খুব পাতলা করিয়া ঢালিয়। 
রাখিলে আলু অনেকদিন পর্যস্ত অবৃরৃত থাকে । মধ্যে মধ্যে উহা 
হইতে খারাপ আলু বাছিয়া' ফেলিয়া দিবে । মিষ্টিকুমড়া ও চালকুমড়া 
শিকায় ঝুলাইয়া রাখিলে অনেকদিন পর্যন্ত ভাল থাকে । 


আচার, মোরব্বা, আমসত্ব প্রভৃতি দ্রব্য চীনামাটির জারে বা 
কাচের পাত্রে রাখিবে এবং মধ্যে মধ্যে বৌদ্রে দিবে । তাহা হইলে 
ভাল থাকিবে । বড়ি, পাপর ইত্যাদি দ্রব্য টিনের পাত্রে ঢাকন। দিয়া 
রাখিবে ও মধ্যে মধ্যে রৌদ্রে দিবে । জ্বাল-দেওয়া ছুধ কীসা বা কাচের 
পাত্রে রাখিলে ভাল থাকে । 


মিঠাই ।__কাচের আলমারিতে বা লোহার জালযু্ত আলমারিতে 
রাখিবে। ইহাতে ধুলাবালি, মাছি প্রভৃতি যাহাতে না পড়ে তাহার 
দিকে লক্ষ্য রাখিবে। 


ভাত, ডাল ও তম্যবিধ তরকারি ।-_-এই সকল ত্রব্য রাধিয়া 
টাটকা খাওয়াই ভাল। শীতের সময় এক বেলার রাধা জিনিস অপর 
রেলায় খাওয়া চলিতে পারে, কিন্ত গরমের সময় এক বেলার জিনিস 
অন্ত বেলায় টক্‌ হইয়! যায়। রীধা জিনিসে হাত দিতে নাই বা 
ঘাটাঘাটি করিতে নাই, তাহাতে উহা! নই হইয়া যায় । 


খাছ ১০৯, 


আজকাল রাধা খাগ্-সামগ্রী, প্রস্তুত মিষ্টারাদি ও মাংস প্রভৃতি 
একাধিক দিন অবিকৃত ও ভাল রাখিবার জন্য ঠাণ্ডা ঘরের ব্যবস্থা ও 
কেলভিনেটর”_ নামক যন্ত্রের ব্যবহার ক্রমশ প্রচলিত হইতেছে । 
এ প্রথা ভাল । 

গৃহে খান্ধ'সামঞ্ী নির্বাচন ( 121917711106 1061) 10)" 1179 
110209 )1--যে সমস্ত খাছ্য-সামগ্রী আহাধরূপে গৃহীত হয় তাহাদের 
সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়] হইল । যথা,__ 
০ চাউল । ভাত আমাদের প্রধান খাস্। চাউল সিদ্ধ কাঁরলে ভাত 
হয়।. চাউলে শর্করা-জাতীয় উপাদান অধিক পরিমাণে বিদ্যমান আছে। 
আশু, বোরো ও আমন প্রভৃতি নান! জাতীয় ধান্য হইতে চাউল প্রস্তত 
হয়। আমন ধানের চাউলই সর্বাপেক্ষা সহজপাচ্য । 

চাউল ছুই প্রকার, আতপ ও সিদ্ধ। ধান রৌদ্র শুকাইয়া তুষ 
ছাড়াইয়া লইলে যে চাউল হয়, তাহাকে আতপ চাউল বলে। জলে 
সিদ্ধ করিয়া, সিদ্ধ ধান শুকাইয়া তৃষ ছাড়াইলে যে চাউল হয়, তাহাকে 
সিদ্ধ চাউল বলে। ধান সিদ্ধ করিলে, তাহার ভাইটামিন কতক 
পরিমাণে নষ্ট হইয়! যায় বলিয়া সিদ্ধ চাউল অপেক্ষা আতপ চাউল অধিক 
উপকারী । ধান্যের খোসার ঠিক নীচে, চাউলের উপরে একট1 আববুণ 
থাকে, উহ! ভাইটামিনে পরিপূর্ণ । চাউল বেশী ছাটা ও মাজা হইলে 
এই আবরণ নষ্ট হইয়া যায়; এইজন্য কল-ছাটা চাউলে ভাইটামিন থাকে 
না। ভাইটামিনশূত্য চাউলের ব্যবহারে বেরি-বেরি ও নানাপ্রকার 
গুরুতর রোগে আত্রান্ত হইবার আশঙ্কা থাকে। 

ভাত রাধিবার সময় অতিশয় সাবধান হওয়া উচিত। চাউলে_ 
এইব্প পরিমাণে জল. দেওয়া, উচিত, যাহাতে ভাত স্সিদ্ধ হওয়ার, পরে 
আর. জল অবশিষ্ট না. থাকে.।...বন্ধুনপাত্র সর্বদ! ঢাক্য়ু! রাখা! কত'ব্য । 


১১০ প্রবেশিক! গারস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


কারণ, উত্তাপ এবং বায়ুর সংস্পর্শে ভাইটাযিন, বহুপরিমাণে, নষ্ট হুইয়া 

যায়। ভাতের ফেন (মাড়). ফেলিয়া দিলে, উহান সহিতও চাউলের 
সারাংশ এবং ভাইটামিন অনেক পরিমাণে চলিয়া যায়। 

ধান এবং চাউল শুফ এবং আলো-বাতাসপূর্ণ স্থানে রাখিতে হয়। 
ভিজ! বা স্তাৎসেতে স্থানে রাখিলে উহা বিষাক্ত হইবার আশঙ্কা 
থাকে । 

ডাল ।--ডাল অতি পুষ্টিকর খাছ্য। ইহা আমিষ-জাতীয় উপাদানে 
পরিপূর্ণ । যাহারা নিরামিষাশী, অথবা যাহার্দের পক্ষে মাছ, মাংস সংগ্রহ 
করা কষ্টকর, তাহাদের প্রচুর পরিমাণে ভাল খাওয়া আবশ্তক। উত্তমরূপে 
সিদ্ধ হইলে ডাল অতি সহজেই পরিপাক করা যায়) কিন্তু স্থুসিদ্ধ না 
হইলে ইহা অতিশয় দুষ্পাচ্য হইয়া থাকে । 

মুগ, মস্থর, অড়হর, ছোলা, কলাই, খেসারি প্রত্ৃৃতি বহু প্রকারের 
ডাল আছে। 

অন্ত্ররিত ছোলা, মুগ, মটর প্রভৃতিতে প্রচুর পরিমাণে ভাইটামিন 
থাকে । ইহারা সহজপাচ্যও বটে। এইজন্য প্রতিদিন কতক পরিমাণে 
এই সকল খাছ গ্রহণ করা শরীরের পক্ষে হিতকর । 

গোটা. মুগ ও মস্থরভালের যুষ (ঝোল ) অতীব বলকারক এবং 
সহজপাচ্য ; এইজন্য রোগীর পক্ষে ইহা বিশেষ হিতকর। 

খি*চুড়ি।-চাউল ও ভাল একত্র মিশাইয়া রন্ধন করিলে খিচুড়ি 
প্রস্তুত হয়। ইহ! অতি সারবান্‌ এবং উপাদেয় খান্য॥ ইহাতে চাউল 
এবং ডালের সকল উপাদান ও গুণ পৃর্ণমান্রায় বজায় থাকে, অধিকন্ত, 
অতি অল্প মসলা ছারা রন্ধন করিলে ইহা সহজপাচ্যও হয়। চাউল, ভালে 
তৈল-জাতীয় উপাদান কম থাকে, এইজন্য খিচুড়িতে প্রয়োজনমত মাখন 
“বা ঘ্বত মিশাইয়া লইতে হয়। 


খাছ ১১১ 


সুজি, আটা! ও ময়দা ।- গোধূম বা! গম হইতে সুজি, আটা ও 
ময়দা প্রস্তত হয় । এগমে চাউল অপেক্ষা! অধিক পরিমাণে আমিষ ও 
তৈল-জাতীয় উপাদান থাকায় ইহা কিঞ্চিৎ গুরুপাক ; কিন্ত, অতীব 
পুষ্টিকর । 

গমের বাহিরের আবরণযুক্ত মোটা অংশ হইতে স্থজি প্রস্তত হয়। 
গমের এই অংশ সর্বাপেক্ষা পুষ্টিকর । সুজির হালুয়া এবং মোহনভোগ 
পুষ্টিকর ও স্ুয্বাদ। 

গমের দ্বিতীয় স্তর হইতে সাদা আটা প্রস্তুত হয়। ইহা কিঞ্চিৎ 
লঘুপাক। গমের প্রথম ও দ্বিতীয়, এই উভয় স্তর হইতে যে আটা 
প্রস্তুত হয় উহার রং ঈষৎ লাল এবং ইহা! সর্বাপেক্ষা পুষ্টিকর ও স্থস্বাদ | 
এই আটা স্থঁজি অপেক্ষা লঘুপাক ; এই জন্য এই আটাই সর্বদা ব্যবহার 
করা উচিত। এই আটাতে গমের ভাইটামিন পূর্ণমাত্রায় বঙ্জায় থাকে । 

কলের প্রস্তত আটা অপেক্ষা ধাতায় ভাঙা আটা অধিক হিতকর 
কারণ, কলের পেষণ ও উহার আভ্যন্তরিক উত্তাপে গমের ভাইটামিন 
অনেকাংশে নষ্ট হইয়া যায়; কিন্ত ধাতায় তাহা হয় না। 

গমের একেবারে ভিতরের অংশ হইতে ময়দা প্রস্তত হয়। উহাতে 
ভাইটামিন অতি সামান্যই থাকে ' এজন্য ময়দা, আটা ও সুজি অপেক্ষা 
লঘুপাক ও অপেক্ষাকৃত কম পুষ্টিকর । 

রুটি ।__-আটা ও ময়দ! উভয় সামগ্রী হইতেই কটি প্রস্তুত হয়। রুটি 
ভালরূপে সেকা না হইলে ভাল সিদ্ধ হয় না, স্তরাং অত্যন্ত গুরুপাক 
হয়। সুসিদ্ধ রুটি লঘুপাক। 

লুচি।-_আটা ও ময়দা, উভয় বস্ত হইতেই লুচি প্রস্তুত করা 
যায়। লুচি রুটি হইতে কিঞ্চিৎ লঘুপাক। কারণ, স্বৃতে ভাজার 
দরুণ ইহা স্ুসিদ্ধ হয়। কিন্তু, যাহাদের দ্বত সহ হয় না, তাহাদের 


১১২ প্রবেশিকা গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


পক্ষে লুচি খাওয়া উচিত নহে। ময়দা! অপেক্ষা আটার লুচি বেশী 
উপকারী । 
পাউরুটি ।__মাটা ব! ময়দা বিশেষ প্রক্রিয়ায় মাথিয়া ও সেঁকিয়া 
পাউরুটি প্রস্তুত হয়। পাঁউরুটির অভ্যন্তর ভাগ অতীব কোমল; এই 
জন্য ইহা লঘুপাক এবং হ্থম্বাদ। রোগীদের পক্ষে সাধারণ রুটি বা লুচি 
অপেক্ষা পাউরুটি অধিক হিতকর । 
যব।--ঘব খুব পুষ্টিকর খাছ্য। আমরা সাধারণত ইহার ছাতু 
খাইয়া থাকি। ইহাতে আমিষ-জাতীয় উপাদান গম হইতে কিঞ্চিৎ 
কম থাকিলেও তৈল ও লবণ-জাতীয় উপাদান অধিক পরিমাণে আছে। 
ইহা সহজপাচ্য, স্থম্বাদ ও বলকারক | যবের ছাতুর শরবৎ অতি শ্সিগ্ধ, 
শীতল ও লঘুপাক। 
যব হইতেই সাধারণ বালি প্রস্তুত হয়। 
ম্ত্ন্তয ।-_আমাদের বাংলাদেশের সর্বত্রই প্রচুর মাছ পাওয়া যায়, 
এবং অধিকাংশ বাঙালীই ইহা! আদরের সহিত আহার করিয়া থাকেন। 
/মাছ-ভাতই বাঙালীর প্রধান খাছ্য। 
টাট্ক] মাছ সর্বদা খাওয়া উচিত। টাটকা মাছ স্থুস্বাদ,.স্হজপাচ্য 
ও বলকারী। টাটুকা মাছের,শরীর শক্ত ও কান্কো লাল থাঁকেঃ এবং 
ইহাতে কোন প্রকার দুর্গন্ধ থাকে না! . পচা মাছ কখনও খাওয়া উচিত 
নহে। ইহা দুষ্পাচ্য। পচা মাছ খাইলে নুনাপ্রকার ব্যাধি হইবার 
আশঙ্কা থাকে । 
ক্ষুদ্রে মণ্ত্য ।-কই, মাগুর, শিডি মৌরল! প্রভৃতি ছোট মাছে 
তৈলাংশ কম থাকে বিয়া ইহারা বড় মাছ অপেক্ষা লঘুপাক। 
ছোট মাছই রোগীর খাদ্যে ব্যবন্ৃত হয়। 


থান ১১৩ 


বৃহৎ ম্ন্য ।- রুই, কাতলা, মগেল প্রভৃতি মাছ যত বড় হয়, 
ততই অধিক চর্ধি-বিশিষ্ট হয়। এই জন্য ইহার! ছোট মাছের ন্যায় 
লঘুপাক নহে। রুই-কাতলাও ছোট থাকিতে লঘুপাক ও বলকারক 
থাকে । মাছের মধ্যে রুই মাছই সর্বাপেক্ষা উপকারী । 

ইলিশ মাছ।-_ইলিশ মাছ, রুই, কাতলা! প্রভৃতি মাছ অপেক্ষা 
গুরুপাক; কারণ রুই, কাতলা প্রভৃতি মাছ অপেক্ষা ইহাতে তৈলাংশ 
অধিক পরিমাণে বিদ্যমান । কিন্তু, ইলিশ মাছ_ অন্য. মাছ, অপেক্ষা 
অধিক পুষ্টিকর এবং ইহাতে প্রচুর ভাইটাখিন থাকে। 

মত্ম্য-ডিষ্ব ও মাছের তৈল ।-_মাছের ডিম ও তৈল অতীব 
পুষ্টিকর ও বলকারক; অধিকস্ত, ইহাতে প্রচুব ভাইটামিন, বিদ্যমান।, 

মাংস ।--মাংস আমিষ-জাতীয় খাছ্যের মধ্যে প্রধান । ইহা সুত্াদ 
এবং অতীব বলকারক। শর্কর! জাতীয় উপাদান ভিন্ন, আমাদের শরীর- 
পোষণোপযোগী সকল উপাদানই মাংসে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। 
অতি পুষ্টিকর ও উত্তেজক বলিয়া, পৃথিবীর প্রায় সকল জাতিই ইহা 
আদরের সহিত ভোজন কবে। 

নানা কারণে মাংসের উপাদান ও গুণের তারতম্য হৃইয়া থাকে। 
পশু-শাবকের মাংস অপেক্ষা যুবা পশুর মাংস অধিক পু্টিকর ও হুম্বাদ। 
বৃদ্ধ পশুর মাংস সহজে হজম হয় না বলিয়া! অতক্ষ্য । 

পশু হত হইবার কিয়ৎক্ষণ পরে ইহার শরীর কঠিন হয়। কিছুকাল 
কঠিন অবস্থায় থাকিবার পরে, উহা পুনরায় কোমল হয়। কঠিন 
অবস্থায় রন্ধন করিলে মাংস স্থুসিদ্ধ হয় না বলিয়া সহজে পরিপাক 
হয় না। এইজন্য কোমল অবস্থায় না আস! পর্বস্ত মাংস রন্ধন করা 
উচিত নহে। 


৮ 


১১৪ প্রবেশিক!। গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


পশ্তর শরীরে কোন ব্যাধি থাকিলে উহার মাংসও দোষযযুক্ত 
হয়। এজন্য অনুস্থ পশুর মাংস খাইতে নাই । টাটকা মাংস দেখিতে 
উজ্জ্ল রক্তবর্ণ। পচা মাংসে অগ্রীতিকর গন্ধ অনুভূত হয়, এবং 
উহা ভোজন করিলে শরীরে বিষক্রিয়া হয়। গৃহপালিত পশুর মাংসে 
বন্তপশ্ড অপেক্ষা চধি কম থাকে বলিয়া ইহার মাংস অপেক্ষাকৃত 
সহজপাচ্য। 

ছাগ-মাংস। ছাগ-মাংস বলকারক ও লঘুপাক। আমাদের 
দেশে ছাগ-মাংসই খাগ্যরূপে বছুলপরিমাণে ব্যবহৃত হইয়৷ থাকে | 

মেষমাংস ।--অধিক পরিমাণে চবি থাকে বলিয়া মেষ-মাংস 
অত্যন্ত গুরুপাক। 

পক্ষি-মাংস।-_পক্ষি-মাংস লঘুপাক। কুকুট-মাংসে আমিষ-জাতীয় 
উপাদান অধিক পরিমাণে থাকে, এবং চবি কম থাকে বলিয়া ইহা 
অত্যন্ত লঘুপাক। হাসের মাংসে চবি বেশী বলিয়া! কুকুট-মাংস অপেক্ষা 
ইহা গুরুপাক। ঘুঘু; হরিয়াল, বেলেহাস প্রভৃতি পক্ষীর মাংস পুষ্টিকর 
এবং লঘুপাক। 

ভিন্ব ।__খাছ্য হিসাবে হাস ও মুরগীর ডিম প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত 
হয়। শর্করা-জাতীয় উপাদান ভিন্ন, মন্তুযদেহ-গঠনোপযোগী সমস্ত 
উপাদানই ডিমে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। মাছ ও পশুদেহে অনেক 
সময় নানাপ্রকার অনিষ্টকর পদার্থ থাকিতে দেখা যায়? কিন্তু, ডিমে 
সেই সকল পদার্থ কখন দেখা ধায় না। ডিমের শ্বেতাংশ অপেক্ষা 
হরিদ্রাংশেই আমিষ, তৈল ও লবণ জাতীয় উপাদান অধিক পরিমাণে 
বিষ্যমান। শ্বেতাংশে প্রচুরপরিমাণে '্যালবুমেন' নামক আমিষ- 
জাতীয় উপাদান থাকে। ইহা আগুনের উত্তাপে সহজেই জমিয়া যায়। 
সিদ্ধ অথবা রদ্ধন-করা ডিম অপেক্ষা কাচা ডিম সহজে পরিপাক হয় । 


খান ১৬৫ 


অধিকক্ষণ সিহ্ধ করা ডিম অপেক্ষা অল্পক্ষণ সিদ্ধ করা (17811491169) 
ভিম লঘুপাক ও পুট্টিকর; এইজন্য অল্পক্ষণ সিদ্ধ কর! ভিমই খাওয়া উচিত। 

পচা ভিম শরীরের পক্ষে বিশেষ অনিষ্টকর । এজন্য, রন্ধন করিবার 
পূর্বেই ভাল করিয়! দেখিয়া লওয়া দবকার যে, ডিম পচ। কি ভাল। 
অর্ধ সের জলে এক ছটাক লবণ মিশাইয়া তাহাতে ডিম ছাড়িয়া দিলে, 
য্দি ডিম ডূবিয়া যায় তবে বুঝিতে হইবে ডিম ভাল আছে। 
অনেকদিন অবিকৃত রাখিতে হইলে চুণ, বালি, ভূষি প্রভৃতির ভিতর 
ডিম রাখিতে হয়। ডিমের উপর তৈল মাখাইয়া৷ রাখিলেও ইহা, 
অনেকদিন ভাল থাকে । 

তরিনভরকারি ।-_-উত্ভিদগণ বায়ু ও মাটি হইতে যথেষ্ট পরিমাণে 
জীবনধারণোপযোগী উপাদান সংগ্রহ করিয়া কাণ্ড, পত্র, মুল ও ফলে 
সঞ্চিত রাখে । তরকারি মাত্রেই লবণ*জাতীয় উপাদান ও ভাইটামিন 
আছে বলিয়াই নিয়মিতভাবে উপযুক্ত পরিমাণে শাক-সব্জি আহার 
করিলে আমাদের শরীরের রক্ত পরিষ্কার থাকে । অনেক দিন টাটকা 
ফল ও শাক-সজি না খাইলে শরীরে ভাইটামিনের অভাবজনিত 'স্কাভি' 
রোগ হইতে দেখা যায়। 

আলু ।_ আলুর মধ্যে শরীররক্ষার উপযোগী সকল প্রকার উপাদান 
বতরমান থাকায়, ইহা অতি পুষ্টিকর। আলুর খোসায় লবণ-জাতীয় পদার্থ 
ও ভাইটামিন বেশী থাকে বলিয়া ইহার খোসা বাদ "দিয়! সিদ্ধ করা 
উচিত নহে। তাহাতে ইহার পুষ্টিকারিত| কমিয়া যায়। সিদ্ধ 
না হইলে ইহা! সহজে পরিপাক হয় না। যে আলু সিদ্ধ করিলে কোমল 
হয়, তাহাই উত্তঘ আলু। 

ভাজা আলু গুরুপাক, সিদ্ধ করা আলু তদপেক্ষা লঘুপাক এবং 
পোড়ান আলু সর্বাপেক্ষা লঘুপাক। 


১১৬  প্রবেশিক! গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্থাস্থ্যবিধি 


মটরশু'টি, বরবটি, শিম প্রভৃতি তরকারিতে আমিষ-জাতীয় উপাদান 
অধিক পরিমাণে বিদ্যমান। ভাল-জাতীয় খান্ঠ বলিয়া ইহার! সমধিক 
পুষিকর। 

লাউ, কুমড়া» বিঙ্গা, ধুঁধুল প্রভৃতি তরকারিতে শরীর-রক্ষণোপযোগী 
উপাদান অপেক্ষারৃত কম থাকে । ইহাদ্দের মধ্যে জলীয় ভাগই বেশী। 
মিষ্টি-কুমড়ায় শর্করা-জাতীয় উপাদান অপেক্ষাকৃত বেশী আছে। 

কাচকলা, মোচা, ইচড় ও ডূমুর প্রভাতি তরকারি অতি হিতকারী । 
ইহাদের মধ্যে লৌহ্‌-জাতীয় উপাদান প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান থাকায় 
ইহারা রক্ত শোধন করে। 

মানকচু এবং ওল অর্শ, উদরী, শোথ প্রভৃতি রোগে উপকারী; 
এজন্য রোগীর পথ্য । পটোল ও ঢেঁড়শ অতি সহজে হজম হয় 
বলিয়া রোগীর পথ্যব্ূপেও ইহা ব্যবন্ত হয়। ইহাতে খাদ্প্রাণও 
বেশী থাকে । 

কাটালের বীজ অতি উত্তম খাগ্ভ। ইহাতে আমিষ-জাতীয় উপাদান 
যথেষ্ট পরিমাণে আছে । 

হিঞ্চে, উচ্ছে, পলতা, নিমপাতা প্রভৃতি তিক্তরসযুক্ত তরকারি । 
ইহার! পাকস্থলী ও যকৃতের কার্ধকারিতাস্শক্তি বৃদ্ধি করিয়া উহাদিগকে 
সবল করে। ক্ষুধা এবং রুচি বৃদ্ধি করাও এই জাতীয় তরকারির 
বিশেষ গুণ। 

শাক ।--শাক মাত্রেই প্রচুর পরিমাণে ভাইটামিন বিদ্যমান। 
সবুজপব্রে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে বলিয়া, ইহা আহার করা বিশেষ 
প্রয়োজন । শাক পাকিয়া গেলে সহজে হজম হয় না, সেজন্য পাকা শাক 
কোন কারণেই আহার কর! উচিত নহে। সহজপাচ্য ও সুম্বাদ বলিয়া 
সর্বদা টাটকা! শাক খাওয়া উচিত । 


খা ১১৭ 


শাকের মধ্যে প্রায়ই নানাপ্রকার পোকা, পোকার বাসা ও ডিম 
প্রভৃতি দূষিত পদার্থ থাকিতে দেখা যায়। এইজন্য রন্ধনের পূর্বে শাক 
উত্তমরূপে ঝাড়িয়া, বাছিয়া ও ধৌত করিয়া! লওয়া প্রয়োজন । 

পেঁয়াজ ও রশুন।-_পেয়াজ কীচা খাওয়ার জন্য এবং অন্থান্ত 
খাছ মুখরোচক করিবার জন্য ব্যবহৃত হয়। থাস্ঠ হিসাবে ইহার! খুব 
বেশী পুষ্টিকর নহে, কিন্তু ইহাতে প্রচুর পরিমাণে ভাইটামিন থাকে 
বলিয়া, মাঝে মাঝে কাচা পেয়াজ ও বরশুন খাওয়া ভাল। ইহা 
আজকাল রোগের ওঁষধরূপেও ব্যবহৃত হইতেছে। 

মসল।।- খাদ্যদ্রব্য মুখরোচক ও স্ত্বাদ করিবার জন্ত রদ্ধনের সময় 
নানাবিধ মসলা যোগ করা হয়। খাদ্য হিসাবে মসলার কোনই গুণ নাই; 
তবে, ইহাদের সহযোগে অন্যান্ত খাদ্য স্থস্বাদ ও মুখরোচক হইলে 
আহারকালে মুখে প্রচুর লাল! নিঃস্থত হুইয়া হজমের সহায়তা করে । 
কিন্তু, অধিকমাত্রায় ব্যবহার করিলে মসল! পাকস্থলীকে উত্তেজিত করিয়া 
হজমের ব্যাঘাত ঘটায় । সর্বদা অতিরিক্ত মসলাযুক্ত ব্যঞ্জনাদি আহার 
করিলে, অগ্নিমান্্য, অজীর্ণ প্রভৃতি রোগাক্রান্ত হইবার আশঙ্কা থাকে। 

ফল ।- ফলমাত্রেই স্ুম্বাদ এবং অতিশয় উপকারী। নানাপগ্রকার 
আস্বাদযুক্ত ফলে অল্প, শর্করা ও লবণ-জাতীয় নানা উপাদান প্রচুর 
পরিমাণে থাকে বলিয়! ইহারা মুখরোচক, পু্টকর, বলকারক ও রক্ত- 
পরিফারক। 

ফল স্থুপক হওয়া দরকার । কাচা ফল সহজে হজম হয় না বলিয়া 
নানাবিধ রোগের কারণ হুইয়! থাকে । আবার, অতিরিক্ত পাকা ফলও 
ভাল নহে। অতিরিক্ত পাকা ফলে, বাহির হইতে দেখা না গেলেও, 
ভিতরে পচন ক্রিয়া আবস্ত হয়? ন্থৃতরাৎ, এইরূপ বিকৃত ফল খাওয়া 
উচিত নহছে। 


১১৮ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ফলের থোস!, আশ ও বীজ সহজে হজম হয় না; এইজন্য ফলের 
এই সকল অংশ না খাওয়াই উচিত। অনেক সঘয় ফলের গায়ে 
নানাপ্রকার ধৃলা, বালি প্রভৃতি ময়লা লাগিয়া থাকে । উহাদের সঙ্গে 
নানাপ্রকার রোগজীবাধু থাকাও অসস্ভব নয়। এইজন্য ফল পরিফার 
জলে ধুইয়া খাওয়া উচিত। 

আম ।--আম সকল ফলের মধ্যে অধিক মুখরোচক । ইহাতে প্রচুর 
পরিমাণে শর্করা-জাতীয় উপাদান থাকায় ইহা অতীব হিতকাবী । 
অধিকন্ত, ইহা কাটাল প্রভৃতি অপেক্ষা লঘুপাক। আম পুষ্টিকর, বল, 
মেধা ও কাস্তিবর্ধক এবং কোষ্ঠ-পরিফারক। 

কাটাল ।--কাটাল অতি পুষ্টিকর, কিন্ত গুরুপাক। কাটালের বীজ 
আলু অপেক্ষাও অধিকতর পু্টিকর। কাচা কাটালকে ইচড় বলে। 
ইচড় খুব পুষ্টিকর তরকারি, কিন্তু গুরুপাক। 

পেঁপে ।_পেঁপে পুষ্টিকর ও ঘরুতের ক্রিয়াবর্ধনকারী। যাবতীয় 
ঘকৃতরোগে ইহা পরম হিতকারী। কাচা পেপে অতি উপাদের 
তরকারি। ইহাতে “পেপিন' নামক একপ্রকার পাচক পদার্থ আছে। 
ইহ! তরকারি ও আমিষ-জাতীয় খাদ্য পরিপাক করিতে সহায়তা করে। 
পেঁপে বলকারক, ক্ষুধাবধক, শীতল ও কোষ্ঠ-পরিফারক । 

কল।।--পাকা কলা অতি পুষ্টিকর ফল। আমাদের শরীর- 
ধারণোপযোগী সমস্ত উপাদানই পাকা কলায় অল্লাধিক বিদ্যমান । 
প্রতাহ কিছু পরিমাণে কলা খাওয়া শরীরের পক্ষে হিতকর। 

নারিকেল ।--নারিকেল খুব পুটিকর খাদ্য । ইহাতেও আমাদের 
শরীররক্ষার সর্বপ্রকার উপাদান প্রচুর পরিমাণে বিষ্যযান। অন্যান্য 
ফল অপেক্ষা ইহাতে তৈল-্জাতীয় উপাদান অনেক বেশী পরিমাণে 
থাকে। মূল্য হিসাবে নারিকেলের পুট্টিকারিতা গুণ খুবই বেশী। 


খাছ ১১৪৯ 


নারিকেল হইতে নানাবিধ িষ্টান প্রস্তুত হয়। অন্পরোগে ইহা মহা 
উপকারী । 

কচি নারিকেলকে ডাব বলে । ইহার জল জিথ্ব, তৃষ্ণানিবারক ও 
বমনরোধক | অজীর্ণরোগে ভাবের জরা মহা উপকারী । 

বেল ।--পাকা বেল সারকগুণবিশিষ্ট, অর্থাৎ কোষ্ঠ পরিষফারক। 
ইহা! অতীব পুষ্টিকর । 

কাচা বেল পোড়ান এবং ইহার মোরব্বা আমাশয় রোগে উপকারী। 

লেবু ।--কমল৷, বাতাবি, কাগজি ও পাতি প্রভৃতি সর্বপ্রকার, 
লেবুই প্রচুর পরিমাণে ভাইটামিনযুক্ত ও হিতকর। ইহা! যকৃতের ক্রিয়া 
বৃদ্ধি করিয়া পরিপাকশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। জর 
এবং অন্থান্ত সকল অস্থখেই লেবু পরম হিতকর । 

আনারস ।--আনারস অতি উপাদেয় ফল। ইহাও যকৃতের ক্রিয়া 
বৃদ্ধি করিয়! পরিপাকের সহায়তা করে এবং ক্রিমি নষ্ট করে। ইহ! 
অরুচিনাশক ও বলবধ্ধক । আনারসের পাতার রস ক্রিমিরোগের একটি 
উৎকষ্ট গুঁষধ। 

শশা, তরমুজ, কাকুড়, লিচু, পেয়ারা, আতা প্রভৃতি ফল পুষ্টিকর ও- 
বলকারক |, পেস্তা, চীনাবাদাম প্রভৃতি ফলে অত্যধিক পরিমাণে 
তৈল-জাতীয় উপাদান থাকায় ইহারা গুরুপাক, কিন্ত অত্যত্ত পুষ্টিকর । 

ডালিম, বেদানা, আঙ,র প্রভৃতির ফলের রদ বলকারী ও লঘুপাক 
থাগ্ঠ ; এজন্য রোগীর পক্ষে উপাদেয় পথ্য । 


€ঘ) রন্ধন-প্রণালী_( 11611)00 01 0০90417)£ ) 


ধন হার খাত সিদ্ধ হইয়া নরম হয় এবং পরিপাকের উপযোগী 
হইয়া থাকে। চাউল, ডাল, আলু প্রভৃতি উদ্ভিজ্জ খান্সের মধ্যে 


১২০ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


স্বেতসার (368267 ) নামক যে পদার্থ থাকে, বন্ধন করিলে তাহার 
দানাগুলি উত্তাপ-সংযোগে বিদীর্ণ হইয়া স্থপাচ হয়। "মাংসাদি আমিষ 
খাদ্যের অস্ততূক্ত। কতকগুলি পদার্থ উষ্ণজলে ভ্রবণীয় খাদ্যে পরিণত 
হয়; রন্ধন দ্বারা মাছ, মাস প্রভৃতি কিঞ্চিৎ ছুষ্পাচ্য হয়; কিন্তু উদ্ভিজজ 
খান্য সিদ্ধ হইয়৷ সহজপাচ্য.হইয়৷ থাকে । 

থাদ্যে দূষিত জীবাণু থাকিলে বন্ধনের উত্তাপে তাহা নষ্ট হইয়া যায়। 
রন্ধন দ্বারা খাদ্যদ্রব্য লবণ ও মসলা প্রভৃতির সংযোগে মুখরোচক হয় ও 
আহারে প্রবৃত্তি জন্মায়। আমাদের দেশে রন্ধন-প্রণালীর দোষে খাদ্যের 
অধিকাংশ পুঠিকর ও হিতকর দ্রব্য ফেলিয়া দেওয়া হয়। ভাত সিদ্ধ 
করিয়া ফেন ফেলিয়া দিলে ও আলুর খোসা ছাড়াইয়া সিদ্ধ করিলে, 
অনেক সারবান্‌ পদার্থ নষ্ট হইয়া! যায়। অনেক উত্তাপে পাক কৰিলে 
খাদ্যদ্রব্য স্ুশ্বাদ ও সহজপাচ্য হয় না। মুদুজালে বন্ধনই ভাল। 
কুকারের ( 9০০0৮9: ) ম্বুজালে ভাত, ডাল, খিচুড়ি, পোলাও, মাংস 
প্রভৃতি ধীরে ধীরে বেশ ভাল রান্না হয় 

বন্ধনের পক্ষে মৃৎপাত্রই প্রশস্ত । পিতলের পাত্রে অক্প বন্ধন করিতে 
বা রাখিতে নাই। তবে, পাত্র কলাই করিয়া লইলে চলিতে পারে। 
এলুমিনিয়ম 'পাত্রে ক্ষার-জাতীয় পদার্থ ব্যতীত অন্য সকল খাদ্য বন্ধন 
করা যায়। বন্ধনকার্ধে পরিষার্-পরিচ্ছন্নতা প্রথম আবশ্যক । বাধিবার 
পাত্র__থালা, বাটি, লাস প্রভৃতি জল হ্বারা বিশেষভাবে সর্বদা পরিষ্কার. 
করা উচিত। ঘধিনি পাক করিবেন, তাহার হস্তের নখ কদাপি 
বড় থাকিবে না। নখের নিয়ে নানা প্রকার দূষিত ময়লা থাকে। 
সাবান হ্বারা ভাল করিয়া হাত ধুইয় বন্ধনকার্ধ আরম্ভ করা উচিত। 
পরিহিত বস্ত্র বা পাত্রমার্জনীয় গাম্‌ছার ছারা আসন গ্রস্ৃতি মুছিবার 
অভ্যাস বড় বিপজ্জনক । 


রন্ধন-প্রণালী ১২১ 


মসলা যদি বাটিয়! ব্যবহার করা হয়, তাহা হইলে এ-বেলার 
বাটা! মসল! ও-বেল! ব্যবহার করা উচিত নয়। বাসি হইলেই উহা 
অল্প-বিস্তর পচিয়া উঠে। গুঁড়া মসলা শিশিতে করিয়া রাখিয়া 
ব্যবহার করা উত্তম। জলে না ভিজিলে উহা অনেক দিন পর্যন্ত 
ভাল থাকে। 

পক্কান্ন মাত্রেই হন্ত দ্বারা স্পর্শ করা দোষাবহ। ভাত, ব্যঞ্জন, 
তরকারি প্রভৃতি কোন জিনিসে হাত দেওয়া ভাল নহে । হাতা বা 
চাম্চে আবশ্তকমত ব্যবহার করা উচিত। যে পরিষ্কৃত জল পান করা, 
যায়, তাহাতেই বন্ধন ও তৈজসাদি প্রক্ষালন করা কতব্য। মাজা 
হইলে পুনরায় ব্যবহারের পূর্বে বাসনগুলি অত্যুষ্ষ জল ধৌত করিয়া 
লইলে ভাল হয়; তাহাতে রোগের আশঙ্কা থাকে না। 

সংসারে সাধারণত মেয়েরাই রক্ধন-কর্ম করিয়া থাকেন স্বলবিশেষে 
এবং প্রয়োজনবোধে মেয়েদের তত্বাবধানে ও উপদেশমত পাচক- 
পাচিকাগণও রদ্ধনাদি কর্ম করিয়া থাকে । অতএব, এই রন্ধনকর্ম- 
সম্বন্ধে মেয়েদের সম্যক্‌ জ্ঞানলাভ করা একান্ত প্রয়োজন । এইজন্য 
বন্ধনাদি কম” সম্বন্ধে সংক্ষেপে কিছু বলিতেছি। 

আমরা! প্রত্যহ বিবিধ খাদ্য-সামগ্রী খাইয়া থাকি । ইহাদের মধ্যে 
কতকগুলি কাচা খাই, আর কতকগুলি রন্ধন করিয়া খাই । রন্ধন দ্বার! 
খাদ্য সামগ্রী সিদ্ধ হওয়ায় নরম হয়; এইজন্যই উহারা পরিপাকের পক্ষে 
উপযোগী হয়। খাদ্য-সামগ্রী সাধারণত ছুই প্রকার--উপ্ভিজ্ঞা ও 
প্রাণিজ ৷ উত্ভিজ্ঞ খাদ্য চাউল, ডাল, আটা, ময়দা, সুজি, তরি-তরকারি, 
ফল ও মূল প্রভৃতি । প্রাণিজ খাদ্য মাছ, মাংস, ভিম ও ছুধ ইত্যাদি। 
উদ্ভিজ্জ খাদ্যে ষে শ্বেতসার (96871, ) পদার্থ থাকে, রান্না করিলে 
তাহার কোষগুলি উত্ভাপযোগে বিদীর্ণ হয় বলিয়া স্থপাচ্য হয়। মাছ, 


১২২ প্রবেশিকা গার্হস্থ্-বিজ্ঞান)ও স্বাস্থ্যবিধি 


মাংসাদি আমিষ খাদ্যে যে সকল পদার্থ থাকে উহা উষ্ণজলে 
গলিয়! সারবান্‌ হয়। কাচ! মাংসাদি অপেক্ষা রন্ধন করা মাংলে 
ছানা-জাতীয় (0১7069108 ) ও মাখন-জাতীদ্ ( হ'৪6৪ ) উপালান 
বেশী থাকে । 

রদ্ধনকালে বিশেষ লক্ষ্য রাখা উচিত যেন খাদ্যত্রব্যগুলি স্থুসিহ হয়। 
থাদ্যদ্রব্য ভাজ! হইলে ছুষ্পাচ্য হয়। ভাজা দ্রব্য অপেক্ষ! দ্ধ বা সিদ্ধ 
দ্রব্য সহজে পরিপাক হয়; তবে, কোন কোন ভ্রব্য অতিরিক্ত জলে সিদ্ধ 
হইলে এ ব্রব্যের মধ্যে ষে লবণ ও ভাইটামিন থাকে তাহা! জলের সহিত 
পরিত্যক্ত হইয়া যায়।' এইজন্ত মুখ-ঢাকা পাকপাত্রে কম জলে বন্ধন 
কর! উচিত ও ভাপরায় সিদ্ধ কর! উচিত। এই কারণে “ইকৃমিক্‌ 
কুকারে” রন্ধন করাই প্রশস্ত। 

আমাদের দেশে ভাত রান্না করিবার যে সাধারণ প্রণালী প্রচলিত 
আছে, তাহা কোনক্রমেই প্রশংসনীয় নহে । ভাত রান্না করিবার পর 
যে ফেন (মাড়) গালিয়া ফেলা হয়, সেই ফেনের সঙ্গেই উহার সারপদার্থ 
বাহির হইয়া যায়। চাউলে যে ছানা-জাতীয়, শর্করা ও লবণ জাতীয় 
উপাদান এবং ভাইটামিন আছে, তাহার অনেকাংশ বন্ধনকালে ফেনের 
সহিত বাহির হইয়া! যায়। ভাত ও ভাল পৃথকৃভাবে রান্না করিয়া 
মিশাইয়া খাওয়ার চেয়ে চাউল ও ভাল মিশাইয়! খিচুড়ি রান্না করিয়া 
খাওয়াই ভাল। খিচুড়ি খুবই সারবান্‌ খাদ্য। খিচুড়ি রীখিবার. 
সময় ফেন গালিয়া ফেলিতে হয় না। আবার, প্রতিদিন খিচুড়ি 
খাওয়ায় নানা অস্্বিধা বোধ হয়, অথবা ফেনাভাত খাইতেও বিশেষ 
ভাল,লাগে না। এইজন্য চাউলের সহিত কি পরিমাণ জল দিলে ভাত 
কসিদ্ধ হইবে অথচ ফেন গালিতে হইবে নাঁ-এই বিষয়ে মেয়েদের 
অভিজ্ঞতা লাভ করা৷ প্রয়োজন । কিছুদিন অভ্যাস করিলেই তাহাদ্া 


রন্ধন-প্রণালী ১২৩ 


বুঝিতে পারিবেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। রন্ধনকালে পাক-পাত্রের 
মুখ ঢাকিয়া দেওয়খ উচিত। 

রন্ধন-কার্ধে আমরা কাঠ, কাঠ-কয়লা, পাখুরে কয়লা ( ০০৮6) 
প্রভৃতি জালানিরূপে ব্যবহার করিয়া থাকি । কাঠের জালে অধিক 
সময় ধীরে ধীরে সিদ্ধ হইলে খাছ্য-ভ্রব্য স্বপাচ্য হয়। পাথুরে কয়লার 
আচ বেশী; কাজেই ইহার কম আচে বীধিলে চলিতে পারে । বন্ধন- 
কালে অমনোযোগী হইতে নাই । বন্ধন-কার্ধে এবং রান্নার ব্যবহারার্থ 
তৈজসাদি ধৌত করিবার জন্য পরিষ্ৃত বিশুদ্ধ_ পানীয়, জল ব্যবহূরি 
করাই উচিত। জলপাত্র পরিক্কৃত বাখা দরকার টাল 
রাখিতে হয়। . উহাতে ময়লা বাসনাদি বা হাত ভুবাইবে না। চাউল 
ডাল, তরি-তরকারি ও শাক-স্জি প্রভৃতি সর্ববিধ' খাদ্য-সামগ্রী রন্ধনের 
পূর্বেই ভাল করিয়া ঝাড়িয়া বাছিয়া লইবে ও পরে পরিষ্কৃত জলে ধৌত 
করিয়! রন্ধন করিবে। রম্ধনের পরে এ রাধা জিনিষে কখনও হাত 
দিবে না। পরিবেশনের সময় পরিষ্কৃত হাতা! বা চামচ ব্যবহার করিবে । 
অন্নব্যগুনাদি সর্বদা ঢাকিয়া রাখিবে। দেখিও যেন কখনও উহাতে 
ধূলা, বালি না পড়ে বা মাছি না বসে অথবা অন্যবিধ কীট-পতজজ ও 
প্রাণীদ্বারা দুষিত না হয়। 

স্ক্ম জালের আলমারিতে বা নাত ননাগালাক 
খাদ্য-দ্রব্য রাখা উচিত। থাদ্য-ত্রব্য কথনও মেঝেতে রাখিতে নাই, 
কিংবা ন! ঢাকিয়! রাখিতে নাই । 

মাছ বা মাংস বেশী সিদ্ধ করিতে নাই ; কারণ, তাহাতে উহার 
ছানা-জাতীয় উপাদান কঠিন হয়। ফলে, উহা অপেক্ষারুত ছুষ্পাচ্য হয় 
পরস্ত, উহার সার অংশের অনেকটাই জলের সহিত বাহির হইয়া যায়। 
এই কারণে মাছ ও মাংসের সঙ্গে উহার ঝোলও খাওয়া উচিত। 


১২৪ প্রবেশিকা গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থাবিধি 


মাছ অল্প তেলে ভাজিবার সময় সাবধানতার সহিত অল্পে অল্পে 
ভাজাই উচিত; নতুবা, পুড়িয়া যাইবে । ভালভারে ভাজিতে হইলে, 
বেশীমাত্রায় তৈল লইবে ও এ ফুটন্ত ছাকা তেলে মাছগুলি ছাড়িয়া 
শী শীগ্র তুলিয়া লইবে। তাহা হইলে উহা কড়াভাজা হইবে না, 
কঠিন হইবে না, এবং উহার সার অংশ নষ্ট হইবে না। কাজেই উহা 
হুপাচ্য ও মুখরোচক অবস্থায় থাকিবে। 

সিদ্ধমাংদ ঝোল সহিতই খাওয়া উচিত। ঝোল বাদ দিয়া খাইলে, 
উহার সার অংশ অনেকটা বাদ পড়িয়া! যায়। মাংসের সহিত বেশী 
পরিমাণে ঘি বা মসলা দিলে উহা! অত্যন্ত গুরুপাক হয়। 

কাচা ডিম অপেক্ষা অর্ধ-সিন্ধ ডিম সহজপাচ্য । বেশী সিদ্ধ হইলে 
ডিম গুরুপাক হয়। 

তরকারি অধিক সিদ্ধ করিলে উহার ভাইটামিন নষ্ট হইয়া যায়। 
তরকারি সিদ্ধ করিয়া জল গালিয়! ফেল! উচিত নয়; তাহাতে 
উহার ভাইটাঁমিন অনেকটা চলিয়া যায় । 

গোল আলু, কাচকলা! প্রভৃতি তরকারি খোসা-সমেত সিদ্ধ করিয়া 
পরে খোসা ছাড়াইয়া খাওয়া উচিত। ইহাতে উহাদের পুষ্টিকারিতা 
থাকে এবং. সহজে পরিপাক হয়। কাচা অবস্থায় খোসা ছাড়াইয়া লইলে, 
এ খোসার সঙ্গে উহার সার অংশ অনেকটা চলিয়! যায় । 

রন্ধন-পাত্রাদির কথ ।__আমরা মৃত্তিকা-নিমিত পাত্র» পিতল, 

০ লোহা, এলুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতু-নিমিত পাত্র বন্ধন-কার্ধে 
ব্যবহার করিয়া থাকি। ইহাদের মধ্যে মৃত্তিকা-নিয়িত পাত্রই 
সর্বোৎকষ্ট। 

ভাত পিতলের পাত্রে রান্না করা চলে, কিন্তু উহাতে অয় রান্না 
করা বা বাখা কখনও চলে না। ঘি ও তৈল পিতলের পারে 


রন্ধন-প্রণালী ১২৫ 


বেশী সময় বাখিলে “কলঙ্ক' ধরে ও আহারের পক্ষে অযোগ্য হয়। 
নূতন লোহার পাত্রে ব্যজনাদি রাধিলে উহাতে “কফ” ধরে ও কততকটা 
বিশ্বাদ হয়। 
তামার পাত্রে রাধিতে হইলে “কলাই' করিয়া লওয়া উচিত। 
আজকাল এলুমিনিয়াম পাজ্রের প্রচলন হইয়াছে; ইহাতে সকল 
খাদ্যই রাক্লা করা যাইতে পারে। এনামেল-যুক্ত পাত্রেরও-- বথেষ্ট 
ব্যবহার চলিতেছে.) তবে, উহার “এনামেল্‌ উঠিয়া গেলে উহা ব্যবহার 
কর! উচিত নয়। মবৃতিকা-নিয়িত পাত্রও পরিবত'ন কর দ্রুকার। 
' পাক-পাত্র ও খাইবার থালা, গেলাস, বাটি প্রভৃতি তৈজসাদি 
সর্বদ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত । 

রন্ধন-কার্ধে উনানের আগুনের সন্ব্যবহার ।__রদ্ধন-সময়ে 
উনানের অবস্থা ও জালের দোষে রন্ধন-কার্ধে ব্যাঘাত ঘটে এবং 
জালানির অযথা অপব্যবহার হয়।.. এইজন্য উনান-প্রস্তত-প্রণালীও 
এরূপ স্নিয়নত্রিত হওয়া! উচিত, যেন রন্ধনকালে পাক-পাত্রের চতুর্দিকে 
আগুনের জাল, বা আচ সমভাবে লাগে।, সচরাচর রন্ধন-কার্ধে 
তোলা ও বসা উনান ব্যবহৃত হইয়৷ থাকে । তোলা-উনান ইচ্ছামত 
স্থানাস্তর করা চলে, বসা উনানে সেরূপ হয় না। আজকাঁল অনেক 
স্থানেই পাথুরিয়া কয়লার জালে রম্ধন-কার্য চলিতেছে । কয়লার 
উনানের প্রস্তত-প্রণালী স্বতত্তর। এতদ্যাতীত, এম্পিরিট-স্টোভ 
কেরোসিন-স্টোভ” প্রভৃতি বিবিধ বিলাতী উন্ুনও ব্যবহৃত হইয়া 
থাকে । জালানি হিসাবে _কাষ্ঠ.. অপেক্ষা কয়লার জালে শীল্প. রন্ধন 
হইয়া] "থাকে; কিন্তু. দৈনন্দিন. নিয়মিত .রদ্ধন-কার্ধের... পর . উহ্ননের 
আচ প্রায়সম্পূর্ণরূপ, নিঃশেষিতৃ, হয় .না। তখন আমরা আমাদের 
গৃহস্থালীর বন্ত্াদি-ধৌঁতকরণ-কার্ধ ব্যাপারে এ আচের সহ্যবহার করিতে 


১২৬ প্রবেশিক৷ গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


পাঁর। কিংবা রদ্ধনশেবে উন্থন হইতে জলস্ত করলাগুলি চিম্টার হারা 
উঠাইয়া মাটিতে ঢাকিয়া দিয়া, নিভিম্া গেলে জলে ধুইয়! তুলিয়া! 
রাখিয়া পরে এগুলি পুনরায় বন্ধন-কার্ধে ব্যবহার করিতে পারা যায়। 
অল্প ব্যয়ে, কম আচে “কুকারে ছোট মোমবাতি বা প্রদীপ 
জালাইয়! রন্ধন-কার্ধ হইয়া থাকে। ইহাতে থাগ্ঠ-ত্রব্য স্থৃসিন্ধ হয় এবং 
বন্ধ অবস্থায় সিদ্ধ হওয়ায় খাগ্য-দ্রব্যের “ভাইটামিন” (খাগ্প্রাণ ) নষ্ট 
হয় না। রক্ধন-কার্ধ যেরূপেই করা হউক না কেন, ভাজা প্রভৃতি 
কার্ধের সময় ব্যতীত অন্তসময় রদ্ধনকালে রন্ধনপান্রর ঢাকিয়া 
দেওয়া উচিত; তাহাতে আগুনের আচের সঘ্যবহার হম এবং 
খাগ্-সামগ্রীর খাস্প্রাণেরও বিশেষ অপচয় হয় ন|। 
পল্লীতে রন্ধনশেষে উচ্ছনের উপরে আগুনের আচে ও ধোঁয়ায় 

মৎস্তের ডিম প্রভৃতি ঝুলাইয়! রাখি শুকাইয়া লইলেই এ শু ভিম 
বহুদিন পর্যস্ত অবিকৃত থাকে ও খাওয়া চলে । | 


ভু *পল্িত্জ্ছে 
গাহ্স্থ্য অর্থ-ব্যবহার-নীতি 
পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ 


সংসারী লোকের নানাভাবে অর্থাগম হইয়। থাকে-_-কেহ জমিদারির 
মালিক, কেহু বাণিজ্য-প্রতিষ্ঠানের কত, কেহ কল-কারখান হাবা 
অর্থার্জন করেন ;--চাকুবি, চিকিৎসা, আইন প্রভৃতিও বছুলোকের 
উপজীবিকা। 

কোন বৃহৎ প্রতিষ্ঠান হইতে যাহার অর্থাগম হইয়া থাকে কিংবা 
যিনি এরূপ একাধিক প্রতিষ্ঠানের মালিক, তাহার সকল রকম 
হিসাবপক্র একত্রে রাখা সম্ভব হয় না;__-এক একটি প্রতিষ্ঠান কিংবা 
বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা হিসাব বাখা হইয়া থাকে । মহাজনদের 
মহাজনী খাতাপত্র থাকে, জমিদারের জমিদারী হিসাবপঞ্জ আছে $-- 
কারখানার মালিকদেরও অন্থরূপ ব্যবস্থা থাকে । এই সমুদয় হইতে 
গৃহস্থালীর হিসাবপত্র আলাদা । কিন্তু, এই শেষোক্ত হিসাব সকলেরই 
আছে 7--গৃহীমাত্রকেই উহা রক্ষা করিতে হয় । | 

হিসাবের দুইটি অঙ্গ, আয় ও ব্যয়-_জমা, খরচ । এইজ্ন্যই হিসাবের 
বইখানিকেও সাধারণত “জমা-খরচাব বি ক্ষেপে 'জমা-খরচ'ও 
বলা হইয়! থাকে। 

পারিবারিক হিসাবে জম! হয় কোথা হইতে ?_গৃহস্বামী 
কিংবা গৃহের উপার্জনশীল পরিজন সাংসারিক-ব্যয়-নির্বাহার্থ তৎ-. 


১২৮ প্রবেশিক! গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


সম্পকিত তহবিলে যে অর্থ প্রদান করেন, প্রধানত তাহাই পারিবারিক 
হিসাবের জমামধ্যে গণ্য । এ ভিন্ন, যে সকল* প্রতিষ্ঠানের জন্ত 
আলাদা হিসাব রাখা 'হয় না, কিন্তু তাহাদের উপন্বত্বাদি গৃহস্থালীর 
কার্ধে ব্যয়িত হয়, উক্তসংক্লান্ত আয়ও গৃহস্থালী হিসাবের জমার 
মধ্যে পরিগণিত হইবে এবং তৎসম্পর্কিত আয়-ব্যয়ের বিবরণ 
যথাসম্ভব বিশদভাবে উক্ত হিসাবে লিখিতে হইবে । দৃষ্টাস্তস্বরূপ 
বলা যাইতে পারে যে, ধিনি জমিদারির মালিক তাহার জমিদাবি- 
সংক্রাস্ত আয়-ব্যয়ের বিবরণ গৃহস্থালীর হিসাবের ভিতর লিখিতে 
হইবে না; কারণ, এ সকল বিষয়ের জন্য আলাদ। জমিদারী হিসাব 
রাখা হইয়া থাকে । হয়ত কত জমিদারি হইতে লন্ধ কিঞ্চিৎ অর্থ 
সংসার-খরচের জন্য প্রদান করিলেন; এরূপস্থলে উক্ত অর্থকে 
কতর প্রদত্ত জম] বলিয়! হিসাবে উল্লেখ করিতে হুইবে। কিন্ত, 
কোন মধ্যবিত্ত গৃহস্থের যদি অল্প-স্বল্প জমি-জমা থাকে, ছু*চার ঘর 
প্রজা থাকে, দু'দশ টাকা আয় হয়, সামান্য কিছু খাজানা-পত্র দেনা- 
পাওন। হয়, তবে এই অকিঞ্চিৎকর লেখার জন্য তিনি আলাদা! হিসাব 
না-ও রাখিতে পারেন। এনপক্ষেত্রে জমি-জমার হিসাব এবং গারস্থলীর 
হিসাব একই পারিবারিক হিসাবের অন্ততৃক্ত হইবে এবং এ জমি- 
সংক্রান্ত হিসাব জমিদারি হিসাবের মতই খুব স্পষ্টভাবে গৃহস্থালীর 
হিসাবের ভিতর লিখিয়া রাখিতে হইবে । মনে কর, একটি প্রজা 
কয়েক টাক] খাজান! দিয়া গেল। তাহা হইলে হিসাবে লিখিতে 
হইবে--“অমূক জমার বকেয়া খাজানা এত, হাল পাওনা এত--'একুনে 
এত টাকা মধ্যে মারফত অমুক, জমা এত টাকা ।” 

গৃহুকতর্ণ কিংবা অপর কেহ যদি তাহার বেতনের সমুদয় টাকাই 
হিসাবের তহবিলে নিয়মিতভাবে বরাবর প্রদান করিয়া থাকেন 


পারিবারিক হিসাব-মংরক্ষণ ১২৯ 


তবেই তাহার প্রদত্ত অর্থকে ;ঃ “অমুকের অমুক মাসেন্ন 'বেতন-জমা” 
এত টাকা” বলিয়া লিখিবে ; নতুবা, তাহার উপার্জনের আংশিক টাকা 
তহবিলে পাইয়া উহাকে তাহার 'বেতন-জমা” বলিয়া লিখিলে কাত 
কতকটা ভূল করা হইবে। 

বাড়ী ভাড়া, টাকার সুদ, ব্যবসায়ের আয়, শেয়ারের লভ্যাংশ, জমির 
ফসল, বাগানের ফল, ক্ষেতের সঙ্জি প্রভৃতি অপরাপর সহম্র উপায়ে 
লোকের ধনাগম হইতে পারে এবং এই সমুদয়ই গার্স্থলী-হিসাবের 
জমার অস্ততৃক্ত হইতে পারে । এইক্ধপ £-- 


গার্ছস্ছলী হিসাবে ব্যয়ের ও দফার অবধি নাই। 


সংক্ষেপে বলিতে গেলে বলা যাইতে পারে যে, পরিজনদের 
ভরণপোষণ, স্খ-ম্াচ্ছন্দা-বিধান, উৎসবাদি ক্রিয়া-কর্ম, শিক্ষা স্বাস্থ্য, 
আমোদ-প্রমোদ, নিরাপত্তা, নানাবিষয়ে উন্নতি বিধান, লৌকিকতা 
রক্ষা এবং দানাদি কার্ধের জন্যই গৃহস্থালীর আয় ব্যয়িত হুইয়! 
থাকে । 

হিসাব লিখি কেন ?-_হিসাব শেখার উদ্দেশ্য আয়-ব্যয় সম্বন্ধে 
অভিজ্ঞতা-অর্জন, এবং সেই অভিজ্ঞতার সাহায্যে আয়-বৃদ্ধি, ব্য়-হ্াস, 
অপচয় নিবারণ, এবং ভবিষ্যৎ অভাবের প্রতিরোধকল্পে নিজের সামর্থ্য- 
সংগ্রহের চেষ্টা করা। হিসাবের খাতাখানি আধিক দিনলিপিও 
( ছ3080019] [0187 ) বটে। কি কড়ারে কাহাকে কত টাকা 
দিলাম, কি সতের কাহার নিকট কি মাল বিক্রয় করিলাম, কাহার 
নিকট কি ভাবে কত টাকা গচ্ছিত রাখিলাম, কাহার সহিত আমার 
কিরূপ আধিক ব্যাপার ঘটিল--হিসাবের খাতাখানিতে তাহা দিন- 


রে 


১৩০ প্রবেশিকা গারহস্থ্য;-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


তাবিখসহ স্পষ্টভাবে জেখা থাকে । সংসারে অপরের সহিত অর্থসম্বন্ধ 
নিত্য এবং গুরুত্বপূর্ণ । হিসাবের খাতাখানি উভয় 'পক্ষের স্মারকলিপি 
এবং বহুবিষয়ে গোলযোগের মীমাংসক। | 

হিসাব লেখার পদ্ধতি ।_ এক্ষণে আমাদের ইহাই আলোচনার 
বিষয়। আপাতত মনে হয়, আয়ের ঘরে আয়, এবং ব্যয়ের ঘরে ব্যয়ের 
দফাগুলি বসাইয়া যোগ-বিয়োগ করিয়া রাখিলেই হিসাব সম্পূর্ণ হইল। 
কিন্তু, বস্তত তাহা নহে; এ-বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞান এবং পরিষ্কার বিচারবুদ্ধি 
না থাকিলে স্ুুনিপুণ হিলাব-নবীশ হওয়া যায় না। ব্যবসায়-জগতে 
হিসাব-সংরক্ষণ বিস্তার কদর খুবই অধিক। জমিদারী মহাজনী এবং 
দেনা-পাওনার হিসাব রক্ষায় যথেষ্ট শিক্ষার প্রয়োজন আছে। গৃহস্থালীর 
মোটামুটি হিসাব-রক্ষা সহজ হইলেও পৃর্বোক্ত সর্বপ্রকার হিসাবের 
সংস্পর্শই ইহাতে থাকিতে পাবরে। তাই সর্ববিধ হিসাব বিদ্যায়ই 
কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয় । স্ত্রীলোকগণ স্বামীর সইকমিণী, 
সন্তানের শিক্ষমিত্রী এবং অধীনস্থ পরিজনবর্গের অভিভাবিকা এবং 
উপদেষ্টা স্বরূপে যতই এ সকল বিষয়ে স্থনিপুণা! হইবেন ততই পরিবারের 
মঙ্গল ;--ততই গৃহ্স্থালীতে শৃঙ্খলা আসিবে, অপচয়ের হাস হইবে, জমা 
বুদ্ধি পাইবে । 

হিসাবের খাতায় প্রতিপৃষ্ঠায় ছুইটি ঘর;-_বামদিকে জমা এবং 
ডা'নদিকে খরচের ঘর। আয়শ্ব্যয় দেনাম্পাওনার কোন্‌ দফাটি কোন্‌ 
ঘরে কিভাবে বসিবে, কি ভাষায় ইহাকে ব্যক্ত করিতে হইবে--ইহাই 
শিক্ষণীয় বিষয়। নিজেরা নগদ টাকা উপার্জন করিয়া নগদ খরচ 
করিয়৷ হিসাব লেখায় কোন জটিলতা নাই /স্সেই বিষয়ের বিশেষ 
আলোচনারও তেমন প্রয়োজন নাই । অনেকে ইহাকেই সাংসারিক 
জমা-খরচের পর্যায়ভূক্ত করিয়া থাকেন বটে, কিন্তু বস্তুত অনেকেরই 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৩১ 


সাংসারিক জমা-খরচের বিষয়-বস্তব ইহা হইতেও অনেকটা অতিরিক্ত । 
ধারে ক্রয়-বিক্রয়, ধীরের দেনা-পাওনা, আংশিক আদানপ্রদ্ধান, আমানত 
করা, আমানত লওয়া, অগ্রিম আদান-প্রদান প্রভৃতি ব্যাপারগুলি 
অনেকেরই গার্স্থলী হিসাবের অঙ্গ । এই সকল বিষয়ের হিসাব লেখায় 
একটু জটিলতা আছে। 

আমরা চাই নিজেরা কত উপার্জন করিলাম, কত ব্যয় করিলাম-_ 
তাহাই জানিতে ও বুঝিতে । কিন্তু, অপরের সাথে যে-সকল ধার-কর্জ 
লেন-দেন হইতেছে তাহার বিবরণ কোথায় লিখিব? সে টাকাগুলিও ত 
আমারই তহবিলে আসা-যাওয়া করিতেছে,--আমারই তহবিল 
কমিতেছে বাড়িতেছে! তাদের বিবরণও ত হিসাবের খাতারই 
অস্তভূক্ত করিতে হইবে । 

আবার দেখ, আমি ১লা তারিখে ছু'শ টাকা বেতন পাইলাম। 
এক শ' টাকা সাংসারিক খরচ করিলাম, এক শ' টাকা ব্যাঙ্কে রাখিলাম। 
তহবিল হইতে বাহির হুইয়৷ গেল বলিয়া ব্যাঙ্কে রাখার টাকাটাও 
খরচের ঘরে লিখিতে হইল । দুদিন পরে ব্যাঙ্কের টাকাটা তৃলিলাম 7_- 
জমার ঘরে এক শ* টাকা জমা হইল । আবার ছু*দিন পরে এ টাফ্াটাই 
ব্যাক্কে রাখিলাম-আবার খরচ লিখিলাম। যদি দশবার এই ব্যাপার 
ঘটে তবে আমার জমার ঘরে অতিরিক্ত দশ শ' টাকা জমা হইল, 
খরচের ঘরে অতিরিক্ত দশ শ" টাকা খরচ হইল এবং গ্রকুনে আমার 
এঁ মাসে বার শ” টাকা আয়-ব্যয় হইল। বস্ততই কি আমি এত টাকা 
আয়-ব্যয় করিলাম, স্থখভোগদানাদি ক্রিয়াকর্মে এতগুলি টাঁকা খরচ 
করিলাম ?--না। 

আরো দেখ, দোকান হইতে ৫২ মূল্যের এক মণ চাউল বাকিতে 
আনিলাম, দশদিন পরে মূল্য শোধ করিলাম। হিসাবটা লিখিব কবে? 


১৩২ প্রবেশিকা গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


আজ, না মূল্য শোধ দেওয়ার দ্িন_না উভয়দিন? উভয়দিনই 
দেনা-পাওনা হয়; সৃতরাধ, তাহার ন্মরণার্থ উভয় দিনই কিছু লেখাপড়া 
দরকার। আজ আমার জমার ঘরে বাবসায়ীর নামে এক মণ চাউলের 
মূল্য ৫২ জম! করিব এবং খুরচের ঘরে চাউলের বাবত ৫২ খরচ 
লিখিব। পরে যেদিন টাকা শোধ করিব সেদিন এ ব্যবসায়ীর নামে 
৫২ খরচ লিখিব। তাহা হইলেই দেখ, নগদ টাকায় খরিদ করিলে 
আমার ৫২ খরচ মাত্র লিখিতে হইত.) কিন্তু এস্থলে ধারে ক্রয় করায় 
এক মণ চাউল খরিদ সম্পর্কে খরচের ঘরে দশ টাকা খরচ লিখিতে হইল 
এবং জমার ঘরে ৫২ জমা করিতে হইল । আমার জমা-খরচে এই ষে 
অতিরিক্ত ৫২ জম! এবং পাঁচ টাকা খরচ--ইহা৷ অবান্তব। ইহাতে 
আমার জমা-খরচে আয়-ব্যয় মিছামিছি ৫২ করিয়া বৃদ্ধি পাইল। এই 
অতিরিক্ত টাকা আমার উপার্জনও হয় নাই কিংবা ব্যয়ও হয় নাই। 
তবু, হিসাবের ন্মরণার্থ এইরূপ আয়-ব্যয় লিখিতে হইবে; তবে এই 
ব্যাপারটিকে এমনভাবে বন্দোবস্ত করিয়া লিখিতে হইবে যে, আমার 
বাস্তব আয়-ব্যয়টা বুঝিতে বেগ পাইতে না হয়। 

ব্যবসামীদের একখানা খাতা থাকে তাহাতে যাবতীয় আথিক 
খবিদ-বিক্রয়, দেনা-পাওনা, আদান-প্রদানের বিষয়-_-তাহ! নগদই হউক 
কিংবা বাকিতেই হউক-_-লেখা থাকে । তাস্ছাড়া, তাহাদের আরও 
৩৪ খানি খাতা থাকে যদ্ধারা তাহার! নিজেদের আয়-ব্যয় এবং ব্যবসায় 
সম্বদ্ধে প্রকৃত অবস্থ৷ বুঝিতে পারে। তাহাদের খাতাগুলির নাম-- 
খসড়া, রোকড়, খতিয়ান, রেওয়া ইত্যাদি। আমরা এই উদ্দেশ্টে 
সাধারণ জমা-খরচ বহি ব্যতীত আর একখানি মাত্র খাতা! রাখিব 7 
ইহাকে বলিব খতিয়ান? । কোন্‌ খাতার কোন্‌ ঘরে কোন্‌ বিষয় 
লিখিব তাহ! পর পৃষ্ঠায় বলা হইতেছে £-- 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৩৩ 
জমা-খরচ খাতায়- 


(ক) জমার ঘরে--(১) নিজ ঘরের যাবতীয় আয়-_যে আয়ের 
উপর অপরের কোনরূপ কোন অধিকার নাই-__তাহা এইস্থানে লিপিবদ্ধ 
করিবে। দ্রব্যাদি বিক্রয়ের টাকা এবং প্রাপ্ত স্থদাদিও ইহারই অস্তভূকক্ত 
হইবে ; ধারে বিক্রয়ের টাকা যখন নগদ পাইবে তখনই মাত্র এই ঘরে 
জমা করিবে । 

€খে)ট খরচের ঘরে-_(২) নগদ টাকায় খরিদ দ্রব্যের মূলা? 
(৩) ধারে কেনা দ্রব্যের মূল্য (এখানে সেই ব্যবসায়ীর নামও 
লিখিবে; যেমন, বঃ গোপীবল্লভ সাহা ইত্যাদি; ইহার অর্থ গোপীবল্লভ 
সাহা তোমার পক্ষে এ খরচটা করিলেন, তিনি তোমার নিকট 
পাওনাদার হইলেন; (৪) অপরে তোমার নিকট হইতে যে টাকা 
উপার্জন করিল। 


খতিয়ান খাতায়-_ 


€গ) জমার ঘরে (৫) বাকিতে ক্রয় কর! দ্রব্যের পরিমাণ, 
মূল্য এবং ব্যবসায়ীর নাম; (৬) বাকিতে বিক্রীত ভ্রব্যের মূল্য 
পাইলে তাহা; (৭) গৃহীত খণের টাকা; (৮) ব্যাঙ্ক প্রভৃতি হইতে 
উদ্ধাত্ত টাকা; (৯) অপর কেহ তোমার নিকট টাকা আমানত 
করিলে তাহা; (১০) কেহ তোমার বকেয় প্রাপ্য শোধ করিলে তাহা । 

€ঘ) খরচের ঘরে- (১১) তুমি কাহারও বকেয়৷ প্রাপ্য শোধ 
করিলে তাহা ॥; (১২) ব্যাঙ্কে টাক! জম! করিলে তাহা; (১৩) ধারে 
বিক্রয় করিলে তাহা; (১৪) কাহারও নিকট কোন কারণে টাকা 
"আমানত করিলে তাহা । 


১৩৪ প্রবেশিকা গারস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 
পূর্বোক্ত বিষয়গুলিই এখানে সংক্ষিপ্তভাবে দেখান যাইতেছে__ 


নিজন্ব প্রাঞ্ঠ, ! কিংবা ধারে | ক্রীত দ্রব্য; (৬) বকেয়া প্রাপ্য 
অর্থাৎ উপাজিত; খরিদ করা | বাকিতে বিক্রীত ; শোধ, (১২) 
কিংবা উৎপন্ন | দ্রব্যের মূল্য । (দ্রব্যের প্রাপ্ত ব্যাঙ্কে যেটাকা 


অর্থাদি। (৪) স্থ্দাদি শোধ : মূল্য; (৭) গৃহীত | জমা রাখা 


এবং যাবতীয় ; খণ; (৮) ব্যাঙ্ক | হইতেছে; (১৩) 
নগদ খরচ | প্রভৃতি হইতে ; ধারে বিক্রয়ের 
যাহার পুনঃ- | উদ্ধৃত টাকা; (৯) | অপ্রাপ্ত অর্থ; 
প্রাপ্তি হইবে | অপর কতৃক | (১৪) অপরের 
না (খণ শোধ ; আমানত করা 
নহে )। টাকা; (১০) অপর 
--- কতৃকি তোমার 

বকেয়া প্রাপ্য 

শোধ। 





খতিয়ান খাতার জমা-ধরচ ঘরগুলির সম্বন্ধে খুব স্পষ্ট 
ধারণ! থাকা আবশ্টাক। ইহার “জমা” ঘরের অর্থ এই-_তৃমি অপরের 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৩৫ 


নিকট হইতে অত টাকা জম! লইয়াছ অথবা অপরে তোমার ঘরে অত 
টাকা গচ্ছিত বাখিয়াছে ; স্তরাং তুমি তাহার নিকট এ পরিমাণ অর্থের 
জন্য খণী হইয়া আছ। উহার "খরচের ঘরের অর্থ এই-_তুমি অপরের 
নিকট অত টাকা রাখিয়া দিয়াছ; স্থৃতবাং, উহা তোমার প্রাপ্য হইয়া 
আছে ;_-এ টাকা একসময়ে তোমার তহবিলে আসিবে । এইটুকু 
সম্বদ্ধে পরিষার ধারণা থাকিলেই হিসাব সম্বন্ধে যাবতীয় প্র্থের উত্তর 
দিতে পারিবে । প্রশ্ন হইতে পারে-_ 

১। আমার নিজন্ব জমা কত ?_-উ£। এ্ত+-_ঘরের অঙ্ক-সমগ্টি 
( চার্ট দেখ )। 

২। আমার নিজন্ব খরচ কত--উ:ঃ | «৬%_ঘরের অঙ্ক-সমট্টি | 

৩। আমার কত পাওনা আছে ?--উঃ। এগাগ_*ছ্+ (ফল 
ধনরাশি হইলে প্রাপ্য এবং খণরাশি হইলে দেন! বুঝিবে )। 

৪। আমার নগদ তহবিল কত? উ:। (ক গ)- 
(*্ধ+চ্ল”? )| হিসাব লেখার সময় মনে বাখিবে-_ 

(১) ধারে দ্রব্য খরিদ করিলে তাহা খতিয়ানের জমার ঘরে 
এবং জমা-খরচের খরচের ঘরে তখনই লিখিয়া রাখিবে; কারণ, 
ব্যবসায়ী & দ্রব্য তোমার নিকট জমা রাখিল এবং তুমি তাহা নিজে 
খরচ করিলে । 

. (২) ধারে দ্রব্য বিক্রয় করিলে তাহা খতিয়ানে খরচ লিখিবে। 
পরে টাকা পাইলে তাহা খতিয়ানের জমার এবং 'জমা-খরচে'র জমার 
ঘরে আলাদা আলাদা লিখিবে। এক্ষেত্রে ক্রেতা তোমার নিকট যে 
নগদ টাকা জমা বাখিল তাহ! তোমার নিজন্ব হইল বলিয়া আসল জমা- 
খরচের জমার অস্ততৃক্তি করিলে । 

(৩) দ্রব্য ক্রয় করার জন্য টাকা আমানত করিয়াছিলে | খতিয়ানে 


১৩৬  প্রবেশিক। গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


আযানতকারীর নামে উহা খরচ হইল। লে ব্যক্তি পরে তোমার 
লিকট ভ্রব্য আনিয়া জমা করিল, উহা! খতিয়ান জম। হইল। 
এইন্রব্যে তোমার সম্পূর্ণ স্বত্ব আছে এবং তোমারই খরিদ-নব্য 
হইল বলিয়া অতঃপর উহা! 'বাস্তব জমা-খরচের খরচের অস্ততূক্তি 
করিতে হইবে। 

নিয়ে হিসাব-সংক্রান্ত কিঞিৎ জটিল প্রশ্ন এবং তাহার সমাধান 
দেওয়া গেল। 

প্রশ্ন ।-_হিসাব-রক্ষক শ্রীযুত শরচ্চন্দ্র বন্থু-_ 

১লা টৈশাখ-_-২০০২ বেতন পাইলেন; ৫২ বাজার খরচ করিলেন; 
চার্টার্ড ব্যাঙ্কে ১০. জমা করিলেন; গোলাম হোসেন ব্যাপারীর 
(সাং ফুলতলা ) নিকট ধারে ৮৫২ টাকায় আম বাগান বিক্রয় করিলেন। 

৫ই বৈশাখ-সেন্টাল ব্যাঙ্ক হইতে আমানতী টাকার বাবদ 
৭৫২ সুদ্দ পাইলেন; গোপীবল্পভ সাহার নিকট হইতে ৫২ মণের 
২ মণ চাউল ধারে ক্রয় করিলেন; বামকষ্চ রায়ের নিকট হইতে 
অলঙ্কার খরিদ করিয়া দেওয়ার জন্য ১২৫২ আমানত লইলেন এবং 
উধধ কিনিয়া আনার জন্য স্থরেজ্্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিকট ৫২ 
আমানত করিলেন। 

ণই বৈশাখ__গোলাম হোসেন আম বাগানের মূল্য ৮৫২ শোধ 
করিল; সুবেন্্র বন্দ্যোপাধ্যায় পূর্বোক্ত ৫২ টাকার ওষধ খবিদ 
করিয়া আনিয়া দিলেন; রামকুঞ্চ রায়কে ১২০ টাকার অলঙ্কার 
কিনিয়। দেওয়া হইল; পূর্বোক্ত গোপীবল্পভ সাহার চাউলের মূল্য 
১০২ শোধ করা হইল। 

উক্ত তিন দিনের জমা-খরচাদি তৈরী কর। 

( পরপৃষ্ঠায় জমা-খরচ লিখিয়া দেখান হইতেছে )। 


১৩৭ 


পারিবারিক হিাব-সংরক্ষণ 


১৯ 8518 ৯৯৪ ৪১৮1৮ 
51181151৮7৯ ৯1৮৪০৮৪ 
---৫১০11102 

11545 ১৬ 
ড় ১৮১18) 11151155 25 
8১) ৮1০1১ 1৩ 
৯৬৪৩ 211৮ ৪1414 
টু 1848 ৫০111) 
৯৯৮১২ 16৫ 


451০ (১) 


১৯ ৪৪৯ ৯৮৪ ৪০১৮৮ 


৮ 
১৯৯ৎ | ৮1৮1৮ ৮1৮ ৯5112 ৯11৮২ 12ৎ 


151111৮ 51271৯2 510212 
৮1৮৮২ ৬৬ 


15 61) 


৯]৮ ০1৮৪3৮ 








১৩৮  প্রবেশিক! গারহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 
পূর্বোক্ত হিসাব হইতে সহজেই বলা যাঁয় যে উক্ত কয়দিনের জন্য 


শ্রীযৃত শরচ্চন্দ্র বস্থুর-_ 
(১) নিজস্ব জমা-- (ক) ঘরের অন্ক-সমষ্টি » ৩৬০২ 
(২) নিজশ্ব খরচ -* ত্খে) এ বিডির সম ২০২২ 


(৩) অপরের নিকট প্রাপ্য আছে স্ছর _ গ্লী-” ৩২০২ ২২৫» ৯৫৯ 
(৪) নগদ তহবিল - (4) _ (৭45) 
্ম (৩৬০২+২২৫২)- (২০২+৩২০২) 
স্প ৫৮৫৭২ ৩৪ ০২. 
স্৮২৪৫২ টাকা । 
মুদির দোকান, ছুধওয়ালা, কয়লাওয়াল! প্রভৃতির নিকট হইতে 
অনেক সংসারেই প্রায়শ কিংবা নিত্যই বাকিতে মাল খরিদ করা হয়। 
এই বাকির হিসাব অবশ্যই খতিয়ান খাতায় লিখিতে হইবে; তবে, 
এইজন্য খতিয়ান খাতায় প্রত্যেকের নামে কয়েকখান! করিয়া আলাদ! 
পৃষ্ঠা রাখিয়া দিলেই ভাল হয়। দৈনিক মাল খরিদ উহার জমার ঘরে 
লিখিয়া রাখিবে এবং যখন যে টাক দেওয়া হয় তাহা খরচের ঘরে 
লিপিবদ্ধ করিবে, এবং এ শেষোক্ত পরিমাণ টাক! তোমার জমা-খরচের 
খাতায় উক্ত মালের ক্রয় বাবদ খরচ লিখিবে। খতিয়ান খাতায় প্রথম 
পৃষ্ঠায় ভিতরের নামগুলির পৃষ্ঠাঙ্কসহ সুচী করিবে; যেমন, মুদির 
হিসাব_-৮* পৃঃ; ছুধওয়ালার হিসাব__৯৬ পৃঃ, ইত্যাদি। ইহাতে 
স্থবিধা এই যে, অতি অল্পসময়ের মধ্যেই কাহারও সহিত তাহার বাকি 
দেনা-পাওনার হিসাব করা সম্ভবপর হইবে । 
চেক (01090099 ) ্‌ 
£চেক"? (07090999) বা! মহাজনি-পান্র--“চেক' সম্বন্ধে বলিতে 
হইলেই “ব্যাঙ্ক” (78019 ) বা মহাজনিখানার কথা বলিতে হয়; 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৩৯ 


কারণ, 'ব্যাঙ্ক' সন্বদ্ধেও আমাদের মোটামুটি জ্ঞান থাকা একান্ত 
প্রয়োজন । 

ব্যাঙ্ক ( 981]. )-_-ইতালি ভাষায় বান্স (78110 ) অর্থাৎ “বেঞ্চ, 
(897৩) শব হইতেই বব্যাঙ্ক' শৃক্ধের উদ্তব। ব্যাক্ক একটি, 
মহাজনি-প্রতিষ্ঠান। এখানে টাকা লেন-দেনের কাধ হয়। ব্যাঙ্ক অস্তের 
গচ্ছিত অর্থ উহার নিরাপত্বার দায়িত্ব গ্রহণ করিয়া সযত্বে রক্ষা করে; 
প্রয়োজনমত নির্দিষ্ট নিয়মান্ুসারে আদান-প্রদান করে এবং দুরবর্তী 
স্থানসমূহের সহিত কাজকারবারে টাকার আদান-প্রদান বিষয়ে স্থবিধা 
প্রধান করে। ্‌ 

ব্যাঙ্কে সাধারণত ছুইটি নিয়মে টাক! জম! রাখিবার ব্যবস্থা আছে ॥ 
একটি “চলতি হিসাব+ (001:100 &6008106 ) 1 অপরটি "স্থায়ী হিসাব 
( 7)01)091 0 560 %000101)1 )। ব্যাঙ্ক টাকা গচ্ছিতকারীর 
প্রতিনিধিত্বরূপ কার্ধ করে। ব্যাঙ্ক হইতে সাধারণকে বিবিধ নিয়মে 
টাক! খণ দ্িবারও নিয়ম আছে। 

চলতি হিসাবে (09761068000910) দৈনন্দিন আয় হইতে 
টাক! গচ্ছিত (জম! ) রাখা যাঁয় এবং ব্যাঙ্কের কমকিতণকে পূর্বে না 
জানাইয়াও যখন তখন ইচ্ছামত টাকা উঠাইয়া লওয়া'যায়। এই 
হিসাবে গচ্ছিত টাকার জন্য স্থৰ খুবই কম পাওয়া যায়, অনেক ব্যা্কে 


'আদৌ পাওয়া যায় না। 
স্থায়ী-হিসাবের (10670516000 46001) ) বেলায় 


কোন নির্িষ্টপরিমীণ অর্থ কোন নির্দিষ্ট কালের জন্য গচ্ছিত রাখা 
হয়। সাধারণত তিন, ছয় বা বার মাসের ওয়াদায় রাখা হইয়া 
থাকে। উক্ত ওয়াদার সময় অতীত হুইবার পূর্বে স্থায়ী-হিসাবের 
টাকা. উঠান যায় না। এই হিসাবে সাধারণত নুদ্বের হার বাধিক 


১৪০ প্রবেশিকা গারহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


শতকরা চারি টাকা হইতে ছয় টাকা পাওয়! যাইতে পারে।. তবে 
এই স্থদের হার ওয়াদার সময়ের দীর্ঘতার অন্থপাতে কম-বেশী 
হইতে পারে। 

ব্যাঙ্কের উপকারিতা এবং উপযোগিতা সম্বদ্ধে এই বলা যায় যে, 
এখানে গচ্ছিত. টাকার নিরাপত্তা রক্ষিত হয়। ইহা সাধারণের 
অর্থ-সঞ্চয়ের নিমিত সাহায্য করে। 'ব্যাঙ্ক' গচ্ছিতকাবীর ক্যাশিয়ারের 
(08519: ) বা হিসাব-রক্ষকের কাজ করিয়া থাকে । 

চেক (0)7609৩9) বা মহাজনি-পত্র (বা হাতচিঠা)__ 
কোনব্যাক্কে টাকা জমা দিলে, অর্থাৎ, গচ্ছিত রাখিলেই ব্যান্ক হইতে 
টাকা উঠাইবার জন্য ব্যাক্কের কত কতকগুলি ছাপান ফর্ম দিয়া 
থাকেন; এইগুলিকেই চেক বলে। চেকগুলি সাধারণত রঙীন কাগজেই 
ছাপা হইয়া থাকে । টাকা গচ্ছিতকারীর জন্য ব্যাঙ্কের কত তাহাকে 
কতকগুলি চেক ফম-সম্বলিত একখানি চেক বহি দিয়া থাকেন। 

ব্যাঙ্ক হইতে টাকা উঠান প্রয়োজন হইলে এ চেকবহির একখানি 
চেকফর্মে গচ্ছিতকারীর নিজের নাম, টাকার পরিমাণ ও তারিখ প্রভৃতি 
স্পষ্টভাবে লিখিয়! দিতে হয়। 

টাকা-গচ্ছিতকারী ব্যাঙ্কের কতর্ঁকে (738101597 [078০০ ) চেক 
পাঠাইয়া তাহার নিজের নামে (707৪: ) অথবা! প্রয়োজনমত কোন 
তৃতীয় ব্যক্তির নামে (78589 ) টাকা উঠাইতে পারেন। 

একথানি চেকের সহিত সাধারণত তিন পক্ষের সন্বদ্ধ থাকে,_ 

1):৪ঘ1৩:-_-যিনি টাকা উঠাইয়া লন, অর্থাৎ কেবলমাত্র গচ্ছিতকারী। 

1018৩-_ধাহার প্রতি (টাকা উঠাইবার জন্ত ) চেকের সাহায্যে 
“আদেশ প্রদত হয়, অর্থাৎ, ব্যাঙ্কের কত?। 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৪১. 


7৪৪৪-_ধাহাকে এ চেকের সাহায্যে টাকা প্রদান-করা হয়। 
ণচ্ছিতকারী নিজের নামে টাকা উঠাইলে তখন চেকের সহিত কেবল 
ছুইটি পক্ষের সম্বন্ধ থাকে; যথা,--1)78%/6, [780] 

চেক-ফর্ম পুরণ করিবার সাধারণ নিয়মাদি ।_এই বিষয়ে 
নিম্লিখিত বিষয়গুলির প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হয় £-- 

স্বাক্ষর (3121181076 )- ব্যাঙ্কে প্রথম টাকা. গচ্ছিত .ব্াখিরার 
সময়ে গচ্ছিতকারী যেরূপ স্বাক্ষর (নিজের নাম লিখিবার, সময় ) 
দিয়াছেন চেকে লিখিত স্থাক্ষর তাহার ঠিক অনুরূপ হইবে । এ 
বিষয়ে কিছুমাত্র গরমিল হইলে টাকা উঠান যায় না। 

পাওলাদারের নাম (800০ 01 01) 7৪5৪৬ )--যাহাকে টাক। 
প্রদান করিবার জন্ত চেকের দ্বারা ব্যাঙ্কারকে আদেশ প্রদান কর! 
হইতেছে, তাহার নামটি খুব স্পষ্টাক্ষরে লিখিতে হয়। 

টাকার পরিমাণ (17৩ 000৮ )-ব্যাঙ্ক হইতে যে টাক! 
তুলিতে হইবে তাহার পরিমাণ স্পষ্টভাবে চেকের মধ্যভাগে শবে 
লিখিতে হয় এবং চেকের নিয়ে বামকোণে অঙ্কে লিখিতে হৃয়। 
ভবিষ্যতে কোন গোলযোগের ত্য যাহাতে না হয় তজ্ন্য এইরূপে 
টাকার পরিমাণ দুইস্থানে ছুইরূপে লিখিতে হয় । 

চেক. "মুড়ি (00910691011 )--প্রত্যেক চেক-ফর্মে বামদিকে 
চেকবহির সহিত :কতক অংশ চেক-সন্বদ্ধে সংক্ষিপ্ত বিবরণ-পরিচয়াদি 
লিখিয়া রাখিবার জন্য থাকে ; ইহাকে চেক-মুড়ি (09876970105 ) 
বলে। ইহাতে ব্যাঙ্ক হইতে চেকার টাকা উঠাইবার সময় নিম্নলিখিত 
বিষয়গুলি লেখা থাকে । এইগুলির ঘর চেকদাতাকে পূরণ করিতে 
হয়। যথা 

(১) যাহার নামে চেক দেওয়। হয় (৪2206 0: 07১৪ 78566 ) 


১৪২  প্রবেশিক। গাহ্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


(২) কিজন্য উক্ত টাকা দেয় ( জা],8৮ 076 08510911619 107) 

(৩) টাকার পরিমাণ ( 40080 ) 

(৪) তারিখ (70819) 

চেকের প্রকারভেদ, প্রধানত ছুই প্রকার চেক প্রদত্ত হয়_ 

7১) “বহনকারী-চেক" (13686701080 )-_-এই ক্ষেত্রে চেক- 
ফর্মে পাঁওনাদারের নামের শেষে “07 139879৮ এই কথা লেখা থাকে । 
ইহা যে-কেহ লইয়! গিয়া টাকা উঠাইতে পারে ; ইহাতে পাওনাদারের 
নিজের নাম স্বাক্ষর করিতে বাহককে কোন অনুজ্ঞ। করিতে হয় না। 

(২) /*পাওনাদারের আদেশযুক্ত-চেক' (09:90. 01,900 )-- 
ইহাতে চেক ফমে” পাওনাদারের নামের পরে "0: 02৭67 এই কথা 
লেখা থাকে । এক্ষেত্রে পাওনারারকে নিজের নাম স্বাক্ষর করিয়া 
বাহককে টাকা দিবার অনুজ্ঞা করিতে হয়। 

আরও একগ্রকার চেক-ফমের নিয়ম প্রচলিত আছে, তাহাকে 

“01983600060” বলে। ইহাতে চেক-ফর্মের বামপার্ে 
কোণাকুণিভাবে ঢুইটি “সমান্তরাল রেখা দেওয়া! হয়; ইহার মধ্যে 
“& ০০% “০ট ৩৪০৮৪১1৪৮ ০৮০, লেখা থা কিতে পারে। 


এইরূপ চেকের বেলায় চেকের টাকা কোন ব্যাঙ্কের সাহায্যে 
( মধ্যস্থতায় ) পাওয়া যায় | উদাহরণ হিসাবে বলা যায়,_যদি তুমি 
॥এইবূপ €098990. 01)60010” পাও, তবে তুমি এই «চেক* তোমার 
নিজের নামে ষে ব্যাঙ্কে টাকা গচ্ছিত আছে বা যে ব্যাক্কের সহিত 
(তামার হিসাব খোলা আছে তথায় এই “চেক” জমা দিবে? সেই 
াঙ্ধ তোমার টাকা প্রদানকারী ব্যাঙ্ক হইতে আদায় করিয়া তোমার 
পারার ক জারি রাইন যদি তোমার নিজের নামে কোনও 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৪৩ 


ব্যাঙ্কে হিসবে খোলা না থাকে তবে যাহার ব্যাঙ্কে হিসাব আছে এমন 
€কোন ব্যক্তির হিসাধ তথায় জমা দিবে। 

ব্যাক্কে টাক। জমা দিবার কর্ম (287108-10-5110 01" 07:9916 
8117)9)।--কোন ব্যক্তি কোন ব্যাঙ্কে হিসাব খুলিবার ইচ্ছা করিলে, 
তাহাকে প্র ব্যান্কের কত্ণার সহিত বা ম্যানেজারের সহিত দেখা করিয়া 
বন্দোবস্ত করিতে হয়, কিংবা তথায় পত্রা্দি লিখিতে হয়। উক্ত 
ব্যাঙ্কের প্রতিনিধি বা য্যানেজারের নির্দেশমত নিজের হম্তাক্ষরের 
আদর্শ রক্ষা করিবার নিমিত্ত ব্যাঙ্ক কর্তৃক প্রদত্ত ফর্মে নিজের নাম 
স্বাক্ষর করিতে হয়। 

এইরূপে কোন ব্যাঙ্কে হিসাব খুলিয়৷ জমা দিবার সময় এ ব্যান 
হইতে বিনাব্যয়ে টাকা জমা দিবার ফর্ম (98)78-70-8109 00. 
£575016 9119 ) আবীধা অবস্থায় কতকগুলি, কিংবা কতকগুলি 
ফর্ম সম্বলিত বাধাই পুস্তক পাওয়া ষায়। সাধারণত, এই ফমগুলির 
সহিত মুড়ি (00576670118 ) যুক্ত থাকে। ব্যাঙ্কে টাকা জমা 
দিবার সময় এ "টাকা-জম! দিবার ফমে? প্রদত্ত মুদ্রাদির পরিচয় অর্থাৎ 
কিরূপ মুদ্রা কতকগুলি তাহার পরিচয় এবং নোট ইত্যাদির পরিচয় 
যথাযথ লিখিয়া দিতে হয়, এবং উক্ত ফমের "মুড়িতে” মুদ্রার্দির 
সংক্ষি্ত পরিচয়াদি লিখিয়! ব্যাঙ্কের বিশিষ্ট বিভাগের কমচারী কর্তৃক 
স্বাক্ষরিত করাইয়া লইতে হয়। 


পাস-বুক (7১895-০০% ) 


ব্যান্কের পাস-বুক (788৪ 7০0%) বা হিসাব-বহি-_-কোন 
ব্যাঙ্কে প্রথমবার, টাকা জমা দিবার পরেই এ ব্যাঙ্ক হইতে একখানি 
ছোট হিসাবের বহি পাওয়া যায়; ইহাকেই পাস-বুক বলে। এই 


১৪৪ প্রবেশিক! গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


'ব্হি'তে.. তোমার .. হিসাব সম্বন্ধে ব্যাক্কে যে খতিয়ান-হিসাব আছে 
তাহারই “নকল; হিসাব থাকে । খতিয়ান হিসাবের ন্তায় পাস 
বহিতেও জমা ও খরচ (761 & 06৭1) ছুই দিকেই উল্লেখ করা 
থাকে। তোমার নিজের খতিয়ান-হিসাবের সহিত পাস বইএর হিসাব 
পরীক্ষা করিলে দেখিতে পাইবে যে, ব্যাঙ্কের জমার ঘরের সহিত তোমার 
নিজের খতিয়ানের খরচের ঘরের মিল আছে এবং ব্যাঙ্কের খরচের 
ঘরের সহিত তোমার নিজ খতিয়ানের জমার ঘরের মিল আছে। 

(ক) সাংসারিক আয় ও ব্যয়। সাংসারিক ব্যয়-বরাজ্দ 
(ব:)। সাময়িক অপ্রভ্যাশিত ব্যয়াদি। অর্থ-সঞ্চয়ের 
প্রয়োজনীয়তা । 

অর্থের উপার্জন ও রক্ষণে যেরূপ যত্ব লওয়া ও স্বিবেচনার প্রয়োজন, 
ব্যয়ের বিষয়েও তাহার চেয়ে সমধিক যত্ব ও বিবেচনার অন্প 
প্রয়োজন নহে । এতহ্যতীত, ধনাগমের অন্য উপযোগিতা নাই | অনেকে 
অর্থ-উপার্জন করিতে সক্ষম, কিন্তু তাহার সন্ধবহার করিতে অসমর্থ। 
রুগ্ন অবস্থায়, বাধকা, বিপদ্‌-আপদের সময় উপার্জনের ক্ষমতা থাকে না। 
এই সকল প্রকার অসময়ের জন্য পূর্ব-উপাঞজ্িত অর্থের কিছু কিছু 
প্রয়োজনীম ব্যয়াদি করিয়াও নিয়মিত সঞ্চয় কর! উচিত । এই জন্য 
যাহাতে অধথা ব্যয় সংক্ষেপ করিয়া অজিত অর্থের কিয়ৎপরিমাণও 
সঞ্চয় করা যায় তৎ্প্রতি সকলেরই লক্ষ্য রাখা কতব্য। আয়ের 
অনুরূপ বায় করা একাস্ত গ্রয়োজন। সর্বদা আয় ও ব্যয়ের সাম্য 
রক্ষা করিয়া চলিবে । অমিতব্যয়িতার জন্য বহু ধনবান্‌ ব্যক্তি 
পরিণামে অর্থকষ্ট-জন্য অশেষ দুঃখ ভোগ করিয়া থাকেন। সময়ে 
কোন এক বিষয়ে অধিক ব্যয় করিতে হইলে অন্য বিষয়ে ব্যয়-সংক্ষেপের 
চেষ্টা করিবে । নিজের আয়-ব্যয়ের হিসাবের তালিকা যত্বের সহিত 


পারিবারিক হিসাব- সংরক্ষণ ১৪৫ 


নিয়মিতভাবে রক্ষা করিবে । ইহাতে কখনও কোন বিষয়ে অযথ। 
্যয়বাহুল্য হইতেছে কিনা বুঝিতে পারা ষায় ও সময়ে তাহার সংশোধন 
করাও সম্ভব হইতে পারে এবং ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করা বিশেষ 
কঠিন হয় না। 

সঞ্চিত অর্থ যাহাতে স্থরক্ষিতভাবে থাকে, ততপ্রতি লক্ষ্য রাখা 
কর্তব্য । এজন্য এই অর্থ ব্যাঙ্কে জম! দেওয়া! চলে । জীবন-বীমা, 
যৌথ-কারবার প্রভৃতিতে টাকা খাটাইলে এ টাকা সময়ে বহুগুণ 
বধিত আকারে পাওয়া যায় । 


সাংসারিক ব্যয়ের “বরাদ্দ” বা বাজেট (398০) 


নিজ নিজ সম্মান রক্ষা করিয়। স্বচ্ছন্দে সংসারযাত্র1 নির্বাহ ও বিবিধ 
সৎকর্ম করিবার জন্য অর্থাগমের প্রয়োজন । অর্থোপার্জনের নিমিত্ত 
যেরূপ পরিশ্রম, ঘত্ব ও বুদ্ধি-বিবেচনার প্রয়োজন, ব্যয়ের সময়েও তুল্যরূপ 
বা তদপেক্ষা বুদ্ধি, বিবেচনা ও পরিণামদ্রশিতার একান্ত প্রয়োজন । 
আয়ের অনুরূপ ব্যয় করা গৃহীমাত্রেরই কতব্য । আয় অপেক্ষ। ব্যয় 
অধিক হইলে পরিণামে নিঃস্ব হইয়া অশেষ দুঃখ-ছুরিশা ভোগ করিতে 
হয়। সর্বদা আয় ও ব্যয়ের সাম্য রক্ষা করিয়া চলাই উচিত) নতুবা, 
অর্থনঞ্চয়ের কোন উপায়ই থাকিবে না। কাজেই রুগ্ন অবস্থায়, 
বারধ্ক্যে বা আকম্মিক বিপদ-আপদের সময় যখন অর্থের একান্ত 
প্রয়োজন, তখন অর্থাভাবে বিপন্ন হইতে হইবে। মিতব্যয়ীর কখনও 
অর্থকষ্ট হইতে পারে না। যে .সংসারে অর্থব্যয়-বিষয়ে . নিয়ুম-শৃঙ্খলা 
রক্ষিত...9. পালিত. হয়, সেই, সংসারই প্রত, স্খময়, ক্ষেত্র। এই 
নিয়ম-শৃঙ্খলা রক্ষা করিতে হইলে, .প্রৃতি সংসারে অর্থাগমের অনুরূপ 


নও 


১৪৬ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ব্যয়নিষিত্ত' স্থনিয়ন্ত্রিত ব্যয়-বরাদ্দ বা বাজেট (8986 )'প্রণীত হওয়। 
'একাস্ত প্রয়োজন । 

সর্বদা মিতব্যয়িতার সহিত আয়ের কতকাংশ আকস্মিক বিপদ্‌- 
আপদ্‌, ব্যারাম-গীড়া, সাময়িক অপ্রত্যাশিত বায় ও ভবিষ্যতের জন্য 
নিয়মিতভাবে সঞ্চয় করিবে । ব্যয়ের নিমিত্ত “বাজেট্‌” (ব্যয়-বরাদ্দ ) 
থাকিলে আয়-ব্যয়ের ন্যনাধিক্য বুঝিতে পারা যায় এবং কোন অন্চিত 
বিষয়ে ব্যয়বাহুল্য হইলে তাহারও সংশোধন হইতে পারে; অন্যায় ব্যয় 
সংক্ষেপ করিয়া সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করা সইজ হয়। 

আয়ের অনুবূশ ব্যয় করা গৃহীমাত্রেরই একাস্ত কতব্য; কারণ, 
আয় ও ব্যয়ের সাম্য রক্ষা করিয়া চলা উচিত। আয় অপেক্ষা বায় 
অধিক হইলে পরিণামে নিঃস্ব হইয়া অশেষ দুঃখ-ছূর্গতি ভোগ করিতে 
হয়। এইজন্য প্রত্যেক গৃছেই নিয়মিত যাবতীয় ব্যয়াদির নিষিত্ত 
নিয়মিত অর্থাগমের অনুপাতে একটি নিদিষ্ট “ব্যয়-বরাদ্দ”' থাকা উচিত। 
ব্যয়-বরাদ্ধ বা বাজেট্‌ প্রস্তৃত করিতে হইলে সাংসারিক যাবতীয় নিয়মিত 
ব্যয় ও আকম্মিক ব্যয়াদি সম্বন্ধে একটি আন্গমানিক তালিক। প্রস্তত 
করিতে হয়। এ ব্যায়-বরাদ্দ অনুযায়ী বায় করিলে সংসারের 
স্থখ-স্বাচ্ছন্দয বজায় রাখিয়াও নিয়মিত অর্থ সঞ্চয় সম্ভবপর হইতে 
পারে। গৃহীর পক্ষে স্বীয় আয়-ব্যয়ের তালিকা রাখা কদাচ 
নিন্দনীয় নহে; কারণ, কখন কোন্‌ বিষয়ে কিরূপ বায় হইবে বা 
হইতেছে এবং কোন বিষয়ে কখনও অন্গচিত ব্যয়বাছল্য হইতেছে 
কিনা ইত্যার্দি বিষয়ে অবগত হইয়া ভবিষ্যতের জন্য সাবধান 
হওয়া যায়। 

সাংসারিক বাধিক ব্যয়-বরাদ্ধ বা বাজেট সকলের একরূপ হুইতে 
পারে না। শহরে ও পলীতে সাধারণ মধ্যবিত্ত ও ধনীর পক্গে 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৪৭ 


পৃথক পৃথক্‌ “ব্যয়-ববাদ্দ' গৃহীর ম্বীয় আয় অনুপাতে প্রস্তুত হওয়াই 
প্রয়োজন; তবে, এই বাজেট প্রস্তত করিবার সময় মনে রাখিতে 
হইবে যে, স্বচ্ছন্দে সংসারযাত্রা-নির্বাহ করিতে হইলে আয়ের অধেক 
বায় নিরূপণ কর! উচিত, বাকী অধ্কে আয় আকনম্মিক ব্যয়াদি ও 
ভবিষ্যতের সংস্থানজন্ সঞ্চয় করা উচিত। 

একজন মধ্যবিত্ত পল্লীবাসী গৃহস্থের পক্ষে নিয়মিত দৈনিক ব্যয় 
হিসাবে বাধিক আহার, বাসস্থান, পরিধেয় বন্দির ব্যয়, ছেলেমেয়েদের 
শিক্ষা-ব্যয়, ঝি-চাকরের বেতনাদি এবং আকম্মিক বিপদ, ব্যাধি-পীড়ার , 
নিমিত্ত চিকিৎসার ব্যয়, সাময়িক জনহিতকর কর্ম বা কোনরূপ দৈব- 
ছুবিপাকজনিত ; যথা,--দুতিক্ষ, ভূমিকম্প, জলপ্লাবন প্রভৃতি নৈসগিক 
দুর্ঘটনার ব্যয়াদি ধরিয়া আনুমানিক বাজেট প্রস্তত করিতে হয়। 

একজন শহরবাসী মধ্যবিত্ত গৃহীর পক্ষে পল্লীবাসী অপেক্ষা! ব্যয় 
সাধারণত অতিরিক্ত হইয়া থাকে । তাহার পক্ষেও নিয়মিত আহার, 
বাসস্থান, পরিধেয় বস্ত্রাদি, শিক্ষাবাবদ ব্যয় প্রভৃতি ব্যতীতও অপর 
ব্যয় অনেক হইয়! থাকে । যেমন,--আমোদপ্রমোদ প্রভৃতি কার্ষে ব্যয়, 
সাধারণ যানবাহনাদির ব্যয়, বাড়ী ভাড়া, জল, আলো! ইতি সরবরাহের 
নিমিত ব্যয় ইত্যাদি। 

শহরে মধ্যবিত্ত গৃহ্স্থের ব্যয়-বরাদা বা বাধিক বাজেট্‌্--সংসারের 
নিয়মিত আহার ও পরিধেয় বস্ত্রাদির ব্যয়, বাসস্থান বাবদ বাস-গৃহের 
ভাড়া বা মেরামতাদির ব্যন্স্্পুত্রকন্তাগণের শিক্ষার নিমিত্ত ব্যয় 
সাময়িক ব্যারাম-পীড়ায় চিকিৎসার ব্যয়স্-জনহিতকর কার্ধাদির জন্য 
দাতব্য হিসাবে ব্যয়--পাধারণ দৈব ও মঙ্গলকার্ধে ব্যয় ইত্যাদি । 

আকম্মিক এবং অচিস্তিতপুর্ব ব্যয়াি-_গৃহীর বা গৃহস্থের 
সংসারধাত্রাঞ্নির্বাহনকল্পে বিবিধ বিষয়ের নিয়মিত ব্যয় ব্যতীত আকন্মিক 


১৪৮ প্রবেশিকা গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


অচিস্তিতপূর্ব বিবিধ ব্যাপারেও বায় হইতে পারে। এই নিমিত্ত 
প্রত্যেক গৃহস্থের পক্ষেই সাংসারিক ্বীয় নিয়মিত ব্যয়-বরাদ্দের সহিত 
আকস্মিক ব্যয়-নির্বাহের জন্য অতিরিক্ত অর্থের ব্যবস্থা নির্দিষ্ট থাকা 
উচিত। এই আকস্মিক ব্যয় 'বিবিধ কারণে হইতে পারে; যথা, 
সংসারে পরিজনমধ্যে জন্ম-মৃত্যু-বিবাহাদি অচিস্তভিতপূর্ব শুভাশুভ কারে 
ব্যয়; বিশিষ্ট আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব ও অতিথি-অভ্যাগতের আগমনাদি 
কারণে ব্যয়; ব্রত-নিয়ম, পূজাপার্ণ ও পর্বাদি-কারণে ব্যয়? ব্যাধি- 
। গ্ীড়ায় চিকিৎসা কার্ষে ব্যয়, অগ্নিভয়, ঝড়-বাতাস প্রভৃতি কারণে ব্যয়? 
জলপ্লাবন, ছুভিক্ষ, ভূমিকম্প প্রভৃতি নৈসগিক ঘটনায় ব্যয়, সাময়িক 
কোন জনহিতকর কারে ব্যয়, বিবিধ দাতব্য-কার্ধে ব্যয় ও তীর্থপধটনাদি 
কাধে ব্য়। 


(গ) জীবন-বীম! 

ধনীর ধন-বৃদ্ধি এবং দরিদ্রের অর্থ-সঞ্চয়ের যত পন্থা! আছে, 
জীবন-বীমা তাহাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিরাপদ ও সহজ পন্থা। 
মানুষ যদি জানিতে পারে যে, তাহার পরিবারের আর্থিক ভবিষ্যৎ 
নিরাপদ, তাহ! হইলে সে তাহার স্ত্রী এবং সস্তান-সম্ভতিসহ ভবিষ্যতের 
জন্য শঙ্কাবিহীন ও শান্তিপূর্ণ চিত্তে কাল কাটাইতে পারে । এজন্য 
জীবন-বীমা একটি শ্রেষ্ঠ উপায়। 

প্রধানত দুই প্রকার জীবন-বীমা প্রচলিত আছে। (3) মা 
বীমা ও (২) আজীবন বীমা । মেয়াদী বীমার বিশেষ সুবিধা এই যে, 
বীমাকারী নির্দিষ্ট কাল প্যস্ত জীবিত থাকিলে বীমার দাবীর টাকা 
নিজেই পাইতে পারেন এবং তন্বার! বৃদ্ধ বয়সে আবায়ে জীবনযাপন 
করিতে পারেন। যদি নির্দিষ্ট কালের পূর্বেই মৃত্যু হয়, তবে অল্প 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৪৯ 


প্রিষিয়ামের টাকা দিয়াই তাহার স্ত্রীও সম্তান-সস্ততি. বেশী টাকা 
পাইতে পারেন।" আজীবন বীমার দাবীর টাকা বীমাকারীর সার 
পরে তাহার ওয়ারিশগণেরই প্রাপ্য । 

. মকাদী বীমার প্রিমিয়াম অপেক্ষ/ জীবন বীমার,প্রিমিয়াম অনেক 
কম) সৃতরাং, আজীবন বীমায় কম টাকা প্রিমিয়াম্‌ দিয়া নিজের 
অ-বত্মানে স্ত্রী ও সন্তান-সম্ততির ভরণপোষধণের জন্ত বেশী টাকার 
ব্যবস্থা করিয়া রাখিবার ইহাই একটি উৎকৃষ্ট পন্থা । | 

বর্তমানে আমাদের দেশে বহু বীমা! কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে । 
দেশবাসীও জীবন-বীমার উপকারিতা ও প্রয়োজনবিষয়ে ক্রমশই 
অভিজ্ঞতা লাঁভ করিতেছেন । 


বীমা সম্বন্ধে অবশ্মজ্ঞাতব্য বিষয়--বীমাকারীদিগের স্বার্থ- 
সংরক্ষণের জন্য গভর্নমেন্ট ১৯১২ থৃঃ অবে এক নৃতন আইন করিয়াছেন। 
ইহাতে প্রত্যেক দেশী কোম্পানিকে দুই লক্ষ টাক! গভর্নমেণ্টের নিকট 
গচ্ছিত রাখিতে হয়। 


বীমা করিতে হইলে প্রথমে কোম্পানির মুদ্রিত প্রস্তাবপত্রে 
(1১00998] 101) ) আবেদন করিয়া কোম্পানির নির্বাচিত ডাক্তার 
দ্বারা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাইতে হয়। স্বাস্থ্য-পরীক্ষার ফল কোম্পানীর 
পরিচালকবর্গের ( [)176060)8 ) অনুমোদিত হইলে আবেদনকারীকে 
কিস্তির টাকা (7১59ম;স) দিতে বলা হয়। প্রথম কিস্তির টাকা 
পাইলেই কোম্পানি আবেদনকারীকে বীমাপত্র (০1165 ) পাঠাইয়া 
দেন। প্রথম কিস্তির টাকা গ্রহণের পর হইতেই কোম্পানি এ বীমার 
টাকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এ তারিখ হইতেই পরবর্তী প্রিমিয়াম্‌ 
দিব্‌র তারিখ গণনা করা হয়। 


১৫০৩ প্রবেশিকা গাহৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


বীমাপত্রের নিঃসংশয়তা। (00157568111 ০1 চ০110158) 1 
-একবার বীমাপত্র প্রদত্ত হইলে, প্রস্তাব-পত্রে কোনওরূপ প্রবঞ্চনা 
প্রমাণিত না হইলে, উহার দাবীর টাকা প্রধান স্থদ্ধে কোন ওজর- 
আপত্তি উঠিতে পাবে না। 

বয়সের প্রমাণ (.১৩০৫ ০? ৪৪৩ )।-_বীমাপত্রে লিখিত টাকার 
দাবী উপস্থিত হইলে টাকার দাবী মিটাইবার জন্য বীমাকারীর বয়সের 
প্রমাণ পাওয়া কোম্পানির একান্ত প্রয়োজন । অতএব, বীমাকারীর 
আবেদন-পত্রের সঙ্গে বা যত সত্বর সম্ভব নিজের বয়সের প্রমাণ পাঠান 
কত'ব্য। এই জন্য নিয়োক্ত ব্যবস্থাগুলি চলিতে পারে-_ 

১। জন্মের সার্টিফিকেট । 

২। কোটী! 

৩। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষারু বা স্কুল-পরিত্যাগের সার্টফিকেট | 

কিস্তির টাকা দিবার নিয়ম ( [১০]019) ) কিস্তির টাকা 
বাৎসরিক হিসাবে অগ্রিম দেয়; তবে, ফাখাসিক ও ত্রৈমাসিক হারেও. 
দেওয়া যায়। ইহাতে শতকরা ২।০ টাকা সাধারণত বাদ পাওয়া যায়। 
আবার, মাসিক হারেও দেওয়া চলিতে পারে; কিন্ত, তাহাতে কিছু 
বেশী দিতে হয়। কিস্তির টাকা দিবার জন্য বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন 
হার নিদিষ্ট আছে। 


কিস্তির টাকা দিবার অতিরিক্ত সময় (70855 ০৫ 071895 ৪) 
- বাৎসরিক, যাম্মাসিক, টত্রমাসিক হারে দিবার নিয়ম থাকিলে, 
কিস্তির টাকা দিবার নির্দিষ্ট সময় হইতে সাধারণত এক মাস অতিরিক্ত 
সময় পাওয়া যায়। মাসিক কিস্তিক্ষেত্রে ১৫ দিন অতিরিক সময 
পাওয়া যায়। 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৫১ 


বিভিন্ন প্রকার বীমাপত্র (2০116163 ) 


পূর্বোক্ত আজীবন বীমা ও মেয়াদী বীমা আবার বয়স এবং কিস্তির 
টাকা দিবার বিভিন্ন সত নানাবিধ আছে । যথা,_ 
১। সাধারণ আজীবন বীমা ( ()7.011787 11015 17109 
49801787709 ) 7 
২। নির্দিষ্ট কাল যাবৎ দেয় কিস্তি সর্তে' আজীবন বীমা (লাভ 
সহিত ) ( ডা1,016 11170 49801157106 105 1701669. 1১877001068 
10) 1৯:09 ) 7 
নির্দিষ্ট কাল পর্স্ত দেয় কিস্তি সর্ভে আজীবন বীমা (লাভ 


৫ 


রহিত); 
৪। মেয়াদী বীমা (নির্দিষ্ট বংসর সর্ত) (লাভ সহিত )) 
৫। এ (বিনা লাভে )। 
৬। মেয়াদী বীমা (নির্দিষ্ট বয়স সর্ত-_-লাভ সহিত ) ; 
৭। এ (বিনা লাভে); 


৮| দ্বিগুণ মেয়াদী বীমা (10001016 771700%71016100-- নির্দিষ্ট 
বৎসর সত-_বিনা লাভে )3 

৯। শিক্ষা বা বিবাহ দিবার সংস্থানজন্য শিশুদিগের জন্য বীমা 
্‌ ( বিনা লাভে ); 

১০। বিবাহের সংস্থানের জন্য শিশুদিগের মেয়াদী বীমা (বিনা 
লাভে ); 

১১। যুক্তজীবনের মেয়াদী বীমা (লাভ সহিত ); 

এতছ্যতীত আরও অনেক প্রকার বীমা আছে $ ষথা,-_- 
১। গ্যাবাটিযুক্ত লভ্যাংশে মেয়াদী বীমা ; 


১৫২ প্রবেশিকা গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


২। পরিবারের আয়-সংস্থাপনকল্লে বীমা; 

৩। অতান্প ব্যয়ে অধিকতম লাভদায়ক বীমা; 

৪। আকম্মিক বিপদ্‌-বীমা। 

চাদার হার ( ১৫7010]0 )-_বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন প্রকার 
চাদার হার নির্দিষ্ট আছে । টাদার হার বীমাকারীর বয়সের অন্পাতে 
নিদিষ্ট হয়। সাধারণত ২০ ব্থ্সব বয়স হইতে ৬০ বৎসর বয়স 
পর্বস্ত বীমা করা হইয়! থাকে । 

কোন ব্যক্তি নিজের নামে বা তাহার স্ত্রীর নামে বীমা করিলে 
'তিনি ১৯২২ থু: অবেস গভর্নমেণ্টের ইন্কম্ট্যাক্স আইন অনুসারে, 
প্রদত্ত চাদার পরিমাণ নিজ আয়ের এক-ষ্ঠাংশের অনধিক হইলে তাহার 
উপর আয়কর মাপ পাইবেন । 

নানাবিধ “বীমা” (১0119199 ) প্রচলিত আছে? তম্মধ্ো আজীবন 
(1,019 15119 7১01165) ও মেয়াদী বীমা (7300৮770871 [১011০5 ) 
প্রধান। এই নিমিত্ত এই দুইপ্রকার বীমা! সন্গদ্ধে কিছু বলিতেছি। 


আজীবন বীষ। 
(07:0111%7'5 17010 1116 49811781706 ) 


( লীভ-সমেত বা! লাভ-রহিত ) 


এই পদ্ধতির বীমায় বীমাকারীকে ৭০ বৎসর বয়স পর্যস্ত বা 
তৎপূর্বে যদি মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে মৃত্যু পধস্ত প্রিমিয়াম দিতে 
হইবে। এই পদ্ধতির বীমায় অল্পতম হারে প্রিমিয়াম্‌ দিয়া বেশী টাকা! 
পাওয়া যায়। ধাহাদের আয় অতি অল্প, অথচ তাহাদের স্ত্ী-পুত্রাদির 
জন্য অল্প টাকায় যথেষ্ট সঞ্চয় করিয়া রাখিয়া যাইতে চান, তাহাদের এই 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৫৩ 


বীমা গ্রহণ করা কতবব্য। এই পদ্ধতির পলিসি লাভ-সমেত বা লাভ- 
ছাড়া গ্রহণ করা যাইতে পারে । লাভ-সমেত পলিসি গ্রহণ করিলে, 
সামান্য উচ্চ হারে, অস্তত প্রথম তিন বৎসরের জন্য প্রিমিয়াম দিতে 
হইবে। 

তিন বৎসর প্রিমিয়াম দিয়! যদি বীমীকারী আর পলিসি চালাইতে 
না পারেন, তাহা হইলে তিনি নিমের যে কোন প্রকার সুবিধা লাভ 
করিতে পারেন £-- 

(ক) বীমা-্বত্বত্যাগের নগদ মূল্য লইতে পাবেন; 

(খ) লাভ-রহিত আংশিক বীমা গ্রহণ করিতে পারেন 

(গ) বীমা যাহাতে বাতিল না হয় সেইজন্য কোম্পানি যে সমস্ত 
স্থবিধ। দেন, সেই স্থবিধা পাইতে পারেন। 


নিদ্দিষ্টকাল দেয় টাদ্ায় আজীবন বীমা 


(17919 1116 44890:81)09 11101650. 1১950061019 ) 
( লাভ-সমেত বা লাভ-রহিত ) 


এই পদ্ধতি অনুসারে বীমা করিলে বীমার টাকা বীমাকারীর 
যৃত্যুর পর তাহার ওয়ারিশ পাইয়া থাকেন। চীদা বা "প্রিমিয়াম্‌, 
কেবলমাত্র নিধণরিতকাল পর্স্ত দিতে হয়। কিন্তু, যদি এই নির্দি্ট- 
কাল মধ্যে বীমাকারীর মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে আর প্রিমিয়াম দিতে 
হয় না। 

যাহার মনে করেন যে ভবিষ্যতে কিছুকাল পর তাহাদের 
আয় কমিয়া যাইবে, অতএব প্রথম প্রথমই বেশী আয় থাকা- 
কালীন বীমা করা কতব্য, তাহাদের এই পদ্ধতি অহুসারের বীমা 
করা সুবিধাজনক । 


১৫৪ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


এই পদ্ধতি অনুযায়ী লাভ-সহিত পলিসি গ্রহণ করিলে। প্রিমিয়াম্‌ 
দেওয়। শেষ হইয়া গেলেই লাভের উপর দাবী রহিত হয় না। যে 
প্যস্ত না পলিসি দাবী বলিয়া গণ্য হয়, সেই পর্যস্ত বীমাকারী লাভের 
অংশের অধিকারী থাকিবেন । , 

তিন বৎসর প্রিমিয়াম দেওয়ার পর বীমাকারী আর প্রিমিয়াম 
চালাইতে ন। পারিলে, তিনি নিম্নলিখিত যে কোন স্থবিধা গ্রহণ 
করিতে পারেন £-- 

(ক) বীমা ম্বত্ত্যাগের নগদ মূল্য নিতে পারেন 

(খ) লাভ-রহিত আংশিক বীমা গ্রহণ করিতে পারেন; 

(গ) বীমা যাহাতে বাতিল না হয়, সেইজন্য কোম্পানি যে 
সকল সুবিধা দেন, সেই সকল সুবিধা পাইতে পারেন । 

(এই সম্বন্ধে কোম্পানি-বিশেষের নিয়মাবলী উক্ত বীমা! 
কোম্পানিকে লিখিলেই জানিতে পারা যায় )। 


মেয়াদী বীম। 
( 10000 7)610 - 4১850721006 ) 


এই পদ্ধতি অনুযায়ী বীমা, করিলে, নিধধ্ারিত, বৎসর বা নিধর্ণরিত 
বয়স পর্যস্ত প্রিমিয়াম্‌ চালাইলে বা তৎপূর্বে ষদি মৃত্যু ঘটে তাহা হইলে, 
বীমার টাক! প্রাপ্য হয়। 

এই বীমার. দিকে লোকের আগ্রহ বেশী। কারণ এই পদ্ধতি 
অনুযায়ী বীমা করিলে, বীমাকারী ছুই রকম নুবিধাই পাইয়া থাকেন 


পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৫৫ 


(২) নিদিষ্ট বংসর বা বয়স উত্তীর্ণ হইলে, তাহার নিজের, ৃদ্ধ.বয়সে 
জীবিকানির্বাহের সংস্থান হয়) যদি বীমাকারীর নিধর্ণরিত বৎসর বা 
বয়স পূর্ণ হইবার পূর্বেই মৃত্যু ঘটে, তাহা হইলে বীমার টাকা তাহার 
ওয়ারিশ পাইবেন এবং তিনি যদি পৃর্যেক্ত নিধ্ণরিত বয়স বা বৎসরে 
পরও বাঁচিয়া থাকেন, তাহা হইলে তিনিই সেই টাকা পাইবেন; এবং 
এমন সময়ে এই টাক] পাইবেন ষে সময়ে এরূপ একটি এককালীন 
টাকার তাহার খুবই দরকার । 

যদি তিন বৎসর প্রিমিয়াম্‌ দেওয়ার পর, বীমাকারী আর প্রিমিয়াম্‌, 
চালাইতে না পারেন, তাহা! হইলে তিনি নিয়ের যে কোন একটি স্থৃবিধা 
গ্রহণ করিতে পারেন :-_ 

(ক) বীমা শ্বত্বত্যাগের নগদ মূল্য পাইতে পারেন ; 

(খ) লাভ-রহিত আংশিক বীমা গ্রহণ করিতে পারেন । 

(গ) পলিসি জীবিত রাখিবার জন্য কোম্পানি যে সুবিধা দিয়াছেন, 
সেই সুবিধা গ্রহণ করিতে পারেন । 


বিবাহ বা শিক্ষা সংস্থানের হেতু শিশুদিগের জঙ্য বীম! 
(লাভ-রহিত ) 


এই পদ্ধতিতে বীমার টাকা মেয়াদ অস্তে দেওয়া হয় এবং পিতামাতা 
বা অভিভাবকের মৃত্যুর পর আর বীমার কিন্তি দিতে হয় না। 

এই শ্রেণীর বীমা দ্বারা পিতামাতা বা অভিভাবকগণ মনোনীত 
পাত্র বা পাত্রীর বা সম্তানগণের শিক্ষার ব্যয়সংস্থান বা বিবাহের 
খরচ বাবদ সঞ্চয় রাখিবার ব্যবস্থা করিতে পারেন। অল্ল প্রিমিয়াম 
দিয় তাহারা মা্ছষের পক্ষে যতটুকু সম্ভব, ততটুকুই সন্তানের 


১৫৬ প্রবেশিক। গাহৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ভবিষ্যতের সংস্থান করিয়া যাইতে পারেন। এই শ্রেণীর বীমা করিলে 
নিয়লিখিত সুবিধা দেওয়! হয় ১ 

যাহার নামে বীম! করা হইয়াছে তাহার যদি মেয়াদপূর্ণ হইবার পূর্বে 
মৃত্যু হয় তাহা হইলে_ ৃ 

(ক) প্রিমিয়াম্‌ স্বরূপ যতটাক] দেওয়া হইয়াছে, তাহা সমন্ত ফেরৎ 
দেওয়া হয়; বা 

(খ) অন্য কোন শিশুকে মৃত শিশ্তর স্থলে মনোনীত করা যাইতে 
পারে। এই স্থলে পূর্বের পলিমিই বলবৎ থাকিবে এবং রীতিমত 
বাকি প্রিমিয়াম দিগগা, মেয়াদ অন্তে সমস্ত টাকা গ্রহণ করিতে 
পারাযায়। 

যদি বীমাকারীর (পিতামাতা বা অভিভাবক ) মেয়াদপূর্ণ হইবার 
পূর্বে মৃত্যু হয়, তাহা হইলে ভবিষ্যতে আর প্রিমিয়াম দিতে হয় না 
এবং বীমার টাকা মেয়াদ অস্তে মনোনীত শিশুকে দেওয়া হয় । 

_ উপরের স্থবিধাগুলি ছাড়াও এই পদ্ধতির বীমা করিলে, সাধারণ 
শ্রেণীর বীমায় যত রকম স্থবিধা আছে, সেই সমস্ত স্থবিধাও পাওয়া 
যায়; ষথা ৫₹-- 

যদি তিন বৎসর প্রিমিয়াম দিয়া বীমাকারী আর পলিনি চালাইতে 
না| পারেন, তাহা হইলে তিনি নিয়লিখিত যে কোন স্থবিধা পাইতে 

পারেন ১ 

(ক) বীমান্বত্বত্যাগের নগদ মুল্য পাইতে পারেন; 
(খ) লাভ-রহিত পূর্যোল্লিখিত নিয়মানুসারে আংশিক বীম। গ্রহণ 

করিতে পারেন ও 

(গ) বীমা ্বত্ব-সংরক্ষণজনিত যে সমস্ত স্থবিধা কোম্পানি বীমা- 
কারীদের প্রদদান করেন, সেই সমস্ত স্ববিধা পাইতে পারেন । 


4, 
০১ সি পপ ১০ ৩৯১০০৭-৮ 


১ পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৫৭ 
€ঘ) সংসারে আনুষঙ্গিক আয়ের ব্যবস্থা-_গৃহশিলাদি 


(1098101116198 01 30101019106100100 1791)11 


11)00177)9-_-1707709 11700907198 ) 


বতমানে আমাদের দরিদ্র বাংলা দেশে এই অর্থ-সমস্যার দিনে 
একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত গৃহস্থের পক্ষে একমাত্র স্বীয় নিয়মিত 
অর্থাগমের ব্যবস্থার উপর নির্ভর করিয়া! সংসারের যাবতীয় কতব্য 
স্বাচ্ছন্দোব সহিত সম্পাদন কর] বড়ই দুরূহ ব্যাপার হইয়া ধাড়াইয়াছে। 
তিনি সাংসারিক নিয়মিত ব্যয়াদি করিয়া পুত্রকন্াগণের শিক্ষা- 
দান, আকস্মিক বিপদাদি, চিকিৎসা ও অবশ্ঠকরণীয় লৌকিক 
ক্রিয়াদির বিবিধ ব্যয় কোনরূপ সংকুলন করিয়া পরিণত বয়সে 
একরূপ কপর্দকশূন্ত অবস্থায় উপনীত হন। ভবিষ্যতে দুদিনের 
জন্ অর্থ-সঞ্চয়ের তাহার কোন ব্যবস্থাই থাকে না। স্বৃতরাৎ, তাহাকে 
রুগ্ন অবস্থায় কিংবা বাধক্যে অর্থাভাব হেতু অশেষ ছুর্গতি ভোগ 
করিতে হয়। ছেলেমেয়েরা সাধারণত ২০।২৫ বৎসর বয়স পর্যস্ত 
বিষ্যালয়ের শিক্ষালাভ কার্ষে ব্যাপূত থাকে । শিক্ষালাভাস্তে তাহারা 
যখন কোন অর্থকরী ব্যবসা অবলম্বন করিয়া কর্মজীবনে প্রবেশ করিতে 
চেষ্টা করে, তখন তাহাদের প্রায় অনেকেই বিফলম্নোরথ হইয়া 
রেকার জীবনযাপন করিতে বাধ্য হয়। বতর্মানে এই “বেকার-সমস্া, 
বড় জটিল সমস্তারূপে দেখা! দিয়াছে । ইহার প্রতিকারকল্লে দেশের 
মনীষিগণ বহু গবেষণাও করিতেছেন । সুতরাং, এই অর্থ-সমন্যার 
দিনে বদি আমরা সংসারে নিয়মিত আয়ের গ্রহিত অন্যবিধ আন্গষজিক 
আয়ের উপায় উদ্ভাবন করিতে না পারি, তবে আমাদের দুর্গতির 
পরিসীমা থাকিবে না। সংসারে গৃহিণীগণ এবং ছেলেমেয়েরা নিজ 


১৫৮ প্রবেশিক! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


নিজ নিযনমিত কাধাদি সমাপূন করিয়াও অন্কে অবসর যান করেন। 
তাহারা তাহাদের সেই অবসর সময় বিবিধ অর্থকরী কার্ধে 
নিয়োজিত করিয়া বিবিধ গৃহ্‌- -শিল্প দ্বারা আন্থযঙ্গিক আয়ের ব্যাবস্থা 
করিতে পারেন। বতমানে, বিদ্যালয়েও বিবিধ শিল্পকাধ শিক্ষা 
দেওয়া হইতেছে । জাপান, রাশিয়া, আমেরিকা প্রতৃতি দেশে 
ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে শিক্ষণীম্ম বিষয় কেবলমাজ্ম বিদ্যালয়েই 
শিক্ষা করিতে হয়; এজন্য তাহারা গৃহে অন্যবিধ কার্ষের জন্য যথেষ্ট 
সময় পাইয়া থাকে । কিন্তু আমাদের দেশে ছেলেমেয়েরা শিক্ষালয় 
ব্যতীত গৃহেও গৃহ-শিক্ষকের ( ৮7189 11900: ) নিকট বিদ্যাভ্যাস 
করিয়া থাকে; সৃতরাৎ, অন্যবিধ কাধের সময় জুটে না। এ প্রথার 
পরিবর্তন প্রয়োজন। পক্ষান্তরে বলা যায়, কি ধনী কি নিধন 
সকলেরই জীবিকানির্বাহের জন্য হউক বা আনন্দ ও আত্ম- 
প্রসাদ লাভের জন্যই হউক, সর্বপ্রযত্বে শিল্প-শিক্ষা ও তাহার 
উন্নতির বিষয়ে অনুশীলন করা একাস্ত কতব্য। সর্ববিধ শিল্পমধ্যে 
গৃহশিল্পের উন্নতির প্রতি মনোষোগী হইলে গৃহস্থমাত্রেরই স্থখ- 
স্বাচ্ছন্দোর সহিত সংসারধাত্রা-নির্বাহ করা সম্ভবপর হুইতে পারে 
বিশেষত, মেয়ের! গৃহস্থালীর যাবতীয় নিয়মিত কার্ধ সমাপন করিয়াও 
বিবিধ গৃহ-শিল্প দ্বারা সংসারের নিয়মিত অর্থাগমের সহিত আহুষঙ্গিক 
আয়ের ব্যবস্থা করিতে পারেন। 

সংসারে আন্ুষজিক আয়ের পন্ছ। হিসাবে গৃহ-শিল্পাদ্িলি_ 
১। , সুচী-শিল্প--সিঙ্গার', “খ্যাডলার» 'মাগুল্ম্‌” 'ফিনিক্স্, প্রভৃতি 
সেলাই-এর কল স গৃহে রাখিয়া জামা, ফ্রক, শেমিজ, ব্লাউস প্রভৃতি 
প্রয়োজনীয় পরিচ্ছদাদি প্রস্তত করা খাইতে পারে। ুচী-শিল্পে 
ভালরূপে অভিজ্ঞতা লাভ করিলে প্রস্তত দ্রব্যাদি বিক্রয় করিয়া 


্ পারিবারিক হিসাব-সংরক্ষণ ১৫৯ 


অর্থাগমের ব্যবস্থা করা যায়। শান্তিপুর, ঢাকা, কলিকাতা 
প্রভৃতি স্থানে মহিলাগণ নিয়মিত স্থচী-শিল্প দ্বারা-_যথা,__বস্ত্াদিতে 
ফুল তুলিয়া, রেশমের নক্সা পাড় বুনিম্বা, রুমাল, পশমের গেজি, 
মোজা, কম্টার প্রভৃতি প্রস্তুত করিয়ুঁ-অর্থাগমের ব্যবস্থা করিয়া 
থাকেন। গৃহে ব্যবহৃত পুরাতন বস্ত্রাদির . বারা কাথা, আসন 
প্রভৃতি বিবিধ মুল্যবান্‌ দ্রব্য £তয়ার করিয়া থাকেন। 

২। পল্লীগ্রামে গৃহে গো-পালন কর হুইলে গোময় হইতে 
ঘুঁঠে প্রভৃতি জালানির ব্যবস্থা করা যায়। বাস-গৃহ হইতে দুরে 
গর্ত খুঁড়িয়া এ গোময় মাটি-চাপা। দিয়া রাখিলে উহা! পরে জমির 
সাররূপে ব্যবহৃত হইতে পারে । 

৩। পাট, শণ প্রভৃতি হইতে শিকা, আসন, হাত-পাখা 
প্রভৃতি প্রস্তুত করা যাইতে পারে । 

৪। মাটির স্বারা পুতুল, খেলনা প্রভৃতি প্রস্তত করা শিক্ষা করা যায়। 

৫€। মুগ, কলাই প্রভৃতি ভা”ল হইতে বড়ি, পাপড় প্রভৃতি প্রস্তুত 
করিতে পারেন। 

৬। নারিকেল, গুড়, তিল, চিনি, চাউলের গড়া ইত্যাদি 
হইতে বহুবিধ উপাদেয় মিষ্টান্ন প্রস্তত করিতে পার! যায়। 

চীনদেশে গৃহে রন্ধনকাধের পরে উন্ধনের আগুনের ধোয়ার 
সাহায্যে মেষ, ছাগ প্রভৃতি জন্তর চর্ম পাকা করা হয় (1%070108 )। 

গৃহে বাশ, নারিকেল পাতা, খেজুর পাতা প্রভৃতি হইতে মাছুর, 
ডালা, কুলা, ঝুঁড়ি প্রভৃতি বিবিধ দ্রব্য প্রস্তুত করা যায়। 

বাকুড়া, বিষুণপুর, মুর্শদাবাদ প্রভৃতি জেলায় এখনও মেয়েরা 
অবসর-সময়ে চরকা, টেকো প্রৃতিতে রেশম, গরদ. তসর গ্রভতির 
কতা কাটিয়া বিক্রয় করিয়া থাকেন। 


১৬০ প্রবেশিক! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি | 


শ্ীহট্র, মণিপুর ও আসামের বহু স্থানে মেয়েরা গৃহে বয়নকার্ধ করিয়া 
থাকেন। 

গৃহে বিবিধ ফলের যোরব্বা, আচার প্রভৃতি প্রস্তুত করিলেও 
ৃহস্থালীর উপকার হইতে পারে । কয়লার গুঁড়া, গোময় প্রভৃতির 
সাহায্যে গুল, টিকা প্রভৃতি প্রস্তত করা যায়। 

অবসর সময়ে কাগজের ঠোঁডা, প্যাকিং কাগজের বাঝস, শিশি- 
বোতলের লেবেল লাগান প্রভৃতি কাধ করিয়া অর্থাগমের ব্যবস্থা করা যায়। 
1/ মেয়েরা সঙ্গীতবিগ্যা শিক্ষা কৰ্রিলে অবসরকালে চিত্তবিনোদনজন্য 
ব্যয়সাধ্য রেডিও, থিয়েটার, বায়স্কোপ, গ্রামোফোন প্রভৃতির অভাব 
ী 'অনেকটা পুরণ হইতে পারে। 


সহঞগক্ম স্পল্লিত্্ছেল্ক 


ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যতত্ব ব৷ স্বাস্থ্যবিধি 


্বাস্থাতত্ব সংক্রান্ত যে উপায়সমূহ অবলম্বন করিলে ব্যক্তিগত 
জীবনে নীবোগ হইয়া দীর্ঘজীবন লাভ করিতে পারা যায় ও শরীর 
স্বস্থ ও কর্মক্ষম থাকে, তাহাকে বাক্কিগত স্বাস্থ্যতত্ব বলে। 

(১) নরদেহের গঠন ও কার্ধ বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান; (২) শ্বাস- 
প্রশ্বাস ক্রিয়া) (৩) বিশ্রাম ও ব্যায়াম; (৪) ল্লান, দাত, চুল ও 
চর্মের যত্বু; (৫) সাবানের ব্যবহার ও তাহার কার্ধ; (৬) শারীরিক 
পরিচ্ছন্নতা; (৭) স্থতী, প্র, রেশমী ও পশযী-বস্্াদি ব্যবহার 
প্রভাতি বিষয়গুলি ব্যক্তিগত স্থাস্থ্যরক্ষায় কি স্থান অধিকার করে, এই 
বিষয়গুলি এই পৰিচ্ছেদে আলোচনা কৰিব। 


নরদেহের গঠন ১৬১ 


(ক) অন্তত গলিম্ম ও কাশ ন্িম্ত্স্স 
ওরা স্সিক্ক ভভান্দ 


নরদেহের সাধারণ ধর্ম 


মানবদেহ একটি প্রকাণ্ড কারখানা-বিশেষ। দেহের অভান্তরে বন 
বিচিত্র যন্ত্রের সমাবেশ রহিয়াছে । দেহের আকৃতি ও গঠন যেমন 
বিচিত্র, দেহ-মধ্যস্থ যন্ত্র এবং তাহাদের কার্ধপ্রণালীও তেমনি 
বৈচিত্রাপূর্ণ | 


মাটির প্রতিমা গড়িতে যেমন বাশ, খড়, দড়ি দিয়! প্রথমে একটা 
কাঠামো করিয়া লইতে হয়, নরদেহ-গঠনেও তেমনি একটা কাঠামোর 
প্রয়োজন হয়। প্রতিমা! গড়িতে যেমন কাঠামোর উপর মাটি, তার উপর 
হ্যাকৃড়ার পর্দ! ও তার উপর রং দেওয়া হয়--নরদেহ-গঠনেও তেমনি 
কঙ্কালের কাঠামোর উপর মাংস, তার উপর পর্দা, তার উপর চামড়া 
থাকে ;- ইহাই হইল মোটামুটি নরদেহের গঠন । 


নরদেহের কাঠামো কতকগুলি অস্থির দ্বারা গঠিত । নরদেহের 
সেই অস্থি-নিমিত কাঠামোর নাম-_“স্কেলিটনূ? (91019107 ), অর্থাৎ, 
নর-কস্কাল। নর-কঙ্কাল বা কাঠামোর কার্ধ,-_মাংসগুলিকে যথাস্থানে 
আট্কাইয়া রাখা, নরদেহকে একটি নির্দিষ্ট আরুতি প্রদান করা এবং 
শরীরাভ্যন্তরস্থ যন্ত্রগুলিকে বাহিরের ঘাত-প্রতিঘাত হইতে রক্ষা করা । 
নরদেহের পেশীসমূহ এই কাঠামোর সহিত সংলগ্ন থাকিয়া অঙগ-প্রত্যঙগাদি 
সঞ্চালন করিয়া থাকে । 

১১ 


১৬২ প্রবেশিকা গারন্তা-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


নরদেকের 'শবশ্ভিম্ন অংশ 

নরদেহ বিশ্লেষণ করিলে আমরা তন্মধ্যে নিয়লিখিত সামগ্রীগুলি 
দেখিতে পাই ; যথা__ 

(১) নর-কঙ্কাল বা অস্থিময় কাঠামো (91616607 ) 

(২) মাংসপেশীসমূহ বা শরীরের মাংসল অংশ (11050105 ) 

(৩) আাযুমগুল ( ০৮০০৭ 5550০] ) র 

(৪) শরীরাভ্যন্তরস্থ রসনিঃসারক যন্ব (390701015 ৯5819]) ) 
এবং মল-বহিষ্ষারক যস্ব (17350701015 8৮৭1৮) ) 

(৫) শ্বাস-যন্থ (1১০91175101 028708 ) 

(৬) পরিপাক-যন্ত্র (1)100811ঘ6 ন581০যা ) 

(৭) রুক্তসঞ্চালন-যন্ (01760151015 35519]াঃ ) 

(৮) ইক্দ্রিয়াবলি (072717৭ 0$ 90১5০৪ )--স্পশেক্জিয় (9100), 
শ্রবণেক্দ্রিয় (12075 ), দর্শনেজ্িয় (175৪ ), ভ্রাণেক্দ্রিয় (2০৪০ ) এবং 
আস্বাদনেত্দ্িয় (0788০ ) ইহার অস্ততূক্তি। 


নরদেহের বিভাগ 


নরদেহকে প্রধানত তিন ভাগে বিভক্ত করা যায় ; যথা-_ 

(১) মস্তক (1708 )।-_মুখমণ্ডল এবং তদস্তর্গত চক্ষু, কর্ণ, 
নাসিকা, জিহবা, দত্ত প্রভৃতি এবং ত্বকের কতকাংশ এই অঙ্গের 
অন্তভূক্ত। বাইশখানি হাড়ে করোটি বা মাথার খুলি (১%11) 
গঠিত। তন্মধ্যে মুখমণ্ডলের হাড় ১৪ খানি। করোটি বা মাথার খুলি 
একটি গোলাকৃতি বাঝ্স-বিশেষ। ইহার মধ্যে মন্তিষ্ক বা “মাথার ঘিলুঃ 
থাকে । উহার মূলে স্গায়ু-যগুলের প্রধান অংশ সংযোজিত । মেরুদণ্ডের 
অগ্রভাগ পরধস্ত উপরের অংশকে মস্তক বলে। 


নরদেহের গঠন ১৬৩ 


(২) শ্বড় (গ90])1--মেরুদণ্ডের অগ্রবিন্দু হইতে নিমদিকে 
নিতম্ব, পর্যস্ত সমস্ত অংশকে ধড় বলে। এইটিই নরদেহের প্রধান অংশ। 
এই অংশে মেরুদণ্ড (31)11)8 বা 91)108] 0107), পৃঙ্গাস্থি (1)8৫15)0200), 
ছুই পার্থখের পাজরা (71১), বুকের* হাড় (1)7০৪১৮1১০2০ ) এবং 
নিতদ্বের হাড় (1)01868 0£ (119 1)1])5) প্রভৃতি সন্নিবিষ্ট। শ্বাসনালী, 
গলনালী, ফুস্ফুস্‌, হ্ৃৎপিগু, প্লীহা, যর, পাকস্থলী, মৃত্রনালী প্রভৃতি এই 
অংশের মধ্যে পড়ে । 

(৩) অজ-প্রতাজাদি (17100)5 )1-_ছুই ভাত এবং ছুই পা এই 
অংশের অন্তর্গত। হস্তের পাচটি অংশ-_প্রগণ্ড, প্রকো্ঠ, মণিবন্ধ, 
করতল ও অস্ুলি। হন্তের বিভাগ ও পায়ের বিভাগ একই প্রকার । 
অস্থির সংখ্যাও উভয়ত্র একই অর্থাৎ, হাতেও যে কয়খানি, পায়েও সেই 
কয়খানি অস্থি আছে। বস্তি হইতে জান্ পর্যস্ত অংশের নাম উর, জান্থ 
হইতে গোড়ালি পর্যন্ত অংশ জঙ্ঘা, তার পর যথাক্রমে গোড়ালি, পায়ের 
পাতা ও পায়ের আঙ্ল। 


৫) নরকন্কাল বা অক্িময় কাঠামে! 10951515692) 


ছুই শতাধিক (২০৬ খানি) অস্থিতে নরবঙ্কাল নিশ্িত। ইহার 
মধ্যে (১) দীর্ঘাস্থি (1,976 13093 ) ৯০ খানি (চিত্রের ৯২ ২৯, ২৪)) 
এই অস্থির দ্বারাই প্রধানত কাঠামো! নিমিত হয়। (২) ক্ষৃত্রাস্থ্ি (3107 
730269 ) ৩০ খানি (চিত্রের ১৮, ২৮) ইহার! পরস্পরকে আবদ্ধ 
রাখে । (৩) ফলকাস্থি ( 5186 70068 ) ৩৮ খানি (চিত্রের ১৮, ১৮); 
মাথার খুলি, বুক ও কোমরের গর্ত বা খাচা (7309 085)15 ) 
ইহার হবার! প্রস্তত হয়। (৪) বিষমাস্থি (177669187 01069 ) 
৪৮ খানি (চিত্রের ১৭, ২৫, ২৬) হম্ত-পদাদ্ির অস্থিই প্রধানত 


প্রবেশিকা গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


১৬৪ 





কোন্‌ অস্থির সহিত ফোন্‌ পেশী সংযোর্জিত, তাহা দেখান হইয়াছে 
নর-কক্কাল-- মানবদেছে অস্থি-সমীবেশ 


নরদেহের গঠন ১৬৫ 


এই নামে,অভিহিত হইয়া থাকে । গলনালীর মধ্যস্থিত একখানি হাড় 
(8০99 1390৬)'এবং কর্ণপটহের মধ্যবর্তী ছয়খানি হাড় ( 40911075 
08310103 ) বিষমাস্থির অন্তর্গত বল! যাইতে পারে। 

নরদেহের কোন্‌ অংশে কতকগুলি,অস্থি আছে, মোটামুটি তাহার 
হিসাব এই £__ 

১। করোটি বা মাথার খুলিতে (১1011 )-২২ খানি । মুখমণ্ডল 
ইহার অন্তর্গত । 

২। দুই পার্খের দুই কর্ণে--৬ খানি। ইহাদের অধিকাংশই * 
কুদ্রাস্থি। 

৩। কগনালীতে--১ খানি (11990 13016 )| 

৪1 মেরুদণ্ডে ( ৮9৮11)7%] 00101001) )--২৬ খানি। 

৫ | দুই পীজরার পঞ্জরাস্থি_-২৪ খানি। ইহাদের বেশীর ভাগ 
চ্যাপ্টা অস্থি (17186 13909 )। 

৬। বক্ষঃ-অস্থি--১ খানি (1370881 1301)0 )। 

৭। দুই স্বদ্ষে_স্বন্ধাস্থি ৪ খানি (31১95196 017016)। 

৮| দুই হাতে দীর্ঘাস্থি ও ক্ষুদ্রাস্থি মিলাইয়। ৬০ খানি। 

৯। আোণিতে__২ খানি। 

১০ । দুই পায়ে দীর্ঘাস্থি ও ক্ষুপ্রাস্থি সমেত--৬* খানি। 


এই সকল অস্থিকে যথাযথভাবে সাজাইলেই একটি পূর্ণ নর-কস্কাল 
(991০19£, ) গঠিত হয়। হাড়ের খাচা বা কাঠামো যদি না থাকিত, 
তবে আমাদের দেহের আকৃতি ঠিক থাকিত না, কিংবা আমরা সোজা 
হইয়া ধ্রাড়াইতে পারিতাম না। 


১৬৬ প্রবেশিক1 গার্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিধি 


6২) পেশী-তন্ত (15500181 9510 ) 


শরীরের চামড়া ছাড়াইয়া ফেলিলে, চবির নীচে লাল রডের ও 
চ্যাপ্টা ধরণের, লঙ্কা আ্াশযুক্ত যে মাংস-রাশি বাহির হয়, তাহারই নাম 





নরদেছের পশ্চাস্তাগন্থ নরদেহের সম্মুখভা গস্থ 
পেশীসমূহ পেশীসমূহ 


মাংসপেশী। নরদেহের মাংসপেশীর পরিমাণ সমস্ত শরীরের ওজনের 
তিন ভাগেরও অধিক । 


নরদেহের গঠন ১৬৭ 


জীবের *এক স্থান হইতে অন্ত স্থানে ইচ্ছাক্রমে গমনাগমন, কিংব! 
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সঞ্চালন ও অস্তরস্থ যন্তরাদির কার্ধকলাপ সম্পাদন প্রভৃতি 
ক্রিয়া পেশী-মৃহের সক্ষোচন ও সম্প্রসারণের দ্বার! সম্পন্ন হইয়া থাকে । 
কাধকারিতা হিসাবে পেশীসমূহ তিন ভাগ্নে বিভক্ত হইতে পারে) 

(১) এচ্ছিক ( ৮০101)18))5 ) পেশীন্ত্র, 

(২) অনৈচ্ছিক (10501101515) পেশীস্জ্র, 

(৩) হৃংপিণ্ডের পেশস্থত্র | 

কতকগুলি পেশীস্ুত্র একজ্র মিলিয়া একটি পেশী গঠিত হয়। 
প্রত্যেকটি পেশী তিন ভাগে বিভক্ত-স্কল-মধ্যভাগ ও স্ুম্ম উভয় 
পরাস্ত । এক প্রান্তে ইহার উৎপত্তি (011417)) এবং অপর প্রান্তে 
ইহার পরিনতি (10561771101) )। 

উত্পত্তি-স্থান হইতেই পেশীর সংকোচন আরম্ভ হয় এবং সেখানে 
একটি যোজনীর (69707) দ্বার৷ অস্থিতে সংলগ্ন থাকে । দ্বিতীয় 
প্রান্তটিও অপর একটি যোদ্নীর দ্বারা অপর অস্থিতে সংযুক্ত হয়। 
শরীরের প্রতোক পেশীই উত্তমরূপে শোণিত-শিরা ও ন্থায়ু দ্বারা 
পরিবেষ্টিত রহিয়াছে । 

কয়েকটি গুণের জন্য পেশীর স্থিতিস্থাপকতা প্রকটিত হইয়া থাকে £-- 

(১) পেশাগুলি দীর্ঘ বা সম্প্রসারিত হইতে পারে, (২) পেশীগুলি 
হুম্ব, খর্ব বা আকুঞ্চিত হইতে পারে, (৩) পেশীগুলি নিশ্চল থাকিতে 
পারে; ।8) উত্তেজিত হইলে সংকুচিত হয় ও ফুলিয়! উঠে, (৫) মৃত্যুর 
পর শক্ত হইয়া যায়। 

পেশীর কাই সংকোচন । সংকোচনকালে পেশী (ক) যে 
অঙ্গে সংযুক্ত থাকে, সেই অঙ্গের সঞ্চালন করিতে পারে; (খ) 
স্ঞ্ালন-কালে উত্তাপ উৎপাদন করিয়া থাকে; এইজন্যই পরিশ্রমের 


১৬৮ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


পর আমাদের শরীর উত্তপ্ত অনুভব করিয়া থাকি; (গ) পেশী ধীরে 
ধীরে আকারে বাড়িতে থাকে ; (ঘ) সংকোচনের ফলে পেশীর অবয়বের 
বিকৃতিও ( 0108069 01 দাও, ) ঘটিয়া থাকে । 


€৩) স্াযু-মগুল €(৩:5%০38 ১55৮৩ ) 
বিভিন্ন বিভাগ ও তাহাদের কার্ধ 


নরদেহের দুই দিকে, দক্ষিণ ও বাম উভয় পার্খে আাষুমণ্ডল 
বিস্তৃত রহিয়াছে । উভয় দিকের স্সায়মণ্ডল সমান ভাগে ও সমান 
ভাবে বিন্যস্ত; অর্থাৎ, দক্ষিণ দিকে যতগুলি ন্সায়ু যে ভাবে সজ্জিত 
আছে, বাম দিকেও ঠিক ততগুলি স্নাধু ঠিক মেই ভাবে বিন্যন্ত 
রহিয়াছে । উভয় দিকের বিভিন্ন স্নায়ুর আরুতি ও গঠন একই 
প্রকারের । ন্বাফুতস্ত্রের দুইটি মূল অংশ আছে। একটি ম্বায়ুকোষ 
( ৩)৮০ 0611), অপরটি আহুতন্ত (০:৮০ (11)9 )। কোষগুলি 
জীবস্ত--সকল শক্তির মূল। তন্তগুলি কোষ হইতে মুক্ত শত্তির বাহক 
মাত্র। মন্তিষ্কে যতগুলি কোষ আছে, তাহার সকলগুলিই শরীরের 
সুক্মতম অংশের সহিত সংযুক্ত রহিয়াছে । 

আয়তনের ছুইটি বিভাগ-_ প্রথম, সায়ুদণ্ড বা আয়ু-কেন্্র (1০:5৪ 
0017176 বা 0%0£1107) ); এবং দ্বিতীয়, জাযুতস্ত (০76 10708) । 
এই দুইটি দ্বারা গঠিত আায়ুমণ্ডলকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যাইতে 
পারে; যথা, _মস্তিক্ষের ও মেরুমজ্জা সংযুক্ত স্নামুমালা (09709703117) 
951] ) এবং (২) সমবাধী আমুতন্ত্র (35701)91116116 35816]) )। 

এই প্সামৃতস্ত্বেরে মধ্যে . আবার ছুই শ্রেণীর নায় আছে। 
একই শ্রেণীর নাম-_-অম্গুভূতি উৎপাদক নায় (96778015 65৫3), 
আর এক শ্রেণীর নাম--গতিসঞ্চারক বা কার্ধকরী লগা (10107 


মরদেহের গঠন ১৬৯ 


[৫7৮৪8 ) অনুভূতি-উৎপাদক দ্সামু শরীরের সকল স্থান হইতে সকল 
রকমের অনুভূতি বহন করিয়া আনিয়া ম্বায়ুকেন্দ্রে ( ০:৮৪ 0601)079 ) 
পৌছাইয়া দেয়; আর গতিসঞ্চারক কার্ধবরী ন্মায়ু স্সাযুকেন্দ্র হইতে 
কার্ধ-প্রেরণা বহন করিয়া কার্ধস্থলে আনিয়া দেয়। 


আয়ু-সংস্থান 

মন্তিফ ও মেরুদপগ্ড-রজ্জবুর (191778] 01)০9 ) অসংখ্য স্নাম়ুকোষ 
€ ৫৮৮০ ০০119 ) রহিয়াছে । এ কোষগুলির কতকগুলি গতিসঞ্চারক 
আায়ুকোষ (1100907২৫7৪ 0811৯), আর কতকগুলি অন্ুভূতি-উতৎ্পাদক 
সাযুকোষ (3878801০৮৮০ 0০115) নামে অভিহিত হয়। শ্ায়ূস্থত্বগলি 
(১৮৪ 11)১70৪ ) এই সকল ক্রায়ুকোষ হইতে বাহির হইয়াছে । 
কতকগুলি আয়ুল্থত্র (067৮৪ 111)76৭ ) একসঙ্গে মিলিত হইয়া! এক 
একটি স্রায়ু (০৮৪ ) গঠন করিয়াছে । 

গতিপঞ্চারক স্সাযুস্ত্রগুলি উৎপত্তিমূল মেরুদণ্-রজ্তব (841)17141 
01১9) ) মধাস্থিত আাফুকোষ পধন্ত আসিয়া শেষ হইয়াছে । আবার, 
মেরুদণ্ড-রজ্ছু হইতে স্বতন্ব কতকগুলি আযুস্থত্র বহির্গত হইয়া পেশসমূহের 
( 8105০169 ) মধ্যে প্রবেশ করিয়াছে । এখানে পেশীর মধ্যে প্রবেশ 
করিবার পর প্রত্যেকটি স্সায়ুস্ত্র ছুই তিনটি শাখায় বিভক্ত হইয়াছে এবং 
এক একটি শাখা এক একটি পেশীশ্যত্রে প্রবেশ করিপ্া পরিসমাপ্ 
হইয়াছে । গতিকারক বা কার্ধকরী ন্গায়ুন্ূত্রগুলি পেশীর যেখানে যাইয়া 
শেষ হইয়াছে, সেই প্রান্ত ভাগের নাম-হ্সাযুপ্রাস্ত (00100 19 2168) | 

মেরুদগ্ু-রজ্জুর দিকে আবার এক স্সায়ু রহিয়াছে । মেরুদণ্ড- 
বজ্জুর (51)109] 01707 ) মধ্যে কতকগুলি মেরুদগু-রজ্দ্-সংপৃক্ত গণ্ড 
€13017)8] 018716108 ) বা গ্রন্থি আছে । অন্ভূতি-উৎ্পাদক ম্নায়ুকোষ- 


১৭০ প্রবেশিকা গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিধি 


সমূহ (:3677801:5 ২০০৮৪ 09119 ) এই গণগ্গুলির মধ্যেই অবস্থিত । 
অন্থভূতি-উৎপাদক এই সকল শ্রাম়ুকোষ হইতে কতকগুলি ন্রায়ুহ্থত্র বাহির 
হইয়! দুইটি শাখায় বিভক্ত হইয়াছে এবং সেখান হইতে একটি শাখা ত্বকে 
এবং অপরটি মেরুদণ্ড-বজ্ছবুর (3101701 01107৭ ) মধ্য দিয়া মস্তিষ্কে 
যাইয়া পৌছিয়াছে এবং সেখানে অনুভূতি-উৎপাদক ন্সায়ুকোষে যাইয়! 
পরৰিলমাপ্ত হইয়াছে। 


(8) অন্তনিঃসরণ ও বহিনিঃসরণ 
€১6০৪০০০7০ & £:১০7৩6০29 95815) ) 


জীবদেহে রক্ত হইতে নানাপ্রকার রস উৎপন্ন হয়। সেসকল বস 
জীবদেহের কোন না কোন কার্য সাধনের উদ্দেশ্যে উৎপাদিত হইয়া 
থাকে । দেহমধ্যস্থ বিভিন্ন গ্রন্থি হইতে শরীরের মধ্যে যে সকল 
রস নিঃহ্ৃত হয়, তাহাকে অস্তনিঃসরণ বা 'সিক্রিশন? (১০০7০61০ ) 
বলে। দেহের ক্ষতিজনক যে সকল সামগ্রী দেহ হইতে 
বহির্গত হইয়া যায়, তাহাকে বহিনি:সরণ বা এএক্স.ক্রিশন” 
(130:07017। ) বলে । 

যে প্রণালীতে শরীরে বিভিন্ন যন্ত্রের দ্বারা নৃতন রাসায়নিক 
জৈবগুণ (01%6%71০ )-সম্পন্ন দ্রব্যাদি শরীরের উপকারার্থ প্রস্বত 
হয়, সেই প্রণালীকে অন্তন্িঃসরণপ্রণালী (96০76607 বিউতেহেও ) 
বলা যাইতে পারে। আর, যে প্রণালীতে বিভিন্ন যন্ত্রের দ্বারা 
প্রস্তুত শরীরের পক্ষে বিষতুল্য অপকারী ও অসার দ্রব্যাদি দেহ 
হইতে নিক্কান্ত হয়, তাহাকে বহিনি:সরণ বা বহিঃআ্রাব প্রণালী 
(83:0:01019 97416] ) বলে। 


নরদেহের গঠন ১৭১ 


অস্তনিঃসর্ণ প্রণালী একটু জটিল; কারণ, পৃথক্‌ পুথক্‌ যন্ত্র দ্বারা 
পৃথকৃভাবেই অন্তনিঃ্ঠত পদার্থ প্রস্তত হয়। স্তরাং অন্তনিঃসরণকারী 
যন্্কে তুলিয়া লইলে আদৌ নিঃসরণোপযোগী পদার্থ উৎপন্ন হয় না; 
যেমন, লালা-নিঃসরণকা রী গ্রন্থি (3471181 (110৯) উঠাইয়! লইলে 
লাল নিঃসৃত হয় না। কিন্ত বহিনিঃসরণকারী যন্ত্র, যেমন মৃত্র গ্রন্থি 
(1001) ) কার্ধক্ষম না থাকিলে, তাহার কাধ অংশত ঘর্মোৎপাদন 
যষ্ত্রের দ্বারাও হইতে পারে। স্থতরাং, কোন বহিনিঃলারক যন্থ 
রোগগ্রন্ত হইলে অথবা তাহাকে তুলিয়া লইলে, বহির্গমনশীল পদার্থসকল 
রক্তের মধ্যে সঞ্চিত হয় এবং তাহার কতকাংশ অন্যান্য দ্বার দিয়! বহির্গত 
হইয়া যায়। 

উল্লিখিত একটি প্রভেদ বাতীত বহিসিঃসরণ এবং অন্তনিঃসরণ ক্রিয়। 
অঙ্গার্শি ভাবে কাধত এক সঙ্গে চলিয়া থাকে । 


মলনিঃসারক গ্রন্থিনিচয় 


কে) মুত্রগ্রন্থি (1090555)1-উহা ছারা শরীর হইতে অসার 
পদার্থ যূত্রের সহিত দ্রবীভূত অবস্থায় নির্গত হইয়। যায়। 

€খ) স্সেহগ্রন্থি (3১1১9০09118 (1187)05 )।--এই গ্রন্থি ছ্ধার! 
গরীর হইতে তৈলময় পদার্থ বিনিগত হয়। উহার কার্ধ কেশকলাপকে 
[হণ ও কান্তিযুক্ত কর!। ৪ 

(গ) দ্বর্মনিঃসারক গ্রন্থি (5681 (3191709 )1--এই গ্রন্থি 
কত হইতে ভৃক্তাবশেষ সামগ্রীসমূহ পৃথক করিয়া দেহ হইতে 
মরূপে বাহির করিতেছে । মুত্রগ্রন্থির কার্ধ শুচারুক্ূপে নির্বাহিত 
1 হইলে, এই গ্রন্থি ঘর্ম দ্বারা শরীর হইতে অসার দ্রব্যসমূহ বাহির 


রিয়া দেয়। 


১৭২ প্রবেশিক। গার্ৃস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


(ঘ) অশ্রু-নিঃসারক গ্রন্থি (1,8075708] 0187005 )।--ইহা 
স্বার! অশ্রু বিনির্গত হয়। 

($) নানিক! ও শ্বাসনালীর গ্রন্থিনিচয় ।-_ইহাদের দ্বারা 
কফ নির্গত হয়। ৃ 

€ে) অন্ত্রস্ছ মল-নিঃসারক কোষাবলী (0০016 0119 )। 
_ বৃহদন্ত্রস্ব কোষাবলি মল-নিঃসরণ করিয়া থাকে । 


সারোশুপাদক গ্রন্থিনিচয় 


লালা-নিঃসারক গ্রন্থি-__সাবলিংগুয়েল (১9101116081 ) গ্রন্থি 
ঠিক জ্িহবার নিয়ে অবস্থিত) সাবম্যাক্সিলারি (১01)0)85111815 ) 
মাড়ির নিম্নে অবস্থিত এবং প্যারোটিভ ( 1১%)০৫ ) উভয় কর্ণমূলের 
নিয়ে অবস্থিত। এই তিন জোড়া লালা-নিঃসারক গ্রন্থি । 

অন্ত্রস্থ জীর্ণকারী রসোৎপাদক গ্রন্ছিনিচয়- পাকস্থলীর 
এপিনার (4617&7 ) অহম্রসোত্পাদক কোষাবলি ও তৎসংশ্লিষ্ট নলীর 
আকর গ্রস্থিনিচয় (107)0187 0182105 ) লঙ্বাভাবে শ্লেম্মিক বিলীর 
মধ্যে স্থাপিত আছে । এই গ্রস্থির কোনটি অবিভক্ত এবং কোনটি বা 
নিয়ে বিভক্ত। 

দুপ্ধ-নিঃসারক গ্রন্থি ব1 স্তনগ্রন্থি (00180770275 01805 )--- 
এই গ্রস্থি হইতে দুগ্ধ-নিঃসরণ (98০৮৪0০৮) হয়। প্রসব-কাল হইতে 
এই গ্রন্থি দ্বার] ক্রমাগত দুগ্ধ নিঃহত হইতে থাকে । এইরূপে মাধারণত 
প্রায় আট নয় মাস স্তনে ছুপ্ধ থাকে । লালা-নিঃসারক গ্রন্থির স্যায় এই 
গ্রন্থির কোযাবলি (1,01)919 ) ও নলী (1)00) আছে । দুগ্ধ প্রস্তত 
হইয়া সেই নল ত্বারা নিঃস্যত হয়। 


নরদেহের গঠন ১৭৩. 


নলীহীন গ্রন্থি--( 1)00011053 0187105 )--উল্লিখিত অন্তঠ্রিঃসরণ 
বা অস্তনিঃশ্রব (3০৫.৪607 ) এবং বহিনিঃসরণ বা বহিঃশ্রব 
( 8:567010) ) ব্যতীত আরও কতকগুলি গ্রন্থি আছে। সেই সকল 
গ্রস্থি দ্বারা নিঃসারক গ্রস্থিসমূহের ক্রিয়ার অনুরূপ প্রক্রিয়ার রক্ত হইতে 
কোন কোন পদার্থ নিষ্কাশিত এবং পরে পরিবত্তিত হয়; যে গ্রশ্থির মধ্যে 
এঁ সকল সামগ্রী উৎপন্ন হয়, তাহা হইতে বাহির অথবা অন্য কোন 
উদ্দেখ্যে ব্যয়িত না হইয়াই পুনরায় তাহা লিম্ফ (15700) ) বা 
 বক্তমধ্যে নীত হয়। এই ব্বপাস্তরিত নিঃসারণ-ক্রিয়া যে সকল গ্রন্থি 
মধ্যে সংসাধিত হয়, তাহাদিগকে নলীহীন গ্রন্থি (1)0৫110ন88 
0101)09 ) বলে। নিম্মলিখিত গ্রন্থিনিচয় এই পর্যায়ের অস্ততৃক্ত 
হয়; যথা, 

প্লীহা (41)1060), থাইমাস গ্রস্থি ( গা)হা।1৪ ), থাইরয়েড গ্রন্থি 
(1751910 ), অধিবৃক্ধ গ্রন্থি (:3019787108] ), যকৃত (156৮), 
ক্লোম (1১71)0707%9 ), অধোমন্তিক গ্রন্থি (1১01811879 01%005 )) 
অধিমন্তিষ্ক গ্রন্থি (1১111০8] 0181795 ) পূর্বান্ত্-বিল্ী (1)0090670] 
|1070115 10101)170 ) প্রভৃতি । 

গ্রক্রিয়। প্রণালী--খাগ্দ্রব্য পরিপাক করিতে হইলে' লাগার 
প্রয়োজন । সুতরাং, মুখ-গহবরের মধ্যে তিন জোড়! লালান্রীবক গ্রপ্ঠি 
লালা সরবরাহ করে। পাকস্থলীতে ভাইড্রোক্লোরিক 'আ্যাসিড ও 
পেপসিন্‌, ক্রোম হইতে টিপসিন ও যরুৎ হইতে পিত্ত নিঃস্হত হইয়া 
খাদা পরিপাক করে। বুক হইতে প্রন্ত্রাব নিঃস্যত হইয়া মৃত্রকোষে 
সংগৃহীত হয়। উপযুক্ত পরিমাণ জমিলে, জল ও ইউরিয়া প্রভৃতি 
বিষাক্ত দ্রব্য বাহিরে প্রক্ষিপ্ন হু । ঘমগ্রন্থি দিয়া জল, লবণাক্ত দ্রব্য 
ও ইউরিয়া শরীর হইতে নিক্ষান্ত হয়। অক্ষিগোলকের বিল্লী সিক্ত 


১৭৪ প্রবেশিকা গারস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিধি 


রাশিতে অহরহ জলের প্রয়োজন। এই জন্য অশ্রগ্রন্থির শ্রাব নির্গত 
হয়। এই বিশেষ বিশেষ রস ছাড়াও অন্তনিঃসারক গ্রস্থির রস প্রতিনিয়ত 
শরীরের কার্ধে ব্যয়িত হইতেছে । থাইরয়েড (পু)5:০1 ) গলনালীর 
উভয় পার্খে বিদ্যমান আছে ।, থাইরয়েড হইতে থাইবোডিন রস শরীরের 
চিনি ভন্মীভূত করিয়া তাপ রক্ষা করিতেছে ও শরীরকে বহিঃশক্র-রূপ 
জীবাণু ধ্বংস করিবার শক্তি সঞ্চয় করিয়া দ্রিতেছে। থাইরয়েডের মধ্যে 
প্যারাথাইরয়েড গ্রস্থি অবস্থিত থাকে । এই গ্রন্থি শরীরের চুণের ভাগ 
রক্ষা করিয়! থাকে ও ইহার অভাব হইলে নানা প্রকার কম্পন ব্যাধির 
(1.607৮0% ) স্থষ্টি হইতে পারে। দুইটি বুক্ধকের উপরিভাগে ছুইটি 
উধ্ব বৃক্ধকগ্রন্থি (১381)%0081) বিদামান থাকে । ইহাদের রস 
শরীরে রক্তের চাপ রক্ষণ করে ও ইহাদের রসই এডরিন্থালিন্‌। 
মন্তিক্ষের মধ্যে দুইটি গ্রন্থি আছে । অধোমস্তিক্ গ্রন্থি (1751)0])11813) 
ও উধ্বমন্তিক্ষ গ্রন্থি (17১10681 )। ইহাদের রলও সর্বদা শরীরের নানা 


কারে নিযুক্ত রহিয়াছে । 


বৃন্ধক ব৷ মুত্রগ্রন্থি €%০100555 ) 

বৃক্ধক দুইটি দেখিতে ঠিক শিমের বীজের মত। বাংলা “৫? সংখ্যা 
দেখিতে যেরূপ, এক একটি বৃক্ককের আরুৃতিও ঠিক সেইরূপ । উদর 
প্রদেশের অভ্যন্তরে, ছুই দিকের কুক্ষি প্রদেশে ( [177১0]: ), 
পেরিটোনিয়মের (7১651107102) পশ্চান্ভাগে, পঞ্জরাস্থির নিয়ে 
মেকদণ্ডের সম্গিকটে বৃকক (7010705 ) ছুইটি অবস্থিত। বুক্ধকের 
“মেড়ুলার” অংশ ত্বাদশটি পিরামিডব পদার্থে নিমিত। পিরামিড গুলি 
গুচ্ছবন্ধ প্রশ্রাবনল (00716 1009) ভিন্ন অন্য কিছুই নহে | এক 
একটি বৃন্ধক হইতে এক একটি মৃত্রনালী ( 07897) আসিয়া মৃত্রাশয়ে 


নরদেহের গঠন ১৭৫ 


(731598:) প্রবেশ করিয়াছে । প্রন্রাব জন্মিবামাত্র তাহা এই 
মূত্রনালীর মধ্য দিয়া যৃত্রাশয়ে সঞ্চিত হয়। তার পর উহা মূত্রনালীর 
মধ্য দিয়া বাহির হইয়া যায়। 

মুক্তাশয়-_-(1319901 )।-_দেহ হইতে নিষ্কান্ত হইবার পূর্বে 
মূত্র, মৃত্রাশয় বা ব্রাডারের মধ্যে সঞ্চিত হয়। মৃত্রাশয়ের 
চারিটি আবরণ--(১) সিরস্, (২) পৈশিক, (৩) সাব-মিউকস্‌ এবং 
(৪) মিউকস। ব্লাডারের মুখের মাংসপেশীসমূহ একটি সশ্ষফিংটার 
(3101012001৮) গঠন করিয়াছে । এই সকল পৈশিকতন্ত *৪'এর 
আকারে সজ্জিত। ব্রাডারের মধ্যে রক্তবহা নাড়ী, লরসিকা ও কায 
আছে। মৃত্রাশয়ের পেশীগুলির সংকোচনের ফলে মৃত্রত্যাগ হয়া 
থাকে। মুত্রাশয়ের পশ্চাদ্দিকের ছুই পার্থ দুইটি ছিদ্র আছে। 
ইউরেটারের মধা দিয়!) ফোটা ফোটা প্রত্রাব রাতদিন ইহার মধ্যে 
জমে; আবার সম্মুথের ছিদ্র দিয়া তাহা বাহির হইয়া যায়। 


(৪8) শ্বাসযন্ত্র (155১1751015 55৪65] ) 


যে যন্ধের দ্বারা শ্বাস-প্রশ্বাম ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাহাকে শ্বাস-যন্ত্ 
বলে। নামা-গহবর ( 859] 0%৮)19 ), গলনালী (17১10751)% ), 
স্বরনালী (1/475178 ), শ্বাসনালী (10179& ), শ্বাস-শাখানালী 
( 13:000111 ) এবং ফুস্ফুস্‌ (1/9009 ) লইয়া শ্বাসযন্ত্রটি গঠিত। 
ফুস্ফস্টি বায়ুকোষরূপ ভিন্ন ভিন্ন অংশে বিভক্ত । মাংসপেশী এবং 
স্াযুমণ্ডলী প্রভৃতি বিভিন্ন যন্ত্র শ্বাস-কার্ষের সহায়তা করে । 

শ্বাস দ্বারা গৃহীত বায়ু নাসারন্ধের মধ্য দিয়া গলনালী হইয়৷ 
স্বরনালীতে পৌছিবার পর শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে। শ্বাসনালীটি 


১৭৬  প্রবেশিক। গাহ্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


একটি গোলাকার নল- 
বিশেষ । ইংরেজি 0? (সি) 
অক্ষরের ন্যায় আকৃতি- 
বিশিষ্ট ছোট ছোট অর্ধ 
গোলাকার উপাস্থি (0%৫- 
(1160 1811)6 ) দ্বারা খ্বাপ- 
নালী(1,91)98) সংরক্ষিত | 
উপাস্থিগুলি পরম্পর অলম- 
ভাবে লাজান এবং উহাদের 
ফাকা অংশ ক্ষুত্র ক্ষুদ্র 
মাংসপেশীর দ্বারা পরস্পর 
সন্বদ্ধ। সমস্ত শ্বাসনালীটা 
একটি পর্দা দিয়া ঢাকা । 
এই উপাস্থিগুলির সহিত 
দুসন্বন্ধ বলিয়াই শ্বাসনালীটি 
সর্বদা ফাক হইয়া থাকে । 
গলনালীর (14875 0) 
ছুই পার্থে যে দুইটি ছোট 
মাংসপিগু রহিয়াছে, তাহার 
নাম “টনসিল, (19151) )। 


উহার উপরে আল্জিত, পেরি, টেকি ও তরংকসের সাধারণ প্রতিরৃতি_ 
(00৮5)৮)। গলনালীর গেশ্চাঙ্দিক হইতে)। ক এপিগ্টিস্‌। আলজিভ.) 

| খ ট্রেকিয়ার পশ্চাঙ্দিকের বিশ্লীর অংশ, 
ঠিক নীচু হইতে শ্বাসনালী টস 
(7:801)69 ) আরম্ভ 


বু 
। 
রঃ । ্ 
ং 
+.)1:11 শ নু 
ঘা 
রদ &) 
(011) 
) 
41 ॥ 
২ 
। 
্ 
ৃ +011.1]1 ৃ 
£ 11117 
1183 [18 ||] 
ক 
॥ ॥ 
1 | 
ৰ 11111 1 1 
80 । 
1 তং না 
($ ॥ 
4 
ক, 
চ 
& ! 
দ্ভ 
!! 
রি কর 
১. এ 
2.৮. 
ক ২ অস্রীনা... 
৮89০ 
ছকি৩, 
র্‌ 
রাযি... 
) ০ 
21 
|) ১ 
উপ 
/ প 
ঃ পি এ 
্ 
£ 1 


/ ৩ রি 
৮৯৭ দয 
ৰা] ০ 
নে 4, 
এ টা 
৫:5২ 
ৃ 
রি 
1) ॥ 
নি 
৪ ঢু শুনি ধৃত $ 
- ৮৯ 
ঢ চ রব 
.এ/ নি 
মদে ২১৮০ 
/ ৯ সী. 
| ৯: 
/ 
ক এসি 





নরদেহের গঠন ১৭৭ 


হইয়াছে । * তাহার পর দুইটি শ্বাস শাখানালী ( 9101)01)1) ) আছে। 
স্বাসনলের উপরকার অংশের নাম 'গ্লটিস' (0191118 ) বা বামু-পথ । 
এই বামু-পথের উপরে একটা ঢাকৃনি (৮৮1৮) আছে । আমবা 
যখন কিছু আহার করি, তখন সেই,খাস্ড এ পর্দার কাছাকাছি 


০০ এজ ৪২৮,০০২০০ মই 
ঙ 
ক 


শপ 
শ্ডেঃ স্টে 

৬. 

চি 


৪ 
৬ 
চো] 


[||| 









্ 





চর 
11] 
০৯, 


& ৬ 


মস্তক ও গলদেশ 
১ মহু।মন্তিফ, ২, পশ্চ1ৎ মন্তিষ্ক। ৩, মেরুদণ্ডের অস্থি, ৪, যাদনালীর মুখের পর্দা, 
৫, মেরুদণ্ীয় ন্লাযুরক্্ু$় ৬, অননালী, *, বাযশালী, ৮, জিহবা, »। তালু, 
১০৩১৯, রাত, ১২, নাপাগহনর 


আমিলেই পর্দাটি বাযুপথ বন্ধ করিয়া দেয়। সেইজন্য খাছ্য-সামগ্রী 
বাঘুপথ দিয়া ফ্ুস্ফুসে যাইতে পারে না, দ্বিতীয় নলটি, অর্থাৎ, অন্ননালী 
দিয়া পাকস্থলীতে যাইয়া উপস্থিত হয়। 

১২ 


১৭৮ প্রবেশিকা! গারস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি ' 


হৃৎপিণ্ডের দক্ষিণ নিয় কক্ষ হইতে হৃৎপিণ্ডের, শিবা দিয়! 
(691750097 4116]5 ) যে শোণিত-ধারা ফুসফুসে আসে, সেখানে 
বাহিরের হাওয়া হইতে যে বায়ু শ্বাস-নালীতে প্রবেশ করে, তাহা 
হইতে সেই শোণিত-ধারা অস্জান (08561) ) বাম্প লইয়া কার্বনিক 
আসিড গ্যাস ( 017)01)16 4১61৭ 0%3 ) ছাড়িয়া দেয়। ফলত, এই 
গ্যাসের আদান-প্রদান হইতে শরীরকে অগ্জান গ্যাস্‌ (0558০]) 
0%3 ) দেওয়াই শ্বাসযস্ত্রের কার্য । আদান-প্রদান কাধ শেষ হইলে 
হংপিও্ড আবার পরিশুদ্ধ শোণিতরাশিকে ইহার বাম কক্ষে গ্রহণ করত 
সকল শরীবের পুষ্ঠিলাধন করিয়া থাকে । ফুস্ফুস্‌ প্রতি মিনিটে প্রায় 
১৮ বার সংকুচিত ও প্রসারিত হয়। 


(৬) পরিপাক-যন্ত্র (1)18580৮৩ 55517 ) 


দেহের ক্ষয়পূরণ করিয়া দেহপুঠির ও দেহবুদ্ধির জন্য প্রাণীমাজ্েরই 
নূতন নৃতন সামগ্রীর আবশ্তক হয়। আমরা খাদ্য হইতে সেই সকল 
সামগ্রী প্রাপ্ত হই। ইতস্তত গমনাগমন এবং নানা কার্য সম্পাদনের 
জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়; সে শক্তি খাদ্য হইতেই আমরা পাইয়া 
থাকি। ' তাহা ছাড়া, শরীরে তাপ-সঞ্চার ও তাপ-সংরক্ষণ এবং 
শরীরের অভ্যস্তরস্থ বিভিন্ন তন্তর ক্ষয়-পূরণ খাছ্যের দ্বারাই হইয়া! থাকে । 
তবে, আহারের সময় ষে খাগ্য যে অবস্থায় আমরা মুখের মধ্যে 
গ্রহণ করি, সেই খাগ্য-সামগ্রী তরল ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শরীরে 
শোষণোপযোগী না হইলে, তাহাতে দেহের কোনই প্রয়োজন সিদ্ধ 
হয় না। যে প্রক্রিয়ার সাহায্যে আহার্ধ সামগ্রী রক্তের সহিত মিশিবার 
উপযুক্ত হয়, তাহাকে পরিপাক ক্রিয়া বলে। পরিপাক-যস্ত্রের সাহায্যে 
খাস্ত পরিবতিত ও শোষণের উপযুক্ত হুয়। 


নরদেহের গঠন ১৭৯ 





পরিপাঁক-বন্ত্ 


২, অন্পনালী, ২ পাকস্থলী, ৩, ৪ ডিউওডেনম্ত ৫* *? ১০, ১১ বৃহদস্ত ও 
তরন্তর্গত অংশসমূহ, ৬, ৮, ৯, ১৩) ৪, কষুপরান্ত্র ও তাহায়:বিভিন অংশ, 
১৪, সর়লাস্ত্র বা রেক্টন | (দ) ভানদিক, (বা) বামদিক। 


ন্ট 


১৮০ প্রবেশিকা গারস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি ' 


মুখ-বিবর হইতে আরম্ভ করিয়া মল-ছ্বার পর্যন্ত লমস্ত অংশ 
পরিপাঁক-যস্ত্রের ( 701608101৮6 9581017) ) অন্ততূক্ত। পরিপাক-যস্ত্রের 
দৈর্ঘ্য প্রায় ব্রিশ ফুট । পরিপাক-যস্ত্রের সমস্ত অংশটি একটি নালীবিশেষ 
ইহাকে পরিপাঁক-নালী বা 'আলিমেন্টারি কেনাল+ ( 4১110600275 
(381)8] ) বলে। 

পরিপাক-যস্ত্রের নানা বিভাগ আছে । সেই বিভাগগুলি এই, 
(১) মুখ-গহবর এবং তাদস্তর্গত দস্ত, ডিহবা, তালু। লালা-নিঃসারক 
গ্রন্থি (98]1%75 £182003 )-সমূহ 7; (২) গলনালী ([91)97যা)য ) 
ও তদন্তর্গত আলজিভ্‌ (0৮319) ও টন্সিল (00811); 
(৩) অন্ননালী (00630191)8£05--0/91196), (৪) পাকস্থলী (31077801)), 
(৫) ক্ষুত্র অস্ত্র (902]] 11010811168, 09৮), (৬) যকত (71৮01), 
(৭) ক্লোমযন্ত্র (021)07683 ), (৮) পিততকোষ (08]] 318006 ), 
(৯) বুহদন্তর (14810 110165117)08--00192 0৮ 00 ), (১০) সরলান্ত্ 
(7০00) এবং (১১) মলদ্বার (4005 )। 

খাছ্যদ্ববা মুখ-গহবরে গৃহীত হইবামাত্র সেখানে পরিপাক-ক্রিয়া আরম্ভ 
হয়। ভঙ্ষ্য সামগ্রী প্রথমে সম্মুখের দন্ত দ্বারা ছেদিত ও কতিত হইবার 
সঙ্গে সঙ্গে জিহবার দ্বারা! তাহ এদিক ওদিকে আলোড়িত হইতে থাকে । 
আলোড়নের সঙ্গে সঙ্গে ছেদিত ও কতিত খাছ্য-্রব্য ক্রমশ মুখ-গহ্বরের 
ছুই পার্থ চর্বণ-দক্তের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হয়। সেখানে সেই খাদ্য কুটিত.ও 
চবিত হইতে থাকে । সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুই পার্খের তালু, জিহবা ও 
অন্যান স্থানের লালা-শ্রাবক গ্রন্থি হইতে লালা (981৮৪ ) আসিয়া 
তাহার সহিত মিলিত হয়। লালারস খাগ্যদ্রব্যের পরিপাকে বিশেষ 
সহায়তা করে। উত্তমরূপে লালা মিশ্রিত করিতে হইলে, খান্য-দ্রব্য 
অনেকক্ষণ ধরিয়া চিবাইতে হয়। পরিপাক-ক্রিয়ার ইহাই প্রথম অবস্থা । 


নরদেহের গঠন ১৮১ 


অতঃপর লালা-সংযোগে পিচ্ছিল ও অপেক্ষাকৃত তরল চবিত 
খাছ, গলনালীর ( 07875 0%) মধ্য দিয়া অন্ননালী (17:80170% ) 
হইয়া পাকাশয়ে (96020801) ) আসিয়া উপস্থিত হয়। গলনালী 
ও অন্ননালী পেশীনিযিত নলবিশেষ। উভয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ ইঞ্চি। 
পাকস্থলীটি পেশীগঠিত একটি থলির (988 ) মত। খাচ্-্রব্য 
পাকস্থলীতে আসিয়৷ কয়েক ঘণ্টা থাকে । সেখানে উহার সহিত 
পাকাশয়িক রস (0:96716 09169) মিশিত হয়। পরিপাক-ক্রিয়ার 
ইহাই দ্বিতীয় অবস্থা । 

প্রায় তিন চারি ঘণ্ট। পাকস্থলীতে থাকিবার পর, খাছ্য-দ্রব্য ক্ষুত্র-অস্ত্রে 
(১0811 11016861165) প্রবেশ করে । কষদ্র-অন্ত্রটিও একটি পেশীনিমিত 
নল।? ইহার দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ ফুট । এই অংশ অতিক্রম করিতে 


্্ী 





১ পাকস্থলী, ২-৩, যকৎ, ৪, পিত্তকোষ (0811 131804ত: ), 
৮ প্যাংক্রিয়স, ৯, ডিউওডেনম্‌, ৭, ল্লীহা, ৫-৬, দ্লীহার শির1 ও ধমনী | 


সাধারণত খাছ্-ব্রব্যের ৩ হইতে ৪ ঘণ্টা লাগে। এখানে উহা য্কৃৎ 
হইতে নিংস্থত পিত্বরস (73119) ও ক্লোমযস্ত্র হইতে নিঃস্ত ক্লোমরস 


১৮২ প্রবেশিক! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


(72810788610 0169) এবং আস্ত্রিক বস প্রভৃতির সহিত মিশিতে 
থাকে। পরে ক্কুদ্র-অন্ত্র হইতে খাদ্য-্রবা বৃহদন্ে প্রবেশ করে। 
ভূক্তদ্রব্যের যে অংশ অন্রনালী হইতে ক্ষুত্র-অস্ত্রে প্রবেশ কর! পর্যস্ত 
শোধিত হইতে পারে নাই, তাহ। বৃহদস্ত্রে আসিয়া শোষিত হয়। বৃহদস্ত্রও 
একটি পেশীনিয়িত নলবিশেষ। ইহা পাচ হইতে ছয় ফুট লম্বা। 
এখানে আপিবার পর খাগ্-দ্রব্যের যে অংশ রক্তের সহিত মিশিতে 
পারে না মেই অপরিপাচ্য পরিত্যাজ্য পদার্থ মলরূপে সরলাস্ত্রে 
 (1806707) ) আসিয়া উপস্থিত হয়। সবরলাম্ত্রেরে দৈর্ঘ্য প্রায় নয় 
ইঞ্চি । সরলাস্ত্রে আসিবার পর পরিত্যাজ্য ও অপরিপাচ্য পদার্থ 
মলদ্বার ( 47709 ) দিয়া বাহির হইয়া যায়। মুখের মধ্যের খাছ্য-দ্রব্য 
যখন চবিত হইতে থাকে, সেই সময় মুখমধ্যস্থ কেশব সুক্ষ 
রৃক্তবহা৷ নাড়ীসমূহ খাগ্যাংশ তরল হইবামাত্র যতটা সম্ভব বক্তোপযোগী 
অংশ শোষণ করিয়। লয়। এইরূপ গলনালীর মধ্য দিয়া খাহ্য-দ্রব্য 
যাইবার সময় গলনালী রক্কোপযোগী অল্প কতকটা অংশ চুষিয়া 
লইয়া রক্তের সহিত মিশাইয়! দেয়। গলনালীর পর পাকস্থলী এবং 
পাকস্থলীর পর অস্ত্র প্রভৃতি-যাহার যতটা শক্তি, খাগ্য-দ্রব্যের ততটা 
অংশ দে শোষণ করিয়া লইয়া রক্তের সহিত মিশাইয়া দেয়। এইরপে, 
পরিপাক-ক্রিয়া চলিবার সঙ্গে সঙ্গে খাগ্যের সারাংশ ক্রমশ রক্তের 
সহিত মিশিতে থাকে । 


(৭) রুক্ত-সঞ্চাপন যন্ত্র (01550186015 5586628 ) 
শরীরের মধ্যে শোণিতের বৃত্তাকারে ভ্রমণের নাম--শোণিত- 
সঞ্চালন ক্রিয়া। শোণিত হংপিও হইতে প্রক্ষিপ্ধ হইয়া অঙ্গ-প্রত্যজের 
চতুর্দিকে ভ্রমণ করত প্রতি কোষকে সার প্রদান করিয়া ও তাহাদের 


পরিত্যক্ত 'অগার দ্রব্য 
নিঃসারণ করিয়া, পুনরায় 
হ্বংপিণ্ডে উপস্থিত হয়। 
এই সঞ্চালন ক্রিয়া 
যথাধথরূপে সম্পাদণ- 
পক্ষে (১) একটি কেন্দ্রীয় 
পাম্পের (0৪100) 
উপযুক্ত কার্যকারিতা 
ও (২). স্থিতি-স্থাপক 
(9188016) নলের বিশেষ 
প্রয়োজন হয়। 

কেন্দ্রীয় পাম্প বা 
হৎখপি্ড পেশীনিমিত 
যন্ত্র। পরিণত-বয়স্ক নর- 
নারীর হৃংপিণ্ডের ওজন 
সাত হইতে আট আউন্গ 
পর্যস্ত হইয়া থাকে । মধ্য 
বয়ম পর্যন্ত হৃৎপিণ্ডের 
ভার বুদ্ধি পায়; কিন্তু 
বৃদ্ধ বয়সে হৃৎপিণ্ডের 
ওজন কিঞ্চিৎ হ্রাস পায়। 

হৃৎপিণ্ড কোণাকার 
পেশীনিমিত যস্ত্র। উহার 


চুড়াটি নিয়মুখ এবং 


নরদেহের গঠন 





শোণিত-সঞালন 


১৮৩ 


১৮৪ প্রবেশিকা গারহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থারিধি 


মূলদেশ উধ্বমুখ। হৃৎপিগড শূন্তগর্ত। ইহার অভ্যস্তর ভাগ, বামে ও 
দক্ষিণে দুইটি করিয়া চারিটি কক্ষে বিভক্ত। : বামভাগের কক্ষ 





দুইটি.ফুস্ফুমের উপর অবস্থিত হাৎপিওড (পেরিকাডিয়াম কাটা) । গ--দক্ষিণ উধ্ব 
কক্ষ, খ--দক্ষিণ ভেনটি কেল, খ-_সুপিরিক্র ভেনাকেভা, খ--ইন্ফিরিয়র 
ভেনাকেভা, ঠ-_ফুস্কুস্‌ ধমনী, ছ--এওর্টা, ন-_ফুস্ফুস, ব--ট্রেকিয়া, 
২--ভেনটি,কেলের যুলদেশে চবি, ৪-_ট্রেকিয়া। চবি দ্বার] ঢাকা 


নরদেহের গঠন ১৮৫ 


এবং দক্ষিণুভাগের কক্ষদ্বয় সম্পূর্ণ ম্বতন্ত্। এই ছুই অংশের সংযোগ 
হুত্র-স্বরূপ কোনওম'্পথ নাই; কিন্ত, প্রত্যেক দিকের উপবিস্থিত কক্ষের 
সহিত তাহার নিয়স্থিত কক্ষের সংযোগ আছে। মানুষের হদ্যন্ত্র চাবিটি 
কক্ষে বিভক্ত ঃ-_ 

(১) দক্ষিণ উধ্ব কক্ষ ( 131৮)! 87111010 ) 

(২) দক্ষিণ নিয় কক্ষ (1২161) ৮01)175010 ) 

(৩) বাম উধ্ব কক্ষ (1,611. ৪87101 ) 

(৪) বাম নিয় কক্ষ (1461 ৮০1)1710]6) 


7448 


৬ 


হৃৎপিণ্ডের দুইটি ভাগ। বান ও দক্ষিণ ভাগের বক্ষগথয় ও তাহাদের“বিভাগ 


৯ 
২. 





দক্ষিণ উধর্ব কক্ষ ও দক্ষিণ নিয় কক্ষের মধ্যে একটি পথ আছে। 
এরূপ বাম উধ্ব ও বাম নিয় কক্ষের মধ্যেও একটি সংযোগ-পথ 
রহিয়াছে । কিন্তু দক্ষিণ উধ্ধ কক্ষ ও বাম উধ্ব কক্ষের মধ্যে বা বাম 
নিয় কক্ষ ও দক্ষিণ নিয় কক্ষের মধ্যে কোন পথ নাই । 

মান্গষের সমস্ত শরীর্ষে যে রত্তরাশি সঞ্চালিত হয়, ভাহা একটি বৃহৎ 
উধর্ব শিরা! (997107 6708 08%৪% ) ও একটি বৃহৎ নিয় শির! 


১৮৬ প্রবেশিক! গার্্‌স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 





ণ বাম উধ্বকক্ষ, দ বাম নিম্নকক্ষ, ট এও, খ উধব্ণঙ্গের লসিকখ, শ নিম্নাঙ্গের 
ধমনী, ল হিপাটিক ধমনী, গ উধ্বাঙ্গের শিরা, ননিয়্াঙ্গের শিরা, ভ পোর্টাল 
শিরা, ম হিপাঁটিক শিরা, ঝ ইনফিরিয়র ভেনাকেভাঃ চ হুপিরিয়র ভেনাকেভা।, 
ধ দক্ষিণ নিয়কক্ষ, ঠ পাল্যোনারি ধমনী, ক ফুস্ফুস্‌: প লাকটিয়াল, 
হলিন্বাটিক, ছ খোরাসিক ডাঁক্ট, ন পরিপাক মালী, ব ষকৃৎ 
তীরগুলি রক্ত, লিক্ষ ও কাইলের গতি-নির্দেশক 


নরদেহের গঠন ১৮৭ 


দ্বারা (17867107 978 0৮৮৮ ) হৃৎপিণ্ডের দক্ষিণ উধ্ব কক্ষে 
( ন7€]1৮ 251619 ) ফিরিয়া আসে। 

দক্ষিণ উধ্ধ কক্ষ হইতে শোণিতরাশি দক্ষিণ নিয় কক্ষে প্রবেশ 
করে। দক্ষিণ নিয় কক্ষটি শোণিত-পুর্ণ হইবার পর উহার পেশীময় 
প্রাচীর ( ঘ105081107 ॥1] ) সংকুচিত হয়। অমনি সঞ্চিত শোণিত- 
রাশি শ্বাসযস্্শিরার (20117010870 821079 ) মধ্য দিয়া ফুসফুসে 
প্রবেশ করে) কিন্তু, প্রবাহিত শোণিতধারা আর দক্ষিণ উধ্ব কক্ষে 
ফিরিয়া যায় না। ইহার কারণ এই যে, উক্ত দক্ষিণ উধর্ব ও 
নিয় কক্ষের প্রবেশ-পথ এমনই চমময় 
কপাটযুক্ত (110880)10 ৮৪15০ ) যে 
রক্ত বিপরীত দিকে প্রবাহিত হইতে 
পারে না। বামদিকের ব্যবস্থাও ঠিক 
একই প্রকার । 

পূর্ব-প্রদত্ত চিত্রে হৃংপিণ্ডের ছুইটি অংশ 
দেখান হইয়াছে । প্রথম চিত্রে শোণিত- 
প্রবাহ দক্ষিণ নিয় কক্ষে প্রবেশ করিতেছে 
এবং ত্রিচড় কপাট-যুক্ত (1716 9]0013 
1০) রহিয়াছে । দ্বিতীয় চিত্রে নিয় 
কক্ষ হইতে শোণিতধারা শ্বাসযন্ত্রশিরায় হৃৎপিণ্ড ও'তাহার সহিত 





প্রবেশ করিতেছে । উহার ত্রিচুড়পেশী- সংলগ্ন ধমনী ও শির! 
চালিত কপাট বন্ধ আছে এবং শ্বাসযন্ত্রশিরা ও নিম্নকক্ষের সংযোগ- 
স্থলের কপাট-ছুইটি মুক্ত রহিয়াছে । 


শোণিতধারা শ্বাস-যন্ত্র শিরার দ্বারা ফুস্ফুসে নীত হইলে সেখানে 
অসার কার্বনিক আলিভ, গ্যাস পরিত্যাগ করিয়া, অক্রজান (00867) 


১৮৮  প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি ' 


গ্যাস লইয়৷ বিশুদ্ধ হইয়া পুনরায় হংপিণ্ডের বাম উধ্ব কক্ষে প্রবেশ 
লাভ করে। সেখান হুইতে বাম নিয় কক্ষে প্রবেশ করিবার পর 
পেশীময় বাম কক্ষে প্রাচীরের সংকোচন হেতু শোণিতধার। নিয় কক্ষ 
পরিত্যাগ করিয়া মুকুটবৎ বা 'মাইদ্রাল ভ্যাল্ভ' ( 2016281 ৮4১৮৩ )- 
বশত পশ্চাদ্বতী হইতে না পারিয়া এওটাতে (4১০৮) প্রক্ষিপ্ত 
হইয়া থাকে । তথা হইতে শোণিতধার। সর্বশরীরে নীত হয়। 


বিশেষ বিশেষ হন্দ্রিয়সমুহ 
( 91828%:08 01 91990191 3910893 ) 


আমাদের সকল প্রকার জ্ঞানের মূল ইন্ড্রিয়জ অনুভূতি । চক্ষু, কর্ণ, 
নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক-_এই পাচটি ইশ্ত্রিয় হইতে আমরা সেই অনুভূতি 
প্রাপ্ত হই। পঞ্েন্ত্রিয় লইয়া মানবদেহের চেতনাবাহী জ্ঞানতন্ত্ 
(১০১০7 ১১১৪ ) গঠিত। 

মুখের অব্যবহিত উপরেই নাক। কোন ।কছু খাইতে বদিলে 
প্রথমেই নাকে তাহার গন্ধ যায়। নাক বলিয়৷ দেয়, সে দ্রব্যে কোনও 
দোষ আছে 'কিন! এবং সে দ্রব্য খাওয়া উচিত কিনা । নাকের ঠিক 
গোড়ায় ছুই দিকে দুইটি চক্ষু । সংসারের যাবতীয় সামগ্রী দেখিয়া 
চক্ষু বলিয়া দেয়-_কোথায় কোন্‌ শক্র লুক্কামিত আছে, কোথায় কোন্‌ 
বিপদ উপস্থিত, কোন্‌ সামগ্রী আমাদের পক্ষে উপকারী এবং কোন্টি 
অপকারী। চক্ষুর নির্দেশ অনুসারে আমরা মন্দটি ফেলিয়া ভালটি 
বাছিয়া, লইতে পারি। 

নাকের ও মুখের কয়েক ইঞ্চি পরেই, দক্ষিণ ও বাম দিকে, দুইটি 
শ্রবণেন্দিয় অবস্থিত । শব শুনিয়া কর্ণ আমাদিগকে বিপদ*আপদের 


নরদেহের গঠন ১৮৯ 


কথা জানাইয়া দেয়। কোন্টি আমাদের আনন্দদায়ক এবং কোন্টি 
বিরক্তিকর, শব শুনিয়া কর্ণ তাহা ধরিয়া ফেলে । 

ত্বক্‌ স্পর্শেজ্ছিয় এবং জিহ্বা স্বাদনেক্দ্রিয়। মুখ-গহবরের অভ্যন্তরস্থিত 
জিহবা! স্বাদ-গ্রহণের প্রধান কেন্দ্র। স্থর্শেজ্্িয়ের সহিত শ্বাদনেক্্িয়ের 
সম্বন্ধ অতি নিকট । স্বাদনেক্দ্রিয়কে স্পশেক্ছিয়ের রূপান্তর বলা যাইতে 
পারে। স্পর্শ ও ভ্রাণ_-এই ছুইটির সহযোগ ভিন্ন জিহ্বার স্বাদ-গ্রহণ 
শক্তি অল্পই দেখা যায়। 

স্বাদনেন্দ্রিয়ের দ্বারা আমরা চারিটি মূল রসের সন্ধান পাই অল্প)" 
মিষ্ট, তিক্ত ও লবণ । বিভিন্ন প্রকারের মিশ্রণে এই চারিটি রস হইতে 
আবার বনু বসের স্যরি হয়। 

উপরে যে পীচটি ইন্দ্রিয়ের কথা বলা হইল, তাহার প্রত্যেকটি 
স্ব স্ব কার্ধের উপযোগী করিয়া গঠিত এবং প্রত্যেকটি যথাস্থানে 
স্থবিন্যান্ত। 


দর্শনেন্দ্রিয় বা চক্ষু (চ)59) 


'সম্মুখ-ললাটাস্থি, গণ্ডের অস্থিদ্বয় এবং নাসাস্থিছ্য়-_এই পাচখানি 
অস্থির দ্বারা অক্ষিকোটর (0791) রচিত। এই চক্ষুকোটর দুইটি 
ফাপা অস্থিময় গহ্বর বিশেষ। ইহারই মধ্যে অক্ষি নিহিত রহিয়াছে । 
ছয়খানি ক্ষুত্র মাংসপেশীর ছারা চক্ষু দুইটি চক্ষুকোটরে আবদ্ধ। সেই- 
জন্য আমরা ইচ্ছা করিলেই চক্ষু দুইটি এদিক ওদিক ঘুরাইতে পারি। 
এই মাংসপেশীগুলি যথা-বিন্যন্ত না হইলেই চোখের দৃষ্টি €টেরা' 
(899101 77595 ) হয়। 

অক্ষিপুট এবং অক্ষিগ্রন্থিনিচয় ( [,401775018] (3181108 ) অক্ষি- 
পুটদ্বয় চর্মে'র ছুইটি ভাগ মাত্র। ইহার ধারে ধারে শ্রেণীবদ্ধ বক্রাকারে 


১৯০ প্রবেশিকা গার্থস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


সাজান ভ্র-যুগলের রোমশ্রেণী আছে । চক্ষু অর্ধ মুদ্রিত করিলে ধূলাদি 
ইহাতে প্রবেশ করিতে পারে না। অক্ষিপুটের ভিতরের দিক ও 
গোলকের সম্মুখের দিক্‌ একখানি ঠঞ্গম্মিক বিল্লীর দ্বারা আবৃত। 
ইহাকে 0০230000%৪ বলে'। উভয় অক্ষি-গহবরের বাহিরের দিকের 
কোণে অশ্রগ্রস্থি আছে। স্বাভাবিক অবস্থায় এই গ্রন্থির অল্প অল্প 
নিঃসরণে চক্ষুকে সরদ বাখে। অশ্রবারি উৎপন্ন হইয়া চক্ষুর 
ভিতরের কোণে অশ্রকোষে (15801757721 98০) জমা হয়। এই 
কোটি স্বাভাবিকভাবে পুর্ণ হলে, নাসাপথ (৮১৪1 1)9৫ট) 
দ্বারা নানিকাতে প্রবাহিত হইয়া উক্ত গহবরকে সরস রাখে । অক্ষিপুটের 
চতু্দিকস্থ মাংলপেশীর সংকোচনে অক্ষিপুটদ্বয় বন্ধ হয়। ইহাদের 
আমুত্রয়কে :দর্শন-আায়ু বলে। 

বাহিরের দ্রব্য আলোকিত হইয়া, তাহাদের প্রতিবিশ্ব স্মুখের 
প্রকোষ্ঠের ছিদ্রের (মণির) মধ্য দিয়া জলীয় বস, অক্ষিমুকুর ও 
ঘনরসের ভিতর দিয়া সোজাসুজি আসিয়া পর্দায় (78901) উল্টা 
হইয়া পড়ে। তারপর সেখান হইতে দ্বিতীয় মস্তিকষ-ন্নায়ু দ্বারা মন্তিষষের 
নির্দিষ্ট স্থানে নীত হইয়! দর্শন জান জন্মায়। 


শ্রবণেন্দিয় বা কর্ণ (89 ৪) 


কর্ণের গঠন ।-_শ্রবণের যন্ত্৯টিকে বর্ণনার সুবিধার জন্য তিন 
ভাগে বিভক্ত কর! হইয়া থাকে ; যথা, (১) বাহাকর্ণ (196৫779) 
[38 ), (২) মধ্য-কর্ণ (1119016 £2%:) এবং (৩) আভান্তরিক 
কর্ণ ([01006202] 009৮) এবং তৎসংলগ্ন অশবণ-স্নাযু ও মস্তিষ্কের 
শ্রবণান্থভৃতির উদ্দীপনার স্বল। 


নরদেহের গঠন ১৯১ 


(১) * বাচ্থাকর্ণ।-কর্ণের যে অংশ হত্মের দ্বারা ধরিতে 
পারা যায়, কর্ণের সেই অংশ বাহ্াকর্ণ। বাহাকর্ণ উপাস্থি ও চমের 
দ্বারা গঠিত। এই অংশের অন্তর্গত রক্ত-সঞালনের শ্রিরাগুলি 
আলোতে বেশ দেখিতে পাওয়া যায়+ বাহাকর্ণ বহির্জগৎ হইতে 
বাযুতরঙ্গের সহিত শবধতরঙ্গ প্রতিধ্বনিত করিয়া এবং ম্বরের 





৫ 
৮” ৭ 
আচ্যন্তরীণ ্ 
তীর চিহ্ন দ্বারা দেখান হইয়াছে, শঙ্ঃতরঙ্গ কি ভাবে কর্ণকুহরে প্রবেশ করে। 
৪ কর্ণমধাস্থ নাতদমূহ 


উচ্চতা বাড়াইয়া বাহা শ্রবণ-নলীতে (72107579] 44001001 
7108608-এ ) প্রেরণ করে। তার পর, শব্ধতরঙ্গ পটহ-ঝিল্লীতে 
€(গড0108010 01920072719 ) আঘাত করিয়া থাকে । এই নলীতে 
ছোট ছোট লোম ও তৈলময় দ্রব্য প্রস্তত করিয়া নলীটিকে মস্থণ 
বাখিবার জন্তু অনেকগুলি ছোট ছোট গ্রন্থি আছে। সেই তৈলময় 
ভ্রব্য ও এক প্রকার হবিজ্রাবর্ণ দ্রব্য শুকাইয়া “কানের খৈল" 
গঠন করে। 


| ০৯ রোযার 
১৯২  প্রবেশিকা/গারস্থ্য-বিজ্ঞার ও স্বাস্থ্যবিধি 


(২) মধ্যকর্ণ।__-পটহ-ঝিললীতে আঘাত প্রাপ্ত শব্দ-তরজ্গ-সমূহ 
মধ্যকর্ণে প্রবেশ করে। “টেম্পোরালঁ অস্থিতে একটি গহ্বর 
ব্যতীত মধ্যকর্ণ অন্য কিছুই নহে। মুখবিবরের সহিত উক্ত 
গহবরের উভদ্ন দ্রিকে একটি নলীর দ্বারা সংযোগ আছে। 

পটহ হইতে আভ্যস্তরিক কর্ণ পর্যন্ত বিস্তৃত অংশকে মধ্যকর্ণ 
কহে। মধ্যকর্ণকে টিমপেনিক গহবরও (115101১1516 08৬1 ) 
বল! যায়। এই মধ্যকর্ণ বা টিমৃফেনিক গহ্বরের মধ্যে পরম্পর- 
সংলগ্ন ক্ষুত্র ক্ষুদ্র তিনথানি অস্থি আছে। এই অস্থিত্রয় পটহ- 
বিলী হইতে শব্ধতরঙ্গ আনিয়া আভ্যন্তরিক কর্ণের দ্বারদেশে 


পৌছাইয়া দেয়। 


(৩) আতভ্যনস্তরিক কর্ণ।- আভ্যন্তরিক কর্ণের মধ্যেই প্ররুত 
শ্রবণ-যস্ত্র অবস্থিত আছে; আর ইহার মধ্যেই শ্রবণ-্রাযু-_অষ্টম-সসাযু 
(49911075 ৩7৮০) আসিয়া বিস্তৃত হইয়াছে । সকল প্রকার 
শব্দ-তরঙ্গ শ্রবণ-স্নায়ুতে প্রতিঘাত করিলে পর, শ্রবণ-জ্ঞান জন্মে; 
কারণ, অষ্টম স্নায়ু এই গ্রতিঘাত মস্তিষ্কে বহন করিয়! লইয়। যায়। 


ঘ্াণেন্দ্রিয় (০৪০) 


শ্াণেক্দ্রিয়ের স্থান।_-নাসিকার অভ্যন্তর-ভাগে ভ্রাণক্াযুর 
(প্রথম মন্তিষ্ষ ম্সাযু) অসংখা ক্ষুত্র ক্ষুদ্র শাখা-সমূহ আসিয়া বিস্তৃত 
হইয়াছে । সেইগুলিই অ্্রাণেন্দিয়ের স্থান । 
' স্রাণের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়়-সমগ্ির প্রয়োজন )-_ 

(১) বিশেষ ম্বাযু ও মায়ুকেন্দ্র। এই আয়ু ও স্বাযু-কেন্ে 
পরিবত'ন উপস্থিত হইলে প্রাণজ্ঞান জন্মে । 


নরদেছের গঠন ১৯৩ 


(২) গন্ধবিশিষ্ট ভ্রব্যগুলি অত্যন্ত সু স্থল চূর্ণ-কণার ন্তায় অথবা 
বাম্পাকারে থাকে । সেই সকল ভ্রব্য নাপিকায় প্রবেশ করিয়া তথাকার 
রসে দ্রবীভূত হইলে, দ্বাণ প্রাপ্ত হওয়! যায়। আঘ্রাণ পাওয়ার পক্ষে 
নাসিকা সরস থাকা চাই । নাসিকার বিল্লী, (00993 10201১78100) যখন 
শুফ থাকে, তখন ভ্রাণশক্তি বিলুপ্ত হয়; যেমন,_সর্দির প্রথম অবস্থায় 
নাসিকায় রস থাকে না, তখন কোন দ্রবোর আঘ্রাণ পাওয়া যায় না। 


জিহ্বা বা স্বাদনেল্জ্িয় €028505 ) 


স্বাদনেক্দ্রিয়ের প্রধান স্থান জিহবা । কিন্ত, পরীক্ষা! দ্বারা দেখা 
গিয়াছে, মুখ-বিবরের অন্যান্য স্থানও, অর্থাৎ, তালু (3০:16 1১918 ), 
আল্জিভ্‌ (0৮019), টন্সিল (90911) ও পশ্চাদগহবরের 
উপরিভাগও (1:2751%) স্বাদগ্রহণক্ষম। নবম মন্তিফ-ন্লাযুর 
শাখা ( (105501)11875161%] ৩:৮০) এই সকল স্থানে বিস্তৃত 
হইয়াছে। দ্রব না হইলে অর্থাৎ গলিয়া না গেলে, কোন ত্রব্যের 
আন্বাদ পাওয়া যায় না। যে দ্রব্য গলে না, তাহা স্বাদহীন হয়। 

জিহ্বার গঠন ।- জিহবা পেশীময় এবং শ্ৈম্সিক বিলী (010088 
11970108186) দ্বারা আবৃত যন্ত্র। এই গ্লৈম্মিক বিল্ীর মধ্যে 
অসংখ্য 'প্যাপিলা” (7১৪0111% ) আছে। কাটাসদৃশ আকুতিবিশিষ্ট 
প্যাপিলাগুলিই স্বাদগ্রহণক্ষম জিহ্বার আন্বাদন যন্্র। ইহাদের গঠন- 
প্রণালী ও বিন্তাস-প্রণালী তিক্ত, অক্প, কটু ও লবণ-প্রধান। (পরিপাক- 
ক্রিয়া-গ্রসঙ্গে ইহার অন্যান্য বিবরণ ভ্ষ্টব্য )। 


তক (১8) 


অন্যান্ত ইন্দ্রিয়ের ন্যায় স্পশেক্জ্িয় (ত্বক) দেছের কোন নির্দিষ্ট স্থানে 
আবদ্ধ নহে। দেহের প্রায় সর্ব ম্পশজ্ঞান-সম্পন্ত্র। মেরুদতীয় 


১৩ 


১৯৪ প্রবেশিক। গাহৃস্থ্য- বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি ৃ 


আাযুর পশ্চান্মদল ( 109367:101 80০ ) হইতে যে, সকল ল্াযু উদ্ভূত 
হইয়াছে, সেই সকল স্মাছু ও মন্তিফজাত অহৃতি উৎপাদক আমু 
(0781018] 96080) টি5৫৪ ) স্পিশেন্দ্িয় আয়ু । ত্বক বা 
চম” ম্পর্শেক্দ্িয়ের প্রধান স্থান কিন্তু জিহবা এবং ওষ্ঠ প্রভৃতিতেও 
স্পর্শজ্ঞান-উৎপাদক প্যাপিল] ( ৮8)811% ) আছে। এই প্যাপিলার 
মধ্যেই স্পর্শজ্ঞানোৎপাদ্ক যন্ত্র সন্নিবিষ্ট থাকে । আবার, এই 
প্যাপিল! অন্ুভৃতি-উত্পাদক স্সাফু দ্বার স্সাযুকেন্দ্রের সহিত সংযুক্ত । 
চর্মেই বেশী প্যাপিলা আছে। চমেরও আবার স্থানবিশেষে 
প্যাপিলার তারতম্য ও প্রভেদ দেখা যায়। চর্ম স্পশেক্দ্রিয়ের মূল । 

ত্বককে আরও বন কার্য করিতে হয় ;-(১) ত্বকৃ শরীরকে 
বমের স্ায় আবৃত করিয়া আছে; (২) মেদের সাহায্যে শরীরের 
নানাস্থানে উচ্চ নীচ স্থান স্থট্টি করিয়া শরীরের সৌষ্টব ও সৌন্দ্য 
বৃদ্ধি করে; (৩) অসংখ্য শিরা ও ধমনীর সহায়তায় ত্বক শরীরের 
তাপের সমতা-রক্ষায় সহায়তা করে; (৪) ত্বক স্পর্শ বোধ জন্মায়। 
€৫) ঘর্ম উৎপাদন ও বাহির করিয়া, শরীরের অভ্যন্তরস্থ মল 
নিংসারণ করে । ম্বেদ চর্মকে মস্থণ ও নরম রাখে । 


(থ) শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়! (875907008 ) 


জীবনধারণের জন্য প্রাণিমাত্রেরই খাছ, জল ও বায়ুর প্রয়োজন । খাদ্য 
ও জল না হইলেও কিছুদিন প্রাণ ধারণ করিতে পারা যায়; কিন্তু বাতাস 
নাহইলে আমরা এক মুহৃরতও বাচিতে পারি না। বাযুতে অক্পজান 
(058৫০) বাষ্প আছে; প্রশ্বাস দ্বারা আমর! তাহা! গ্রহণ করি। 
শরীবের রক্ত সেই অক্পজান বাম্প শোষণ করিয়! শরীরের সর্বত্র লইয়া যায়। 


১৬০ তি 8০ 


শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়। ১৯৫ 


পর্যায়ক্রমে বক্ষংপ্রাচীরের প্রসারণ ও সংকোচনই শ্বাসক্রিয়া। এই 
প্রক্রিয়ার দ্বার! বাঘু ফুসফুসের মধ্যে গমন করে এবং পুনরায় ফুস্ফুস্‌ 
হইতে বাহির হইয়া আসে। বক্ষঃপ্রাচীর প্রসারণ করিয়া বাহ জগৎ 
হইতে ফুস্ফুসের মধ্যে বায়ু লওয়াকে ইন্‌ম্পিরেশন? (17730717410 ) 
অর্থাৎ প্রশ্বাস গ্রহণ, এবং বক্ষঃপ্রাচীর সংকুচিত করিয়া! ফুস্ফুস্‌ হইতে 
বাহাজগতে বায়ু ত্যাগ করাকে “একা পিরেশন? (19510170100 ) অর্থাৎ, 
নিঃশ্বাস ক্রিয়া বলে। প্রশ্বাস গ্রহণ ও নিঃশ্বাস ত্যাগ-_এতছুভয়ের 
সমষ্টির নাম রেম্পিরেশন) (05030180017) অর্থাৎ নিঃশ্বাস-প্রস্থাস 
ক্রিয়া; অথবা, প্রশ্বাস দ্বারা অক্রজান গ্যাস গ্রহণ এবং নিঃশ্বাস 
দ্বারা অঙ্গারায় গ্যাস (087902. [010109) ত্যাগ-_এই ছুইটি ক্রিয়ার 
সমা্টকে শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া (05101286102) বলে। 

মেরুদণ্ু-বিশিষ্ট প্রাণিমাত্রেই শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া পরিচালনের 
নিমিত্ত ফুসফুস আছে। কিন্তু, ভেক প্রভৃতি নিয্শ্রেণীর প্রাণীর 
চর্মই শ্বাসক্রিয়ার প্রধান যন্ত্র। ফুস্ফুদ্‌ যন্ত্র কোন কারণে বিগড়া ইয়া 
গেলেও ইহার! চমের মধ্য দিয়! অল্নজান গ্রহণ এবং অঙ্গারান্নজান বাষ্প 
পরিত্যাগ করিয়া! বহুকাল জীবিত থাকিতে পারে; কিন্তু মানুষ 
প্রভৃতি শ্রেষ্ঠ জীবের চর্মে এই ক্রিয়া এত অল্প যে তাহাদের 
শ্বাসপ্রশ্থাস-কার্ধে গাত্রচর্য কোন সহায়তা করে না বলিলেও চলে । 

 শ্বাসক্রিয়ার উদ্দেশ্য রক্তকে অল্নজান (055897) দিয়া শোধিত 
করা। শরীর হইতে অঙ্গারাস্জান গ্যাস (087০০710 4610 088) 
নিশ্বাসের সহিত বাহির হইয়! যায়। স্ৃতরাং, প্রশ্বাসক্রিয়া অর্থাৎ 
[70579175007 দ্বারা বাহিরের বায়ু ভিতরে শীত হয় এবং এই বায়ু 
হইতে শরীরের পক্ষে উপযুক্ত অগ্লজান (0858০ ) রক্তের সহিত 
সর্বশরীরে প্রবাহিত হয়। শরীরের অভ্যন্তরে সর্বদা দহন-কার্ধ 


১৯৬  প্রবেশিক। গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


চলিতেছে । সেই দহন-কার্ষের ফলে অঙ্গারান়নজানের স্থ্টি হয় এবং 
তাহা প্রশ্বাসের সহিত শরীর হইতে বাহির হইয়া যায়। 

অন্তঃচ্ছদ বা 1)187)1)78617-এর সংকোচন এবং সঙ্গে সঙ্গে পপ্ররাস্থির' 
ভিতরের পেশীর (1769:60881 219050193 ) সংকুচন হইলে, 
বক্ষোগহবরের (101078619 08165 ) আয়তন বৃদ্ধি হয় । আয়তন- 
বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই স্থানে বাহির হইতে বামু আসিয়া প্রবেশ করে 
এবং সেই বাছু দ্বারা বক্ষোগহবর পূর্ণ হয়। সুতরাং, এই যে শ্বাস-প্রশ্বাস 
কার্ধ আপনা আপনি সংসাধিত হইতেছে, ইহার প্রধান সহায় হইল 
বাহিরের পরিশুদ্ধ বাযু। 

প্রশ্বাসের সহিত নীত অল্রজানের দ্বারা শরীরের দহন-কার্ষের ফলে 
অঙ্গারায়নজানের স্যটি হয়। যখন উপযুক্ত পরিমাণ শ্বাসক্রিয়ার ঘ্বাবা 
ফুস্ফুদ্‌ পর্যাপ্ত পরিমাণ বায়ু দ্বার! পরিপূর্ণ হইতে থাকে, তখন ফুস্ফুসের 
মধ্যস্থিত সুক্ষ কোষসমূহ অগ্জান সংগ্রহ করিতে থাকে ও কার্বনিক 
আামিড গ্যাস পরিত্যাগ করিতে থাকে। ইত্যবসরে ফুস্ফুসের 
স্বাভাবিক স্থিতিস্থাপকতা গুণে শ্বাস-প্রশ্বাস কার্য সংসাধিত হয়। 
সজোরে শ্বান-ত্যাগে পেটের পেশীগুলি সংকুচিত হয়। এইপ্রকার' 
সজোরে শ্বাস-ত্যাগ এবং পূর্ণ শ্বাস-গ্রহণের হারা শরীরের স্বাভাবিক 
দৃহন-কার্য হুচারুরূপে সম্পন্ন হইয়া থাকে । শ্বাস-প্রশ্বাস কার্ধরূপ ব্যায়াম 
(89890101701 10%070189 ) রক্তশোধন ও কোষ্ঠ-পরিষ্কার উভ্ভয় 
কাধের পক্ষে বিশেষ উপযোগী । 

সাধারণত গড়ে আমরা প্রতি মিনিটে ১৮ বার শ্বাসগ্রহণ করি 
ও পরিত্যাগ করি। 

এই শ্বাসক্রিয়ার ফলে নাসারন্ষের পথে বাষু প্রবেশ করে। 
বায়ুর মধ্যে ধূলিকণা ও ভাসমান জীবাণুসমূহ নাকের মধ্যের লোম 


শ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া ১৯৭ 


“ও নাসাপতথর ঘুরানো৷। আকা-বাকা রাস্তায় আট্কাইয়! যায়। শহরে 
আমর! প্রতিনিয়ত নাক ঝাড়িলেই দেখিতে পাই কত ঝুলকালি 
কাপড়ে লাগিয়া থাকে । 

মুখ দিয়া শ্বাস গ্রহণ করা একটি *কু-অভ্যাস। ইহাতে নাকের 
পথ রুদ্ধ হয় ও নানাবিধ জীবাণু টন্সিলে আট্কাইয়া টন্সিল্‌ বৃদ্ধি পায় ও 
গলার মধ্যে এডিনয়েড ও শ্বাস-নালীর পথ রুদ্ধ করে। দীর্ঘদিন এই 
প্রকারে মুখ দিয়! শ্বাস লওয়ার দোষে ছেলে-যেয়েদের স্থাস্থ্য নষ্ট হইয়া 
যায় এবং অবাধে নানাপ্রকার বায়ুবাহিত ব্যাধির জীবাণু শ্বাসপথে 
প্রবেশ করিয়া যক্ষ্মা, সর্দিকাশি, ইন্ফ্লুয়েন্জা, ভিপথিরিয়া প্রভৃতি 
ব্যাধির সংক্রমণে সাহায্য করে। 

নিম্নলিখিত কয়েকটি নিয়ম-পালন শ্বাসক্রিয়া বিষয়ে অতি 
হিতকারী :_ 

(১) প্রত্যহ মুক্ত বায়ুতে মুখ বন্ধ করিয়া দীর্ঘশাস গ্রহণ করা 
কতব্য। মেরুদণ্ড সোজা করিয়া মুখ উচু করিয়া দাড়াইয়! শ্বাসক্রিয়ার 
ব্যায়াম প্রত্যেক ব্যক্তির পক্ষেই হিতকারী। 

(২) দিনে ও রাত্রে সর্বদাই জানালা-দরজা উন্মুক্ত রাখিয়া চুর 
পরিমাণে বিশুদ্ধ বায়ু ঘরে প্রবেশ করিতে দিবে । 

(৩) এক স্থানে বদ্ধঘরে বা জনবহুল স্থানে থাকিবে না। 

. (৪) শয়নকালে কোনও সময়ে নাক বন্ধ করিয়া বা আপাদমত্তক 
ঢাকিয়া গুইবে না, তাহাতে বাহিরের পরিশুদ্ধ বায়ুর অভাব ঘটে ও 
নিজের অপরিশুদ্ধ বাম নিজেকেই লইতে হয়। 

(৫) কথ্নও আটিল জামা, বেণ্ট, বা কষিয়া কাপড় পরা কতব্য 
নহে । ইহাতে পরিমিত স্বাসক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটে। 

(৬) নাক দিয়াই সর্বদ! প্রশ্বাস লইবে। 


১৯৮ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 
€গ) বিশ্রাম 


বিশ্রাম (7899৮)।--শারীরিক সমতাই স্বাস্থ্া, আর 'বৈষম্যই 
রোগ (779816 19 ৪5700)005, 0156889 18 061072015 )-- 
জনৈক বিশিষ্ট চিকিৎসকের ইহাই অভিমত । পরিশ্রমে শারীরিক 
বৈষম্য ঘটায়, ক্লাস্তি উপস্থিত হয়; সমতা-সাধনের জন্য তাই বিশ্রামের 
প্রয়োজন । ক্লান্তির ( মা০) কারণ__পরিশ্রমে শরীর অল্নাত্বক 
বিষের (0510) আধিক্য হয়। রক্তসহযোগে সেই বিষ মস্তিক্ধে 
নীত হইলে, তৎক্ষণাৎ বিশ্রাম-গ্রহণের ইঙ্গিত হয় ১ ইহাই ক্লাস্তি। 
ক্লান্ত ব্যক্তির রক্তের বিষ এত তীব্র যে, স্থস্থদেহে সে রক্ত প্রবেশ 
করাইয়। দিলে, সুস্থ প্রাণীর মৃত্যু ঘটিবার সম্ভাবনা। পরিশ্রমে 
যেমন শারীরিক উপাদান ক্ষয় পায়, তেমনি মস্তিফও ক্ষয়প্রাণ্ত হইয়া 
দর্বল হইয়া পড়ে। পরিশ্রমে মস্তিষ্কের কোষগুলি অতিমাত্রায় উত্তেজিত 
হওয়ায়, সমস্ত শরীরে ক্লান্তি আনে। তাই বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। 
শরীরের যে অংশের যতটুকু ক্ষয় হইয়াছিল, বিশ্রামে সেই সকল 
অংশের ক্ষয়পুরণ হইয়! শ্রাস্তি ক্লান্তি দুর হয়, এবং সঙ্গে সঙ্গে 
শরীর ও"ম্ন পুনরায় সতেজ হইয়া উঠে। 

নিদ্রা (316০ )।-_নিয়ত-পরিচালিত দেহ্যস্ত্রের স্বাভাবিক 
বিশ্রাম_নিদ্রা। নিদ্রা আমাদিগের পরিশ্রান্ত ননাযুমণ্ডলীকে শক্তিশালী 
করে। নিদ্রা-প্রভাবে পেশীসমূহ সবল হয় ও শরীরে নৃতন ক্ষতি ও শক্তি 
আসে । শ্রমীর অস্তরে নিত্রা তৃপ্তি দান করে এবং সে পুনরায় কর্মক্ষম 
হয়। শরীরের পুষ্টির পক্ষে নিত্রা ও বিশ্রাম দুই-ই আবশ্যক । 

নিদ্রাবস্থায় শ্বাস-প্রশ্বাসের এবং হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়া ধীরে ধীরে 
চলিতে থাকে । এই সময় প্রশ্বাসযোগে শরীরে অক্সিজেন অধিক 


ব্যায়াম ১৯৯ 


পরিমাণে গৃহীত, হয় এবং নিংশ্বাসযোগে কার্বনিক আসিড গ্যাস অল্প 
পরিমাণে বহির্গত হয়। অক্সিজেন অধিক পরিমাণে গ্রহণ করা হয় 
বলিয়া, দেহে নববলের সঞারে নিদ্রাভঙ্গ ঘটে। নিদ্রায় পাকস্থলী বিশ্রাম 
করে; হতরাং রাত্রিকালে অল্প পরিমাণ আহার আবশ্যক । নিদ্রা 
যাইবার সময় মন্তকে শৈত্য প্রয়োগ করিলে, রক্ত দূরে অপস্থত হয়; 
ফলে, শীঘ্র শীপ্ব নিদ্রা আসে । নিদ্রা যাওয়ার পূর্বে চক্ষু, মুখমণ্ডল, কর্ণ ও 
্বন্ধ ( ঘাড়) প্রভৃতি শীতল জলে ধৌত করিলে স্থনিদ্রা হয়। 

সাধারণত বয়সের তারতম্য অনুসারে নিদ্রা কমবেশী হয়।, 
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে শিশুগণ ১৬ ঘণ্টা কিংবা তাহারও অধিক সময় 
নিদ্রা যাইয়া থাঁকে। ৪1৫ বৎসরের বাঁলক-বালিকাগণ ১২ ঘণ্টা 
নিদ্রা যাইবে । ৬ হইতে ১০ বৎসরের বালক-বালিকারা ৯ হইতে 
১১ ঘণ্টা নিদ্রা যাইবে। তাহার পর হইতে পূর্ণ বয়স্ক হওয়া 
পর্যন্ত ৭ হইতে ৮ ঘণ্ট1 নিদ্রা যাওয়া কতব্য। তাহার পর ৬ ঘণ্টা 
নিদ্রা যাওয়াই প্রশত্ত। বৃদ্ধ লোকের আবার ১৭ হইতে ১২ ঘণ্টা 
পর্যস্ত বিছানায় থাকা উচিত । দ্িবাঁভাগে অধিকক্ষণ নিদ্রা যাওয়া 
স্বান্থ্যের পক্ষে অনিষ্টকর । গ্রীক্মপ্রধান দেশে গ্রীষ্মাতিশয্যে শরীরে 
অবসাদ আসিয়া নিদ্রালু করে। মে অবস্থায় অল্পনিদ্রা'মন্দ নহে | 
যাহারা প্রাতঃকালে অধিক পরিশ্রম করে, দ্িবাভাগে স্বল্পনিত্রা 
তাহাদের পক্ষে হিতকর। 


€ঘ) ব্যাকসাম (7%51515 ) 
০০০০০ 


হীর। ভন এডাখনাসেল শন 


দেহের ও মনের স্বাস্থ্য ও স্কত্তিলাভের জন্য সংযতভাবে দেহের 
অঙ্গ-প্রতাঙ্গের পরিচালনার নাম ব্যায়াম । জীবন-সংগ্রামে বিজয়লাভের 
নিমিত্ত আহাধ সংগ্রহ হইতে আত্মরক্ষা পর্ধস্ত যাবতীয় কার্ধে বাহুবলের 


২০০ প্রবেশিকা গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


বা শক্তির প্রয়োজন হয়। নিয়মিত ব্যায়াম দ্বার! মায়বিক:ও পৈশিক 
উন্নতিতে আমরা সে শক্তি লাভ করি। পেশীর ও স্নায়ুর পুষ্ট 
ছাড়াও ব্যায়াম দ্বার দেহ-কোষের এবং শরীরাভ্যস্তরস্থ গ্রস্থিমমূহের 
অশেষ উন্নতি হয়। 

প্রকৃত স্বাস্থ্য লাভ করিতে হইলে, প্রত্যহ কোনও না কোন প্রকার 
ব্যায়াম করা অবশ্ঠ কতবব্য। ব্যায়াম দ্বার! যে অঙ্গের যত অধিক 
চালন। হয়, সে অঙ্গ তত অধিক পু্টিলাভ করে এবং তত অধিক কার্ধক্ষম 
হয়। অঙ্গচালনা না করিলে, মাঁংসপেশী হীনবল হইয়া পড়ে এবং 
ক্রমশ শুকাইয়! যায়। ব্যায়ামের ফলে, দেহ ও মন সংযত হয়) 
অঙ্গভঙ্গি সু হয়; মাংসপেশীসমূহ দৃঢ়, পুষ্ট ও সবল হইয়া উঠে; 
ব্যায়ামকালে বেশী রক্তচলাচলের ফলে শরীরে বেশী পরিমাণ অক্সিজেন 
আমদানি হয়; ক্ষুধা ও পরিপাক শক্তি বাড়ে ; ন্বায়ুমণ্ডলী স্থপুষ্ট হওয়ায় 
স্বনিদ্রা হয় এবং দেহে ও মনে স্ফকতি আসে শ্বাস-প্রশ্বাস দীর্ঘ হয় এবং 
দম বাড়ে; হৃৎপিওড দৃঢ় ও শ্রমসহিষুঃ হয়; এবং ঘম? মুত্র ও মল 
নিয়মিত নিষ্ষাশিত হওয়ায়, মানুষ নীরোগ ও দীর্ঘায়ু হয়। 

ব্যুয়ুম কি? শরীরস্থ মাংসপেশীসমূহের চালনার নাম ব্যায়াম । 
অঙ্গ-চালনার সময় কতকগুলি পেশী আকুষঞ্কিত ও কতকগুলি পেশী 
প্রসারিত হয়। বাহু আকুঞ্চিত করিলে সম্মুণস্থ “বাইসেপ' নামক 
মাংসপেশি সংকুচিত হয় এবং পশ্চাদ্দিকে ট্াইসেপ, নামক পেশী 
প্রসারিত হইয়া পড়ে। মাংসপেশীসমূহের আকুঞ্চন ও সম্প্রসারণ 
কালে তাহাদের কতকগুলি পরিবর্তন সংঘটিত হয়। এই পরিবতনের 
ফল .যে মাংসপেশীসমূহেই লক্ষিত হয়, তাহা নহে; পরস্ত 
শরীরের অন্যান্ত যন্ত্াদিরি উপরও ব্যায়ামের ফলাফল লঙক্ষিত 


হইয়া থাকে । 


ব্যায়াম ২০১ 


মাংসপেশীসমুহ্বের উপর ব্যায়ামের ক্রিয়া ।--মানুষের 
শরীরে ছুই প্রকার মাংসপেশী দেখা যায়। এক প্রকার মাংসপেশী 
আমাদের ইচ্ছাশক্তির অধীন । হন্তপদাদির পেশীসমূহ আমরা ইচ্ছা 
করিলেই চালনা করিতে পারি। এই সকল পেশী আমাদের ইচ্ডাধীন; 
কিন্ত, আর এক প্রকার পেশী আমাদের ইচ্ছাধীন নহে। অন্ত্স্থিত 
পেশীসমূহ এই পর্যায়ের অস্তর্গত। এই সকল পেশী আমরা ইচ্ছা করিলেই 
চালন1 করিতে পারি না। 

কর্ণের ও মন্তকের পেশী যদিও ইচ্ছাধীন, তথাপি আমাদের মধ্যে 
অনেকেই ইহাদিগকে ইচ্ছাছগলাবে চালিত করিতে পারেন না, অতি 
অল্লসংখ্যক লোকই কান নাড়িতে পারেন। ব্যায়ামকালে কেবলমাত্র 
ইচ্ছাধীন পেশীসমূহ সঞ্চালিত হইয়া থাকে । যে সকল পেশী আমাদের 
ইচ্ছাধীন নহে, তাহাদের কার্য আমার্দের অজ্ঞাতসারে হয়। 

ব্যায়ামের উদ্দেন্ত--শরীরের সর্বাংশ সুগঠিত করা, উহাকে 
স্বাভাবিক নিয়মে কাধতৎপর রাখা, অকাল-বার্ধক্য হইতে রক্ষা পাওয়া 
এবং ব্যাধি-প্রতিষেধক শক্তি বলবতী করা। 

অতিরিক্ত ব্যায়ামের কুফল,।__অতিরিক্ত ব্যায়ামে মাংসপেঙগী- 
সমূই ক্ষীণ হইয়া পড়ে এবং শরীরে পুষ্টির অভাব হয়। খাগ্দ্রব্যের 
সারাংশ শরীরে সম্যক্রূপে গৃহীত না হওয়ায় পরিপাক-শক্তির ব্যাঘাত 
ঘটে। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীর রোগপ্রবণ হয় এবং সহজেই সংক্রামক 
ব্যাধির দ্বার! 'আক্রান্ত হইয়! থাকে | এই কারণে সংক্রামক ব্যাধি উপস্থিত 
হইলে, কোন প্রকার অতিরিক্ত পরিশ্রমের কার্য করা উচিত নহে। 

ব্যাকসামের সময়।- প্রত্যুষে ও অপরাহে ব্যায়াম প্রশস্ত। 
সময়াভাবে রাত্রিকালও ব্যায়ামের পক্ষে অন্পযুক্ত নহে। ব্যায়ামকাঁলে 
উস পূর্ণ থাক! বা খালি থাক ভাল নছে। 


২০২ প্রবেশিকা গার্ন্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি ' 


ব্যায়ামের স্থান।- উন্মুক্ত স্থানে ব্যায়াম করা কতব্য। 
গৃহাভ্যন্তরে ব্যায়াম করিতে হইলে, ঘরের দরজা, জানালা প্রভৃতি 
খুলিয়া রাখা উচিত । শীতকালে উন্মুক্ত স্থানে ব্যায়াম করিতে হইলে 
শরীর উপযুক্ত বশ্বে আচ্ছাদিত করিয়া ব্যায়াম করা কতব্য; 
কারণ, ঘমেখদগম হইবার পর হঠাৎ ঠাণ্ডা লাগিয়া সর্দি হইবার 
সম্ভাবনা আছে। 

ব্যায়াম সকলেরই করা উচিত । পাঁচ বৎসরের বালক হইতে ঘাট 
বৎসরের বৃদ্ধ পর্যন্ত ব্যায়াম দ্বারা শরীরের উতৎ্বকর্ষ সাধন করিতে পারেন। 

ব্যায়ামের প্রকারভেদ | খেলার ভিতর দিয়া ব্যায়াম অভ্যাস 
করিলে যেমন আমোদ পাওয়া যায়, সেইরূপ শরীরেরও কাজ করা হয়। 
্বদেশী ও বিদেশী খেল! ছেলেদের ব্যায়ামে প্রচলিত করা উচিত; তবে 
দেখা প্রয়োজন, আবশ্টকের বেশী পরিশ্রষ না হয়। আমাদের দেশের 
কপাটি, হাড়ু ডূ, ব্রতচারী নৃত্য প্রর্ভৃতি খেলায় বেশ অঙ্গ-চালনা হয়। 
বিদেশী খেলায়, অর্থাৎ ফুটবল, টেনিস্‌, জিমন্যাস্টিক্‌, হকি, গল্ফ, 
বাট্বল, ব্যাড.ফি্টন্‌ প্রভৃতি খেলায় অল্লক্ষণের মধ্যে বেশ ব্যায়াম হয়। 
ঘোড়ায় চড়া, নৌকা বাহিয়া যাওয়া, পদব্রজে বা সাইকেলে ভ্রমণ ও 
সম্ভরণ প্রভৃতিও উত্তম ব্যায়াম। এদেশে অধুনা যে-সকল ব্যায়াম 
প্রচলিত আছে, তন্মধ্যে ডন-ফেলা, মুণ্ডর ভাজা প্রভৃতি [7৭০০:: 
087009, অর্থাৎ ঘরের মধ্যে করিবার উপযুক্ত ব্যায়াম; আর অন্ান্ 
সকলই 017,000) 081069 । শ্রীযুক্ত গুরুসদয় দত্ত মহাশয় কর়কি 
নব-প্রবতিত 'ব্রতচারী নৃতা”কে আউটডোর গেম বল! যায়। 

গৃহের অভ্যন্তরে অথবা ছাদের উপর “ডন"-ফেলা ও মৃগ্ডর ভাজা 
প্রভৃতি বেশ উত্তম ব্যায়াম। জাপানী বালক-বালিকাগণ 'যুযুৎ্সঃ 
(38150 ) নামক এক প্রকার ব্যায়াম করিয়া থাকে । উহা বিজ্ঞাম- 


সান, ঈাত ও চুল প্রভৃতির যত ২০৩ 


সম্মত অচ্তি উৎকৃষ্ট ব্যায়াম | উহাতে পায়ে খুব বল হয়। স্যাণ্ডো 
সাহেবের ডাম্বেল ( [)স0 100]]9 ) ভ্রীড়াও বেশ ব্যায়াম। 

ব্যায়াম-কালে বালক ও বালিকারা যে চীৎকার করে, উহা! সম্ভবমত 
হইলে ভাল হয়; কারণ, এ প্রকার চীৎকারে স্বরযস্ত্রের ও ফুস্ফুসের 
যথেষ্ট চালন। হইয়া থাকে । 


(ও) সান, দাত ও চুল প্রভৃতির যত 


আন।-__পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জানের মুখ্য উদ্দেশ্ট । ন্বানের গৌণ, 
উদ্দেশ্য-_শরীরকে সিদ্ধ ও চমকে উত্তেজিত করিয়া আরাম অন্ভভব 
কর! । স্নানের পূর্বে অন্তত দশ পনর মিনিট ধরিয়া সমস্ত দেহে উত্তমরূপে 
সরিষার তৈল মর্দন করা উচিত এবং আানের সময় পরিষ্কার গামছ]1 দিয়া 
এ তৈল ঘষিয়! উঠান কতব্য। তারপর সমস্ত দেহ শুষ্ক করিয়৷ মুছিয়া 
ফেলা উচিত । 

সাধারণত শীতল জলে অবগাহন করিয়া, পরক্ষণেই উঠিয়া আনিলে 
ল্লানের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়। ঘমর্ণক্ত কলেবরে স্নানে অপকার হয় । 
গরমের সময় স্নান তৃষ্চিকর হইলেও বহুক্ষণ জলে থাক উচিত 
নহে। আ্রানের পরক্ষণেই যদি ত্বক ম্বাভাবিক উজ্জ্বল-বর্ণ ধারণ 
করে, তাহা হইলে শীতল জলে ত্রান করিলে কোন ক্ষতি হয় না। 
যদি দান করিলে গায়ে কাটা দেয়, অথবা শরীর শীতে কাপিতে 
থাকে, আঙুলের অগ্রভাগ অত্যন্ত ঠাণ্ডা ও নীলাভ হয় ( চুপ-সিয়া যায়), 
তাহ! হইলে সেরূপ স্্ান অনিষ্টকর। ছোট শিশু বা অতি বুদ্ধ, ছুর্বল বা 
রোগ গ্রস্ত ব্যক্তির শীতল জলে আান কর! কখন উচিত নহে । 

উষ্ণ জলে স্নান করিবার পরক্ষণেই ত্বকের তাপ হাস পাইতে থাকে । 
আববোগে গায়ের তাপ হ্রাস করিবার জলন্ত রোগীকে মধ্যে মধ্যে উঃ 


২০৪  প্রবেশিক। গার্স্থ্--বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


জলে স্নান করাইবার অথবা উঞ্ণ জলে গামছা ভিজাইয়া গ! মুছাইবাৰ 
(9[026106 ) যে বিধান আছে, তাহারও এই উদ্দেশ্য । উ্ণ জল গায়ে 
লাগিলে ত্বকের দিকে অধিক রক্ত সধালিত হয়। তখন বক্তের 
উত্তাপ বহির্বায়ু-সংস্পর্শে বিক্ষিপ্ত হওয়ায় তাপ কমিয়া যায় । রক্তহীন 
ক্ষীণাঙ্গ ব্যক্তি উষ্ণ জলে ন্নান করিয়া, কখন কখন মৃছিত হইয়া পড়ে। 
তাহার কারণ এই যে, উক্তব্যক্তির শরীরে যে সামান্য পরিমাণ রক্ত 
থাকে, তাহা ভিতর হইতে বাহিরে ত্বকের দিকে বেগে ধাবমান 
হয় এবং তাহার ফলে মন্তিষ্ষ প্রায় রক্তশূন্য হইয়া পড়ে। শীত 
বোধ হইলে উষ্ণ জলে ন্নান স্থখকর ও ন্বাস্থকর হয়। স্বাস্থ্যবান্‌ 
ব্ক্তি নিদ্রা যাইবার পূর্বে গরম জলে স্নান করিয়া লইতে পারেন? 
কারণ, গরম জলে স্নান করিলে প্রগাঢ় নিদ্রা আসে। উপবাদের সময় 
অথবা উদর পূর্ণ করিয়া আহারের পর কিংবা কঠিন পরিশ্রমের 
অবাবহিত পরেই ্বান করা উচিত নহে। সকাল বেলাই ন্রান করিবার 
প্রশস্ত সময়। কেহ কেহ অতি প্রতাষে, কেহ বা বেল! নটা কিংবা 
৯॥ টায় সান করিয়া থাকেন। 

যু) দাত দাত পরিষ্কৃত না রাখিলে মুখে গন্ধ হয়। তাহাতে 
পাতে ময়লা অসিয়া পৃ হইতে পারে এবং গাতের উপরকার পালিশ 
ন্ট হইলে, দাত দুর্বল হইয়া পড়ে এবং অকালে দাত পড়িয়া যায়। 
টোম্‌্‌ সাহেব ( 110. [07795 ) এই উপদেশ দিয়াছেন যে, শক্ত ক্রুশ, 
দিয় দিনে অন্তত ছুই বার দীত ভাল করিয়া মাজিবে। দাত যদি. 
ক্ষয়প্রা্ত হয় (82168) বা তাহাদের ভিতর ছিদ্র থাকে, তাহা! 
হইল্লে রেশমের আশ তাহার মধ্যে সতর্কভাবে প্রবেশ করাইয়া দিয়া, 
প্লাতের উপরিভাগ সম্যক্‌ গ্রকারে পরিফার কবিবে। দাতের মধ্যে 
যেখানে খাস্ের টুকৃরা। আট্কাইয়া থাকে, এবং সেখান হইতে যি 


সান, ধাত ও চুল প্রভৃতির ঘন্ব ২০৫ 


অবিলম্বে উহ্বাকে অপহৃত কর! না হয়, তাহা হইলে সেস্থান, আজ 
হউক আর কাল হউক, ক্ষয়প্রাপ্ত ছইবেই ; এবং পাথুরি (াঞছ্ণাঘা ) 
জমিয়া যাইবে। 

জুস্তরক্ষার সর্বশ্রেষ্ঠ উধধই হইতেছে--বিশ্ষুভাবে..স্ত..পৃরিদ্কত, 
রাখা। যে ধাত নড়িতে .আরস্ত করিয়াছে, -ম্াকাকে. কুরিঘ..ফোই 
উচিত। দসম্তরোগের চিকিৎসকের ( ডেট 04051.) ছার! মুধ্যে 
মধ্যে দাত পরীক্ষা করান উচিত। একটি একটি করিয়া দাতগবি 
লম্বালস্বি মার্জনা করিতে হয়। পাশাপাশি সকলগুলি দাত একত্র ঘষিলে, 
দাতের গোড়া! নষ্ট হইয়া য়ায় + 

চুল (781: )1--চুল পরিষ্কত রাখিতে হইলে প্রত্যহ ব্রশ করা ও 
চিরুণীর দ্বারা চুল আাচড়ান আবশ্বাক। সাবান ও গরম জল, অগ্ডের 
কুস্থম ( ০110 ০1 0) ৪৫৪ ), সোডা অথবা! রিটা দ্বারা মন্তকের চুল 
পরিষ্কার করা! প্রশস্ত । তবে, অতিরিক্ত কিছু, যথা, প্রত্যহ সাবান মাখা, 
বিধেয় নহে। সাবান চম-নিঃল্যত রস হরণ করিয়া চুলকে শুফ ও 
ভঙ্গগ্রবণ (015 76) 0171010 ) করে। স্থতবাং, চুলের জন্য নরম 
সাবান ব্যবহার করা উচিত। দাড়ি নিজে নিজে কামান কতবা। 
নাপিতের ক্কুর কখনও ব্যবহার করা উচিত নহে। | 

ত্বক (917) ।-_ আমাদের দেশ গ্রীন্মপ্রধান। সেইজন্য এদেশে 
ঘর্ম একটু বেশী হয়। ঘমেরি উপাদানে জলীয় ভাগ বেশী হইলেও 
উহাতে লবণ ও রসজাতীয় পদার্থ (0119 ৪0109187709) আছে। 
সাধারণত সুস্থ শরীরের ঘর্ম অগ্পরসযুক্ত ও ক্ষার-রসযুক্ত বলিয়া, উহা! 
হইতে দুর্গন্ধ বাহির হয়। আমাদের শরীর হইতে প্রত্যহ প্রায় তিন 
পোয়া কিংবা তদধিক পরিমাণ ঘর্ম নির্গত হয়। গ্রীষ্মকালে এই ঘরের 
পর্রিমাণ আরও বেশী হয়। আমাদের স্বকৃ যদি সর্বদা পরিস্কত রাখা 


২০৬ প্রবেশিক গা্‌স্থয-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


না হয়, তাহা হইলে ঘম€-নির্গমনের ছিদ্রসকল বন্ধ হইয়া যায় এবং 
ঘর্ম-নির্গমনে ব্যাঘাত জন্মে | চর্ম তাহার কাজ রীতিমত ন1 করিলে 
মৃত্রাশয় ও ফুস্ফুস্কে অনেক কাজ করিতে হয়; আর তাহাতে স্বাস্থ্য 
নষ্ট হইয়া! শরীর অসুস্থ হইয়া পড়ে। 

রসঙ্জাতীয় পদার্থ শরীর হইতে বাহির না হইলেই মুখে ব্রণ প্রভৃতি 
উঠে। শরীরে ময়লা জমিলে বা তাহা পরিষ্কার না করিলে, নানাবিধ 
চমরোগ জন্মিয়া থাকে। যাহারা বেশী শারীরিক পরিশ্রম করে, 
তাহাদের অধিক ঘমনির্গমনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ময়লা কাটিয়া যাঁয়। 
যাহাদের বলিয়া কাজ করা অভ্যাস (5০00611877৮ 1791))15 )১ তাহাদের 
শরীরের ত্বক পরিষ্কৃত রাখ! সম্বন্ধে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন আবশ্যক । 
ত্বক পরিফার বাখিবার জঙ্য তিনটি দ্রব্যের প্রয়োজন; যথা প্রচুর 
জল, একখানি স্থন্দর সাবান ও রীতিমত শরীরমর্দন। যেকোন 
প্রকারের সাবান ব্যবহার করা উচিত নহে। যে সাবান ব্যবহারে 
ত্বক রুক্ষ হয় এবং গা চড়ডড়, করে (1171160100৫ ), সে সাবান ব্যবহার 
করা উচিত নহে । আমাদের দেশে ম্নানের পূর্বে সমস্ত শরীরে তৈল 
মাখার রীতি আছে। সরিষার তৈল সর্বশরীরে সজোরে মান করা 
উচিত। উহাতে শরীরের ত্বক মস্থণ হয়, রক্তসধ্ালন দ্রুত হয়, 
মাংসপেশীসমূহের ব্যায়াম হয় ও সর্বশরীরে আরামদায়ক ভাবের উদয় 


হইয়া থাকে । 

সাবানের ব্যবহার ও তাহার কার্য । আমরা পরিফফার- 
পরিচ্ছন্ন থাকিবার জন্য সাবান ব্যবহার করি। শারীরিক পরিচ্ছন্নতার 
অধ্যায়ে ক্ষার-পদার্থের ব্যবহাবের বিষয় বলা হইয়াছে । সাবান, ক্ষার- 
জাতীয় পদার্থ ও তৈলের যৌগিক সংমিশ্রণ । তৈল ও ক্ষার রাসায়নিক 
প্রক্রিয়ার সংমিশ্রণে একটি যৌগিক দৃঢ় পদার্থে পরিণত হইয়া সাবান হয়, 


শরীরের পরিচ্ছন্নতা ২০৭ 


গ্লিসারিন নিষ্কাশন করিয়া দেয়। যে সকল সাবান খারাপ ও যাহাতে 
ক্ষার আল্গাভাবে থাকে, অর্থাৎ রাসায়নিক সংমিশ্রণে মিসারিন ভাগ 
নিষ্কাশন করিয়াও অধিক পরিমাণে ক্ষার থাকে তাহাই খারাপ সাবান। 
সেগুলি অত্যন্ত শক্ত ও তাহার বাবহারে ,চামড়ার কোমলত্ব নষ্ট হয়। 
এইবূপ বেশী ক্ষারযুক্ত সাবানে কাপড় কাচিলেও কাপড়ের আশ বা 
51): ( তন্ত) ইতস্তত বিক্ষিপ্ত হয় ও সময়ে সময়ে গলিয়! বা জীণ হইয়া 
যায়। এইজন্য যে সাবান শক্ত ও খারাপ তাহা গায়-তো মাখিবেই না, 
এই প্রকার খারাপ সাবানে কাপড় কাচিলেও কাপড়ের অপচয় হয়। 
যে সাবান মস্থণ ও যাহার উপর হাত দিলে তেলাভাব বুঝায় ও সহজে 
ফেনা হয়, তাহাই ভাল সাবান; অবশ্ত কাপড় কাচাই হউক আর 
গায় মাখাই হউক, “কোমল জল” (891৮ ৮৮1৫") সর্বদাই বাবহার 
করা কতব্য। জলের অধ্যায়ে খর জল ব্যবহারে সাবানের কত 
অপচয় হয় তাহাঁও বিশদভাবে বলা হইয়াছে । 


(চ) শরীরের পরিচ্ছন্নতা ও তাহার রক্ষার জন্য কার্পাস- 
জাত, রেশমী ও পশমী দ্রব্যের ব্যবহার 


আমাদের সমস্ত শরীর চমে আবৃত । হাত, পা, মাথা, মুখ' প্রভৃতি 
কতকগুলি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ লইয়াই শরীর গঠিত । এঁ সকল অঙ্গ-প্রতাজের 
যত্ব করার নামই শরীরের যত্ব। ঠিকমত শরীরের যত্ব করিতে পারিলে 
স্বাস্থ্য ভাল থকে । শরীর সুস্থ রাখার আর এক নাম স্বাস্থ্য-রক্ষা। 
যে সমস্ত স্থনিয়ম পালন ও অভ্যাস করিলে স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়, 
তাহাদের মধ্যে শরীরের পরিঞ্ধার-পরিচ্ছন্নতাই প্রধান । 

শরীর পরিফার ও পরিচ্ছন্ন থাকিলে সর্বদা মনে একপ্রকার পবিভ্র- 
ভাব জাগে, শ্ষ,তি-বোধ হয় এবং বেশ আনন্দ পাওয়া যায়। পরিচ্ছন্ন 


২০৮ প্রবেশিক! গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ছেজেমেয়েদিগকে সকলেই ভালবাসে ও আদর করে; কিন্ত অপরিচ্ছন্ 
ছেলেমেয়েদিগকে অনেকেই দ্বণা করে। | 

আমাদের চারিদিকে ধুলা, বালি প্রভৃতি ময়লা দেখিতে পাওয়া যায়। 
উহার ভিতরে নানা রোগের. জীবাণু থাকে । সর্বদা শরীর পরিচ্ছন্ন 
থাকিলে সহসা উহা আমাদের দেহে প্রবেশ করিতে পারে না। স্থতরাং, 
পরিষ্ষার ও পরিচ্ছন্ন লোকের! সহজে অসুস্থ হয় না। 


সৃতি, পট্ট, রেশমী ও পশমী বজ্সাদির ব্যবহারের সহিত 
স্বান্ছ্যের আপেক্ষিক জন্ধন্ধ।__সৌন্দ্যবর্ধন, লজ্জানিবারণ, শীত ও 
তাঁপ হইতে দেহকে রক্ষা করা, দেহের উত্তাপের সমতা রক্ষা করা 
এবং বাহিরের ময়লা ও কাটাদির দংশন হইতে দেহকে বক্ষা করার 
নিমিত্তই আমরা নানাপ্রকার পোষাক-পরিচ্ছর্দ পরিধান করিয়া থাকি। 
প্রধানত শরীরের উত্তাপ স্বাভাবিক রাখিবার জন্যই বস্থাদি পরিধানের 
প্রয়োজন । কেবল যে ঠাণ্ডা হইতে রক্ষা পাইবার জন্যই বস্্রাদির ব্যবহার 
কতবব্য, তাহা নহে; উত্তাপ-রক্ষার নিমিত্ত উহা ব্যবহৃত হয়। স্থতরাং, 
আমাদের পরিধেয় বস্ত্রা্দির উপর আমাদের স্বাস্থ্য যথেষ্ট পরিমাণে 
নির্ভর করে। 

আমর! ষে খাগ্ গ্রহণ করি তাহার “কার্বন, এবং “হাইড্রোজেন*এর 
সহিত “অক্সিজেন” মিলিত হওয়ায় দেহে উত্তাপের তৃষ্টি হয়। এই 
উত্তাপ দেহ হইতে বিকীর্ণ না হইলে, ক্রমশ বুদ্ধি পাইতে থাকে এবং 
আমাদের মৃত্যু ঘটে। আমাদের গাত্র-চর্মবাহিত ঘর্ম, ফুস্ফুসের 
নিঃশ্বসিত বাছু এবং মল, মৃত্র প্রভৃতি দ্বারা দেহের উত্তাপ কতকটা! 
নষ্ট হয়; উত্তাপের উৎপত্তি এবং ব্যয় সমভাবে হইলে, শরীরের 
উত্তাপের সমতা রক্ষিত হয়। প্রধানত চমছ্বারা দেহ হইতে উত্তাপ 
নির্গত হয়। সুতরাং, আমাদের পরিধেয় বস্ত্াদি এমন হওয়া 


শরীরের পরিচ্ছন্নতা , ২০৯ 


উচিত যাহাতে এই কার্ধ নিয়মিতভাবে হয়। আমরা আমাদের 
পোষাক-পরিচ্ছদ পশুলোম, পশুচর্ম, রেশম কাট, কার্পাস-স্থত্র, শণ 
প্রভৃতি হইতে পাই । 


পশুলোম হইতে |-_এজোরা, মেরিনো, ফ্লানেল, কাশ্মীরী শাল, 
আলোয়ান, আলপাকা ইত্যাদি । 


রেশম কীট হইতে ।--রেশম, মখমল, শাটিন, ক্রেপ, তাফতা, 
এগ্ড, মটকা, গর?, তসর, বেনারসি, চেলি ইত্যাদি । 


উত্তিজ্জ হইতে ।-_-কার্পাস-তৃলা, শণ এবং রবার। 


তুলা ও শণের বস্্াদি গ্রীন্মপ্রধান দেশে ব্যবহৃত হয়? কারণ, উহা 
ঘর্ম শোষণ করিয়। লয় ও উত্তাপ বিকীর্ণ করে । রেশম পশম (1৮) 
এবং চর্ম প্রভৃতি শীতপ্রধান দেশে ব্যবহৃত হয়; কারণ, উহা উত্তাপ ও 
আর্দ্রতা পরিচালন! করে না এবং দেহ উষ্ণ রাখে। 


আমাদের দৈহিক পরিশ্রমের ফলে সারা দেহে তাপের স্থি হইয়া 
থাকে । খা্য এই তাপ-সমষ্টির মূল কারণ। উপযুক্ত খাছ্য গ্রহণ 
করিলে বেশী পরিচ্ছদের প্রয়োজন হয়না । আবার, দীর্ঘ 'সময় থাক 
গ্রহণ না করিলে, সেই উপবাসী লোকের যথেষ্ট পরিচ্ছদ ব্যবহারেও 
দেহের শীত ভাঙ্গে না। খতুবিশেষে কিংবা অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্য 
নিঃশ্বাসকাধ দ্বারা ও ঘমন্ধপে আমাদের দেহ হইতে তাপ নির্গত হইয়া 
থাকে । অতএব, তাপ-স্থটি ও তাপ-বিকিরণ এই উভয় কাধের মধ্যে 
আমাদের পরিধেয় পরিচ্ছদাদিই দৈহিক তাপের সমতা রক্ষা করে। 
পরিচ্ছদ আমাদের গাত্র-চর্ম হইতে তাপ-সঞ্চালন নিয়মিত রাখে বলিয়াই 
দেহ গরম থাকে । রর 

১৪ 


২১০ প্রবেশিক! গাহ্‌স্থ্-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


পরিচ্ছদ-বন্ধ্রের উপকরণ হিসাবে উহার তাপ-পরিচালন গুণের 
ব্যতিক্রম হইয়া থাকে। 


পশম, রেশম, কার্পাস-তৃলা ও শণ প্রভৃতির ক্রমশ কম তাপ 
পরিচালক) কারণ, এই সকল বিভিন্ন পরিচ্ছদবস্তুর স্থত্রের বুননের 
মধ্যে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রবহুল্তার উপর উহাদের তাপ-সংরক্ষণ-গুণ যথেষ্ট 
নির্ভর করে। তাহা হইলে বুঝিতে হইবে, যে বস্্রের বুননের মধ্যে 
যত বেশী ক্ষুত্র ক্ষুদ্র রদ্ধ, তথায় তত বেশী বাযুকণা আটকাইয়া 
' থাকে বলিয়া উহা! দেহের উত্তাপকে আবদ্ধ রাখে । এই হিসাবে 
ফ্লানেল দেহের উত্তাপ-সংরক্ষণ বিষয়ে প্রথম স্থান লয়। ফ্লানেল 
অপেক্ষা পশম কম গরম। আবার রেশম, তুলা, শণ প্রভৃতি ক্রমশ 
কম গরম। 


সৃতি, পষ্ট, রেশম ও পশম-বস্ত্রাদির সহিত স্থাচ্ছ্যের 
জন্ধন্ধ।-_-আমরা সৃতি, পট্ট ও রেশমী-বস্ম পরিধান করি ও জামা গায়ে 
দেই; আবার জামার নীচে গেঞ্, ফতুয়া, ব্লাউজ, শেমিজ এবং মোজা 
প্রভৃতি ব্যবহার করিয়া থাকি । আমরা শীতকালে পশমের তৈয়ারী 
গরম জামা, শাল, আলোয়ান কম্ফর্টার ইত্যাদি এবং গ্রীত্মকালে সুতা 
কিংবা রেশমের তৈয়ারি পাতলা জামা ব্যবহার কৰি। 

সৌন্দর্ধবর্ধন, লজ্জানিবারণ এবং শীত ও তাপ হইতে দেহকে রক্ষা 
করিবার নিমিত্বই আমরা নানাগ্রকার পোষাক-পরিচ্ছদ পরিধান করিয়া 
থাকি । 

পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড়ে দেহ আবৃত থাকায় সহসা বাহিরের ময়লা 
গায়ে লাগিতে পারে না । অতএব, আমাদের পরিধেয় বস্ত্বের উপরও 
আমাদের স্বাস্থ্য যথেষ্ট পরিমাণে নির্ভর করে। 


জামা-কাপড় শয্য! প্রভৃতির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নত। . ২১১ 


(ছ) জামা-কাপড়ের চ্যায় শয্যা -সম্বদ্বেও 
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ধনভার প্রয়োজন 


বিছানার চাদর, বালিশ, লেপ ও, তোষকাদির ওয়াড়, মশারি 
প্রভৃতি গায়ের ঘামে এবং বাহিরের ময়লায় অপরিষ্কৃত হইয়া থাকে । 
এই সমস্ত দ্রব্যও ধোপাবাড়ী দিয়া কাচাইয়৷ লইবে কিংবা বাড়ীতেই 
সাজিমাটি বা সাবানের দ্বার পরিষার করিয়! লইবে। লেপ, তোষক, 


খা 





বালিশ, মাদুর, সতরঞ্চ, কম্বল প্রভৃতি ছুই এক দিন অস্তরই প্রথর রৌদ্রে 
ও বাতাসে দিয়া শুকাইয়া লইবে | হূর্যকিরণ ও নিম বায়ুতে বন্ধ 
রোগের বীজাণু নষ্ট হয়। বৌদ্রে বিছান৷ শুকাইয়া লইলে শুইতেও বেশ 
আরাম বোধ হয় এবং ছারপোকার উপদ্রব কমিয়া যায় । 


হ্ম$ *্পল্িজ্জ্ছে 
রোগ-সংক্রমণ ও পরিশোধন 


রোগ-সংক্রমণ 


কোন ব্যাধিগ্রস্ত ব্যক্তির দেহ হইতে রোগ-জীবাণু অপর কোন 
সথস্থ ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করিয়া তথায় ব্যাধির হ্ৃ্টি করে; ইহাকে 
রোগ-সংক্রমণ বলে। ন্থৃতরাং, ষে সকল রোগ এক ব্যক্তির শরীর 
হইতে অপর কোন ব্যক্তির শরীরে সংক্রমিত হয়, তাহাদিগকে সংক্রামক 
রোগ বলা হয়। সকল রোগেরই প্রায় অল্পবিস্তর সংক্রমণশীলতা 
আছে; কিন্তু, কলেরা, বসম্ত, যা, টাইফয়েড, খোস-পাচড়া প্রভৃতি 
যে সকল রোগ অতি অল্প সময়ে ব্যাপকভাবে সংক্রামিত হয়) সাধারণত 
তাহাদিগকেই সংক্রামক রোগ বলে। 

শরীরের চমেরি সংস্পর্শ দ্বারা, দুষিত বায়ুর সহিত চালিত ধূলিকণার 
স্বারা এবং দূষিত জল, দুষিত দুগ্ধ ও খাছ্যের সহিত আমাদের শরীরে 
রোগ-জীবাণু প্রবেশ করে। স্থৃতরাং, দেহে রোগ প্রবেশের তিনটিই 
প্রধান পথ-_-শরীরের চম”বা চামড়া; নাক ও মুখ। এখন উদাহরণ 
হিসাবে বল! যায়, খোস-পাঁচড়া, দাদ প্রভৃতি রোগের জীবাণু সাধারণত 
রোগীর সংস্পর্শদ্বারা চমেবি ভিতর দিয়া সংক্রামিত হয়; সর্দি-কাশি, 
ইনফরুয়েজী, হাম, বসন্ত, যক্ষা প্রভৃতি রোগের বীজাণু প্রধানত 
শ্বাসগ্রশ্বাসের সঙ্গে দেহে প্রবেশ করে; এবং কলেরা, টাইফয়েড, 
আন্তরিক জর, আমাশয় প্রভৃতি রোগের কীজাণু পানীয় কিংবা! খাছ্য-ভ্রব্যের 


রোগ-সংক্রমণ ২১৩ 


সহিত দেহে প্রবেশ, করে। স্তৃতরাং আমরা বলিতে পারি, সাধারণত 
নিয্ললিগ্লিত পাঁচ প্রকারে রোগের বীজাণু এক দেহ হইতে দেহাস্তরে. 
সংক্রামিত হয়।__ 


(১) রোগীর সংস্পর্শ দ্বার! ; 

(৫২) ধুলিকণ। দ্বারা; 

(৩) জলের দ্বারা; 

(8) মাছির দ্বারা; 

(৫) নর্দম আস্তাকুড় প্রভৃতির দুবিত তরল পদার্থ 
দ্বারা। 

খোস-পাচড়া, ছু্টক্ষত, কুষ্ঠ প্রভৃতি রৌগ একের সহিত অন্যের 
স্পর্শ দ্বারা শরীরে সংক্রামিত হয়| 


অনেক সময় দেখা যায়, খোস-পাঁচড়া লইয়া একটি ছাত্রী ক্লাসে 
আমদিলে তাভার সংস্পর্শে ক্লাসের অন্ত ছাজীরও খোস-পাচড়া বা 
চুলকানি হয়। ছৃষ্টক্ষত বা ঘা প্রভৃতিও এই ভাবেই মানব-সমাজে 
বিস্তার লাভ করে। কুরোগগ্রস্ত লোক যদি সমাজে চলাফের1 করে, 
ইতস্তত ভিক্ষা করিয়া রাস্তায় রাস্তায় বেড়ায়, জনসমাজে অবাধে 
মেলামেশা করে, তবে কঙ্গব্াধির সংক্রমণ হইতে সমাজকে রক্ষা করা 
স্থক্ঠিন হইবে । স্বতরাং দেখা যাইতেছে যে, শরীরের চর্ম বা ত্বক 
রোগ-সংক্রমণের একটি ভয়াবহ পথ। 

চর্মরোগ গ্রস্ত ব্যক্তির সহিত অবাধ মেলামেশা, এক গৃহে বাস, 
একত্র পান-ভোজন, তাহার ব্যবহৃত জামা, কাপড়, গামছা প্রভৃতির 
ব্যবহার একেবারে পরিত্যাগ করিতে হয়! তাহার ব্যবহৃত বিছানা, 
থালা, ঘটি, বাটি প্রভৃতি &তজনাদ্দি উপযুক্তভাবে শোধন করিয়া ওয়! 


২১৪. প্রবেশিকা গার্বস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিধি 


উচিত। বাসনপত্র কার্বলিক লোশনে পরিশোধন করা যায় ( এক ভাগ 
কার্বলিক আযাসিড, ও ৪ ভাগ জল )। বিছানা, মাছুর প্রস্তুতি উপযুক্ত- 
ভাবে পরিশোধনের উপায় না থাকিলে পোড়াইয়া ফেলাই উচিত । 
পরস্, কুষ্ঠ গ্রস্ত ও দুষ্টক্ষতগ্রস্ত ব্যক্তিদিগের কোন স্কুল-কলেজ, যাত্রা- 
থিয়েটার ও মভা-সমিতি, বা হাট-বাজার, মেল প্রভৃতি জনবহুল স্থানে 
গমনাগমন আইন দ্বারা নিষিদ্ধ করা কতব্য। তাহাদের অনতিবিলম্বে 
বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষিত ও চিকিৎসিত হওয়া উচিত। 

নাক দিয়া শ্বাস-প্রশ্বাস কালে নানারোগের জীবাণু দূষিত বায়ুর 
সহিত শ্বাস-যন্ত্রে প্রবেশ করে। সাধারণ সদি-কাশি, ইনক্লুয়েঞা, ঘুংড়ি- 
কাশি বা হুপিং-কাশি, ডিপথিরিয়া, যক্ষা, হাম, বসন্ত প্রভৃতি রোগ-_ 
সবই জীবাণু দ্বারা সংঘটিত হয়। এই সকল ব্যাধির জীবাণু দূষিত 
বায়ুতেই থাকে; কাশি, গয়েরের সহিত বাহির হইয়া বাযুতে ছড়াইয়া 
পড়ে। কাশি, গয়ের যেখানে-সেখানে ফেলিলে শুকাইয়া তাহা হইতে 
জীবাণু ধূলিকণার আশ্রয়ে ও বদ্ধ হাওয়ায় বহুদিন জীবিত থাকে । 
সামান্ত বাযু-সঞ্চালনে নাক দিয়া তাহারা সুস্থ ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ 
করে ॥ এইরূপে ব্যাধি সংক্রামিত হয়। ত্বাস্তাকুড়, চামড়ার গুদাম, 
পায়খানা, কসাইখানা, নর্দমা প্রভৃতি স্থানের বাযু সব্দা দূষিত থাকে। 
সাধারণের চলাচলের স্থান, হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট অনেক সময়েই 
ব্যাধির জীবাণুপূর্ণ ধুলিকণায় সমাকীর্ণ থাকে । এই সকল স্থানে অনিবার্ধ 
কারণে উপস্থিতিও রোগ-সংক্রমণের সহায়তা করে। কথা বলিবার 
সময় মুখ দিয়াও আমরা শ্বাস গ্রহণ করি; স্থতরাং খুব সতর্কতার সহিত 
রুমাল বা পরিষ্কৃত কাপড়ে নাক মুখ ঢাকিয়া এই সকল দূষিত বাযুপূর্ণ 
স্থানে যাইতে হয়। অনেক সভ্যদেশে দূষিত বারুপূর্ণ স্থানে মুখোস 
বাবহারের ব্যবস্থা অবলদ্িত হইতেছে । 


রোগ-সংক্রমণ , ২১৫ 


মুখ 'দিয়া ব্যাধির জীবাণু নানাপ্রকারে শরীরে প্রবেশ লাভ করে। 
দুষিত জল ও দূষিত খাদ্য গ্রহণ করিলে কলেরা, আমাশয়, উদরাময়, 
টাইফয়েড ও নানাবিধ আন্ত্িক জর এবং নানারকমের কমিরোগ দ্বারা 
আমরা আক্রান্ত হই। 

জল না হইলে আমাদের চলে নাঁ। আমরা জল পান কবি, জলে 
স্নান করি, জল দিয়াই আমাদের বাড়ী-ঘর, বাসন-পত্র ও কাপড়-চোপড় 
পরিষ্কার করি। 

ময়লা ও দুষিত জল পান করিলে উপকার ত হয়ই না, বরং 
তাহার সঙ্গে মিশানেো নানাপ্রকার রোগের জীবাণু ও ময়লা পেটে, 
যাইয়া কমি, অজীর্ণ, কলেরা প্রভৃতি রোগ জন্মায়। দুষিত জলে জান 
করিলে, মুখ ধুইলে কিংবা কাপড়-চোপড় কাচিলে শরীরে ও মুখে 
এবং কাপড়ে-চোপড়ে ময়লা ও নান] দুষিত পদার্থ লাগিতে পাবে। 
ময়লা জলের সংম্পর্শে খোস-পাচড়া, দাদ, চুলকানি প্রভৃতি রোগ 
জন্মিতে পারে। 

যে কোন প্রকার জলই হউক না কেন, সংক্রামক ব্যাধির সময়ে 
মস্তত উহা দশ মিনিট কাল ফুটাইয়! পাঁন করা কত । 

দূষিত জল মিশ্রিত দুগ্ধ দুষিত জলেরই মত অপকারী এবং রোগ, 
বীজাণু-বাহক । জলের মত দুধও অন্তত দশ মিনিট ফুটাইয়া পান করা 
উচিত । ক্ষয়রোগগ্রস্ত গাভীর দুধ ব্যবহারে যক্মারোগ সংক্রামিত হইতে 
পারে। স্থতরাং, দুধ ব্যবহারের পূর্বে বিশেষ সাবধান হইতে হয়, 
যাহাতে যস্ারোগগ্রন্ত গাভীর দুধ ক্রয় করা না হয়। 

দোকানে খাবার প্রায়ই খোলা পড়িয়া থাকে । ধূলিকণা ত; 
তাহাতে অহরহ পড়িতেছেই, অধিকস্ত তাহার উপর সর্বদা মাছি 
ভন্ভন্‌ করিতেছে । 


২১৬ . প্রবেশিকা গার্বস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


মাছি কলেরা, টাইফয়েড, আমাশয় প্রভৃতি বোগগ্রন্ত 'লোকের 
মল-মৃত্র দেখিতে পাইলেই তাহার উপরে বসে ও তাহা খায়। মাছি, 
শু'ড়, পা, ডান প্রভৃতির সাহাযো সেই মল-মৃত্র হইতে রোগের জীবাণু 
বহন করিয়া আনিয়! আমাদের অব্ন-ব্যঞ্নে বসে। অতএব, সেই সকল 
রোগের জীবাণু আমাদের খাদ্য-দ্রব্যের সহিত মিশ্রিত হয়। আমরা 
সেই বিষ অজ্ঞাতসারে খাইয়া ফেলি। তাহার ফলে, আমর কয়েক 
দিনের মধ্যেই সেই সমস্ত মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হইয়া প্রাণ হারাই । 
এইরূপে মাছি লক্ষ লক্ষ লোক মারিয়া ফেলিতেছে। 

শরীরের কোন স্থানে ঘা হইলে মাছি তাহাতে বলিয়া পৃ'্য ও 
রক্ত শুষিয়৷ খায়; বসস্ত-রোগাক্রান্ত ব্যক্তির গায়ে বসিয়! দূষিত পৃযাি 
খাইয়া! থাকে । যম্কারোগী কোন স্থানে থুথু ও গয়ের ফেলিলে, মাছি 
তাহাও খাইয়া ফেলে । কলেরা-রোগীর বমিতে মাছি বসিয়া থাকে। 
এইরূপে মাছি সর্বদাই বহু মারাত্মক ব্যারামের জীবাণু বহন করিয়া অন্ত 
লোকের দেহে সংক্রামিত করে। 

যে সকল কারণে মাছির উৎপত্তি ও বুদ্ধি হয়, তাহা সম্পূর্ণরূপে 
দূর করা উচিত। গোয়াল-ঘরের গোববাদি, আস্তাকুড়ের নানারকম 
দূষিত পদার্থ, পায়খানার মল-মৃত্র এবং সর্বপ্রকার পচনশীল জিনিস 
বাসস্থান হইতে যথারীতি ও যথাসময়ে দূরীভূত করিলে মাছি 
জন্মিতে পারে না। গুহাদি স্ব পরিফার ও পরিচ্ছন্ন রাখিলে যাছি 
তথায় থাকিতে পারে না। রোগীর মলমৃত্র, কোনরূপ দূষিত জিনিস, 
নার্মার অপবিষ্কৃত জল, আবর্জনা! প্রভৃতি পচিতে না পাইলে সহসা 
মাছি জন্মিতে পারে না। রান্না-ঘর পরিষ্কুত রাখিলে এবং খাচ্-দ্রব্যাদি 
ঘখোচিতভাবে জালযুক্ত আলমাবিতে রাখিবার ব্যবস্থা করিলে, তথায় 
মাছির উৎপাত কয হয়। 


রোগ-সংক্রমণ ২১৭ 


এক চামচে “ফরুমালিন্” নামক ধধের সহিত কিছু ছুধ কিংবা চিনি 
মিশাইয়া কাচের বা এনামেলের পাত্রে রাখিয়া দিলে, মাছি উহা! খাইতে 
বসিয়া মরিয়া যায়। বাজারে “ফ্লাই পেপার বা “মাছি-যারা কাগজ” নামে 
মিষ্ট-আঠাযুক্ত একপ্রকার কাগজ কিনিতে পাওয়া যায়; উহাতে মাছি 
বসিলে আট্কাইয় মরিয়া যায় । .“ক্লাইট্র)াপ” বা মাছি-ধরা কলও কিনিতে 
পাওয়া যায়। তাহার ভিতরে মাছি ঢুকিলে আর বাহির হইতে পারে না। 

দূষিত জল, দূষিত, পচা ও ভেজাল খাদ্য, দূষিত জল-মিশ্রিত 
ভেজাল দুগ্ধ ও মাছি দ্বারা দূষিত খাদ্য-ব্যবহারে কি প্রকারে ব্যাধি 
সংক্রামিত হয়, তাহা আমরা সর্বদাই দেখিতে পাই | 

আমাদের নানারূপ ব্যবহৃত জল, বাসন-মাজ! জল, কাপড়-কাচা 
জল, ভাতের ফেন, মাছ-ধোয়া জল, স্নানের জল, আস্তাবল ধোয়া জল, 
নর্দমা ও আস্তাকুড় প্রভৃতির দূষিত তরল পদার্থ মাটিতে চোয়াইয়া ও 
মাটির উপর দিয়া গড়াইয়া গিয়া নিকটবর্তী কৃপ, পুষ্করিণী ও অপরাপর 
জলাশয়ের জল দুষিত করে। এ দূষিত জল দ্বারাও আমাদের শরীরে 
রোগ-জীবাণু সংক্রামিত হইয়া থাকে। 

আমাদের দেশে এতদিন স্বাস্থাবিধি-শিক্ষার যথোচিত ব্যবস্থা না 
থাকায় সংক্রামক ব্যাধি ও তাহার প্রতিকার এবং উহার প্রতিরোধ 
সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান খুব অল্লই ছিল। এখনও স্বাস্থ্যবিধি পালন 
বিষয়ে স্থশিক্ষা যথেষ্ট বিস্তারলাভ না করায় সময়ে সময়ে সংক্রামক 
ব্যাধি মহামারীর আকার ধারণ কবে। এইরূপে প্রতি-বৎনর কলেরা, 
বসন্ত, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি বহু নিবার্ধ ব্যাধিতেও লক্ষ লক্ষ লোকের 
প্রাণ যাইতেছে । সুতরাং সংক্রামক রোগ প্রথম দেখা দিলে, সরকারী 
স্বাস্থ্যবিভাগ, স্থানীয় ইউনিয়ন বোর্ড বা মিউনিসিপ্যালিটি প্রভৃতির 
“হেল্থ অফিসার? মহাশয়কে অবিলম্ে সংবাদ প্রেরণ করা কতবব্য। 


২১৮ প্রবেশিক! গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ইউনিয়ন বোর্ড, মিউনিসিপ্যালিটি, জেলা বোর্ড প্রভৃতি সরকারী 
প্রতিষ্ঠানসমূহ সংক্রামক ব্যাধিগ্রন্ত ব্যক্তির চিকিৎসা, সেবা-শুশ্রষা 
হইতে আরম্ভ করিয়! সংক্রামক মহামারী-প্রতিরোধেরও ব্যবস্থা 
করিয়াছেন । ইহা ছাড়া, বন্ধ বে-সরকারী প্রতিষ্ঠানও প্রত্যেক নগরে 
ও জনপদে প্রতিষ্টিত হইতেছে । বামকঞ্জ মিশন ও বিভিন্ন সেবা-সমিতি 
হইতে সেবকগণ স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হইয়া সংক্রামক মহামারীর সময়ে 
পল্লীবাসীর সেবা করিয়া থাকেন । 

রোগীর মল-মূত্র প্রভৃতি স্থাস্থ্যবিধির নিয়মান্তষায়ী পরিষ্কার করা, 
কাপড়, বিছান' প্রভৃতির বিশোধন, রোগীর সংস্পর্শে যাহারা থাকে; 
তাহাদের প্রতিষেধক টিকা বা ইনজেকশন প্রদানের ব্যবস্থা এবং যাহা- 
দিগকে চিকিৎসা! ব। স্বতম্বীকরণের প্রয়োজন তাহাদিগকে হাসপাতালে 
বা নিরাপদ স্থানে রাখিয়া চিকিৎসার ব্যবস্থা! তাহারা করিয়া থাকেন। 


ব্যাধির বাহক হিসাবে কীট-পতঙ্গাদি (1096069 ) 

রোগ-জীবাথুবহনে এবং রোগ-জীবাণু-সংক্রমণে কাঁট-পতঙ্গাি 
বিশেষ সহায়তা করে। ম্যালেরিয়া, পীতজ্বর, প্লেগ, কালাজর প্রভৃতি 
কীট-পতঙ্গাদির দ্বারা সংবাহিত ও সংক্রামিত হয়। মানুষের সহিত 
কীট-পতঙ্গাদির অতি নিকট সন্বন্ধ। গৃহপা।লত জীবজ্তর ন্যায়ই 
তাহাবা মানুষের নিতাসহচর । 

ংক্রামক রোগের জীবাণুবাহক কোন্‌ কীট-পতঙ্গের দ্বারা কোন্‌ 

ব্যাধি সংক্রামিত হয়, তাহার বিবরণ এইট £-- 

€১) গৃহমক্ষিক। € 705885 01158 )1-__ ইহারা কলেরা, যক্ষা, 
টাইফয়েড জর, উদবাময় প্রভৃতি ব্যাধির জীবাণু বহন করে ও ছড়াইয়া 
দেয়। সাধারণ মাছির দ্বার কুষ্ঠ-রোগ ও. নানাপ্রকার চমরোগের 


ব্যাধির বাহক হিসাবে কীট-পতঙ্গাদি . ২১৯ 


জীবাণু" সংক্রামিত হইয়া থাকে । দংশক মক্ষিকা (1311718 চা1168 ) 
এ দেশে দুর্লভ। এতদ্বারা 'ট্রাইপেনোসোমিয়াসিস্, (151)700- 
801018519 ) নামক এক প্রকার উত্কট ব্যাধির স্থটি হয়। 

(২) মশক (1০8.51০৩৪) ।--ইহার! ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, 
পীতজর এবং ডেশুজর প্রভৃতি উৎপন্ন করে। মশকের মধ্যে আবার 
তিনটি শ্রেণী আছে ,-(ক) এনোফেলিন ( 41701))01৮8 ) বা 
সত্রীজাতীয় মশক ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে, (খ) কিউলেক 
(0910 )-জাতীয় মশক গোদের ( ফাইলেরিয়া--1112718 ) এবং 
ডেস্ু (1)07£ ) জ্বরের জীবাণু বহন করে) এবং (গ) “স্টেগোমায়া” 
বা টাইগার” (969£07718% বা 1129) )-জাতীয় মশক পীতজরের 
জীবাণু বাহক । 

(৩) র্যাট জ্লী (7২51 চ]55)।-ইহীরা প্লেগের জীবাণু বহন 
করে। শিশুদিগের দেহে কালাজরও ইহাদের দ্বারা সংক্রামিত হয়। 

(8) উকুন (18০5) 1-টাইফস (151) 05) জর, রিল্যাপ. সিং 
জ্বর ( 1৩181)51118 05০3) এবং ট্রেঞ্চ ফিভার (7765716)) 176০.) 
ইহাদের দ্বারা সংক্রামিত হয়। 

(৫) ছারপোকা (85৭ 8585) এবং ম্যাগ ফ্লাই? 
€ 581791]% )।-_কালাজরের জীবাণু বহন করে। 

*€৬) এ্ঁটেজু ও ডাশের ছারা প্লেগ ও রক্তদুষ্টিজনিত নানাপ্রকার 
ব্যাধি সংক্রামিত হয়। 

(৭) পিগীলিক1 (4068) 1-_খাগ্য ও রোগীর মল-মৃত্রাদি হইতে 
যে সকল ব্যাধি বিস্তৃতিলাভ করে, ইহারা সেই সকল ব্যাধির জীবাণু 
বহন করে। কলেরা, টাইফয়েড, রক্তামাশয় প্রভৃতি ইহাদের ছারা 
সংক্রামিত হইতে পাবে। 


২২৭ . প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 
পরিশোধন ও সংক্রমণ-নিবারণের উপায় 


যথাযোগ্য চিকিৎসা এবং রোগীর মল-মুত্রাদিতে পরিশোধক ওঁধধ 
দেওয়া--রোগ-সংক্রমণ নিবারণের উপায়। মল ও মুত্র পরিশোধন 
করিতে কার্বলিক আাসিভ সলিউসন্‌ (141) 20) এবং পারক্লোরাইড 
অভ. মার্কারি সলিউসন্‌ (1 10 1000) বিশেষ উপযোগী । ইহাদের 
যে কোনটি মৃত্র-পরিমাণের সক ভাগ দিলেই যথেষ্ট । 

(১) রোগীর মল পোড়াইয়া ফেলিতে হয়। মল পোড়াইবার 
স্থবিধা না হইলে পরিশোধন অস্তে বাড়ীর পুঞ্চরিণী বা কূপ হইতে দূরে 
অন্তত ছুই তিন ফুট মাটির নীচে, উহ প্রোথিত করিতে হইবে । 
(২) রোগীর গৃহ পরিষার-পরিচ্ছন্ন রাখিতে হইবে। (৩) রোগীর 
পরিহিত বস্বাদি ও শয্যার আন্তরণ প্রভৃতি অস্তত দুই ঘণ্ট1 কাল 
কার্বলিক আসিড সলিউসনে (1 17. 20) ডুবাইয়া রাখিয়া পরে অন্তত 
আধ ঘণ্টাকাল ফুটাইয়া লইবে। (৪) বাড়ীর অপর লোকের রোগ- 
সংক্রমণ নিবারণের জন্য তাহাদিগকে কতকটা পৃথকৃভাবে থাকিতে 
হইবে। রোগীর গৃহের দরজা-জানালায় পাতল! পর্দা ঝুলাইয়া রাখা 
উচিত; নচেৎ, মক্ষিকার্দি ঘরে প্রবেশ করিয়া রোগ-বিস্তৃতির সহায়তা 
করিতে পারে । (৫) জল ফুটাইয়া ব্যবহার করিতে হইবে । (৬) দুধ 
খুব ভালরূপে ফুটাইয়া ব্যবহার করা কতব্য । (৭) টাইফয়েডের,টকা 
লওয়া প্রয়োজন। দশ দিন অন্তর এই টিক] দ্বিবার নিয়ম । টিকা 
লওয়ার পর ছুই বৎসর পর্যস্ত টিকাগ্রহণকারীর রোগ-প্রতিরোধক শক্তি 
অক্ষ থাকে। যাহাদের রোগ-সংক্রমণের সম্ভাবনা আছে, অর্থাৎ 
শুশ্রধাকারী সেবক-সেবিকা প্রভৃতি, তাহাদের টিকা লওয়া কত'ব্য। 





শগুহ্ম পল্ভিজ্জ্ছেক 
গৃহ-শুশ্রযাবিধি বা গুহে রোগ-পরিচধা 


ঘর ও তাহার যত ।- গুহস্থের বাটীতে শয়ন-ঘর, 

রান্না-ঘর, বাহিরের ঘর প্রভৃতি কয়েকখানি করিয়া ঘর সাধারণত থাকে । 
বাটার সুর্বোৎকুষ্ট . শয়ন-ঘুরথানিই (রোগীর থাকিবার জন্য নির্দিষ্ট থাকিলে 
ভাল. হয়ূ। রোগীর ঘরখানি যথেষ্ঠ আলো'-বাতাসযুক্ত, আর্্রতাশৃন্ত, 
কোলাহলবজ্িত ও সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়। উচিত | রোগীর ঘরে 
ভালরূপ আলো-বাতাস খেলিবার জন্য উপযুক্ত দরজা-জানালার ব্যবস্থা 
রাখিতে হয়। বহুদিন ধরিয়া অব্যবহত কোন ঘর রোগীর থাকিবার 
পক্ষে আদৌ ভাল নয়। যাহাতে প্রথর আলোক প্রবেশ করিতে 
না পারে এজন্য দরঙ্গা-জানালায় ফিকা নীল রংএর বা সবুজ রংএর পর্দা 
ব্যবহার করিতে হয় । রোগীর ঘরের মধাভাগ যাহাতে অতিরিক্ত ঠাণ্ডা 
ন1 হয় এরূপ যত্ব লওয়া উচিত । 

কোনরূপ সংক্রামক রোগ হইলে, রোগীকে বাটার অপর সকলের 
বাসের ঘরগুলি হইতে যথাসম্ভব দূরবতী কোন ঘরে রাখাই উচিত।, 
প্রয়োজন বোধ করিলে নিকটবর্তী কোন সাধারণ হাসপাতাঁলেও তাহাকে 
পাঠান যাইতে পারে। 

রোগীর ঘরে ব্যবহারার্৫থ আসবাব ও তৈজসাদ্ি।_ 
রোগীর ঘরে, তাহার অবশ্ঠপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছাড়া অতিরিক্ত 
আসবাব বা তৈজসাদি রাখা একেবারেই উচিত নয়। অতিরিক্ত 
আসবাবপত্র থাকিলে বায়-চলাচলের ব্যাঘাত ঘটে । 


প্রবেশিক! গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


২২ 





গৃহ-শুজ্রষাবিধি ব। গৃহে রোগ-পরিচর্ধা ২২৩ 


রোগীর প্রয়োজনীয় আসবাবাদি ।__রোগীর বিছানা ব! 
শয্যাধার জন্য খাট-_্াধারণ খাট ব। স্প্রিংএব. খাট (.31)11108 738৫- 
৪০. )-_বাবহারার্থ জিনিসপত্র বাখিবার জন্য রোর্গীর বিছানার পারে 
একখানি টেবিপু, খাদ্য-দ্রব্য ও পথ্যাদি,রাখিবার জন্য জালযুক্ত.ছোট 
আলমারি, ওঁষধ, থামেণমিটার এবং অন্যবিধ উপকরণ বাখিবার জন্য 
একখানি টেবিল, বসিবার জন্য চেয়ার ছুইখানি-_একখানি, শুশ্রষা- 
কারিণীর জন্ত, একখানি চিকিৎসকের জন্য-_একখানি ঈজি. চেয়ার 
( 8৪5 6110) রোগীর নিজের ব্যবহারের জন্ত রাখা উচিত। 
খাওয়ার ওুঁধধ ছাড়া মালিশ, প্রলেপ প্রভৃতি বিষাক্ত গুধধগুলি উচ্চে 
আলমারিতে বন্ধ অবস্থায় বাখ! একান্ত কতব্য । এগুলির পাত্রের গায়ে 
যেন “বিষ” ( 1১91501) ) এই লেবেল (10)) ) লাগান থাকে । 

সাধারণ অবস্থার লোকের পক্ষে রোগীর ব্যবহারের জন্য একখানি 
তক্তাপোষ ও চেয়ার বা চৌকি ভিন্ন টেবিল, আলমারি প্রভৃতি মূল্যবান্‌ 
আসবাবাদির বাবস্থা থাকে না। সেখানে দেওয়ালের তাকে (৯111) 
বা কুলুঙ্গিতে রোগীর ওষধাদি ঘত্রপূর্বক রক্ষা করা যাইতে পারে। 
খাওয়ার ওষধ হইতে মালিশাদি কাধের অন্যবিধ ওষধ দুরে সাবধানতার, 
সঙ্গে রাখিতে হয়। : 

রোগীর আবশ্টুক শয্যাভরণাদ্দি ।__বোগীর খাট বা তক্তাপোষ 
বানিশ করা হওয়া ভাল। খাট বা তক্তাপোষ বেশী চওড়া হইলে 
অস্থবিধাজনক . হয় ; ইহ! সাধারণত ৩1৪ ফিট চওড়া হইলেই চলে। 
স্পিংএর খাট না হইলে কাঠের খাট বা তক্তাপোষের উপর পুরু 
তোষকাদি দিয়া নরম বিছানার ব্যবস্থা করিতে হয়। তোষকের উপর 
বিছানার চাদর দিয়া তোষক মুড়ি দিতে হয় । রোগীর মাথায় দিবার 
বালিশ ছুইটি এবং পার্থ একটি বালিশ দিবে । আরও ২1১টি ছোট 


২২৪ প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


ছোট বালিশ থাকিনে ভাল. হয়, কেন না, হাটু, কোমর প্রভৃতির 
বেদনা হইলে সেই সেই স্থানে ব্যবহার করিতে পারা যায়। যে রোগী 
নিতান্ত শয্যাশায়ী তাহার পক্ষে বিছানায় মল-মুত্র ত্যাগ করা ভিন 
উপায়াস্তর থাকে না? এক্ষেত্রে তাহার শুইবার স্থানের উপরে কোমরের 
নিয়ভাগ হইতে হাটু পর্যস্ত অংশে একখানি অয়েল ক্লথ (011 0196 ), 
রবার ক্লথ (70181106051) ) ব। প্রশস্ত পুরু অমন্থণ কাগজ পাতিয়া 
দিতে হয়। বিছানার চাদর ২৩টি রাখিতে হয় এবং মাঝে মাঝে 
বদলাইয়া দিতে হয়। 
এতত্যতীত টাকিশ তোয়ালে (1:57515)) 10৪] ) এবং মাথায় 
বরফ দিবার জন্য [০6 1)4৮* রাখিতে হয়। শীত নিবারণ জন্ম 
বালাপোষ, আলোয়ান বা পাতলা লেপ রাখিলে ভাল হয়; কারণ, 
রোগীর পক্ষে ভারী শীতবস্থ টা করা কঠিন। শধ্যাশায়ী রোগীর 
পারে। প্রস্রাব করিবার জন স্পা ( 70] ) বা ভাড়, বোতল 
ইত্যাদি রাখা উচিত। বমনাদি করিবার জন্য ঢাক্নাযুক্ত পিক্দানি 
বা সরা ইত্যাদি রাখিতে হয়। 
রোগীর বত্বু।_ সুস্থ ব্যক্তির পক্ষে অঙ্গ-প্রত্যঙ্াদির ময়লা দূর 
করিবার জন্য যেরূপ নিয়মিত ন্নানের প্রয়োজন, রোগীর পক্ষেও সেরূপ 
অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ময়লা দূর করা! প্রয়োজন । এজন্য তাহার গাত্রে বেশী 
জল ন! দিয়া সাধারণত ঈষছুষ্চ জলে একখানি বস্ত্রথগ্ড ডুবাইয়া! তুলিয়া 
নিংড়াইয়া লইবে ও তাহার দ্বারা সাবধানতার সহিত ধীরে ধীরে ক্রমশ 
মন্তরু, মুখ, বক্ষোদেশ প্রভৃতি অঙ্গ মৃছাইয়া দিবে। দেহের উপরিভাগ 
ম্ছান হইলে রোগীকে সাবধানে কাৎ করিয়া ৃষ্টদেশ মুছাইয়া দিবে। 
জল মাঝে মাঝে বদলাইয়া লইবে । নাক, কান, কোমর প্রভৃতি স্থানেই 


গৃহ-শুঙধাবিধি ব! গৃহে রোগ-পরিচর্য। ২২৫ 


বেশী ময়লা জমে ! এই স্থানগুলি ভাল করিয়া পরিষ্কার করিয়া দিবে। 
শু বন্ধে গা মুছিয়। দিবে, চুল গ্চড়াইয়া পরিষ্কার করিয়া দিবে। 
দাত, মুখ নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করিয়া দেওয়া প্রয়োজন । 

বিবিধ দস্ত-ধাবন ত্রব্যদ্বারা রোগীর 'াত পরিষ্কার করা যাইতে 
পাবে। সাধারণত খড়িমাটির গুড়া, কার্বলিক টুথ পাউডার প্রভৃতি 
দাত মাজিবার পক্ষে প্রশস্ত । 

রোগী যাহাতে খুব আরামের সহিত থাকিতে পারে তহ্িষয়ে 
বিশেষ যত্ব লওয়া উচিত। রোগীর কক্ষে শুশ্যাকারিণী ব্যতীত, 
অযথা অতিরিক্ত লোকের গমনাগমন ভাল নয়। নিকটে কোন্প্রকার 
সোরগোল, কোলাহল যেন না হয়। গৃহের সুস্থ ছেলে-মেয়েরাই 
পালাক্রমে রোগীর সেবাশুশ্রষা করিবে । শুশ্রাধা কৰিবার সময় বিশেষ 
যত্ুসহকারে রোগীর অবস্থাদি পর্বেক্ষণ করিবে; কোন অন্থবিধা, 
অশ্বাচ্ছন্ধয ভোগ করিতেছে দেখিলে সাধ্যমত তাহার প্রতিকার- 
চেষ্টা করিবে; কোনরূপ বাড়াবাড়ি দেখিলে অবিলগ্ে চিকিৎসককে 
জ্ঞাপন করিবে । 

রোগীর দেহের তাপ (76701)681576 ), নাড়ির গতি ( 1১70186) 
এবং শ্বাসক্রিয়ার গতি ( 1১681917619) ) প্রভৃতি সম্বন্ধে মোটামুটি জ্ঞান 
শুঞ্রষাকারিণীর পক্ষে থাকা উচিত। | 

শারীরিক তাপ (7600)678079 ) |--শরীরের স্বাভাবিক 
সুস্থ অবস্থায় স্বাভাবিক তাপ ( টিা)7] 09107১05652 ) ৯৮৬ 
ডিগ্রী বলা যাইতে পারে। কিন্তু সম্পূর্ণ স্থস্থ অবস্থায়ও অর্ধডিগ্রী 
কম বা বেশী হইতে পারে। অনেক সময় সন্ধ্যায় তাপের পরিমাণ 
এক ডিগ্রী বাড়িতে দেখা যায়। আবার, বিভিন্ন অবস্থায় তাপের 
পরিবত্ন ঘটে। কোনরূপ উত্তেজক আহার ও ব্যায়ামাদি 

১৫ 


২২৬ প্রবেশিকা গার্রস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


পরিশ্রমের পর তাপ বাড়িতে পারে এবং নিদ্রাকালে, গ্বানের পর, 
পরিপাক কাধ চলিবার সময় বা ঘর্ম হইলে অথবা উপবাস, 
অনাহার প্রভৃতিতে তাপ কমিয়া থাকে। বয়স্ক ব্যক্তির অপেক্ষা 
শিশুদের শরীরের তাপ সাধারণত এক কিম্বা দেড় ডিগ্রী অধিক 
দেখা যায়। 

থামেমিটার-যন্ত্রেরে সাহায্যে শরীরের তাপ নির্ণয় করা হয়। 
সাধারণত কুক্ষিদেশে বা বগলে, মুখ-গহ্বরে বা মুখে থামেণমিটার দিয়! 
তাপ লওয়া হয়। 

প্রথমে কুক্ষিদেশ ( বগল ) কাপড় দিয়া উত্তমরূপে মুছিয়া লইবে 
এবং থাযেঁমিটাবের বাল্বটি তথায় প্রবেশ করাইয়া দিবে এবং বাটি 
বক্ষোদেশের উপর স্থাপন করিবে । আজকাল থামে মিটার যন্ত্রের 
বাবহার সকলেই জানে । 

যখন-তখন রোগীর উত্তাপ না লইয়া, সকালে ও বৈকালে অথবা 
চিকিৎসকের উপদেশমত প্রতি প্রতি চারি ঘণ্টা বা ছয় ঘণ্টা অস্তর উত্তাপ 
লওয়া যাইতে পাবে। নিভে উত্তাপ লইলে এই 
কাধের সার্থকতা থাকে না। প্রতিবার তাপ লইবার পর লিখিয়া 
রাখিতে হয়|. 

রোগীর বগলে তাপ লইবার সময় দেখিবে, বাল্বটি যেন বগলের 
মধো ভালরপে বসে ও দেহের সহিত ভালভাবে লাগিয়া! থাকে। 
বাবহারের পর থামোঁমিটারটি জলে ডুবাইয়! মুছিয়া রাখিবে ; আর 
সংক্রামক রোগের বেলায় কোন বিষ-নাশক বা পরিশোধক-যুক্ত গষধে 
ডুবাইয়া মুছিয়া লইলে ভাল হয়। 

মুখ-গহবরে উত্তাপ লইতে হুইলে, জিহ্বার নীচে এক পারে 
কিছুদূর পর্যস্ত দিয়া মুখ বন্ধ করিয়া ধরিবে। বগলে যে তাপ 


গৃহ-শুশ্রীধাবিধি ব। গৃহে রোগ-পরিচর্যা ' ২২৭ 


দেখা যায় তদপেক্া মুখ-গহ্ববের তাপ প্রায় '২ বা "৪ ডিগ্রী অধিক 
দেখায়়। 

নাড়ী দেখা (7১01১০49689 ) স্ত্রীলোকের বাম, হত্তে ও 
পুরুষের দক্ষিণ হস্তে নাড়ী দেখিবার প্রথা প্রচলিত আছে। ইহার 
কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে বলিয়া মনে হয় না। নাড়ীর স্পন্দন 
মিনিটে কতবার হইতেছে-ইহাই গণনা করা হয়। নবজাত শিশু, 
বালক, যুবা ও বৃছ্ের নাড়ীর স্পন্দন যথাক্রমে মিনিটে ১৩০।১৪০ বার 
হইতে ৭৫৮৫ বার, বা কিছু কম-বেশী বার হইতে পারে। মধ্যবয়সের* 
রোগীর নাড়ীর স্পন্দন মিনিটে ১২০ বারের বেশী কিংবা ৬৫ বারের কম 
হইলে চিন্তার কারণ হয়। তখন এই বিষয় চিকিৎসককে জানান 
উচিত। সাধারণত আমরা প্রতি মিনিটে ৭২ বার নাড়ীর নিত 
ধরিয়া থাকি। 

শ্বীস-ক্রিয়া গণনা কার্য .( 73980178007.) |--সাধারণত 
মান্থষের নাড়ীর স্পন্দন এক মিনিটে যতবার হয়, শ্বাস-ক্রিয়া এ সময় 
প্রায় তাহার চতুর্থাংশ বা চারিভাগের এক ভাগ হয় অর্থাৎ. খিনিটে 
১৮ বারই শ্বাস-ক্রিয়া ধরা হইয়া থাকে । রোগের জটিলতায় ঠহার 
ব্যতিক্রম ঘটিতে পারে । শ্বাস নির্গত হইবার নাম নিঃশ্বাস ও শ্বাস 
প্রবেশের নাম প্রশ্বাস। শ্বাস-ক্রিয় গণনা করিতে হইঝো শিঃ শ্বাস ও 
প্রশ্বান ছুই অংশ ধরিয়াই একবারের শ্বাস- ক্রিয়া বুঝিতে হয়। বোগীর 
পেটের উপর হাত রাখিয়া দ্রিলে, উহা যেমন এক একবার ফুলিয়! উঠিবে 
অমনি এক, দুই, তিন গণিয়! ঘড়ির সেকেতের কাটার উপর নজর 
বাখিয়া এক মিনিটের সংখ্যা গণিবে। 

শু ও পরিচর্ধ! বিষয়ে সাধারণ জ্ঞাতব্য বিষয় ।-- 
শুশ্রযার, সময় .সর্বদ] . রোগীরু.. দিকে, লক্ষ্য. রাথেবে । রোগের 


২২৮ ' প্রবেশিকা গার্স্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


গুরুতর ( বাড়াবাড়ির ) অবস্থায় তাহাকে কখনো, বিছানা হইতে 
উঠিতে দিবে না। তাহার পথাযাদি-গ্রহণ, মল-মৃত্রত্যাগ প্রভৃতি 
কার্ধ বিছানায় শুইয়াই করিতে দিবে । মল-মৃত্রত্যাগ কার্ধের জন্য 
বেড-প্যান (13৫৫-1১23)-নাম্ক পাত্র--অভাবে মাটির সরা বা 
পুরু কাগক্জ, বোতল, মাটির ভীড় ইত্যাদি বাবহার করিবে । পাত্রের 
মুখ সর্বদা ঢাকিয়া রাখিবে ও স্থানাস্তরিত করিবে। বিবিধ কঠিন 
পীড়ায় দীর্ঘ দিন তৃগিয়া আবোগ্যাবস্থায়ও অনেকের হৃৎপিণ্ড এত 
'ছুর্বল থাকে যে, তাহার পক্ষে শৌচাদি কার্ষে দুরে যাওয়া এমন কি 
বিছানায় উঠিয়া বসা বা বিছানা হইতে নামা বড়ই অন্যায় 
কারণ, এক্ন্য হৃৎপিণ্ডের ক্রিয়া বন্ধ হইয়] মৃত্যু পর্যস্ত হইতে পাবে । 

চিকিৎসকের অন্ধমতি ব্যতীত, রোগীর নিদ্রাভঙ্গ করিয়া ওঁষধ 
“বা পথ্য দেওয়া অন্থচিত। 

রোগীর পরিচর্যা বিষয়ে সাধারণ নিয়ম ।__গৃহে রোগীকে 
সুস্থ পরিজনবর্গ হইতে স্বতন্ত্র রাখিতে হয়। রোগ যাহাতে বিস্তার লাভ 
করিতে নাপারে এজন্য তাহার ব্যবহৃত বস্্রাদি, আসবাবপত্র প্রভৃতি 
গৃহের অপর কেহ কদাচ বাবহার করিবে না। 

এবিষয়ে অসাবধানতার জন্য অনেক সময় বিপদ ঘটিয়া থাকে । 
রোগীর থাকিবার ঘরের পার্থে কোন ঘর থাকিলে সেই ঘরে রোগীর 
ব্যবহৃত বন্বাদি রাখিবে। অতঃপর এগুলি উপযুক্তরূপ বিশোধন 
করিয়া গৃহের বাহিরে খোলা! জায়গায় রৌদ্রে দিয়া শুকাইয়া লইবে। 
গামলা, বেড-প্যান্‌ প্রভৃতি আসবাব ও সরঞ্জাম প্রভৃতিও এই ঘরেই 
রাখা চলিতে পারে। 

বোগীর গৃহ পরিশোধক দ্রব্যের ভরবে (10157059080 1506107) ) 
বস্রখণ্ড ভিজাইয়া তন্বারা গ্রত্যহ উত্তমরূপে মুছিয়া দিবে। 


গৃহ-শুশ্রধাবিধি বা গৃহে রোগ-পরিচর্যা " ২২৯ 


রোগীর মল, মৃত্র, কাশ, কফ থুথু, গয়ের, পৃ এবং অন্তান্ত 
নিঃম্রাব কোন উগ্র পরিশোধক ভ্রব্য দ্বারা পরিশোধন কৰিবে। 
পরিশোধন না করিয়া উহা! রোগীর গৃহের বাহিরে লইবে না। সম্ভবপর 
হইলে ওগুলি পোড়াইয়া ফেলিবে। * 

রোগীর গৃহের অন্যবিধ দ্রবা যথা,_-খেলনা, পুস্তক, কাগজপত্র 
পোড়াইয়া! ফেলাই উচিত। রোগীর পরিধেয় বস্ত্রাদি কিছু .সৃময়. ধরিয়া 
কার্বলিক ( 0'8709110 ১- ২০) বা অপর তীত্র পরিশোধক দ্রব্যে 
(1)1917160181)1 101101) ) ডুবাইয়া রাখিয়া পরে ধোপাকে দিয়া ধৌতু 
করাইয়া! লইবে । শুশ্রষা অস্তে প্রতিবার এরূপ লোশনে-_-যথা)-_লাইসল 
(74501 ১১৬০ শক্তি )-শুশ্বধাকারিণী নিজের হাত ধুইয়া 
ফেলিবে। রোগীর পথ্যাদ্ি যাহা তাহার ঘরে লওয়! হয়, তাহাও 
দুষিত হইয়া উঠে। অতএব রোগীর আহারান্তে অবশিষ্ট খাদ্যাদি 
নষ্ট করিয়া ফেলিতে হয়। 

শুশ্রষা অস্তে পরিচর্ধাকারিণী নিজের হাত পরিশোধক দ্রব্যে ধৌত 
না করিয়া রোগীর গৃহ ত্যাগ করিবে না এবং নিজের পরিহিত 
বস্্াদি পরিবতন না করিয়া অপর লোকের সহিত মিশিবে না। 

রোগী নিরাময় হইলে রোগীর গৃহের সকল ছিত্র, দরজা, জানালা 
ইত্যাদি ভাল করিয়া বন্ধ করিয়া গৃহমধ্যে গন্ধক (910) 07) অথবা 
ফরমালিন (['০০08117 ) পোড়াইবে। এ স্বানের আসবাবপত্ত 
পরিশোধক দ্রব্যে ধৌত করিয়া লইবে । 


রোগীর পথ্য-প্রস্তৃত প্রকরণ (91০5 ছ২০০৮, 0০০০7১) 


রোগ-মুক্তির জন্য রোগীর পক্ষে স্থনির্বাচিত ওঁধধ এবং সুনির্বাহিত 
শুশ্বযা যেরূপ প্রয়োজনীয়, স্থুপথোর ব্যবস্থাও তদনুরূপ এবং তৃল্যরূপে 


২৩০ প্রবেশিক। গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


প্রয়োজনীয় । রোগীর পথ্য প্রস্তত-প্রণালী সম্বন্ধে ,অভিজ্ঞতা এবং 
'মাবধানতার একান্ত প্রয়োজন । রোগীর পরিপাক-শক্তি স্বভাবতই 
হাস পায়; স্তরাং লঘু, সহজ-পরিপাচ্য অথচ পুষ্টিকর পথাই নির্বাচিত 
হওয়া উচিত। একই খাদ্য-স্মমগ্রী প্রস্তুত করিবার প্রণালীভেদে 
স্থপাচ্য ও ছুষ্পাচা হইয়া থাকে । দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, চাউল, আটা, 
ময়দা, সুজি, ভাল প্রভৃতি খাদ্য-সামগ্রী কেবলমাত্র গ্রস্ততকরণ প্রণালী- 
ভেদে আমাদের স্থস্থ অবস্থায় খাদা এবং রোগে পথ্যরূপে ব্যবহৃত 
হুইয়। থাকে । আমাদের গৃহে সাধারণত মেয়েদের দ্বারা কিংবা স্থল- 
বিশেষে তাহাদের উপদেশমত পাচক-পাচিকার দ্বারা রোগীর পথ্যাদি 
প্রস্তুত হইয়]! থাকে । ন্ুুতরাং, মেয়েদের পধথ্য-প্রস্তৃতকরণ প্রণালী 
সম্বন্ধে সম্যক জ্ঞান থাকা একাস্ত বাঞ্চনীয় । 

প্রত্যেক গৃহেই রোগীকে তাহার রোগের অবস্থা অনুযায়ী আহার্য 
প্রদান কর! হয়। রোগীর আহার্কেই পথ্য বল! হয়। রোগ তরুণ 
কি পুরাতন, জটিল কি সহজ ইত্যাদি লক্ষণ ও প্রকৃতি অনুসারে 
পথা নিদিষ্ট হইয়া থাকে। 

সাধারণত তিন প্রকার পথ্য ব্যবহৃত হইয়া থাকে । সাধারণ 
পূর্ণ পথ্য ( মা] 1)101 ), লঘু পথ্য (15810 1)101) এবং তরল পথ্য 
(10010 1)101 )। 

পুর্ণ পথ্য (দাঘা। [)16)1--যে রোগী সাধারণ আহার্ধ-সামগ্রী 
ভোজন করিতে পারে এমন অপেক্ষাকৃত সুস্থ রোগীকে পূর্ণ পথ্য 
দেওয়া হম্স। 

লঘু পথা (15161) 1019) 1--খি চুড়ি, ভাল-ভাত, ডিম, দুধ, 
মাছ, মুরগী, পুডিং, জেলি প্রভৃতি ষে সমস্ত আার্য রোগী সহজে 
পরিপাক করিতে পারে, তাহাকে লঘু পথ্য বলে.। 


রোগীর পথ্য-প্রস্তত প্রকরণ ' ২৩১ 


তরল'ব। জলীয় পথ্য (10010 1)106) ।- সাধারণত ছুধকে 
এবং ঘোল, ছানার জল; বালির জল, ডালের ঝোল, স্থলবিশেষে 
মাংসের ঝোল (৪০9) ) ইত্যাদ্িকে তরল পথ্য বলে। রোগের তরুণ 
অবস্থায় এই পথ্য দেওয়া হ্য়। 

রোগীকে সবল রাখিবার জন্যই পথা দেওয়া হয়। সহজপাচ্য ও 
স্থপাচ্য পথ্যই নির্বাচন করা উচিত; কারণ, তরুণ রোগে রোগীর 
পরিপাক-যস্ত্র দুর্বল থাকে । অস্থখের সময় পরিপাক-শক্তি কমিয় যায় 
এবং প্রায়ই অগ্নিমান্দ্য দেখ। যাঁয়। এই সকল কারণে সর্ব অবস্থাতেই . 
রোগীর পথ্য লঘু অথচ পুষ্টিকর হওয়া উচিত। স্বনির্বাচিত পথ্য 
উত্তমরূপে প্রস্তুত করিতে হয়; কারণ, প্রস্ততপ্রণালীর উপরই উহার 
ভালমন্দ ঘথেষ্ট পরিমাণ নির্ভর করে। পথ্য প্রস্তুত করিবার সময় 
বন্ধন-পাত্রাদি ও বাবহার্য অপরাপর জিনিসগুলি যেন উত্তমরূপে 
পরিফাঁর-পরিচ্ছন্ন থাকে । 


তরল পথ্য (1.10010 ০01 71010 1015) 


জ্বর প্রভৃতি রোগের তরুণ অবস্থায় রোগীর পরিপাক-শক্তি হাস 
পাঁয়। এজন্য তখন তাহাকে তরল পথ্য দেওয়া! উচিত। | 

ভুধ।- সমপরিমাণ বিশুদ্ধ পানীয় জল মিশাইয়া পরিষ্কৃত পাজ্রে 
জাল দিবে; জ্বাল দ্রিবার সময় পাত্রের মুখ ঢাকিয়া রাখিবে। পথখ্যের 
পক্ষে এক বলকের দুধই প্রশন্ত । ঘন দুধ উপযুক্ত নহে। 

প্রয়োজনমত বালি বা সাগুর সহিত মিশ্রিত দুধ, সাগুদানা, 
বালি, জমান ছুধ ( 11216 711]. ), ছানার জল ( ড/))০5 ), মৃদু চা 
( ৬৪1 79৬ ), মাংসের ঝোল (1108 5০০]) 0 206৪6 0700), 
ডালের ঝোল (1710 179৮ 01108] 4০০০), শাক-সক্সির ঝোল 


২৩২ : প্রবেশিকা! গাহস্থ্য-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


(৮68০681০ 5001), এরোরুট, বালি, সাগু, ( 410%7006 
78116), 388০), কমলালেবু, আনারস, আঙ়র, টমেটো, আপেল 
(07:811865, 1১10680)7)198) 017:81)68) ['070810৫৭, 480)])165 ) 
ইত্যাদি বিবিধ ফলের রস (89109 ), আকের বা ইক্ষুর রস (৪0£81- 
98170 )1 

ছানার জল |--সাধারণত পাতিলেবুর রস দ্বার! ছানার জল 
গ্রস্ত কর যাইতে পারে। এক পাইণ্ট ফুটন্ত ছৃগ্ধে ছুই চামচ 
লেবুর রস ঢালিয়া দিবে। ছানা নীচে জমিয়া না যাওয়া পস্ত 
নাড়িতে নাই। পরে জমিলে পরিষ্কৃত বস্ত্রথণ্ডে ছাকিয়া ছানার 
জল বাহির করিয়া লইবে। 

আলুর)লি,€ 7381165 ৮26৮) 1--এক আউন্স পার্ল বালি 
(৮68।] 8811৩) ) লইয়া কিছুক্ষণ অল্লপপরিমাণ জলের সহিত 
ভিজাইয়! রাখিবার পর ফুটাইয়া লইবে এবং ছাকিয়! লইয়া! জলটা 
ফেলিয়া দিবে। পরে এক পাইণ্ট শীতল জলে মৃদুজালে, . ফুটাইয়. 
উ পাইণ্টে পরিণত কর। এখন ছাকিয়! লইয়া শীতল হইতে দিবে । 
প্রতিবার ব্যবহারের পূর্বে প্রস্তত করিবে । 

সাধারণ ভাল বালি বড় এক চামচ লইবে। শ্রীতল জলের সহিত 
বালি উত্তমরূপে মিশাইবে এবং গরম জল ধীরে ধাঁরে ঢাক্তিয়া দিয়। 
নাড়িতে থাক। পরে অধঘণ্টা-কাল ফুটাইতে থাক। এখন দৃধ.ব 
লেবু বা লবণ মিশ্রিত করিয়া বাবহার করিতে দাও। 

ছুধ-বালি পথা দিতে হইলে, প্রস্তত জল-বালির সহিত পরিমাণ-মত 
উঞ্ণ দুধ মিশাইয়া লইবে। 

আজকাল বাজারে অনেক রকম দেশী বালি ( গুড়া) পাওয়া যায়। 
ভেজাল না হইলে এ বালি ও ব্যবহার করা যাইতে পারে। 


রোগীর পথ্য-প্রস্তৃত প্রকরণ ' ২৩৩ 


সাগু১ (958০ )1-_সাগুদানা ভালরূপে ঝাড়িয়া বাছিয়া পরিষ্কার 
করিয়া, লইবে। উহা হইতে ২ চামচ (চায়ের চামচ) সাগুদান। 
অল্পপরিমাণ শীতল জলে উত্তমরূপে ধৌত করিয়া লইবে। পরে আধ 
সের শীতল জলে কিছুক্ষণ ভিজাইয়! রাখিবে। তারপর এ ভিজান 
সাগুদানা পাক-পাক্রে চড়াইয়! যুছুজালে ফুটাইতে থাকিবে । ভলায় 
না ধরিয়া ষায় এজন্য হাতা বা চামচ দিয়া অনবরত নাড়িয়া দিবে। 
দ্বানাগুলি গলিয়া অনৃশ্ঠ হইয়া গেলে যখন জলের অর্ধেক কমিয়! যাইবে, 
তখন উহার সহিত ছুই চামচ চিনি বা মিছরির গুড়া মিশাইয়া - 
নামাইয়া লইবে। 

এর কট, (7৮০৮7০০চ)1- ইহা প্রস্থত করিতে হইলে 
চা-চামচের ৩ চামচ এরোরুট অল্পপরিমাণ শীতল জলের সহিত 
উত্তমরূপে মিশাইবে। পরে উহাতে অল্পে অল্পে ঢালিয়া আধসের 
ফুটন্ত জল মিশাইতে থাকিবে ! চামচ দিয়া নাড়িতে থাকিবে, নতুবা 
ডেলা বাঁধিয়া যাইতে পারে। তারপর যখন দেখিবে, উহার সাদা 
রং চলিয়া গিয়াছে, তখন উহার সহিত কিছু চিনি বা যিছরি 
যোগ করিয়া কয়েক মিনিট কাল ম্বছু তাপে ফুটাইয়া লইবে। 
পরে উহার সহিত লেবুর রস বা উষ্ণ ছুধ মিশাইয়া রোগীকে পান 
করিতে দিবে । পু 

সব্দফির ঝোল ৫৬585151915 ৪০৮১ )।--খোসা সহিত আলুঃ 
পটল, বিঙ্গা, ঢে'ড়স, বেগুন, কাচকল৷ প্রভৃতি তরি-তরকারি লইয়া 
পাতলা চাকা চাকা করিয়া! কাটিয়া লইবে। এ চাকাগ্চলি শীতল জলপূর্ণ 
পাক-পাত্রে চড়াইয়া! ২* মিনিট ধরিয়া সিদ্ধ করিবে । সিদ্ধ করিবার 
সময় পাত্রের মুখ ঢাকিয়া দিবে; নতুবা, উহার 'থাগ্যপ্রাণ' নষ্ট হইয়া 
যাইবে। পরে এ সিদ্ধ ত্রকারির সহিত যসলা, লবণাদি প্রয়োজনমত 


২৩৪ প্রবেশিক! গাহস্থা-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যবিধি 


মিশাইয়া লইবে। তাহার পর এগুলি চটকাইয়া উহার ক্কাথ পরিষ্কৃত 
বন্্ধণ্ডে ছাকিয়া লইবে। 


পেস্টোনা ইজ্ভ, মিল্ক (7১01):001590 2011] )।--রোগী ছুধ 
পরিপাক করিতে ন| পারিলে ফেয়ারচাইন্ডের পেপ্টোনাইজিং পাউডার 
(171৮1011108 0000601715106 2০091) ব্যবহার করিয়া 
"পেপ্টোনাইজ ড. মিক্ক* তৈয়ার করিতে হয়। 


একটি টিউবে (নলে) যতটুকু “পাউডার' থাকে তাহা এক চামচ 
শীতল জলে গুলিয়া একটি মোটা বোতলের মধ্যে আড়াই পোয়া কাচা 
দুধের সঙ্গে মিশাইবে ও বোতলটি ২০ মিনিট কাল গরম জলপূর্ণ পাত্রে 
বসাইয়া রাখিবে ও মাঝে মাঝে নাড়িয়া দিবে; পরে ব্যবহারের সময় 
পরিমাণমত মিছরি বা! চিনি যোগে পূর্ণবয়স্ক রোগীকে খাইতে দিবে । 


শিশুর জন্য প্রস্তত করিতে হইলে, একটি তিন পোয়া মাপের 
বোতলে ১ পোয়া শীতল জল রাখিয়া! তাহাতে ১ টিউব (নল) “পাউডার" 
দিবে ও ভালরূপে নাঁড়িয় লইবে। পরে উহাতে ১ পোয়া কাচা দুধ 
যোগ করিয়া আবার নাড়িতে থাকিবে । হাতে সহ হয় এমন 
গরমজল-পূর্ণ একটি প্রশস্ত পাত্রে বোতলটি ২০ মিনিটকাল ডূবাইয়া 
রাখিলেই উত্তম “ছুধ, প্রস্তত হইবে । পরে ঠাও হইলে চিনি বা মিছবি 
মিশাইয়া ব্যবহার করিতে দিবে। 


এই পপ্রস্তত মিন্ক' বরফে বসাইয়া রাখিলে অবিরূৃত অবস্থায় থাকে । 


ওবধশ-্প্রয়োগবিধি ।-উধধ-প্রয়োগ করিবার সময় সবিশেষ 
সাবধানতা অবলম্বন কর]! উচিত । চিকিৎসকের উপদেশ মনোযোগের 
সহিত শুনিয়া তানুসারে উষধাদি প্রয়োগ করিতে হয়। 


রোগর পধ্য-প্রস্তত প্রকরণ ২৩৫ 


সাধারণত ওষুধ রোগীর মুখ দ্বারা গ্রহণ করান হইয়া থাকে। 
খাইবারু ওষধ সাধারণত পিল বা বটিকা (81919), গুড় 
(7০৮09: ) ও তরল মিশ্র (11186029 ) রূপে ব্যবহৃত হয়। এই 
ওঁষধগুলি গলাধঃকরণ করিলে পাকস্থলীর €3692080)) ) মধ্য দিয়া ক্ষুদ্র 
অস্ত্রে (91088]1 11)9511)6 ) পৌছিবার পর তথা হইতে শোধিত হইয়া 
রক্তের সহিত চালিত হইয়া শরীরের সবত্র ক্রিয়া প্রকাশ পায়। গুঁধধের 
ক্রিয়া অন্ত্রমধ্যে সীমাবদ্ধ রাখিতে হইলে পিল (181)1014 ) রূপে দেওয়। 
হয়। পরিপাক শক্তির ব্যাঘাত হইবার ভয়ে ষধ খাইতে না দিয়া 
অনেক সময় উহার দ্বিগুণ মাত্রায় বা প্রয়োজন মত রেকটাম দ্বারা 
দেওয়া! হইয়। থাকে । 


কতকগুলি ওষধের ধোয়া শ্বাস-ক্রিয়ার সাহায্যে রোগীকে গ্রহণ 
করাইতে হয়। আদ্রাণ করিবার পর অতি অল্প সময়ের মধ্যে ক্রিয়া 
প্রকাশ পায়। কোন কোন ওউধধ ফুটন্ত জলে দিয়া উহার বাম্পরূপে 
দেওয়! হইয়া থাকে । 


শরীরের স্থান বিশেষে ব৷ সর্বত্র ক্রিয়া-প্রকাশের জন্য চমের উপর 
বিবিধ উষধ প্রয়োগ করিতে হয়। এক্ষেত্রে তুল (1,901028 ), মলম 
(01017070705), বা প্রলেপ পলস্ত্রা (1731156675 ) ইত্যাদি রূপে 
ব্যবহৃত হইয়া থাকে । জলীয় তরল পদার্থ শরীরের নিঃল্সাবের 
(89০796007) ) সহিত ভালরূপে মিশ্রিত হয় না বলিয়া সহজে শোষিত 
হয় না; এজন্য তৈল ও চবি সাধারণত ব্যবহৃত হয়। এতগ্বাতীত, 
বিবিধ ওঁধধের দ্রুত ক্রিয়ার জন্ট উহ] বিশিষ্ট পিচ.কারীর স্চ দিয়া 
( 75099010181] ) চমের মধ্যে বা শিরার মধ্যে (11711%- 
/61)008]5 ) প্রয়োগ করা হুয়। 


২৩৬ প্রবেশিকা গাহস্থা-বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্য বিধি 


ওষধের মাত্র। |-_ওঁষধের মাত্রা-নিরূপণ চিকিৎসকের কাধ হইলেও 
শুশ্রযাকারিণীর এ বিষয়ে লক্ষ্য রাখ প্রয়োজন; কেননা, কোন কোন 
রোগীর শরীরে ওউুঁষধের ক্রিয়া অন্বাভাবিক তীব্রভাবে প্রকাশ পাইতে 
পারে, এমন কি সামান্য মাত্রায়ও ভীষণ প্রতিক্রিয়৷ দেখা দেয়। আবার, 
এমন রোগী আছে, যাহাকে সাধারণ মাত্রায় ওষধ দিলে কোন ফল হয় 
ন1। এরপ ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থাদি চিকিৎসককে জ্ঞাপন করিতে হয়। 
এমন কতকগুলি ইধধ আছে, যাহা শরীর হইতে ধীরে ধীরে বাহির হয়। 
এবপ ওুঁষধ দীর্ঘদিন ধরিয়া ক্রমাগত ব্যবহার করিলে বিষ-ত্রিয়] প্রকাশ 
পায়। স্থৃতরাং, এরূপ গুঁধধ কিছুদিন ব্যবহারের পর বন্ধ রাখা উচিত; 
তাহা হইলে উহার অতিরিক্ত অংশ শরীর হইতে বাহির হইতে স্থুবিধা 
পায়। 
চিকিৎসকের অবগতির জন), রোগীর রোগবিবাত- 
এ িকি৩৯০-১৯০০৩১ 
সংরক্ষুণু। । চিকিৎসার স্থবিধার নিমিত্ত রোগীর অবস্থা সম্যক অবগত, 
হওয়া চিকিৎসকের একান্ত প্রয়োজন। রোগীর অবস্থা-সন্বন্ধে বিবুতি 
(1890)91 ) চিকিৎসককে দেওয়া শুশষাকারিণীর কাধের একটি প্রধান 
অঙ্গ। এই বিষয় যাহাতে সঠিকভাবে সম্পন্ন করিতে পারেন, তজ্ন 
সর্বদ! রোগীর সঙ্ক্ষি অবস্থা অতি যত্বের সহিত পধবেক্ষণ করিতে 
হয়। সামান্ত বিষয়ও অবহেলা করিতে নাই; তাহা হইলে চিকিৎসকের 
নিকট বিশেষ প্রয়োজনীয় জ্ঞাতব্য-বিষয়গুলি অলক্ষিত থাকিয়া যাইতে 
পারে। সমস্ত দিবারাত্র কোন রোগীকে শুশ্রষা করা একজনের পক্ষে 
কদাচ সম্ভবপর নহে। এ-নিমিত্ দিবাভাগে ও রাত্রিতে পালাক্রমে 
শুশ্রধা করিবার জন্ত শুশ্রধাকারণীর সংখ্যা বুদ্ধি করা উচিত । নিজ 
নিজ সময়ে রোগীর ীর সঞকু-আবস্থ! নিরীক্ষণ করিয়া তাহার অবস্থাদির সত্য 
ও সঠিক বর্ণনা রাখা একান্ত প্রয়োজন । 


রোগীর পথ্য-প্রস্তুত প্রকরণ ২৩৭ 


রোগী * কত ম্ঘণ্টা এবং কোন সময় হইতে কোন সময় পধস্ত 
ঘুমাইয়্টছেন, নিদ্রাভঙ্গের পর রোগীর অবস্থা, স্থনিদ্রা কিংবা ব্যাঘাত- 
জনক নিদ্রা, অথবা কোন প্রকার উপসর্গাদি লক্ষিত হইয়াছে-_ 
লিখিয়া রাখিবেন। রাত্রিকালীন আহাম্ব সামগ্রীর পরিমাণ, মল- 
মুত্রাদির প্রকৃতি এবং পরিমাণ, কোনরূপ বেদনা বা যন্ত্রণা ছিল 
কিনা তাহা বর্ণনা-পত্রে লিখিবেন। রোগীর পেট-ফাপা ছিল কিন, 
গাত্রে কোনরূপ ব্রণ, স্ফোটকাদি ( 1$851)68 ) দেখা যায় কিনা, 
দেহের কোন স্থানে বেদন| বা যন্ত্রণা বোধ করিয়াছেন কিনা ঈত্যাদি' 
লিখিয়া রাখিবেন। 


কোন্‌ সময় কিরূপ ওঁষধধ ও কতবার খাওয়ান হইয়াছে তাহার 
হিসাব রাখিবেন । কোনবপ শ্বাস-যস্ত্রের পীড়াদিতে ; যথা,__নিউমোনিয়া 
(1১1)6912)01)18, ) অথবা শ্বাস-যন্্ের অন্যান্ত রোগে কাশি ( 00081) ) 
ও শ্লেম্মা (31)0107 ) প্রভৃতির বর্ণনা রাখিতে হয়। 


রোগী তরুণ ( 4০0/০০ ) ও পুরাতন ( (91)707)16 ) ব্যাধিতে 
আক্রান্ত হইয়! থাকে । রোগীর শারীরিক তাপ (11071)076016 ), 
নাড়ীর গতি (1১4150-)০819) ও শ্বাস-ক্রিয়ার গতি ( 1১551)11010107 ) 
প্রভৃতি সম্বন্ধে অবস্থা-বর্ণনা করিতে হয়। তরুণ রোগীর পক্ষে প্রতি 
৪ ঘণ্টা অন্তর; যথা,--দিবাভাগে ৬টা, ১০টা) ২টা, অপরাহু ৬টায় 
এবং রাত্রিতে ১০টা, ২টায় হিসাব রাখিতে হয়। পুরাতন রোগে 
সকালে ও সন্ধ্যায় তাপ লইলেই চলিতে পাবে । 


আকম্মিক ঘটন! প্রাত পরিবারেই ঘটিয়া থাকে | কোথাও আঘাত 
লাগিলে, কাটিয়া গেলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে বাধিয়া রাখিতে হয় 
এবং অনতিবিলম্বে চিকিৎষককে ডাকিয়া! পাঠাইতে হয় । আকম্মিক 


২৩৮. প্রবেশিকা গাহস্থ্য-বিজ্ঞানি ও স্বাস্থ্যবিধি 





প্রাথষিক-চিকিৎসা 


ভুর্ঘটনাম্ন প্রাথমিক-চিকিৎসার সাহাযোর জন্য কয়েকটি ব্যাণ্ডেজের 
চিত্র দেওয়া গেল। |